তিস্তা চুক্তি তো নয়ই, ফারাক্কা চুক্তিরও বাস্তবায়ন নয়। উল্টো আশার শেষ প্রদীপ গঙ্গা ব্যারেজকেও হত্যা। পাশাপাশি ‘আত্মঘাতী’ শব্দটির অর্থের কী তবে বিকৃতি ঘটেছে? শুধু বন্ধুত্ব উচ্চারণ করেই কী জাতীয় স্বার্থ সংরক্ষণ হবে। জনগণ এ বন্ধুত্বে খুশি নয়।

সংখ্যা: ২৬১তম সংখ্যা | বিভাগ:

চার দিনের ভারত সফর শেষে দেশে ফেরার পরদিন ইয়াওমুছ ছুলাছা বা মঙ্গলবার বিকেলে গণভবনে এক সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী বলেছে- “গঙ্গা ব্যারেজ হবে আত্মঘাতী, সে কারণে আগেই এটা বাতিল করে দিয়েছি। এটা করা হলে সুফলের চেয়ে হিতে বিপরীতই হতো। তাই এমন একটি ‘ভুল’ প্রকল্প বাতিল করা হয়েছে।” প্রধানমন্ত্রী বলেছে, “এমন কিছু করতে হলে তা ভারতের সঙ্গে যৌথভাবে করতে হবে।” পদ্মায় বাঁধ দিয়ে গঙ্গা অববাহিকার পানি সংরক্ষণ করে তা কৃষিসহ বিভিন্ন খাতে ব্যবহারের লক্ষ্যে ১৯৬২-৬৩ সালে প্রথমবারের মতো গঙ্গা ব্যারেজ নির্মাণের বিষয়ে জরিপ হয়। এরপর দীর্ঘদিন ঝুলে থাকলেও ১৯৯৬ সালে শেখ হাসিনার সময়ে গঙ্গার পানিবণ্টনে ভারতের সঙ্গে চুক্তির পর ব্যারেজ নির্মাণের আলোচনা আবার জোর পায়। ওই ব্যারেজের সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের জন্য ২০০৫ সালে কাজ শুরুর পর ২০১৩ সালে সমীক্ষার কাজ শেষ হয়। পরের বছর ভারতকে ওই প্রকল্পের সারসংক্ষেপও হস্তান্তর করা হয়। কিন্তু বাস্তবায়ন হওয়ার পথে বারবার বাধা  এসেছে।

তখনকার পানিসম্পদ মন্ত্রী বলেছিলো, ওই ব্যারেজ হলে বর্ষা মৌসুমে আসা পদ্মার পানি সংরক্ষণ করে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ১৯ জেলায় সেচ ব্যবস্থা নিশ্চিত করার পাশাপাশি ১৬০ মেগাওয়াট পানিবিদ্যুৎ উৎপাদন করা সম্ভব হবে। বাংলাদেশ সরকারের কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে সে সময় সংবাদমাধ্যমের খবরে বলা হয়, ২০২৬ সালে গঙ্গার পানিবণ্টন নিয়ে ৩০ বছর মেয়াদী চুক্তির মেয়াদ শেষ হচ্ছে। তার আগেই ব্যারেজ নির্মাণের কাজ শেষ না হলে নতুন চুক্তির জন্য অপেক্ষা করতে হবে। এবারও প্রধানমন্ত্রীর ভারত সফরে অববাহিকাভিত্তিক যৌথ পানিসম্পদ ব্যবস্থাপনার বিষয়টি জোর পায় এবং শেখ হাসিনার সঙ্গে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যয়ের বৈঠকে এ বিষয়ে আলোচনা হয় বলে ভারতীয় সংবাদমাধ্যমের খবর। সংবাদ সম্মেলনে প্রধামন্ত্রী বলেছে, ভারতের সঙ্গে যখন গঙ্গার পানি চুক্তি করি, তখনই আমি বলেছিলাম, আমরা একটা ব্যারেজ করবো, গঙ্গা ব্যারেজ।

