কুরআন ও সুন্নাহ’র বিধান অনুসারে চলা প্রত্যেকের জন্য ফরয অন্যথায় পরিণতি অত্যন্ত ভয়াবহ-৪
واذا قيل لهم اتبعوا ما انزل الله قالوا بل نتبع ما الفينا عليه اباءنا اولو كان اباؤهم لايعقلون شيئا ولا يهتدون.
তরজমা: যখন তাদেরকে বলা হয়, আল্লাহ পাক যা নাযিল করেছেন তা তোমরা অনুসরণ কর। তখন তারা বলে, কখনই নয়, বরং আমরা আমাদের বাপ-দাদা, পূর্বপুরুষদেরকে যার উপর পেয়েছি তার অনুসরণ করবো। যদিও তাদের বাপ-দাদা, পূর্বপুরুষদের কোনই জ্ঞান ছিলনা এবং তারা সৎ পথে পরিচালিত ছিলনা। (সূরা বাক্বারা-১৭০)
তাফসীরঃ উল্লেখিত আয়াত শরীফের ব্যাখ্যা করতে গিয়ে ইমামুল মুফাস্সিরীন, মুজাদ্দিদে আ’যম, ইমাম রাজারবাগ শরীফ-এর হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী বলেন যে, আল্লাহ পাক-এর দেয়া বিবেক-বুদ্ধি খাটিয়ে মানুষ আজ অনেক জিনিস তৈরী করছে। যেমন- মোবাইল, কম্পিউটার, ফ্রিজ, গাড়ী ইত্যাদি। তারা এগুলো তৈরীর পাশাপাশি এগুলো কিভাবে ব্যবহার করতে হবে বা চালাতে হবে তারও নিয়ম-কানুন যাকে ক্যাটালগ বলা হয় সেটা সাথে দিয়ে দেয়। এর মধ্যে কোনটা আকারে একটা বই-এর মতও হয়ে থাকে। এটাই যদি হয়, মানুষের দ্বারা তৈরী সামান্য একটা জিনিস সেটা ব্যবহার বা চালানোর জন্য ক্যাটালগ- এর অনুসরণ করতে হয়, তাহলে আল্লাহ পাক-এর সেরা সৃষ্টি আশারাফুল মাখলূকাত মানুষ যাকে সৃষ্টির পূর্বে আল্লাহ পাক ফেরেশ্তাদের সাথে পরামর্শ করে মর্যাদা ও সম্মান দিয়ে নিজ পরিকল্পনা ও ইচ্ছানুযায়ী সৃষ্টি করলেন সেই মানুষের চলার জন্য কি কোন নিয়ম-নীতি বা বিধান আল্লাহ পাক দেন নি? অবশ্যই দিয়েছেন। সেটাই ওহীর দ্বারা নাযিলকৃত বিধান যা প্রত্যেক যুগে আল্লাহ পাক তাঁর মনোনীত নবী-রসূল আলাইহিমুস্ সালামগণের মাধ্যমে জমিনবাসীর জন্য নাযিল করেছেন। তারমধ্যে সর্বশেষ নাযিলকৃত ওহীর বিধান হচ্ছে ‘কুরআন শরীফ ও হাদীছ শরীফ’ যা আল্লাহ পাক তাঁর হাবীব যিনি নবীদের নবী, রসূলদের রসূল, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাঁর মাধ্যমে তাঁর উম্মতের জন্য নাযিল করেন।
সুতরাং প্রত্যেক বান্দা ও উম্মতের জন্য ফরয হলো, সেই বিধান মুতাবিক অর্থাৎ আল্লাহ পাক ও তাঁর হাবীব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উভয়ের আদেশ-নিষেধ মুতাবিক চলা। কোন বান্দা ও উম্মত যদি আল্লাহ পাক ও তাঁর হাবীব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর আদেশ-নিষেধ মেনে না চলে তাহলে সে ফরমাবরদার বান্দা ও উম্মত অর্থাৎ মু’মিন বা মুসলমান বান্দা ও উম্মত হতে পারবে না।
এ প্রসঙ্গে আল্লাহ পাক নিজেই ঘোষণা করেন-
ماكان لمؤمن ولا مؤمنة اذا قضى الله ورسوله امرا ان يكون لهم الخيرة من امرهم ومن يعصى الله ورسوله فقد ضلا ضللا مبينا.
