তাফসীরুল কুরআন: উলামায়ে ‘ছূ’রা গোমরাহীর মূল হোতা

সংখ্যা: ১৪৩তম সংখ্যা | বিভাগ:

(ধারাবাহিক)

সাইয়্যিদুল আওলিয়া, গাউছুল আ’যম, বড় পীর সাইয়্যিদুনা হযরত আব্দুল ক্বাদীর জিলানী রহমতুল্লাহি আলাইহি উলামায়ে ‘ছূ’ সম্বন্ধে বলেছেন, “হে যুবক ভাইগণ! আল্লাহ পাক ধৈর্যধারণ করছেন। তিনি অত্যন্ত ধৈর্যশীল। সেই জন্যেই আল্লাহ পাক ধর-পাকড় করছেন না। তিনি যখন পাকড়াও করবেন, তাঁর পাকড়াও হবে অত্যন্ত ভয়ংকর। কতগুলি লোক আছে আলিম নামধারী তারা আল্লাহ পাক-এর হুকুম-আহকামের ইলম্ ও জ্ঞান কিছুটা হাছিল করেছে বটে কিন্তু আল্লাহ পাক-এর জ্ঞান হাছিল করেনি। আল্লাহ পাককে চিনেনি, আল্লাহ পাক-এর মা’রিফাত তারা পায়নি। তারা অন্য লোকদের সৎ কাজ করতে আদেশ-উপদেশ দেয় কিন্তু নিজেরা তা করে না। তারা অন্য লোকদের অসৎ কাজ করতে নিষেধ করে কিন্তু নিজেরা অসৎ কাজ হতে বিরত থাকে না। তারা অন্য লোকদেরকে আল্লাহ পাক-এর দিকে আসার জন্য দাওয়াত দেয়, উৎসাহ দেয় কিন্তু নিজেরা আল্লাহ পাক-এর থেকে দূরে ভেগে থাকে। আল্লাহ পাক-এর সামনে আল্লাহ পাক-এর নাফরমানীর কাজ করে। তাদের সকলের নাম আমার কাছে তারিখওয়ারী লেখা আছে।  খররদার! তাদের কারণে আপনারা ধোকা খাবেন না, ধোকায় পড়বেন না। আয় আল্লাহ পাক! আমার গুনাহ্ মাফ করে দিন, তাদেরও গুনাহ্ মাফ করে দিন। হে যুবক বন্ধুগণ! আপনারা আল্লাহ পাককে এবং আল্লাহ পাক-এর খাঁটি আলিম ও আওলিয়াগণকে চিনতে পারেননি, সেই জন্যেই হয়ত আল্লাহ পাক-এর শানে এবং আল্লাহ পাক-এর খাঁটি আলিম ও আওলিয়াগণ-এর শানে কটুক্তি করছেন। কিন্তু সাবধান! আমার কথা শুনুন এবং নিজেদের জীবন গঠন করুন। নিশ্চয়ই জানবেন, আল্লাহ পাক অবশ্যই সত্য। আল্লাহ পাক মিথ্যা নন। আল্লাহ পাক মানুষকে একটি ক্বলব, রূহ, বিবেক ও একটি নফস্ ও মন দান করেছেন। বিবেকের মধ্যে থাকে সত্য এবং আল্লাহ পাক-এর রহস্যাবলী এবং আল্লাহ পাক-এর বিরোধী নানা প্রকার কুপ্রবৃত্তি, কুসংস্কার এবং কুঅভ্যাসাদি। এই ক্বলব ও বিবেকও যাবৎ পর্যন্ত অনাদি অনন্ত চির-জীবন্ত সর্বশক্তিমান আল্লাহ পাক-এর সঙ্গে শক্ত এবং শক্তিশালী যোগাযোগ স্থাপন না করতে পারবে, তাবৎ পর্যন্ত সে কিছুতেই নাজাত এবং মুক্তি লাভ করতে পারবে না। আশ্চর্য আল্লাহ পাক-এর সৃষ্টি রহস্য! একই মুখ দিয়ে বের হয় দুই কথা। নফ্সের মিথ্যা কথা এবং রূহের সত্য কথা। সৎ লোকেরও যেমন একখানা মুখ, চোরের, ধোকাবাজের তেমন একখানা মুখই থাকে। কী সাংঘাতিক ব্যাপার! চেনার উপায় কি? হে ভাইগণ! চেনার