لا خير فى كثير من نجوهم الا من امر بصدقة او معروف او اصلاح بين الناس ومن يفعل ذلك ابتغاء مرضات الله فسوف نؤتيه اجرا عظيما. ومن يشاقق الرسول من بعد ما تبين له الهدى ويتبع غير سبيل المؤمنين نوله ما تولى ونصله جهنم وساءت مصيرا.
তরজমাঃ “তাদের অধিকাংশ গোপন পরামর্শে তাদের কোনই কল্যাণ নেই। তবে, যে ব্যক্তি দান-খয়রাত, সৎকাজ ও মানুষের মধ্যে মিমাংসার বা শান্তি স্থাপনের পরামর্শ দেয়- তাতেই একমাত্র কল্যাণ নিহিত আছে। আর আল্লাহ পাক-এর রিদ্বা বা সন্তুষ্টি লাভের আকাঙ্খায় যে ব্যক্তি ঐ সব কাজ করবে, অচিরেই তাকে মহা পুরুষ্কার প্রদান করবো। আর কারো কাছে সৎপথ প্রকাশিত হওয়ার পর সে যদি রসূলে পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর বিরুদ্ধাচরণ করে এবং মু’মিনের পথ ছাড়া অন্যপথ অনুসরণ করে, সে যেদিকে ফিরে যেতে চায় আমি তাকে সেদিকেই ফিরিয়ে দেবো এবং জাহান্নামে তাকে দগ্ধ করবো আর তা কতোইনা মন্দ আবাস।” (সূরা নিসা-১১৪, ১১৫)
তায়াল্লুকঃ পূর্ববর্তী আয়াত শরীফে ইরশাদ হয়েছিল যে, হে রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! আপনার প্রতি আল্লাহ পাক-এর বিরাট অনুগ্রহ রয়েছে। এখন বর্ণনা করা হচ্ছে, যে ব্যক্তি আপনার ক্বদম মুবারকের সাথে সংশ্লিষ্ট সেও ঐ ফযল বা অনুগ্রহ থেকে হিস্সা পেয়ে যাবে। আর যে ব্যক্তি আপনার থেকে পৃথক হবে, সে হালাক হয়ে যাবে। যেমন তু’মা বিন উবাইরিক-এর অবস্থা হয়েছে, তার দুরভিসন্ধির কারণে। উপরন্তু, পূর্ববর্তী আয়াতে কারীমায় কিতাব ও হিকমত তথা সুন্নতের বর্ণনা ছিল আর অত্র আয়াত শরীফে তার উপর আমল করার উপকারিতা এবং আমল না করার ক্ষতির কথা বর্ণণা করা হচ্ছে। শানে নুযুলঃ তু’মা বিন উবাইরিক চুরি করেছিল এবং তার চুরি প্রমাণিত হলে, হাত কাটা যাওয়ার ভয়ে সে মুরতাদ হয়ে পালিয়ে গিয়েছিল মক্কায়। অতঃপর সে কুফর ও শিরক ইখতিয়ার করেছিল। তার সম্পর্কেই পরবর্তী ১১৫নং আয়াত শরীফ নাযিল হয়। তাশরীহঃ শুভ্রèব্জ ‘নাজওয়া’ শব্দটি গোপন পরামর্শ বা গোপন ভেদ বুঝানোর জন্য ব্যবহৃত হয়েছে। যে কোন দল প্রকাশ্যে অথবা গোপনে এককভাবে যে সব উদ্যোগ নিয়ে থাকে মূলতঃ তাকেও নাজওয়া’ বলা হবে। এ ধরনের গোপন পরামর্শ বা উদ্যোগ অধিকাংশই কল্যাণহীণ। হযরত মুজাহিদ রহমতুল্লাহি আলাইহি বলেছেন, এখানে ঘোষণাটি সাধারণ অর্থবোধাক। অর্থাৎ কেবল ইবনু উবাইরিক গোষ্ঠী নয় সকল মানুষের গোপন শলাপরামর্শের কথাই এখানে উল্লেখ করে বলা হয়েছে যে, এ সকল পরামর্শের অধিকাংশই কল্যাণ রহিত। অবশ্য যারা সৎকর্মশীল, দানশীল এবং শান্তিকামী, তারা এর ব্যতিক্রম। এখানে দানশীলতার পর ‘মা’রূফ’ বা সৎকর্মের কথা বলা হয়েছে। মারূফ অর্থ শরীয়ত সমর্থিত সৎকর্ম। দান-খয়রাত অর্থ ফরয যাকাত। আর ‘মা’রূফ’ অর্থ ঋণ, নফল বা অতিরিক্ত ছদ্কা ও বিপদগ্রস্তকে সাহায্য করাও হতে পারে। আর শান্তি স্থাপন বুঝাতে এখানে ‘ইছলাহ’ শব্দটি এসেছে। সাধারণভাবে নেককাজ সম্পাদন এবং বিশেষভাবে মানুষের মধ্যে সন্ধি স্থাপনের কথা বলা হয়েছে এখানে। বিষয় দু’টোর গুরুত্ব তুলে ধরাই এ রকম পৃথক উল্লেখের কারণ। তবে, দান-খয়রাত, সৎকর্ম এবং শান্তি স্থাপন করতে হবে আল্লাহ পাক-এর রিযামন্দী বা সন্তুষ্টি লাভের উদ্দেশ্যেই। আর যে এরকম করবে সে লাভ করবে মহাপুরষ্কার। ফলে যারা এসব কর্মের পরামর্শ দেয় তারা কল্যাণহীন গোপন পরামর্শদাতাদের অন্তর্ভূক্ত হবে না। কারণ, তারা সুনাম, সুখ্যাতি বা লোক দেখানোর জন্য আমল করেন না। যেহেতু বুখারী শরীফ, মুসলিম শরীফ ও মিশকাত শরীফে বর্ণিত হয়েছে- من سمع سمع الله به.
অর্থঃ “যে সুনাম-খ্যাতি অর্জনের জন্য কাজ করবে, আল্লাহ পাক তার দোষ-ত্রুটি লোক সমাজে প্রকাশ করে দিবেন।” (অসমাপ্ত)
তাফসীরুল কুরআন: উলামায়ে ‘ছূ’রা শরীয়ত ও চরিত্র ধ্বংসের মূল হোতা
তাফসীরুল কুরআন: উলামায়ে ‘ছূ’রা গোমরাহীর মূল হোতা
তাফসীরুল কুরআন: উলামায়ে ‘ছূ’রা গোমরাহীর মূল হোতা