ডিজিটালাইজেশনের নামে শিশু-কিশোরদের ইন্টারনেট ব্যবহারে উৎসাহিত করা হচ্ছে; দেশের ইন্টারনেট জগতে নিয়ন্ত্রণ না থাকায় শিশু-কিশোররা আক্রান্ত হচ্ছে পর্ণোগ্রাফিতে। শিখছে অনৈতিকতা, অশ্লীলতা, হিংস্রতা। সরকারের উচিত- দ্রুত দেশের ইন্টারনেট জগতে কন্টেন্ট ফিল্টারিংয়ের ব্যবস্থা করা। বিশেষ করে শিশু কিশোরদের ইন্টারনেট আগ্রাসন থেকে বাঁচাতে পবিত্র দ্বীন ইসলাম উনার অনুশাসন প্রচার প্রসার করা।

সংখ্যা: ২৭৯তম সংখ্যা | বিভাগ:

 

 

গত জুলাই-২০২০ খ্রিঃ প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে জানা গেছে, ইন্টারনেট ব্যবহারের ঝুঁকিতে রয়েছে বাংলাদেশের শিশুরা। বিশেষ করে শিশু-কিশোররাই এই বিড়ম্বনার শিকার বেশি হচ্ছে। বাংলাদেশে ইন্টারনেট ব্যবহারকারী জনগোষ্ঠীর সংখ্যা ব্যাপকহারে বাড়ছে। গত ১৯ বছরে এই সংখ্যা ৮০০ গুণ বেড়েছে। বাংলাদেশে অনলাইন জনগোষ্ঠীর গড় বয়স ক্রমেই কমছে। এমনকি ১১ বছরের শিশুরাও প্রতিদিন ইন্টারনেটে প্রবেশ ও ব্যবহার করছে। যদিও ছোট শিশুদের তুলনায় বেশি বয়সী শিশুরা অনলাইনে ভয়ভীতির সম্মুখীন হওয়ার বেশি ঝুঁকিতে থাকে। তবে ক্ষতিকর সামগ্রী, যৌন নিগ্রহ ও অপব্যবহার এবং ভয়ভীতির সম্মুখীন হওয়ার ঝুঁকি থেকে শিশুরা কখনোই মুক্ত হচ্ছেনা। বাংলাদেশে ইন্টারনেট ব্যবহারকারী ১০ থেকে ১৭ বছর বয়সী ৩২ শতাংশ শিশু অনলাইন সহিংসতা, অনলাইনে ভয়ভীতি প্রদর্শন ও ডিজিটাল উৎপীড়নের শিকার হওয়ার মতো বিপদের মুখে রয়েছে।

আরেক প্রতিবেদনে জানা গেছে, প্রতিদিন ১ লাখ ৭৫ হাজারের বেশি শিশু প্রথমবারের মতো অনলাইন ব্যবহার করছে। প্রতি আধা সেকেন্ডে একটি শিশু অনলাইন দুনিয়ায় প্রবেশ করছে এবং এতে দেশের ১৩ শতাংশ শিশু-কিশোর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে হয়রানির শিকার হচ্ছে। একাধিকবার হয়রানির শিকার হচ্ছে ৩ দশমিক ৬ শতাংশ। হয়রানির কারণে ৩ দশমিক ৩ শতাংশ শিক্ষার্থী তাদের সোশ্যাল মিডিয়ার অ্যাকাউন্ট বন্ধ করে দিচ্ছে বলে জাতিসংঘের শিশুবিষয়ক সংস্থা (ইউনিসেফ) এর গবেষণায় এ তথ্য উঠে এসেছে। সারাদেশে ইন্টারনেট ব্যবহারকারীর একটা বড় অংশ ১৮ বছরের নিচে বা শিশু-কিশোর। তারা একদিকে যেমন ডিজিটাল জগতে প্রবেশের সুবিধা পাচ্ছে এবং শিশুদের সম্ভাবনাময় ভবিষ্যৎ তৈরি করছে, ঠিক তেমনি ঝুঁকিও বাড়ছে।

