টিভি চ্যানেলে প্রোগ্রামের দ্বারা প্রতীয়মান হয় যে, তথাকথিত সুন্নী সংগঠনের মহাসচিবের মুখে আওড়ানো রসূল প্রেম, রসূলের হাদীছ, নূরের  ফযীলত, রেযাখানীর ওসীয়ত সবই তার ফাঁকা বুলি আর স্বার্থের ঝুলি-

সংখ্যা: ১৪০তম সংখ্যা | বিভাগ:

(১)

‘হাদীছ শরীফ-এ এক ব্যক্তির বিবরণ রয়েছে। সে দ্বীন ইসলামের রাহে লম্বা সফর করে। সফরের ক্লান্তি-ক্লেশ, কষ্টের ছাপ তার চেহারায়, সারা দেহে। তার চুল উস্খুখুস্কু, পোশাক এলামেলা। এতটা রিয়াজতের পরও সে ব্যক্তি যখন মহান আল্লাহ পাক উনার সামনে ‘ইয়া রব,’ ‘ইয়া রব’ বলে ডাকে তবু তার দোয়া কবুল হয়না।

এর কারণ প্রশ্ন আকারে উল্লেক করা হয়েছে, “… কিন্তু তার খাদ্যও হারাম এবং পানীয়ও হারাম। পোশাকও হারাম দ্বারা তৈরি হয় এবং হারাম পথেই তাদের খাদ্য আসে। এরূপ লোকদের দোয়া কিরূপে কবুল হতে পারে?” (কুরতুবী)

প্রতিভাত হলো যে, চরম-পরম ইবাদত করলেও ইবাদতকারী হারাম আবহ থেকে পবিত্র না থাকলে সে ইবাদত কবুল হয় না।

প্রসঙ্গত: কুরআন শরীফ-এ ইরশাদ মুবারক হয়েছে, “হে রসূলগণ! পবিত্র বস্তু আহার করুন এবং সৎকাজ করুন।” (সূরা আল মু’মিনুন/৫১)

মুফাসসিরে কিরামগণ এ আয়াত শরীফ উনার তাফসীরে বলেন, “হালাল খাদ্য খাওয়া এবং নেক কাজ করা এ দু’টো আদেশকে একসাথে বর্ণনা করার কারণ হলো যে, নেক কাজ করার পিছনে হালাল খাদ্যের যোগান অঙ্গাহীভাবে জড়িত। খাদ্য হালাল হলে আগে হোক পড়ে হোক সে নেক কাজের দিকে ধাবিত হবেই।

পক্ষান্তরে হারাম খাদ্য খেয়ে হাজারো ইবাদত-বন্দিগী করলেও তা কবুল হবে না। হাদীছ শরীফ-এ উল্লিখিত মুসাফির তার উদাহরণ। এজন্যই কুরআন শরীফ-এ ইরশাদ মুবারক হয়েছে, হারাম থেকে হারামেরই জন্ম নয়।

প্রসঙ্গত: ছবি তোলা যে হারাম তা কোন মানুষের ফতওয়া নয়। যদি কেউ দ্বীন ইসলামকে বিবৃত করতে চায় তাহলে ইসলামী শরীয়তের উৎস হিসেবে হাদীছ শরীফ উনার গুরুত্ব তাকে স্বীকার করতে হবে। হাদীছ শরীফ উনার ভাষায় তাকে উচ্চারণ করতে হবে যে, ‘প্রাণীর ছবি আঁকা, রাখা, দেখা হারাম।’ ‘যে ঘরে ছবি থাকে সে ঘরে রহমতের ফেরেশতা থাকে না।’ ক্বিয়ামতের ময়দানে ঐ ব্যক্তির কঠিন শাস্তি হবে যে ছবি তুলে ও আঁকে।’

অর্থাৎ হাদীছ শরীফ উনার ভাষ্যানুযায়ী ছবি তোলা সম্পূর্ণরূপে হারাম। অনুসরণীয় সব মুহাক্কিক ও মুদাক্কিক, ইমাম-মুজতাহিদ তথা আউলিয়ায়ে কিরাম এ ব্যাপারে একমত।

