তাফসীরুল কুরআন মসজিদে কুরআন-সুন্নাহ বিরোধী কার্যকলাপ প্রচার ও প্রসারের ভয়াবহ পরিণতি-২

সংখ্যা: ১৬৮তম সংখ্যা | বিভাগ:

ومن اظلم ممن منع مسجد الله انیذ کر فیها اسمه وسعی فی خرابها اولئک ما کان لهم ان یدخلوها الا خائفین لهم فی الدنیا خزی ولهم فی الا خرة عذاب عظیم.

তরজমা: যে ব্যক্তি আল্লাহ তায়ালার মসজিদসমূহে তাঁর নাম স্মরণ করতে বাধা দেয় এবং উহার ধ্বংস সাধনে প্রয়াসী হয় তার চেয়ে বড় জালিম বা সীমালংঘনকারী বা কাফির কে হতে পারে? এদের জন্য মসজিদসমূহে প্রবেশ করা বৈধ নয়। তবে প্রবেশ করতে হলে ভীত-সন্ত্রস্ত হয়ে বা তওবা-ইস্তিগ্্ফার করে প্রবেশ করতে হবে। এদের জন্য ইহকালে লাঞ্ছনা এবং পরকালে কঠিন শাস্তি রয়েছে। (সূরা বাক্বারা-১১৪)

          তাফসীরঃ আয়াত শরীফে সবচেয়ে বড় যালিম বা সীমালংঘনকারী বা কাফির বলতে দু’ শ্রেণীর লোকদেরকে বুঝানো হয়েছে। এক, যারা মসজিদে আল্লাহ পাক ও তাঁর হাবীব হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর যিকির তথা হুকুম-আহকাম, আদেশ-নির্দেশ পালন ও বাস্তবায়ন করতে, প্রচার-প্রসার করতে বাধা প্রদান করে। এখানে উল্লেখ্য যে, আল্লাহ পাক-এর যিকির বা আদেশ-নির্দেশ আর আল্লাহ পাক-এর হাবীব হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আরঅইহি ওয়া সাল্লাম-এর যিকির বা আদেশ-নির্দেশ মূলত একই বিষয়। আলাদা বা ভিন্ন কোন বিষয় নয়। যেমন হাদীছ শরীফে ইরশাদ হয়েছে, আল্লাহ পাক-এর হাবীব হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন,

الا انی اوتـیـت الـقـران ومـثـله مـعـه وان مـا حـرم رسول الله صلی الله علـیـه وسلم کما حرم الله تعالی.

অর্থঃ- সাবধান! নিশ্চয়ই আমাকে কুরআন শরীফ দেয়া হয়েছে এবং তার অনুরূপ বিষয় অর্থাৎ হাদীছ শরীফ দেয়া হয়েছে। নিশ্চয়ই আল্লাহ পাক-এর হাবীব হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যা হারাম করেছেন তা আল্লাহ পাক যা হারাম করেছেন তারই অনুরূপ। (আবূ দাউদ, মিশকাত, মিরকাত)

          অর্থাৎ- আল্লাহ পাক-এর হাবীব হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যেহেতু ওহী দ্বারা নিয়ন্ত্রিত অর্থাৎ তিনি ওহী ব্যতীত কোন কাজ করেন না সেহেতু তাঁর বিষয়গুলোর সাথে আল্লাহ পাক-এর বিষয়গুলোর কোনই পার্থক্য নেই। দু’জনের যাবতীয় বিষয় এক ও অভিন্ন।

          দুই. যারা মসজিদের ধ্বংস সাধনে প্রয়াস চালায় অর্থাৎ মসজিদকে হারাম-নাজায়িয, বিদয়াত-বেশরা, কুফরী-শিরক্্ ইত্যাদি শরীয়ত তথা কুরআন-সুন্নাহ বিরোধী কর্মকা-ের ক্ষেত্ররূপে তৈরি করে। যেমন ছবি তোলা, বেপর্দা হওয়া, ইসলামের নামে ভোট, নির্বাচন ও গণতন্ত্র করা, কুশপুত্তলিকা দাহ করা, হরতাল করা, লংমার্চ করা, খেলাধুলা করা ইত্যাদি সর্বপ্রকার শিরক্্-কুফর, হারাম-নাজায়িয, বিদয়াত-বেশরা কাজের জন্য আহবান করে, উদ্বুদ্ধ করে, প্রচারণা চালায়। আর এ শ্রেণীর লোকদের সম্পর্কেই হাদীছ শরীফে ইরশাদ হয়েছে-

عـن زیاد بن حدیر رحمة الله علیه قال قال لی عـمـر بن الخطاب رضی الله تعالی عنه هل تعرف ما یهدم الاسلام قال قلت لا قال یهدمه زلة العالم وجدال المنافق بالکتاب وحکم الائمة المضلین.

