তাফসীরুল কুরআন: বদ আক্বীদাভুক্ত, বদ নছীবের দল শরীয়তের অকাট্য দলীলকেই মূল্যায়ণ করতে পারে না, আমীরুশ শরীয়তকে কি করে মূল্যায়ন করবে? – ৩

সংখ্যা: ১৪৭তম সংখ্যা | বিভাগ:

لا خير فى كثير من نجوهم الا من امر بصدقة او معروف او اصلاح بين الناس ومن يفعل ذلك ابتغاء مرضات الله فسوف نؤتيه اجرا عظيما. ومن يشاقق الرسول من بعد ما تبين له الهدى ويتبع غير سبيل المؤمنين نوله ما تولى و نصله جهنم وساءت مصيرا.

তরজমাঃ  “তাদের অধিকাংশ গোপন পরামর্শে তাদের কোনই কল্যাণ নেই। তবে, যে ব্যক্তি দান-খয়রাত, সৎকাজ ও মানুষের মধ্যে মিমাংসার বা শান্তি স্থাপনের পরামর্শ দেয়- তাতেই একমাত্র কল্যাণ নিহিত আছে। আর আল্লাহ পাক-এর রিদ্বা বা সন্তুষ্টি লাভের আকাঙ্খায় যে ব্যক্তি ঐ সব কাজ করবে, অচিরেই তাকে মহা পুরষ্কার প্রদান করবো। আর কারো কাছে সৎপথ প্রকাশিত হওয়ার পর সে যদি রসূলে পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর বিরুদ্ধাচরণ করে এবং মু’মিনের পথ ছাড়া অন্যপথ অনুসরণ করে, সে যেদিকে ফিরে যেতে চায় আমি তাকে সেদিকেই ফিরিয়ে দেবো এবং জাহান্নামে তাকে দগ্ধ করবো আর তা কতোইনা মন্দ আবাস।” (সূরা নিসা-১১৪, ১১৫) ইমামুল আদিল, সাইয়্যিদুনা হযরত উমর ইবনু আব্দুল আজিজ রহমতুল্লাহি আলাইহি বলেন, “রসূলে পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর বিছাল শরীফের পর তাঁর খলীফাগণ কতিপয় তরীক্বা নির্ধারণ করে দিয়েছেন। ঐ সকল পদ্ধতিকে মান্য করলে মানুষের সত্যানুসরণ ও দ্বীনদারী শক্তিশালী ও কামিল হয়।”  খোলাফায়ে রাশিদীন প্রবর্তিত ঐ সকল সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে কারো কিছু চুঁ চেরা ক্বীল ও ক্বাল করার অনুমতি নেই। এমনকি, সিদ্ধান্তগুলোর পুনর্বিবেচনা করার চিন্তা করাও নিষিদ্ধ। ঐ সব সিদ্ধান্তকে যে মান্য করবে, সে আল্লাহ পাক কর্তৃক সাহায্য প্রাপ্ত হবে। যে মান্য করবে না, সে হবে মু’মিনদের পথ থেকে বিচ্যুত।  তার এ বিচ্যুতির পরিণাম হবে জাহান্নাম। আর জাহান্নাম অত্যন্ত নিকৃষ্ট বাসস্থান। অর্থাৎ ইজমায়ে উম্মত হলো দলীলে ক্বিতয়ী বা অকাট্য প্রমাণ- যার অস্বীকার সরাসরি কুফরী এবং তা রসূলের বিরোধিতার কুফরীর মতোই গণ্য হবে। কারণ, আল্লাহ পাক নবীজির বিরোধিতার শাস্তি ও ইজমার বিরোধিতার শাস্তি একই অর্থাৎ জাহান্নাম বলে ঘোষণা করেছেন। রসূলের বিরুদ্ধাচরণ যেমন নিষিদ্ধ-হারাম, তেমনি ইজমা, বা ঐক্যমতের বিরুদ্ধাচরণও নিষিদ্ধ-হারাম। সুতরাং মেনে নিতে হবে যে, ইজমা বা ঐক্যমতের অনুসরণ ওয়াজিব। এজন্যই সাইয়্যিদুনা হযরত ইবনু আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু থেকে বায়হাক্বী ও তিরমিযী শরীফে বর্ণিত রয়েছে, রসূলে পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, “আল্লাহ পাক এই উম্মতকে ভুলের উপর একত্র করবেন না।” বুঝা গেল, তাকলীদে আইম্মাহ অপরিহার্য। কেননা, তা আম বা সাধারণ মুসলমানদের রাস্তা। সমস্ত আউলিয়া, উলামা, মুহাদ্দিছীন, মুফাস্সিরীন মুকাল্লিদ ছিলেন ও আছেন। তাঁদের বিরোধিতা করে গইরি মুকাল্লিদ হওয়া মানেই মুসলমানদের প্রশস্ত রাস্তা ত্যাগ করে অন্য সংকীর্ণ রাস্তার অনুগামী হয়ে জাহান্নামের রাস্তা পরিষ্কার করা। বলা বাহুল্য যে, যারা আপাত- মধূর শ্লোগানে আকৃষ্ট হয়ে মুগ্ধ ও বূদ হয়ে থাকে তথা গোমরাহীর উপর দৃঢ় থাকে তাদের চোখে আঙ্গুল দিয়ে অকাট্য দলীল-প্রমাণ পেশ করলেও তারা হেদায়েত গ্রহণ করতে পারবেনা। এজন্যই মক্কা শরীফের কাফির ও মুশরিক গোষ্ঠী এবং মদীনা শরীফের মুনাফিক গোষ্ঠী পাষাণ- পাথরের তৈরি মুর্তিকে খোদা মেনে পূজা করা পছন্দ করতো; অথচ আল-আমীন লক্ববে ভূষিত হুযূর পাক পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর ন্যায় ব্যক্তিত্বকে রসূল মানতে অস্বীকার করতো। বুঝা গেল, কপাল যখন বদ আক্বীদার আগুণে পুড়ে, তখন জাহান্নামের আগুণকেই মনে হয় আলেয়ার ন্যায় আলো। সঙ্গত কারণেই আল্লাহ পাকও তাদেরকে বিদ্রুপাত্মক ভাষায় বলেছেন, فبشرهم بعذاب اليم. অর্থঃ- “অতএব, তাদেরকেও যন্ত্রণাদায়ক শাস্তির সুসংবাদ দিয়ে দাও।” (সমাপ্ত)

তাফসীরুল কুরআন: উলামায়ে ‘ছূ’রা শরীয়ত ও চরিত্র ধ্বংসের মূল হোতা

তাফসীরুল কুরআন: উলামায়ে ‘ছূ’রা গোমরাহীর মূল হোতা

তাফসীরুল কুরআন: উলামায়ে ‘ছূ’রা গোমরাহীর মূল হোতা

তাফসীরুল কুরআন: উলামায়ে ‘ছূ’রা গোমরাহীর মূল হোতা

তাফসীরুল কুরআন: উলামায়ে ‘ছূ’রা গোমরাহীর মূল হোতা