-পীরে কামিল, হাফিয, ক্বারী, মুফতী, আলহাজ্ব হযরত মাওলানা মুহম্মদ শামসুদ্দোহা
عن ابى هريرة رضى الله تعالى عنه ان رسول الله صلى الله عليه وسلم قال لتودن الحقوق الى اهلها يوم القيا مة حتى يقاد للشاة الجلحاء من الشاة القر ناء.
মুসলিম শরীফে সাইয়্যিদুনা হযরত আবূ হুরায়রা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু হতে বর্ণিত। রসূলুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, (মহান আল্লাহ পাক) কিয়ামতের দিন অবশ্যই পাওনাদারের পাওনা আদায় করাবেন। এমনকি শিংযুুক্ত বকরী থেকে শিংবিহীন বকরীর প্রতিশোধ নেয়া হবে।
عن جابر رضى الله تعالى عنه ان رسول الله صلى الله عليه وسلم قال اتقوا الظلم فان الظلم ظلمات يوم القيامة وا تقوا الشح فان الشح اهلك من كان قبلكم حملهم على ان سفكوا دمائهم واستحلوا محار مهم.
মুসলিম শরীফে সাইয়্যিদুনা হযরত জাবির রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু থেকে আরও বর্ণিত। রসূলুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, তোমরা যুলুম করা থেকে দূরে থাক। কেননা যুলুম ক্বিয়ামতের দিন অন্ধকারাচ্ছন্ন ধোঁয়ায় পরিণত হবে। তোমরা কৃপনতার কলুষতা থেকেও দূরে থাক। কেননা কৃপনতাই তোমাদের পূর্বের অনেক লোককে (জাতিকে) ধ্বংস করেছে। কৃপনতা তাদেরকে রক্তপাত ও মারামারি করতে প্ররোচিত করেছে এবং হারামকে হালাল করতে উস্কানি দিয়েছে।
অর্থাৎ, যে ধরনের যূলুমই হোক না কেন, যালিম বা অত্যাচারী তার যুলুম বা অত্যাচারের দরুন ক্বিয়ামতের দিন বহুবিধ অন্ধকারে পতিত হবে। পক্ষান্তরে আদল বা ইনসাফ হল নূর বা জ্যোতি। অর্থাৎ ইনসাফকারী হাশরে অবশ্যই আলোর বন্যায় অবগাহন করবেন।
المؤمن من امنه الناس على دما ئهم واموالهم.
তিরমিযী শরীফে আরো বর্ণিত রয়েছে, “প্রকৃত মুমিন ঐ ব্যক্তি, মানুষ যার নিকট থেকে জান মালের নিরাপত্তা পায়।
لا يد خل الجنة من لا يأمن جاره بوا ئقه.
মুসলিম শরীফে আরও বর্ণিত আছে, “ঐ ব্যক্তি বেহেশতে যাবেনা, যার প্রতিবেশী তার অত্যাচার হতে নিরাপদ নয়।
مطلع الغنى الظلم.
বুখারী শরীফ ও মুসলিম শরীফে আরও বর্ণিত আছে, “ধনী ব্যক্তির পক্ষে ঋণ আদায়ে টালবাহানা করা যুলুম।
من غش فليس منا.
মুসলিম শরীফে আরও বর্ণিত আছে, “যে মানুষকে ধোঁকা দেয় সে আমার উম্মত নয়।
من حسن اسلام المرء تركه مالا يعنيه.
তিরমিযী শরীফ ও আহমদ শরীফে আরও বর্ণিত আছে, “কোন মানুষের ইসলামের সৌন্দর্য তখনই প্রকাশ পায় যখন সে অপ্রয়োজনীয় কথা ও কাজ ছেড়ে দেয়।
পঞ্চম হিজরী শতকের মুজাদ্দিদ ইমাম গায্যালী রহমতুল্লাহি তাঁর বিখ্যাত মুকাশাফতুল কুলূব গ্রন্থে বলেন,
বর্ণিত আছে, আল্লাহ পাক হাদীছে কুদসীতে বলেন, যালিম ব্যক্তির উপর আমার ক্রোধ খুবই কঠিন ও মারাত্মক হবে। সে এমন এক ব্যক্তির উপর যুলুম করল, যে আমাকে ছাড়া অপর কাউকে সাহায্যকারীরূপে পায়নি।
জনৈক তত্ত্বজ্ঞানী উপদেশ দিতে গিয়ে বলেছেন, তুমি যখন ক্ষমতার আসীনে সমাসীন থাক, তখন কারও উপর যুলুম করোনা, কেননা যুলুমের পরিনাম নিশ্চিত অনুতাপ ও লজ্জা। কারও উপর যুলুম করে তুমি নিদ্রাভিভূত থাকলেও মাযলুম কিন্তু বিনিদ্ররাতে তোমার বিরুদ্ধে আল্লাহ পাক-এর দরবারে ফরিয়াদে মগ্ন আছে, আর অনন্ত জাগ্রত মহান আল্লাহ পাক রব্বুল আলামীন তা শুনছেন।
অপর একজন উপদেশ দিয়েছেন, পৃথিবীর বুকে কোন যালিমকে যখন তুমি দেখ যে, সে প্রচুর যুলুমে লিপ্ত রয়েছে তখন তুমি তার বিচার যামানার (কুদরতের) হাতে ছেড়ে দাও। অচিরেই সে এমন শাস্তি পাবে যা সে কল্পনাও করতে পারে না।
আদর্শ পূর্বসূরীদের একজন বলেছেন, তোমরা কমজোর দুর্বলদের উপর যুলুম করো না, এতে তোমরা সবল হয়ে ও নিকৃষ্টতম গন্য হবে।
সাইয়্যিদুনা হযরত আবু হুরায়রা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা বলেন, সরখাব (লালরঙের হাঁস বিশেষ) পাখী ও যালিমের যুলুমের ভয়ে তার ক্ষুদ্র গৃহে আত্মগোপন করে মৃত্যুবরণ করে। য (অসমাপ্ত)
তাফসীরুল কুরআন যে কোনো ধরণের যুলূম বা অত্যাচার ছারাছার হারাম এবং কঠোর শাস্তিযোগ্য- ৪
তাফসীরুল কুরআন যে কোনো ধরণের যুলূম বা অত্যাচার ছারাছার হারাম এবং কঠোর শাস্তিযোগ্য- ৫
তাফসীরুল কুরআন যে কোনো ধরনের যুলূম বা অত্যাচার ছারাছার হারাম এবং কঠোর শাস্তিযোগ্য- ৭
তাফসীরুল কুরআন যে কোনো ধরনের যুলূম বা অত্যাচার ছারাছার হারাম এবং কঠোর শাস্তিযোগ্য- ৮
তাফসীরুল কুরআন: যে কোনো ধরনের যুলূম বা অত্যাচার ছারাছার হারাম এবং কঠোর শাস্তিযোগ্য- ১০