অর্থঃ- “হযরত যিয়াদ বিন হুদাইর রহমতুল্লাহি আলাইহি বর্ণনা করেন, আমাকে হযরত উমর ফারুক রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু বললেন, তুমি কি জান কোন্্ জিনিস ইসলামকে ধ্বংস করে? আমি বললাম- না, আমি জানিনা। তখন তিনি বললেন, ইসলামকে ধ্বংস করে আলিমের পদঙ্খলন, মুনাফিকদের কিতাব সম্পর্কে তর্ক-বিতর্ক এবং গোমরাহ শাসকদের আদেশ-নির্দেশ।” (দায়িমী, মিশকাত)

          কাজেই, যারা উলামায়ে ছূ তথা দুনিয়াদার, অর্থ ও পদলোভী মৌলবী-মাওলানা, ইমাম-খতীব এবং যারা মুসলমানের ছদ্মাবরণে কুফরী ও নেফাকীতে মশগুল। আর শাসক যারা কুরআন-সুন্নাহ শরীফ সম্পর্কে অজ্ঞ তারা তাদের বিভ্রান্তমূলক আদেশ নির্দেশ দানের অহংকারে ও আমিত্বে রত সে সমস্ত উলামায়ে ছূ’ মুনাফিক ও যারা কুরআন-সুন্নাহ বিরোধী মানবরচিত মতবাদের অনুসারী অর্থাৎ মানব রচিত মতবাদকে কুরআন-সুন্নাহ শরীফের সাথে মিশ্রিত করতে চায়। এ কারণে কুরআন ও সুন্নাহ শরীফ নিয়ে বিতর্ক করে। গোমরাহ শাসক তাদের প্রত্যেকের উচিত ছবিসহ সকল প্রকার হারাম ও কুফরী বিষয়ের প্রচারণা থেকে বিরত থাকা এবং খালিছ তওবা-ইস্তিগ্্ফার করা। অন্যথায় তারা যালিম বা সীমালংঘনকারী হিসেবে গণ্য হবে। ফলে তাদের জন্য মসজিদে প্রবেশের অনুমতিও থাকবে না। তাই আয়াত শরীফে বলা হয়েছে, “এদের জন্য মসজিদে প্রবেশ করা বৈধ নয় ভীত-সন্ত্রস্ত হওয়া ব্যতীত অর্থাৎ তওবা ইস্তিগ্্ফার ব্যতীত। এবং আয়াত শরীফের শেষে বলা হয়েছে, এদের জন্য রয়েছে ইহকালে লাঞ্ছনা এবং পরকালে রয়েছে কঠিন শাস্তি।

          কাজেই, মসজিদে ছবি কিংবা অন্য কোন হারাম ও কুফরী কাজের প্রচারণা যারা চালাবে তাদের প্রতিহত করা প্রত্যেক মুসলমানের ঈমানী দায়িত্ব।

তাফসীরুল কুরআন যে কোনো ধরণের যুলূম বা অত্যাচার ছারাছার হারাম এবং কঠোর শাস্তিযোগ্য- ৪

তাফসীরুল কুরআন যে কোনো ধরণের যুলূম বা অত্যাচার ছারাছার হারাম এবং কঠোর শাস্তিযোগ্য- ৫

তাফসীরুল কুরআন: যে কোনো ধরনের যুলূম বা অত্যাচার ছারাছার হারাম এবং কঠোর শাস্তিযোগ্য- ৬

তাফসীরুল কুরআন যে কোনো ধরনের যুলূম বা অত্যাচার ছারাছার হারাম এবং কঠোর শাস্তিযোগ্য- ৭

তাফসীরুল কুরআন যে কোনো ধরনের যুলূম বা অত্যাচার ছারাছার হারাম এবং কঠোর শাস্তিযোগ্য- ৮