তাফসীরুল কুরআন: বদ আক্বীদাভুক্ত, বদ নছীবের দল শরীয়তের অকাট্য দলীলকেই মূল্যায়ণ করতে পারে না, আমীরুশ্ শরীয়তকে কি করে মূল্যায়ন করবে? – ২

সংখ্যা: ১৪৬তম সংখ্যা | বিভাগ:

لا خير فى كثير من نجوهم الا من امر بصدقة او معروف او اصلاح بين الناس ومن يفعل ذلك ابتغاء مرضات الله فسوف نؤتيه اجرا عظيما. ومن يشاقق الرسول من بعد ما تبين له الهدى ويتبع غير سبيل المؤمنين نوله ما تولى ونصله جهنم وساءت مصيرا.

তরজমাঃ “তাদের অধিকাংশ গোপন পরামর্শে তাদের কোনই কল্যাণ নেই। তবে, যে ব্যক্তি দান-খয়রাত, সৎকাজ ও মানুষের মধ্যে মিমাংসার বা শান্তি স্থাপনের পরামর্শ দেয়- তাতেই একমাত্র কল্যাণ নিহিত আছে। আর আল্লাহ পাক-এর রিদ্বা বা সন্তুষ্টি লাভের আকাঙ্খায় যে ব্যক্তি ঐ সব কাজ করবে, অচিরেই তাকে মহা পুরুষ্কার প্রদান করবো। আর কারো কাছে সৎপথ প্রকাশিত হওয়ার পর সে যদি রসূলে পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর বিরুদ্ধাচরণ করে এবং মু’মিনের পথ ছাড়া অন্যপথ অনুসরণ করে, সে যেদিকে ফিরে যেতে চায় আমি তাকে সেদিকেই ফিরিয়ে দেবো এবং জাহান্নামে তাকে দগ্ধ করবো আর তা কতোইনা মন্দ আবাস।” (সূরা নিসা-১১৪, ১১৫) বলাবাহুল্য যে, معروف ‘মা’রূফ’ শব্দের দ্বারা সকল নেক কাজের কথা এসে গেলেও খাছ করে اصلاح بين الناس ‘ইছলাহিম বাইনান নাস’ বা মানুষের মধ্যে শান্তি স্থাপন- এ কথা বলার কারণ হলো বিবাদমান সম্প্রদায়ের মধ্যে সখ্যতা স্থাপন অনেক বড় নেক আমল এবং এর ছওয়াবও অনেক বেশি।

‘আবু দাউদ শরীফ’ ও ‘তিরমিযী শরীফে’ সাইয়্যিদুনা হযরত আবু দারদা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু থেকে বর্ণিত হয়েছে, রসূলুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, “আমি কি তোমাদেরকে ওই কথা জানাবো না, যা ক্বিয়ামতের দিন হবে নামায অপেক্ষাও অধিক মর্যাদা মন্ডিত। রাবী বলেন, আমরা আরজ করলাম, নিশ্চয়ই বলুন, ইয়া রসূলাল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! তিনি বললেন, মানুষের মধ্যে সন্ধি স্থাপন করো। পারস্পরিক বিবাদ নেককে ধ্বংস করে।” আল্লাহ পাক এখানে যে মহাপুরুষ্কারের শুভ সংবাদ দিয়েছেন, তা পৃথিবী এবং পৃথিবী মধ্যস্থিত সকল সম্পদ অপেক্ষা উত্তম। সাইয়্যিদুনা হযরত আনাস রদ্বিয়াল্লাহু তায়লা আনহু কর্তৃক বর্ণিত হয়েছে, আল্লাহ পাক-এর রসূল, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেছেন, “আল্লাহ পাক ঐ ব্যক্তির উপর রহমত বর্ষণ করুন, যে কল্যাণজনক কথা বলে অথবা নীরব থাকে। এ ধরনের ব্যক্তি ক্ষতি থেকে সুরক্ষিত।” নেককারদের মহাপুরষ্কারের শুভ সংবাদ দেয়ার পর আসছে বদকারদের শাস্তির কথা। ইরশাদ হচ্ছে, ‘হুদা’ বা সৎপথ প্রকাশিত হওয়ার পর ঐ নির্দেশের বিরুদ্ধাচরণ করার অর্থ হলো রসূলের বিরুদ্ধাচরণ। নিশ্চিত ও অকাট্য অবহিতির কথা উল্লেখ করার কারণ হলো, যারা রসূলের নির্দেশ সম্পর্কে জানে না অথবা নির্ভরযোগ্য নয় এমন কোন অস্পষ্ট নির্দেশ অবগত হয়, তাদেরকে নির্দেশ লংঘনকারী বলা যাবেনা। আবার সর্বাত্মক চেষ্টা করা সত্বেও হাদীছ শরীফের মর্ম বুঝতে গিয়ে যদি কোন উলুল আমর বা মুজতাহিদের ইজতিহাদী বা গবেষণা ভুল হয়ে যায়, তবে তাকেও নির্দেশ বিরোধী বলা যাবে না। من بعد ما تبين له الهدى. (অর্থাৎ কারো কাছে সৎপথ প্রকাশিত হওয়ার পর) এ বাক্যাংশ দ্বারা বুঝা যাচ্ছে যে, ১। আলিম ব্যক্তির গুণাহ, জাহিলের গুণাহ অপেক্ষা মারাত্মক। কারণ, আলিম জেনে বুঝেই অপরাধ করছে  ২। শরয়ী মাসয়ালা-মাসায়িল, দলীল-প্রমাণ দ্বারা জেনে নেয়া উচিৎ- শুধু নিজের রায়ের দ্বারা নয়। বিশ্বাসীদের পথ ব্যতীত অন্য পথ অনুসরণ করার অর্থ মু’মিনগণের ইজমা বা ঐক্যমতের বিরুদ্ধাচারী হওয়া। রসূলের বিরুদ্ধাচারী আর মু’মিনের পথবিচ্যুত যারা, তাদের সম্পর্কে আয়াত শরীফে বলা হচ্ছে- আল্লাহ পাক তাদেরকে বাধা দিবেন না বরং তারা যেদিকে যেতে চায় সেদিকেই যেতে দিবেন। এ কথার অর্থ পৃথিবীতে যে যার প্রতি সমর্থন রাখবে, আখিরাতে আল্লাহ পাক তাকে তারই সঙ্গী করে দিবেন। (অসমাপ্ত)

তাফসীরুল কুরআন: উলামায়ে ‘ছূ’রা শরীয়ত ও চরিত্র ধ্বংসের মূল হোতা

তাফসীরুল কুরআন: উলামায়ে ‘ছূ’রা গোমরাহীর মূল হোতা

তাফসীরুল কুরআন: উলামায়ে ‘ছূ’রা গোমরাহীর মূল হোতা

তাফসীরুল কুরআন: উলামায়ে ‘ছূ’রা গোমরাহীর মূল হোতা

তাফসীরুল কুরআন: উলামায়ে ‘ছূ’রা গোমরাহীর মূল হোতা