-পীরে কামিল, হাফিয, ক্বারী, মুফতী, আলহাজ্ব হযরত মাওলানা মুহম্মদ শামসুদ্দোহা
وان كلا لما ليوفينهم ربك اعمالهم انه بما يعملون خبير. فاستقم كما امرت الخ.
তরজমাঃ আর যখন সময় আসবে, তখন আপনার প্রতিপালক তাদের প্রত্যেককে তাদের নিজ নিজ কর্মের প্রতিদান অবশ্যই পুরোপুরি দিবেন। নিশ্চয়ই তিনি, তারা যা করে সে বিষয়ে পূর্ণ খবর অবহিত আছেন। অতএব, (হে আমার অনিন্দ্য সুন্দর হাবীব পেয়ারা রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম!) আপনি ইস্তিক্বামত থাকতে বলূন যেভাবে আপনি নির্দেশিত হয়েছেন ……।” (সূরা হুদ-১১১, ১১২, ১১৩ ও ১১৪)
(ধারাবাহিক)
মুসলিম শরীফে ও মিশকাত শরীফে বর্ণিত হযরত সুফিয়ান ইবনু আব্দুল্লাহ সাক্বাফী রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু বর্ণনা করেছেন,
قل لى فى الاسلام قولا لا اسأل عنه احدا بعدك قال قال امنت بالله ثم استقم.
অর্থঃ আমি একবার আখিরী রসূল হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে জিজ্ঞাস করলাম, হে আল্লাহ পাক-এর রসূল ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! দয়া করে আমাকে এমন উপদেশ দান করুন, যাতে আপনার বেছাল শরীফের পর আমাকে অন্যের মুখাপেক্ষী হতে না হয়। উত্তরে হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, বলো আমি বিশ্বাস স্থাপন করলাম আল্লাহ পাক-এর প্রতি এবং এই কথার উপরই দৃঢ় থাকো। ‘মায়ালিমুত্ তানযীল’ তাফসীর গ্রন্থে সাইয়্যিদুনা হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুমা থেকে বর্ণিত হয়েছে যে, একবার মুশরিকগোষ্ঠী বলেছিলো যে, ربنا الله والملئكة بناته.
অর্থাৎ আল্লাহ পাক আমাদের প্রভু এবং ফেরেশ্তারা তাঁর কন্যা (নাউযুবিল্লাহ)। আর ইহুদীরা বলেছিলো যে,
ربنا الله وعزيرن ابن الله ومحمد ليس بنبى.
অর্থাৎ আল্লাহ পাক আমাদের প্রভু, উযাইর আলাইহিস সালাম আল্লাহ পাক-এর পুত্র এবং মুহম্মদ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম নবী নন। (নাউযুবিল্লাহ)। মুশরিক ও ইয়াহুদীদের এসব কথা শুনে সাইয়্যিদুনা হযরত আবু বকর ছিদ্দীক রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু বলেছিলেন,
ربنا الله وحده لاشريك له ومحمد صلى الله عليه وسلم عبده ورسوله فاستقام.
অর্থঃ আল্লাহ পাক আমাদের রব, পালনকর্তা। তিনি এক অদ্বিতীয়, তাঁর কোন শরীক নেই এবং মুহম্মদ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আল্লাহ পাক-এর খাছ বান্দাহ ও তাঁর রসূল, অতঃপর স্থিরচিত্ত দৃঢ় ছিলেন তিনি তাঁর এ বক্তব্যের উপর আজীবন। ফক্বীহ আবুল লাইস রহমতুল্লাহি আলাইহি বলেন, দশটি বিষয়কে নিজের উপর ফরয বা অবশ্য কর্তব্য মনে করে সেসবের উপর সতর্ক দৃষ্টি রাখা ইস্তিকামাতের আলামত। যথাঃ
الاول: حفظ اللسان عن الغيبة لقوله تعالى ولا يغتب بعضكم بعضا.
প্রথমতঃ গীবত বা পরনিন্দা চর্চা করা থেকে জীহবাকে হিফাযত করা। যেমন, আল্লাহ পাক ইরশাদ করেছেন, “এবং তোমরা একে অপরের গীবত করোনা।” (সূরা হুজুরাত-১২)
والثانى : الاجتناب عن سوء الظن لقوله تعالى اجتنبوا كثيرا من الظن ان بعض الظن اثم.
দ্বিতীয়তঃ কূধারণা থেকে আত্মরক্ষা করা। যেমন আল্লাহ পাক বলেছেন, “হে ঈমানদারগণ! তোমরা ধারণা করা থেকে বেঁেচ থাকো। নিশ্চয়ই কোন কোন ধারণা পাপজনক হয়ে থাকে।” (সুরা হুজুরাত-১২
والثالث: الاجتناب عن السخرية لقوله تعالى لا يسخر قوم من قوم عسى ان يكونوا خيرا منهم.
তৃতীয়তঃ বিদ্রুপ ও উপহাস করা থেকে নিজেকে হিফাযত করা। যেমন, আল্লাহ পাক বলেছেন, “তোমরা অন্যকে উপহাস করোনা। কেননা সে উপহাসকারীদের অপেক্ষা উত্তম হতে পারে।” (সূরা হুজুরাত-১১) (অসমাপ্ত)
তাফসীরুল কুরআন: উলামায়ে ‘ছূ’রা শরীয়ত ও চরিত্র ধ্বংসের মূল হোতা
তাফসীরুল কুরআন: উলামায়ে ‘ছূ’রা গোমরাহীর মূল হোতা
তাফসীরুল কুরআন: উলামায়ে ‘ছূ’রা গোমরাহীর মূল হোতা