প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, ভারত পানির ব্যাপারে যে আগ্রাসী নীতি গ্রহণ করেছে তা বাস্তবায়নে সে যেকোনো পন্থা অবলম্বন করতে পারে। এমতাবস্থায় বাংলাদেশকে বিকল্প ব্যবস্থা গ্রহণে বিশেষ অগ্রাধিকার দিতে হবে। বর্ষা মৌসুমে প্রচুর বৃষ্টি হয় ও উজান থেকে বিপুল পানি নেমে আসে। এই পানির অংশবিশেষও যদি ধরে রাখা যায়, তবে শুকনো মৌসুমে পানির কোনো অভাব হবে না। বাঁধ-ব্যারাজ নির্মাণ, নদী সংস্কার ও খাল খননের মাধ্যমে পানি সংরক্ষণের ব্যবস্থা করা যায়। যে বিপুলসংখ্যক নদী-খাল-বিল, নীরাশয় ও পুকুর রয়েছে সেগুলোকে সহজেই রিজার্ভার করে তোলা যায়। এই পটভূমিতেই বহুকাল আগে পরিকল্পিত গঙ্গা ব্যারেজ প্রকল্প বাস্তবায়নের বিষয়টি বারবার উচ্চারিত হয়েছে, এখনো হচ্ছে। চার বছর আগে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গঙ্গা ব্যারেজ নির্মাণের ব্যাপারে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দিলেও এখন ভারতের আপত্তির কারণেই শুধু নিষেধই করলো না, উল্টো ‘আত্মঘাতী’ বললো।

অথচ গঙ্গা ব্যারেজ নির্মাণ হলে বাংলাদেশে পানি সঙ্কট বহুলাংশে কমবে। সেইসাথে তা বাংলাদেশের অর্থনীতিতে আমূল পরিবর্তন সাধিত করবে। এই প্রকল্প থেকে বছরে ৭ হাজার ৩শ’ কোটি টাকা আয় আসবে। দীর্ঘ মেয়াদে এই আয় আরো বৃদ্ধি পাবে। আর এই প্রকল্পে করা বিনিয়োগ উঠে আসতে সময় লাগবে মাত্র ৫ বছর। প্রকল্পটির গ্রস এরিয়া ৫১ লাখ হেক্টর। যা দেশের মোট এলাকার ৩৭ শতাংশ। এর মধ্যে ২৯ লাখ হেক্টর জমি কৃষি কাজে এবং ১৯ লাখ হেক্টর জমি বোরো চাষের আওতায় আনা হবে। যার ফলে বছরে ২৫ লাখ মেট্রিক টন বাড়তি ধান এবং ১০ লাখ টন অন্যান্য ফসল উৎপাদন হবে। মৎস্য উৎপাদন হবে ২ লাখ ৪০ হাজার মেট্রিক টন।

মাত্র কিছুদিন আগে ২০১৭ সালের ১৯শে মার্চ পানিসম্পদমন্ত্রী বলেছেন- ‘গঙ্গা ব্যারেজ ছাড়া দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলকে বাঁচানো অসম্ভব’। এর আগেও ২০১৬ সালের ডিসেম্বর মাসে তিনি বলেছিলেন- ‘পানি সমস্যা এবং লবণাক্ততা সমাধানে গঙ্গা ব্যারেজ জরুরী’। সেইসাথে ২০১৬ সালে গঙ্গা ব্যারেজ নির্মাণের জন্য ভারতীয় পর্যবেক্ষক দল ও প্রতিনিধ দলও বাংলাদেশে এসেছিলো। তাহলে ভারত সফর করে এসে হঠাৎ কেন সরকার এই ব্যারেজ প্রকল্প থেকে সরে আসলো- এই প্রশ্ন জনমনে ব্যাপক কৌতুহলের সাথে উদ্বেলিত হয়েছে।

সমালোচক মহল মনে করছেন যে, আওয়ামী সরকারের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী তিনি শুধু ভারতের আপত্তির কারণেই সম্ভাবনাময় গঙ্গা ব্যারেজ প্রকল্প বাতিল করে দিচ্ছেন।