জানা গেছে, বাংলাদেশসহ পাশ্ববর্তী দেশের ১০ বছর বয়সী শিশুরা সক্রিয়ভাবে মা-বাবার কাছে তাদের অনলাইন কার্যক্রম লুকানোর চেষ্টা করছে। দেখা গেছে, ১০ বছর বয়সী ৫১ শতাংশ শিশুর নিজের ট্যাবলেট এবং ৩৩ শতাংশের স্মার্টফোন রয়েছে। এর মধ্যে ৪২ শতাংশ শিশু এমন যারা বিশ্বাস করে তারা অনলাইনে কী করছে, সেটি মা-বাবার কাছ থেকে লুকানোর মতো জ্ঞান এবং দক্ষতা তাদের রয়েছে। ১৩ বছর বয়স থেকে এই সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ায় ৭০ শতাংশে। ১০ শতাংশ শিশু তারা অনলাইনে কী করছে সেটি নিয়ে বাবা-মায়ের সঙ্গে কথা বলে না। জরিপে আরো দেখা গেছে, যে সকল শিশুর উপর ইন্টারনেট ব্যবহারের ক্ষেত্রে নিয়ম করে রাখা হয়েছে তার ২৭ শতাংশ বন্ধুর বাড়িতে গিয়ে ইন্টারনেট ব্যবহার করছে। শিশুদের গোপনে ইন্টারনেটের ব্যবহারের ফলে ৪২ শতাংশ শিশু বাজে ভাষা এবং ২৮ শতাংশ হিংস্রতা শিখছে। এছাড়াও ১১ শতাংশ শিশু পর্নোগ্রাফিতে আসক্ত।

গবেষণায় দেখা গেছে, সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশন এবং ইন্টারনেট ট্যাগিংয়ের কারণে ৭৭ শতাংশ শিশু কিশোরদের ইন্টারনেট ব্যবহারের সময় ইনডেক্স করা ৪৫০ মিলিয়ন পর্নোসাইটের পেজগুলো সাজেশন্স হিসেবে চলে আসছে। অর্থাৎ সাধারণ উদ্দেশ্যে তারা ইন্টারনেট ব্যবহার করলেও এসব চরম অশ্লীল ছবি তথা পর্নোসাইটের বিজ্ঞাপন চলে আসছে বা দৃশ্যমান হচ্ছে। এতে শিশু-কিশোররা কৌতুলহলবশত সেসব বিজ্ঞাপনে ক্লিক করছে। আর ক্লিক করলেই তারা প্রবেশ করছে পর্নোগ্রাফির অবাধ রাজ্যে। আর এর ফলে শিশু-কিশোরদের মন অভ্যস্ত হচ্ছে পর্নোগ্রাফি নামক ভয়াল মানসিক বিকারের সাথে। সেইসাথে ইন্টারনেট জগতে অনলাইনেই নানা রকম গেমস ও কার্টুনের প্রভাবে শিশুরা ঝুঁকে পড়ছে সহিংসতার দিকে। গেমস খেলতে খেলতে শিশু-কিশোরদের মধ্যে শুধু জয়ের মাসনিকতা গড়ে উঠছে। পরাজয় মেনে নেয়া বা সইতে পারার মানসিকতা তাদের তৈরি হয় না। ফলে পরাজয় না সইতে পেরে তারা ব্যাপকভাবে হতাশ হয়ে পড়ে। এর প্রভাব পড়ে জীবনের সব কিছুর উপর। এ ধরণের নানা কারণে ইন্টারনেটে আসক্ত শিশু-কিশোররা সামাজিকভাবে বিকশিত হয় না। তাদের মধ্যে এ ধারণা গড়ে উঠে যে, ইন্টারনেট ভিত্তিক গ্রুপগুলোই হলো সবচেয়ে আধুনিক চিন্তা-চেতনার অধিকারী। নিজে যে গ্রুপের সদস্য সেই গ্রুপের চিন্তা-চেতনার বাইরে অন্য কিছু সে ভাবতে পারে না। এ কারণে এক পর্যায়ে তার দৃষ্টিভঙ্গিও একপেশে হয়ে উঠে।

প্রসঙ্গত, এই ডিজিটালাইজেশনের যুগে ইন্টারনেটের বহুল প্রয়োজনীয়তা রয়েছে। কিন্তু ইন্টারনেটের রয়েছে বহুল খারাপ ও ক্ষতিকর দিক। আর এই ক্ষতিকর দিকটিরই শিকার হচ্ছে দেশের শিশু ও কিশোর প্রজন্ম। দেখা যাচ্ছে, বর্তমানে দেশে সম্মানিত দ্বীন ইসলাম উনার কোনো চর্চা না থাকার কারনে যে বয়সে শিশু-কিশোরদের নৈতিক ও ধর্মীয় মূল্যবোধ শিক্ষা দেয়ার কথা সেই বয়সে পিতামাতা তাদের হাতে তুলে দিচ্ছে এ্যান্ড্রয়েড মোবাইল অথবা ট্যাবলেট। এতে করে শিশু কিশোররা সামাজিক মুল্যবোধ ও ধর্মীয় অনুশাসন শিক্ষার বদলে ইন্টারনেটের নানা অপসংস্কৃতি শিক্ষা নিচ্ছে। ইন্টারনেটের নেতিবাচক প্রভাবে শিশু-কিশোরা গভীরভাবে ইন্টারনেটের অশ্লীল দুনিয়ায় বিচরণ করছে। যা ফলস্বরূপ ভবিষ্যৎ প্রজন্ম আক্রান্ত হচ্ছে পর্ণোগ্রাফি নামক ডিজিটাল রোগে। দেশে সুঠাম ও ধর্মীয় মূল্যবোধসম্পন্ন উন্নত ভবিষ্যৎ প্রজন্ম ব্যতিরেকে তৈরী হচ্ছে বিকৃত মষ্ক্রিষ্কের একটি প্রজন্ম। যা সুস্থ্য ও স্বাভাবিক জাতিগঠনের অন্তরায়। অথচ বিভিন্ন দেশে শিশু কিশোদের ইন্টারনেট ব্যবহারের উপর কঠোর নজরদারী করা হচ্ছে। যা বাংলাদেশের ক্ষেত্রে শুন্যের কোঠায়। চীন, অষ্ট্রেলিয়া, ইন্দোনেশিয়া, মালেশিয়া প্রভৃতি দেশে সরকারিভাবে ইন্টারনেটের নানা খারাপ কন্টেন্ট ফিল্টারিংয়ের শক্তিশালী প্রযুক্তি ব্যবহার করা হচ্ছে। এতে করে সেসব দেশের শিশুরা ইচ্ছা করলেও ইন্টারনেটের নেতিবাচক প্রভাব থেকে মুক্ত থাকছে।