যদি তাই হয়ে থাকে, তবে সে হারাম ছবিকে ভিত্তি করে যখন কোন তথাকথিত ইসলামী অনুষ্ঠান করা হয় তাহলে তা কতটুকু কবুল হতে পারে।

স্বাভাবিক ব্যক্তিগত, পারিবারিক ও সামাজিক জীবন ত্যাগ করে দ্বীনের পথে সফরকারীর ক্লান্ত-শ্রান্ত দেহের উদাস চেহারার দোয়াও যদি হারাম খাদ্য তথা হারাম ভিত্তির কারণে কবুল না হয়, তাহলে একইভাবে হারাম ভিত্তি ছবির উপর তথা টিভি চ্যানেল নির্ভর তথাকথিত ইসলামী অনুষ্ঠান কি করে হতে পারে?

ছবির উপর সরাসরি নিষেধাজ্ঞা ও শাস্তির ঘোষণা বর্ণনা করার পরও সে ছবির দ্বারাই তথাকথিত ইসলামী অনুষ্ঠান করলে কি করে তা মহান আল্লাহ পাক ও উনার রসূল হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার কাছে গ্রহণীয় হতে পারে। বরং তা ইবলিসের দৃষ্টান্ত হতে পারে।

(২)

মহান আল্লাহ পাক উনাকে ইবলিস ছয় লক্ষ বছর সিজদা করেছিলো এবং অনাগত ছয় লক্ষ কোটি বছর সিজদা করতেও তার আপত্তি ছিলো না। কিন্তু মহান আল্লাহ পাক উনার মনোনীত পথে সিজদা করতে সে আপত্তি তুলেছিলো।

“তাযকিরাতুল আউলিয়া” কিতাবে বর্ণিত রয়েছে, এক ওলীআল্লাহ উনার সাথে ইবলিসের দেখা হলো। তিনি তাকে জিজ্ঞাস করলেন, হে ইবলিস! কোন জিনিস তোকে হযরত আদম আলাইহিস সালাম উনাকে সিজদা করতে নিষেধ করলো?

ধূর্ত ইবলিস জবাব দিলো, হুযূর! আমি মহান আল্লাহ পাক উনার বান্দা। আমি মহান আল্লাহ পাক উনাকে ছেড়ে কি করে হযরত আদম আলাইহিস সালাম উনাকে সিজদা করি? উক্ত ওলীআল্লাহ তখন একটু অপ্রস্তুত হলেন। মহান আল্লাহ পাক তিনি সাথে সাথে উনাকে রূহানীভাবে জানিয়ে দিলেন, ‘আপনি বলে দিন, তুই যদি আল্লাহ পাক উনার বান্দা হতি তাহলে মহান আল্লাহ পাক উনার আদেশ অমান্য করতি না।’ ইবলিস সাথে সাথে সে স্থান ত্যাগ করে বললো, ‘সত্যিই আপনি আমাকে জ্বালিয়ে দিয়েছেন।’

তদ্রুপ বলতে হয়, একটি টিভি চ্যানেলে তথাকথিত এক রসূল প্রেমিক এবং তথাকথিত এক সুন্নী সংগঠনের মহাসচিব, মহান আল্লাহ পাক উনার রসূল, সাইয়্যিদুর মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার শানে অনেক কথা বলে থাকেন। অনেক রসূল প্রেম প্রকাশ করে থাকেন। সুন্নীয়ত প্রচার করেন বলে প্রোপাগা-া করে থাকেন।

কিন্তু ইবলিসের ঘটনার আলোকেই বলতে হয়, সত্যিই যদি তিনি রসূর প্রেমিক হয়ে থাকেন, তবে সাইয়্যিদুর মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার হাদীছ শরীফ তিনি অমান্য করেন কিভাবে?

রসূল উনার প্রেম দাবী করবেন

আশেকে রসূল হিসেবে পরিচিতি চাবেন

সুন্নীয়তের ধারক-বাহক হিসেবে প্রতিষ্ঠা চাবেন

কিন্তুসাইয়্যিদুর মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার হাদীছ শরীফ উনাকেই অস্বীকার করবেন অমান্য করবেন

বৃদ্ধাঙ্গুলী দেখাবেন- এটা কি চরম হঠকারিতা, চরম বেয়াদবী এবং শেষ পর্যায়ের জিহালতী ও মুনাফিকী নয়?

