তাফসীরুল কুরআন পুরুষদেরকে নারীদের উপর শ্রেষ্ঠত্ব দান করা হয়েছে

সংখ্যা: ১৩১তম সংখ্যা | বিভাগ:

পীরে কামিল, হাফিয, ক্বারী, মুফতী, আলহাজ্ব হযরত মাওলানা মুহম্মদ শামসুদ্দোহা

(ধারাবাহিক)

      শানে নুযূল ঃ (১) হযরত বাগবী রহমতুল্লাহি আলাইহি লিখেছেন, হযরত সা’দ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু-এর স্ত্রী ছিলেন মুহম্মদ বিন মুসলিমার কন্যা। একবার হযরত সা’দ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু-এর স্ত্রী হযরত সা’দ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু-এর কোন হুকুমের বিরুদ্ধে কিছু বলেছিলেন। হযরত সা’দ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তখন রেগে গিয়ে তাঁকে জোরে চপেটাঘাত করেছিলেন। তখন তাঁর শ্বশুর তাঁর স্ত্রীকে আখিরী রসূল, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর মহান দরবার শরীফে হাযির করে বললেন, ইয়া রসূলাল্লাহ, ইয়া হাবীবাল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! আমার এ কন্যাকে আমি সা’দ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু-এর সাথে বিয়ে দিয়েছি। সে আমার মেয়েকে চড় মেরেছে। রসূলে পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, তোমার মেয়েরও প্রতিশোধ গ্রহণ করার অধিকার রয়েছে। সহসা তিনি বলে উঠলেন এখন যাও, হযরত জিবরীল আলাইহিস্ সালাম এসেছেন। ইতোমধ্যে হযরত জিবরীল আলাইহিস্ সালাম এই আয়াত শরীফ নিয়ে নাযিল হলেন। এরপর রসূলে পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম স্ত্রীদের প্রতিশোধ গ্রহণের অধিকার রহিত করে দিলেন। (২) সাইয়্যিদুনা হযরত আলী রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু থেকে ইবনে মারদুবিয়া লিখেছেন, এক আনছার ছাহাবী রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু তাঁর স্ত্রীকে নিয়ে রসূলে পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর মহান দরবার শরীফে হাযির হলে তাঁর স্ত্রী বললেন- ‘ইয়া রসূলাল্লাহ, ইয়া হাবীবাল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! উনি আমাকে মেরেছেন। আমার চেহারায় দাগ পড়ে গেছে।’ উম্মত দরদী নবী পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, ‘তার এ অধিকার নেই।’ এমন সময় আল্লাহ পাক এ আয়াত শরীফ নাযিল করলেন যে, স্ত্রীদের আদব শিক্ষা দেয়ার অধিকার রয়েছে স্বামীদের। তাশরীহ্ঃ আয়াত শরীফে বর্ণিত قولمون অর্থ সুপ্রতিষ্ঠিত, অটলভাবে দণ্ডায়মান, তত্ত্বাবধানকারী, প্রভু, প্রতিপালক, পৃষ্ঠপোষক, সংরক্ষক ও গৌরবান্বিত। বিভিন্ন তাফসীরকারক এ শব্দটির ভিন্ন ভিন্ন অর্থ গ্রহণ করেছেন।  ‘তাফসীরে জালালাইন শরীফে’ قوامون অর্থ مسلطون বা ক্ষমতাবান করা হয়েছে। কিন্তু প্রকৃত প্রস্তাবে قوامون শব্দের মধ্যে রূতবা বা শ্রেষ্ঠত্ব, গৌরব, প্রতিপালন, তত্ত্বাবধান ও সংরক্ষণের সমস্তভাবই নিহিত আছে।   অবশ্য এতে কোন সন্দেহ নেই যে, এ আয়াত শরীফে স্ত্রী জাতির উপর পুরুষের শ্রেষ্ঠত্ব, গৌরব ও দায়িত্ব বিশেষভাবে বিঘোষিত হয়েছে। কারণ, আয়াত শরীফেই বর্ণিত হয়েছে যে, ‘আল্লাহ পাক তাদের মধ্যে একজনকে অপরের উপর রূতবা মণ্ডিত বা গৌরবান্বিত করেছেন।’ অবশ্য একথাও সত্য যে, জিনস্ বা জাতি হিসেবে পুরুষরা মহিলাদের অপেক্ষা উত্তম; কিন্তু পুরুষ জাতির  প্রতিজন, মহিলা জাতির প্রতিজন অপেক্ষা উত্তম নয়। যেমন, আমরা লক্ষ-কোটি পুরুষ সাইয়্যিদাতুনা হযরত আয়িশা ছিদ্দীকা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহা এবং সাইয়্যিদাতুনা হযরত ফাতিমা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহা-এর না’লাইন শরীফাইনের সমতুল্যও নই। আল্লাহ পাক তাঁদের মুহব্বত, তাওয়াজ্জুহ, জিয়ারত ও শাফায়াত আমাদের নছীব করুন। (আমীন)

তবে ঐ উক্তি আম বা সাধারণভাবে নারী জাতির উপর পুরুষের শ্রেষ্ঠত্ব বিঘোষক। এর কারণও ঐ স্থানেই বিবৃত হয়েছে, “যেহেতু তারা স্বীয় ধন-সম্পদ হতে ব্যয় করে থাকে।’ উপরোক্ত নানা কারণে নারী জাতির উপর পুরুষ জাতির শ্রেষ্ঠত্ব বিদ্যমান। যথা পুরুষরাই স্ত্রী জাতির পৃষ্ঠপোষক, সংরক্ষক ও আশ্রয়দাতা। নারী যতই শিক্ষিতা, স্বাধীনা বা স্বাবলম্বিনী হোক না কেন, পুরুষের সহযোগিতা, সংরক্ষণ, আশ্রয় ও সাহায্য ব্যতীত তার পক্ষে সংসারে সু-প্রতিষ্ঠিত হওয়া বা নিরাপদে টিকে থাকা সম্পূর্ণ অসম্ভব। পুরুষের সহযোগিতা বা সংসর্গ ব্যতীত নারীর জীবন সম্পূর্ণ ব্যর্থ ও নিস্ফল।

 বলাবাহুল্য যে, পুরুষ হলো আসল বা মূল। আর নারী হলো ফারা বা শাখা। কারণ, হযরত আদম আলাইহিস্ সালাম-এর বক্ষস্থিত হাড় মুবারক দিয়েই সাইয়্যিদাতুনা হযরত হাওয়া আলাইহাস্ সালাম সৃষ্ট হয়েছেন। আর বিচ্ছিন্নভাবে না হলেও সামগ্রিকভাবে শাখার চেয়ে মূল তো উত্তম হওয়াই বাঞ্ছনীয়।

তাফসীরুল কুরআন: মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিল আ’ইয়াদ শরীফ পালনই সর্বশ্রেষ্ঠ আমল

তাফসীরুল কুআন পুরুষদেরকে নারীদের উপর শ্রেষ্ঠত্ব দান করা হয়েছে -মাওলানা শামসুদ্দোহা

তাফসীরুল কুআন: পুরুষদেরকে নারীদের উপর শ্রেষ্ঠত্ব দান করা হয়েছে

তাফসীরুল কুরআন পুরুষদেরকে নারীদের উপর শ্রেষ্ঠত্ব দান করা হয়েছে

তাফসীরুল কুরআন: পুরুষদেরকে নারীদের উপর শ্রেষ্ঠত্ব দান করা হয়েছে