পীরে কামিল, হাফিয, ক্বারী, মুফতী, আলহাজ্ব হযরত মাওলানা মুহম্মদ শামসুদ্দোহা (ধারাবাহিক)
উপরন্তু ফরয হজ্জে ও ছফরের প্রয়োজনে মহিলাদের কোথাও যেতে হলে মাহরাম পুরুষ সঙ্গে থাকা অপরিহার্য। এসব কারণেই আল্লাহ পাক বলেছেন যে, ‘নারী জাতি পুরুষের নিকট থেকে যে বিশেষ সাহায্য ও উপকার প্রাপ্ত হয় তার কৃতজ্ঞতা স্বরূপ সতী-সাধবী, সুশীলা ও পূণ্যবতী নারীগণ স্বামীর অনুগতা হয় এবং প্রাসঙ্গিক বিষয় অর্থাৎ স্ত্রী হিসেবে তার কর্তব্য, সতীত্ব ও পবিত্রতা সযতেœ সংরক্ষণ করে থাকে। আয়াত শরীফে বর্ণিত قنتت ‘ক্বা-নিতা-ত্’ বা অনুগতা অর্থে স্বামীর সর্বাধিক আনুগত্য ও সন্তুষ্টি সাধন এবং ‘হাফিযাতুল লিল্ গইব’ বা প্রাসঙ্গিক বিষয়ের সংরক্ষণ অর্থে স্বামীর অনুপস্থিতি কালে নিজের সতীত্ব ও পবিত্রতা রক্ষা বুঝতে হবে। আর ‘হাফিযাল্লাহ্’ বা আল্লাহ পাক-এর সংরক্ষিত বাক্যের তাৎপর্য হলো, যে নারী নিজের সতীত্ব ও পবিত্রতা সংরক্ষণে যতœশীল, আল্লাহ তায়ালা তৎসংরক্ষণে তাকে সর্বতোভাবে সাহায্য করে থাকেন। نشوز (নুশুয)’ শব্দের আভিধানিক অর্থ অভ্যুত্থান, উত্তোলন এবং এর ভাবার্থ অবাধ্যতা ও বিদ্রোহাচরণ। স্ত্রী যদি স্বামীর বিরুদ্ধে বিদ্রোহ বা শির উত্তোলন করে অথবা ন্যায় সংগত বিষয়ে স্বামীর আদেশ-নিষেধ ও উপদেশ অগ্রাহ্য করতে থাকে কিংবা স্বামীর অনুগামিনী বা শয্যা শায়িনী না হয় অথবা স্বামীর প্রতি বেয়াদবি করে, পিতা-মাতা কিংবা আত্মীয়-স্বজনের গৃহে অবস্থান করে তবে সেই নারীকে ‘নাশাযা’ নামে অভিহিত করা হয়। শরীয়তের নির্দেশানুসারে স্বামী ঐরূপ স্ত্রীর অন্ন-বস্ত্র প্রদানে বাধ্য হবে না।
স্ত্রীর এরূপ অবাধ্যতা ও বিদ্রোহাচরণ স্থলে আলোচ্য আয়াত শরীফে স্বামীর জন্য তিনটি কর্তব্য নির্দেশিত হয়েছে। প্রথমতঃ কোনরূপ কঠোর ব্যবহার না করে স্ত্রীকে উত্তম বাক্যে উপদেশ প্রদানপূর্বক বুঝাতে থাকবে। বুদ্ধিমতী সুশীলা স্ত্রী তাতেই স্বামীর আনুগত্য স্বীকার করবে।
দ্বিতীয়তঃ যদি উপদেশ কার্যকরী না হয় তবে লঘু শাস্তি স্বরূপ তার শয্যা পৃথক করে দিবে। তাকে নিজ শয্যায় শয়ন করতে দিবে না। স্বামীর প্রতি যদি স্ত্রীর ভালবাসা ও আকর্ষণ থাকে তবে তাতেই অনুতপ্তা ও ব্যর্থ হয়ে স্বামীর আনুগত্য স্বীকার করবে।
তৃতীয় বা শেষ পন্থা এই যে, স্ত্রী যদি তাতেও বাধ্য না হয় তবে তাকে প্রহার করবে। তবে মৃদু প্রহার করাই সর্ববাদী সম্মত মত। সাইয়্যিদুনা হযরত ইবনে আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু বলেছেন, ‘কোন কারণে স্ত্রীকে প্রহার করা যদি একান্তই অপরিহার্য হয়ে উঠে তবে তাকে মিসওয়াক, পুস্পশাখা অথবা ঐরূপ কোন লঘু দ্রব্য দ্বারা মৃদুভাবে প্রহার করবে।’ হযরত ইবনে শায়বা এবং বাইহাক্বী সাইয়্যিদুনা হযরত উমর ফারুক্ব রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু-এর বক্তব্য উপস্থাপন করেছেন এ রকম। ঈমানের পর সর্বোচ্চ নিয়ামত হচ্ছে, সচ্চরিত্র স্বামীকে মুহব্বতকারিনী চরিত্রবতী ও সন্তানবতী স্ত্রী। এরূপ মহিয়সী নারীকে অন্য হাদীছ শরীফে
خير من ملك سليمان.
অর্থাৎ- “হযরত সুলাইমান আলাইহিস্ সালাম-এর রাজত্ব অপেক্ষা উত্তম বলা হয়েছে।” আর কুফরীর পর সর্বাপেক্ষা নিকৃষ্ট বস্তু হচ্ছে কর্কশভাষীনী ও অসচ্চরিত্রা স্ত্রী। সাইয়্যিদুনা হযরত উমর ফারুক্ব রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু আরো বলেছেন, মেয়েরা তিন ধরণের। যথা- ১. পবিত্রা, বিনম্রা, সতী ও স্বামী অন্তপ্রাণা, অধিক সন্তানবতী। তারা বিপদে স্বামীর সহযোগিনী হয়। তারা অধিক পার্থিব উন্নতির জন্য লালায়িত হয়না। এরূপ নারী নিতান্তই অল্প। ২. কেবল সন্তান ধারণ ছাড়া যাদের অন্য কোন উল্লেখ্যযোগ্য গুণ নেই। ৩. তৃতীয় প্রকার মেয়েরা হচ্ছে ঘৃণিত। আল্লাহ পাক যাকে ইচ্ছা করেন তার গলায় এদেরকে ঝুলিয়ে দেন। আবার আল্লাহ পাক-এর ইচ্ছাতেই এদেরকে ছেড়ে দেয়া হয়। নতুবা তারা গলদেশে কণ্ঠহারের মতো স্থায়ী হয়ে থাকবে।
তাফসীরুল কুরআন: মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিল আ’ইয়াদ শরীফ পালনই সর্বশ্রেষ্ঠ আমল
তাফসীরুল কুআন পুরুষদেরকে নারীদের উপর শ্রেষ্ঠত্ব দান করা হয়েছে -মাওলানা শামসুদ্দোহা
তাফসীরুল কুআন: পুরুষদেরকে নারীদের উপর শ্রেষ্ঠত্ব দান করা হয়েছে
তাফসীরুল কুরআন পুরুষদেরকে নারীদের উপর শ্রেষ্ঠত্ব দান করা হয়েছে
তাফসীরুল কুরআন: পুরুষদেরকে নারীদের উপর শ্রেষ্ঠত্ব দান করা হয়েছে