উক্ত মহাসচিব ছাহেবের নিজেরই করা ‘বুখারী শরীফ উনার’ একটি অনুবাদ বই-এ সেখানে ছবি তোলার বিরুদ্ধে ও মুনাফিকীর বিবরণ সম্বন্ধে বহু হাদীছ শরীফ উনার উল্লেখ আছে।

(৩)

মহাসচিব ছাহেব রসূল প্রেমের নিদর্শণস্বরূপ মহান আল্লাহ পাক উনার হাবীব, সাইয়্যিদুর মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে ‘নূর’ বলে থাকেন। পবিত্র বলে থাকেন। নূরে মুহম্মদী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি বংশ পরস্পারায় পবিত্র দেহ থেকে পবিত্র দেহে এসেছেন তা তার জানার কথা এবং সেজন্য সাইয়্যিদুর মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পূর্ব-পুরুষগণ উনাদের কেউ কাফির-মুশরিক ছিলেন না, বোধকরি একথাও তার অস্বীকার করার কথা নয়।

তার জানা আছে, হযরত আদম আলাইহিস সালাম উনার দেহ মুবারক সৃষ্টির পর মহান আল্লাহ পাক তিনি রূহ ফুকে দিলেন কিন্তু রূহ ঢুকে আবার বেরিয়ে গেলো। মহান আল্লাহ পাক তিনি তখন নূরে মুহম্মদী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি তন্মধ্যে প্রবেম করালেন রূহ তখন স্বাচ্ছন্দে সেখানে থাকতে লাগলো। কারণ, রূহকে কোন অন্ধকারে রাখা যায় না। রাখতে চাইলে রূহ সেখানে থাকে না।

তাই বলতে হয়, টিভি চ্যানেলে যেখানে নর্তকীরা, গায়িকারা নাচ-গান করে থাকে। যারা মূলত: মহান আল্লাহ পাক উনার শত্রু, মহান আল্লাহ পাক উনার হাবীব, সাইয়্যিদুর মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার শত্রু তথা মু’মিন উনাদের প্রকাশ্য শত্রু ইবলিসের বন্ধু। যারা ইবলিসের বিশিষ্ট মুয়াজ্জিন। মুলত: যাদের আহ্বানেই মুসলমান বর্তমান দ্বীন ইসলাম ছেড়ে এরূপ দুনিয়াদার ও বেআমল হচ্ছে। যাদের কারণেই মুসলমানদের এমন নাজুক অবস্থা। যেসব কথা মহাসচিবও প্রায়ই বলে থাকেন। সেই টিভি চ্যানেলের মত একটা অন্ধকার জায়গায়, একটা হারাম স্থানে, একটা পাপাচার-ব্যভিচারালয়ে কি করে মহাসচিব ছাহেব সাইয়্যিদুর মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার আলোচনা করতে পারেন?

-খন্দকার মুহম্মদ মুসলিম, ঢাকা।

যুগের আবূ জাহিল, মুনাফিক ও দাজ্জালে কায্যাবদের বিরোধিতাই প্রমাণ করে যে, রাজারবাগ শরীফের হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী হক্ব।  খারিজীপন্থী ওহাবীদের মিথ্যা অপপ্রচারের দাঁতভাঙ্গা জবাব-১১         

বৃটিশ গুপ্তচরের স্বীকারোক্তি এবং ওহাবী মতবাদের নেপথ্যে বৃটিশ ভূমিকা-১১

 রাজারবাগ শরীফের হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী আল্লাহ পাক-এর হাবীব হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর হাক্বীক্বী নায়িব ও ওয়ারিছ। তাঁর বিরোধীতাকারীরা মুনাফিক, কাফির ও শয়তানের অনুসারী -১১     

 “হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে নিয়ে সিনেমা”  নিশ্চুপ উলামায়ে ‘ছূ’রা ॥ সর্বাঙ্গে দায়ী তারা 

অবশেষে তথাকথিত ইসলামী জামাতের আমীর নিজামী ও বায়তুল মোকাররামের তথাকথিত খতীব উবায়দুল হক, এরপর এবার মুফতে আমিনীও রাজারবাগ শরীফের তাজদীদ মানতে বাধ্য হলেন