অন্য কোন উপায় নেই। অন্য কেউ চিনলেও তাতে তোমার কোন ফায়দা নেই। তোমারই চিনতে হবে কুরআন শরীফ ও হাদীছ শরীফের আলোকে। তুমি একা একা বসে এক আল্লাহ পাককে হাযির নাযির জেনে গভীরভাবে চিন্তা করে দেখ, তুমি কার দাসত্ব করছো? সত্যই তুমি আখিরী রসূল, হাবীবুল্লাহ, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি-এর পদাঙ্ক অনুসরণে আল্লাহ পাক-এর দাসত্ব করছো? না মালের দাসত্ব, নফসের দাসত্ব, প্রবৃত্তির দাসত্ব করে মাল চাচ্ছো? উত্তম খানা, উত্তম পোশাক, উত্তম বিল্ডিং, উত্তম ফার্নিচার, উত্তম ব্যাংক ব্যালেন্স, উত্তম উপাদেয় মিষ্টিখাদ্য উপভোগ, গাড়ী হোক, বাড়ি হোক সব জায়গা থেকে সম্মান আসুক, নেতৃত্ব আসুক, এই চাচ্ছো? এই তোমার মনে? প্রশ্নের উত্তর আমাকে দেয়ার দরকার নেই। গভীর রাতে একা একা বসে চিন্তা কর। এ প্রশ্নের উত্তর আলিমুল গায়িব আল্লাহ পাককে দিতে পারবে কিনা? যদি আল্লাহ পাককে উত্তর দিতে পার যে, তুমি খাঁটি আল্লাহ পাক-এর বান্দা, তবে তো তুমি মু’মিন, নতুবা মুনাফিক। আমি তোমাকে মুনাফিক বলছি না, তুমি নিজের বিচারে, আল্লাহ পাক-এর বিচারে মুনাফিক। সত্য নির্মল ক্বলব ও বিবেক অনবরত সমস্ত সৃষ্টিকে বাদ দিয়ে তাদেরকে পিছনে ফেলে স্রষ্টার দিকে দ্রুত গতিতে ধাবিত হতে এবং সফর করতে থাকে, পথিমধ্যে অনেক রকমের মোহ তাকে টেনে ধরে, কিন্তু সে সবাইকে সালাম করে (এড়িয়ে) আগে চলে যায়, কারো দিকে সে ফিরে চায় না। কেউ তার পথে বাধা দিতে  পারে না। যারা উলামায়ে হক্কানী তাঁরা তাঁদের ইলম্ অনুযায়ী আমল করেন। তাঁরাই প্রকৃত প্রস্তাবে নায়িবে নবী, ছলফে ছালিহীনের ক্বায়িম-মক্বাম এবং কালের শ্রেষ্ঠতম মানুষ। তাঁদের ব্যক্তিগত স্বার্থগত কোন মকছুদ থাকে না। তাঁদের একমাত্র মকছুদ থাকে আল্লাহ পাক-এর দ্বীন জারী, নবী পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর শরীয়ত জারী। সেজন্য তাঁরা জীবনের উপর বিপদ আসলেও জীবনভর কারো পরোয়া না করে আমর বিল মা’রূফ (সৎ কাজে আদেশ) ও নাহী আনিল মুনকার (বদ কাজে নিষেধ) করতে থাকেন। (অসমাপ্ত)

তাফসীরুল কুরআন: পুরুষ জাতিকে নারী জাতির উপর প্রাধান্য দেয়া হয়েছে

  তাফসীরুল কুরআন: পুরুষ জাতিকে নারী জাতির উপর প্রাধান্য দেয়া হয়েছে 

তাফসীরুল কুরআন- পুরুষ জাতিকে নারী জাতির উপর প্রাধান্য দেয়া হয়েছে

তাফসীরুল কুরআন: উলামায়ে ‘ছূ’রা শরীয়ত ও চরিত্র ধ্বংসের মূল হোতা

তাফসীরুল কুরআন: উলামায়ে ‘ছূ’রা শরীয়ত ও চরিত্র ধ্বংসের মূল হোতা