অর্থঃ “কোন মু’মিন নর-নারীর জন্য জায়িয হবে না, আল্লাহ পাক ও তাঁর হাবীব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যে ফায়ছালা প্রদান করেছেন সেই ফায়ছালার মধ্যে চু-চেরা, ক্বীল-ক্বাল করা বা নিজস্ব মত পেশ করা। যে ব্যক্তি আল্লাহ পাক ও তাঁর হাবীব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর নাফরমানী করবে সে প্রকাশ্য গোমরাহে গোমরাহ হবে।” (সূরা আহযাব-৩৬)
প্রতিভাত হলো, আল্লাহ পাক ও তাঁর হাবীব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর মত ও পথের বিপরীত মত পোষণ করা যাবে না, মানা যাবে না, চলা যাবে না। অন্যথায় কঠিন পরিণতি হবে। অর্থাৎ জাহান্নামের শাস্তি ভোগ করতে হবে। যা বরদাশ্ত করা কারো পক্ষে সম্ভব হবে না।
তাহলে বর্তমানে আমাদের দেশসহ সারা বিশ্বে আল্লাহ পাক ও তাঁর হাবীব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর মত ও পথের বিপরীত তথা কুরআন ও সুন্নাহ’র বিপরীত মানবরচিত তন্ত্র ও মতবাদ- গণতন্ত্র, সমাজতন্ত্র, রাজতন্ত্র, মাওবাদ, লেলিনবাদ, মার্কসবাদ ইত্যাদি যারা মেনে চলছে তারা কি করে মু’মিন-মুসলমানের অন্তর্ভূক্ত থাকতে পারে?
তাই, যামানার মুজাদ্দিদ ও ইমাম, মুজাদ্দিদে আ’যম, আওলাদে রসূল, ইমাম রাজারবাগ শরীফ-এর হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী বিশ্ব মুসলিম উম্মাহকে আহ্বান জানিয়েছেন তাদের মুসলমানিত্ত রক্ষার্থে মানবরচিত সকল তন্ত্র ও মতবাদ থেকে বিরত থেকে এক আল্লাহ পাক-এর মতে মত হওয়ার জন্য এবং তাঁর হাবীব হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর পথে পথ হওয়ার জন্য। তিনি জানিয়েছেন, মানুষ যদি আল্লাহ পাক ও তাঁর হাবীব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর মত ও পথের অনুসারী হতে পারে তাহলে তারা ইহকাল ও পরকালে আল্লাহ পাক ও তাঁর হাবীব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর মুহব্বত ও সন্তুষ্টি লাভ করবে এবং আল্লাহ পাক ও তাঁর হাবীব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর রহমত ও ইহ্সানে তারা খিলাফত লাভেও সক্ষম হবে। অর্থাৎ আল্লাহ পাক তাদেরকে খিলাফত দিবেন যেমনিভাবে তিনি ইতোপূর্বে খুলাফায়ে রাশিদীনগণকে খিলাফত দান করেছিলেন।
তাফসীরুল কুরআন যে কোনো ধরণের যুলূম বা অত্যাচার ছারাছার হারাম এবং কঠোর শাস্তিযোগ্য- ৪
তাফসীরুল কুরআন যে কোনো ধরণের যুলূম বা অত্যাচার ছারাছার হারাম এবং কঠোর শাস্তিযোগ্য- ৫
তাফসীরুল কুরআন: যে কোনো ধরনের যুলূম বা অত্যাচার ছারাছার হারাম এবং কঠোর শাস্তিযোগ্য- ৬
তাফসীরুল কুরআন যে কোনো ধরনের যুলূম বা অত্যাচার ছারাছার হারাম এবং কঠোর শাস্তিযোগ্য- ৭
তাফসীরুল কুরআন যে কোনো ধরনের যুলূম বা অত্যাচার ছারাছার হারাম এবং কঠোর শাস্তিযোগ্য- ৮