তাফসীরুল কুরআন: পুরুষ জাতিকে নারী জাতির উপর প্রাধান্য দেয়া হয়েছে

সংখ্যা: ১৩৫তম সংখ্যা | বিভাগ:

  ولاتتمنوا ما فضل الله به بعضكم على بعض للرجال نصيب مما اكتسبوا وللنساء نصيب مما اكتسبن وسئلوا الله من فضله ان الله كان بكل شئ عليما.

 তরজমাঃ “যা দিয়ে আল্লাহ পাক তোমাদের কাউকেও কারো উপর ফযিলত দান করেছেন, তোমরা তার তামান্না করোনা। পুরুষ যা অর্জন করে তা তার প্রাপ্য অংশ এবং নারী যা অর্জন করে তা তার প্রাপ্য অংশ। আল্লাহ পাক-এর অনুগ্রহ প্রার্থনা করো, নিশ্চয়ই আল্লাহ পাক সব বিষয়ে সর্বজ্ঞ।” (সূরা নিসা/৩২) সম্পর্কঃ প্রথমতঃ ইতোপূর্বে বলা হয়েছিলো যে, একে অপরের ধন-সম্পদ অন্যায়ভাবে ভক্ষণ করোনা; আর এখন এক ধাপ অগ্রসর হয়ে বলা হচ্ছে যে, কারো ধন-সম্পদ ও অন্যান্য বিষয় সামগ্রী অন্যায় পথে হস্তগত করার ধারণাও করোনা। কারণ, অন্যায় পথে ভক্ষণ করা বাহ্যিক ত্রুটি ও অপরাধ যা সরকারী আইন দ্বারাও বাধা দেয়া যায়; কিন্তু মিথ্যা ধারণা হলো আভ্যন্তরীণ দোষ যা আল্লাহ পাক-এর ভয় ও রসূলে পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর ইশ্কই বাধা দিতে সক্ষম। উপরন্তু বাহ্যিক চিকিৎসা সহজ কিন্তু অন্তরের চিকিৎসা কঠিন। এজন্যই সহজ চিকিৎসার বর্ণনা প্রথমে আর কঠিন চিকিৎসার বর্ণনা পরে বলে দেয়া হচ্ছে। দ্বিতীয়তঃ পূর্বের আয়াতগুলোতে নাজায়িয বা হারাম পথে অন্যের জান-মালের ক্ষতি, অপহরণ অথবা আত্মসাৎ করতে নিষেধ করা হয়েছিল আর এখানে ঐ নোংরা স্বভাবের মূল অর্থাৎ হাসাদ বা হিংসা-বিদ্বেষের বিরুদ্ধে বলা হয়েছে। অর্থাৎ হাসাদ হলো অসংখ্য অন্যায়-অপরাধের উৎস। তাই ঐ উৎসমুখের পথ বন্ধের পরামর্শ দেয়া হলো এ আয়াত শরীফে। তৃতীয়তঃ পূর্ববর্তী আয়াত শরীফে বলা হয়েছিল “যদি তোমরা কবীরা গুণাহ্ থেকে বাঁচতে পারো, তাহলে আল্লাহ পাক তোমাদের ছগীরা গুণাহও ক্ষমা করে দিবেন। আর অত্র আয়াত শরীফে উদাহরণস্বরূপ বর্ণিত হয়েছে যে, যদি তোমরা হাসাদ, কীনা, বুগ্দ্ব ইত্যাদি  বড় বড় দোষ-ত্রুটি থেকে বাঁচতে পারো তাহলে আল্লাহ পাক তোমাদের ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র দোষ-ত্রুটিগুলো থেকে বাঁচিয়ে দিবেন।

১। শানে নুযূলঃ

  نزلت لما قالت ام سلمة رضى الله تعالى عنها ليتنا كنا رجالا فجاهدنا وكان لنا مثل اجر الرجال.

