তারাই লোক দেখানো প্রবৃত্তির অধিকারী॥ তারাই হারাম ছবিকে হালালকারী॥ তারাই রহমত থেকে দূরে সরে আযাব-গযব আহবানকারী

সংখ্যা: ১২৩তম সংখ্যা | বিভাগ:

মুসলিম শরীফের  হাদীছে বর্ণিত রয়েছে, কিয়ামতের  ময়দানে ক্বারী ছাহেবকে তথা নামধারী আলিম ছাহেবকে আল্লাহ্ পাক জিজ্ঞাসা করবেন, তোমাকে যে ইলম দেয়া হয়েছিল তার হক্ব তুমি  কিভাবে আদায় করেছিলে? সে জবাব দিবে আল্লাহ্ পাক আমি আপনার জন্য ইলমের প্রচার করেছি, মানুষকে ওয়াজ-নছিহত করেছি, ইসলামের কথা শুনিয়েছি। তার কথা  শেষ  হলে আল্লাহ্ পাক বলবেন, মিথ্যা কথা, তুমি এজন্য করেছ যে মানুষ তোমাকে বড় আলিম  বলবে, তুমি মানুষের নেতা সাজবে, তোমার  নাম ধাম প্রচার-প্রসার  হবে।

মূলতঃ হাদীছ শরীফের কথা সততই সত্য। হালে এর উদাহরণ আরো স্পষ্টভাবে প্রকাশ পেলো।

একটি ঘটনার অবতারণা করলে তা বুঝতে আরো সুবিধা হবে। ৮ই  অক্টোবর দৈনিক ভোরের কাগজে সি,পি,এ সম্মেলনের টুকিটাকীতে ‘প্রধান মন্ত্রীর’ ধমক শীর্ষক খবরে বলা হয়, “….. গতকাল অনুষ্ঠানটির পর প্রধান মন্ত্রী মঞ্চ থেকে  নেমে বাংলাদেশ চীন-মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্রের পার্শ্বের একটি কক্ষে যাচ্ছিলেন। যথারীতি কয়েকজন মন্ত্রী তার পেছনে পেছনে যাচ্ছিলেন। এই দৃশ্য দেখে তিনি ক্ষেপে যান। বলেন, “কেউ কোন কাজ ঠিকমত করতে পারেন না। শুধু ছবি তোলার জন্য আমার পিছনে পিছনে ঘুরেন।”

এখানে বিশেষভাবে প্রনিধানযোগ্য যে, আলোচ্য ঘটনায় প্রধান মন্ত্রীর মুখ থেকে একটি বিশেষ সত্য বেরিয়ে এসেছে, তা হলো ছবি তোলার  জন্য উদগ্রীব থাকা, প্রচার মাধ্যমে নিজেকে  প্রকাশ করার জন্য উন্মুখ থাকা, সমাজে, রাজনীতিতে নিজের  নাম-ধাম করার জন্য, নিজের  আসন ভালভাবে  গড়ার  জন্য ব্যকুল থাকা। যাকে ইসলামের পরিভাষায় বলা হয়, লোক দেখানো প্রবৃত্তি তথা ‘রিয়া’ বা গুপ্ত শিরক। আর মুসলিম মাত্রই সবার জানা আছে যে, আল্লাহ্ পাক অন্য সব গুণাহ খাতা মাফ করবেন কিন্তু  রিয়ারূপী শিরকের গুণাহ মাফ করবেন না। যারা এই রিয়া রোগে কাতর তারা যে মূলতঃ শিরকী গুনাহ্ই করছে তা বলার অপেক্ষা রাখে না।

প্রসঙ্গতঃ উল্লেখ্য যে, এই লোক দেখানো প্রবণতায় তথাকথিত নামধারী আলিমরাও যে কি নির্লজ্জ প্রক্রিয়া চালাতে পারে তা ভাবলে ঘৃণায়, ক্ষোভে, লজ্জায় গা রি রি  করে উঠে। নামধারী আলিমরা নিজেদের নাম ধাম প্রচার করার  ক্ষেত্রে কত ছ্যাচড়ামি করতে পারে, ইসলামের নামে কত জঘন্য ব্যবসায়িক  মনোবৃত্তির হতে পারে তা যেকোন বিবেকবান মানুষের বিস্ময়কেও বিস্মিত করে!

গত ৪/১০/০৩ তারিখে  দৈনিক প্রথম আলোর “পোস্টারে আমিনীর ছবি নিয়ে মহাসচিবদের  বৈঠকে বিতণ্ডা॥ চারদলের পোস্টার হচ্ছেনা” শিরোনামে নিজস্ব প্রতিবেদকের বরাতে বলা হয়েছে, চারদলীয় জোট সরকারের  বর্ষপূর্তি উপলক্ষে আগামী ৮ অক্টোবর পল্টন ময়দানের জনসভা উপলক্ষে  জোটের পক্ষ থেকে কোন পোস্টার করা হবে না। গতকাল শুক্রবার  রাতে চার দলের মহাসচিবদের এক বৈঠকে পোস্টারে তথাকথিত মুফতি ফজুলল হক আমিনীর ছবি থাকা না থাকা নিয়ে তুমূল তর্ক হয়।