বলাবাহুল্য, বাংলাদেশ বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম মুসলিম দেশ। বাংলাদেশের ৯৮ভাগ জনগোষ্ঠী মুসলমান। কিন্তু বাংলাদেশে হাক্বীকী অর্থে সম্মানিত দ্বীন ইসলাম উনার চর্চা থেকে জনগন দুরে থাকার কারনে প্রযুক্তির উৎকর্ষতায় কোনটা হারাম আর কোনটা হালাল সে বিষয়ে সঠিক সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে পারছেনা। নানাবিধ অপসংস্কৃতি পথভ্রষ্ট হয়ে বর্তমানে ডিজিটালাইজেশনের নামে শিশু কিশোরদের অল্প বয়সেই ইন্টারনেটের দিকে ধাবিত করছে। এতে বিপথে যাচ্ছে ভবিষ্যৎ প্রজন্ম। এক্ষেত্রে সরকার যদি যথাযথ উদ্যোগ গ্রহণ করে দেশের ইন্টারনেট জগতে কন্টেন্ট ফিল্টারিংয়ের ব্যবস্থা করে এবং শিশু কিশোরদের ইন্টারনেট ব্যবহারে একটি নির্দিষ্ট বয়সের জন্য আইন প্রণয়ন করে তাহলে দেশের শিশু প্রজন্মকে ইন্টারনেটের এই নেতিবাচক দিক থেকে বাচানো সম্ভব হবে।

-মুহম্মদ ওয়ালীউল্লাহ, ঢাকা।

ব্রিটিশ গুপ্তচরের স্বীকারোক্তি ও ওহাবী মতবাদের নেপথ্যে ব্রিটিশ ভূমিকা-৫০

বাতিল ফিরক্বা ওহাবীদের অখ্যাত মুখপত্র আল কাওসারের মিথ্যাচারিতার জবাব-১৩ হাদীছ জালিয়াতী, ইবারত কারচুপি ও কিতাব নকল করা ওহাবীদেরই জন্মগত বদ অভ্যাস

যুগের আবূ জাহিল, মুনাফিক ও দাজ্জালে কায্যাবদের বিরোধিতাই প্রমাণ করে যে, রাজারবাগ শরীফ-এর হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী হক্ব। খারিজীপন্থী ওহাবীদের মিথ্যা অপপ্রচারের দাঁতভাঙ্গা জবাব-৫১

‘থার্টিফাস্ট নাইট, ভালেন্টাইন ডে আর পহেলা বৈশাখের’ নামে হুজ্জোতির জন্য ধর্মব্যবসায়ীদের কৌশলগত নিষ্ক্রীয়তা, স্বার্থবাদী মৌসুমী রাজনৈতিক তৎপরতা এবং সংস্কৃতি বিপননকারীদের দূরভিসন্ধিতা ও মধ্যবিত্তের  তত্ত্ব-তালাশহীন প্রবণতা তথা হুজুগে মাতা প্রবৃত্তিই দায়ী

অবশেষে জামাতীরা স্বীকার করিল যে, মুক্তি পাইতে চাহিলে মুরীদ হইতে হয়। আল্লাহ পাক-এর ওলী বা দরবেশ হইতে পারিলে মুক্তি পাওয়া যায়। কিন্তু জামাতীরা তাহা নয় বলিয়াই আখিরাত তো দূরের কথা দুনিয়াতেই তাহারা দুর্নীতির দায়ে গ্রেফতার। আর মইত্যা রাজাকারের ফতওয়া অনুযায়ী তো- তাহাকেই কতল করা ওয়াজিব।