 সাইয়্যিদাতুনা হযরত উম্মু সালামা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহা বলেছেন, হায়! যদি পুরুষ হতাম তবে আমরাও যুদ্ধ করতে পারতাম এবং পুরুষদের ন্যায় আমরাও পূন্য লাভ করতে পরতাম।’ এ উপলক্ষ্যে আল্লাহ তায়ালা উক্ত আয়াত শরীফ নাযিল করেন। (জালালাইন শরীফ) ২। যখন মীরাছ বা উত্তরাধিকার সম্পদ বন্টন সংক্রান্ত আয়াত শরীফ নাযিল হলো, তখন কতিপয় পুরুষ বললেন, যেভাবে পৃথিবীতে আমাদের উত্তরাধিকার সম্পত্তির অংশ মহিলাদের দ্বিগুণ তেমনি আখিরাতেও আমাদের নেকী বা ছওয়াব তাদের থেকে দ্বিগুণ হবে। এ বক্তব্যের বিপরীতে মহিলাগণও বললেন, যেভাবে পৃথিবীতে আমাদের অংশ পুরুষদের অর্ধেক, সাক্ষ্যও অর্ধেক, তেমনি আখিরাতেও আমাদের অপরাধের শাস্তি পুরুষদের অর্ধেক হবে। তখন এ আয়াত শরীফ নাযিল হয়। এ কথা বলেছেন হযরত ইমাম সুদ্দী রহমতুল্লাহি আলাইহি। ৩। যখন মীরাছের আয়াত শরীফে পুরুষদের অংশ মহিলাদের চেয়ে দ্বিগুণ বলে বর্ণিত হলো, তখন মহিলাগণ আরজ করলেন, ইয়া রসূলাল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! মহিলারা যেহেতু দুর্বল, কামাই-রোযগার করতে পারেনা, পুরুষরা তো শক্তিশালী, তারা কামাই-রোযগার করতে পারে। আমরা মহিলারা দুর্বল, আর দুর্বলদের অংশ বেশী হওয়াই যুক্তিযুক্ত, তখন এ আয়াতে কারীমা নাযিল হয়।  ৪। একজন স্ত্রী লোক  এসে নবীয়ে পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর মহান দরবার শরীফে আরজ করলেন, পুরুষ ও মহিলার রব এক। রসূল এক, পিতা হযরত আদম আলাইহিস্ সালাম এক, মাতা হযরত হাওয়া আলাইহাস্ সালামও এক। কিন্তু কুরআন শরীফের স্থানে স্থানে পুরুষদের কথা বর্ণিত হলেও মহিলাদের বর্ণনা নেই বললেই চলে। উপরন্তু, পুরুষদেরকে যুদ্ধে অংশগ্রহণ করার অনুমতি দেয়া হয়েছে, ফলে, তারা শহীদ বা গাযী হওয়ার সুযোগ পেয়েছেন কিন্তু মহিলাদের জন্য সেই সুযোগ নেই। উত্তরে অঁক্বায়ে নামদার হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করলেন, একজন হামেলা স্ত্রী, দিনে রোযা ও রাতভর নামায পড়ার ছওয়াব পেতে থাকেন, তাঁর গর্ভের সন্তান প্রসব করা পর্যন্ত। তারপর প্রসবের জন্য বেহিসাব ছওয়াব এবং প্রতি ঢোক বুকের দুধ পান করানোর জন্য একটা প্রাণ বাঁচানোর ছওয়াব পেয়ে থাকেন। তখন এ আয়াত শরীফ নাযিল হয়ে রসূলুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর ইচ্ছার বাস্তব প্রতিফলন জানিয়ে দেয়া হলো। (তাফসীরে কবীর, রুহুল মায়ানী, খাযিন, বায়যাবী, রুহুল বয়ান ইত্যাদি) (চলবে)

তাফসীরুল কুরআন ক্বমীছ বা কোর্তা মুবারকের বুযুর্গী

তাফসীরুল কুরআন মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিল আ’ইয়াদ শরীফ পালনই সর্বশ্রেষ্ঠ আমল

 তাফসীরুল কুরআন ক্বমীছ বা কোর্তা মুবারকের বুযুর্গী

 তাফসীরুল কুরআন: হিদায়েত আসার পরও অহংকারবশতঃ যারা হিদায়েত গ্রহণ করলনা তারা জাহান্নামী

তাফসীরুল কুরআন: হিদায়েত আসার পরও অহংকারবশতঃ যারা হিদায়েত গ্রহণ করলনা তারা জাহান্নামী