বৈঠকে অংশগ্রহণকারী একাধিক  নেতার সঙ্গে আলাপ করে  জানা গেছে ইসলামী ঐক্যজোটের (আমিনী) পক্ষ থেকে জনসভা উপলক্ষে চার দলের পোস্টারে তথাকথিত মুফতি ফজলুল হক আমিনীর ছবি রাখার প্রস্তাব করলে জামায়াত-এর তীব্র বিরোধীতা করে। আমিনী অংশের মহাসচিব তথাকথিত মুফতি এজহারুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, জনাব আমিনীর ছবি পোস্টারে রাখতে হবে। তিনি আমাদের দলের শীর্ষ নেতা। তার ছবি কেন থাকবে না? এভাবে তুমুল তর্কাতর্কির এক পর্যায়ে বি,এন,পি মহাসচিব পোস্টারে সবার  ছবিই নিষেধ করে দেন।” অতঃপর তারা সবাই  ক্ষান্ত হল।

এখানে বিশেষভাবে উল্লেখ্য যে, ছবি নিষেধ করেছেন স্বয়ং আল্লাহ্ পাক-এর রসূল সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম। তিনি বলেছেন, “কিয়ামতের ময়দানে ঐ ব্যক্তির সবচেয়ে বেশী শাস্তি হবে যে ছবি তুলে বা আঁকে।” (বুখারী শরীফ)

আফসুস! আল্লাহ্  পাক-এর রসূল হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আল্লাইহি ওয়া সাল্লাম-এর এই কঠোর নিষেধ  বাণী তাদেরকে ছবি তোলা হতে বিরত রাখতে পারলনা কিন্তু একজন সাবেক বামপন্থী রাজনীতিবিদ যখন বললেন যে, পোস্টারে কারো ছবিই থাকবেনা, তখন তারা সবাই তা নম নম করে মেনে নিল। শত-সহস্র ধিক তাদের ব্যক্তিত্বের প্রতি, তাদের নীতির  প্রতি, তাদের ইসলামী অনুভূতির প্রতি।

কুরআন-সুন্নাহ্য় কঠোরভাবে ছবির বিরুদ্ধে থাকলেও তারা সে নিষেধ বাণীকে বেমালুম চেপে রেখে, ঔদ্ধত্যভাবে ছবি ছাপানোর জন্য গো ধরল, গোস্বা করল। এর দ্বারা  তাদের  মনোবৃত্তি যে আসল ইসলাম থেকে কত দূরে সরে গেছে তা সহজেই অনুমেয়। বরং এটাই কাঙ্খিত ছিল যে, যেহেতু তারা  সরকারের ভাগীদার হয়েছে, অংশীদার হয়েছে সেহেতু তারা অফিস-আদালত, সংসদ, সচিবালয় তথা সব প্রকাশনা থেকে ছবি নিষিদ্ধ করার জন্য গো ধরবেন, সরকারকে চাপ দিবেন।

যেহেতু হাদীছ শরীফে ইরশাদ হয়েছে যে ঘরে বা যে স্থানে ছবি থাকে সেখানে রহমতের ফেরেশতা থাকেনা। আর জাতীয়ভাবে আমরা আজ এই ছবির কারণে ব্যাপকহারে রহমত থেকে দূরে অবস্থান করছি। সে কারণেই আমাদের প্রতি এত আযাব-গযব ও ব্যর্থতা।

এখানে দেখা যাচ্ছে কথিত চার দলীয় ঐক্য জোটের তথাকথিত মুফতি, মাওলানা আর শাইখুল হাদীছ ছাহেবরাই সে আযাব-গযবের প্রতিভূ। তারাই হারাম ছবিকে হালালকারী। তারাই রহমতকে দূরে সরিয়ে আযাব-গযব আহবানকারী।

-খন্দকার মুহম্মদ সাখাওয়াত হোসেন

 ইব্রাহীমপুর ঢাকা।

 শুধু আজকের প্রেক্ষাপটে নয়, অতীত ইতিহাস হতেই ইহুদী-খ্রীষ্টানরা মুসলমানদের সবচেয়ে বড় শত্রু মুসলিম সন্ত্রাসবাদ নয়, মার্কিন হামলার পিছনে কি ইহুদী-খ্রীষ্টানরাই দায়ী নয়? -২২  

ইরাকের মীরজাফর সাদ্দাম  রাশিয়ার বেলারুশ যেতে চায় কেন?    

চট্টলার বহুল প্রচলিত দৈনিক পত্রিকার মাধ্যমে প্রকাশ্যে আঞ্জুমানে আল বাইয়্যিনাতের কাছে ক্ষমা চেয়ে তারা রক্ষা পেলো ॥

প্রসঙ্গঃ ছবি, অশ্লীল ছবি ইনকিলাব ও হাটহাজারীর আহমক শাফী উপাখ্যান

শুধু আজকের প্রেক্ষাপটে নয়, অতীত ইতিহাস হতেই ইহুদী-খ্রীষ্টানরা মুসলমানদের সবচেয়ে বড় শত্রু মুসলিম সন্ত্রাসবাদ নয়, মার্কিন হামলার পিছনে কি ইহুদী-খ্রীষ্টানরাই দায়ী নয়? -২৩