প্রসঙ্গত, বঙ্গবন্ধু এদেশেবাসীকে বিশেষ সাবধান করে বলেছিলেন, “আমরা পিন্ডির গুহা থেকে মুক্তি লাভ করে দিল্লীর গর্ভে ঢুকতে পারি না।” প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, ভারতে তিনি কিছু চাইতে যাননি। শুধু বন্ধুত্ব চেয়েছেন। বন্ধুত্ব পেয়েছেন। এটাই স্বার্থকতা। কিন্তু কথা হলো- কে না জানে? বিপদেই বন্ধুর পরিচয়। ভাল্লুকের গল্পটিও কি তবে মনে করিয়ে দিতে হবে? আমরা ফারাক্কার ফাঁদে আটকাবো, আমরা তিস্তায় মরবো, ফেনী নদীর পানি লুট হবে, ৫৪টি অভিন্ন নদীর পানি ডাকাতি হবে। উল্টো দিকে ট্রানজিট থেকে ট্রানশিপমেন্ট দেয়া হবে। ওদের প্রয়োজনে রাস্তাঘাট করে দেয়া হবে। ওদের ফেলে দেয়া বাস-ট্রাক আমাদের কিনতে হবে। জাতীয় অর্থনীতির দুধের সরটা ওদের পাতে তুলে দিতে হবে। আর আমরা সবকিছু দিয়ে সর্বস্বান্ত হয়ে ভূখা, দীনহীন থেকে বলবো- মেরেছে কলসির কনা তাই বলে কি বন্ধুত্ব দেবো না? হায় বন্ধুত্ব! এই বৈষম্যমূলক বন্ধুত্বের জন্য তো মুক্তিযুদ্ধ হয়নি।

এবারো ভারত সফর থেকে এসে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, ‘ভৌগোলিক দিক থেকে ভারতের তুলনায় এদেশ হয়তো আয়তনে ছোট, জনসংখ্যায় কম। কিন্তু সার্বভৌমত্বের দিক দিয়ে আমরা সমান।’ এই সমান অংশীদারিত্বই তো আমরা চাই। কিন্তু পাচ্ছি কী? পাওয়া তো দূরের কথা চাচ্ছি কী? চাইতে পারলাম কী? দুঃখজনক হলেও চরম সত্য যে, বাস্তবে হাজার ভাগের একভাগও সমান স্বার্থবাদীতা চর্চা হচ্ছে না। হচ্ছে বৈষম্য, হচ্ছে শোষণ। অথচ মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বৈষম্যের বিরুদ্ধে চেতনা। শোষণের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াবার প্রবণতা। সে ধারাবাহিকতায় নিপীড়ন আর বঞ্চনার বিপরীতে প্রয়োজনে মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় আমরা আবারো আপ্লুত হচ্ছে চাই। ফারাক্কার পানি চাই, তিস্তার পানি চাই, গঙ্গা ব্যারেজ চাই।

-আল্লামা মুহম্মদ তা’রিফুর রহমান, ঢাকা

যুগের আবূ জাহিল, মুনাফিক ও দাজ্জালে কাযযাবদের বিরোধিতাই প্রমাণ করে যে, রাজারবাগ শরীফ উনার হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম তিনি হক্ব। খারিজীপন্থী ওহাবীদের মিথ্যা অপপ্রচারের দাঁতভাঙ্গা জবাব-১২৩

‘পবিত্র দ্বীন ইসলাম ও নৈতিক শিক্ষার’ অর্থ হচ্ছে- ‘পবিত্র দ্বীন ইসলাম ও অনৈসলামী শিক্ষা’। যার ফলাফল ‘শূন্য ধর্মীয় শিক্ষা’। বিতর্কিত ও বামঘেঁষা মন্ত্রী এটা করলেও ‘পবিত্র কুরআন শরীফ ও পবিত্র সুন্নাহ শরীফ বিরোধী কোনো আইন পাস হবে না’- এ প্রতিশ্রুতির সরকার কী করে তা গ্রহণ করতে পারলো?

বেপর্দা-বেহায়াপনায় আক্রান্ত কলুষিত সমাজের নতুন আতঙ্ক ‘সেলফি’। সেলফি উম্মাদনায় সমাজে ব্যাপকভাবে বেড়েছে হত্যা, আত্মহত্যা, সম্ভ্রমহরণ, সড়ক দুর্ঘটনাসহ নানা অপরাধ। বিভিন্ন দেশে সেলফি’র উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করলেও বাংলাদেশে কোন লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না। সরকারের উচিত অপসংস্কৃতি এবং আত্মহত্যার মতো অপরাধ বন্ধ করতে অবিলম্বে সেলফি নিষিদ্ধ করা।

প্রতারণার ফাঁদে নাগরিক জীবন। সরকারের নজরদারী নেই। রকমফের প্রতারণা বন্ধে সম্মানিত ইসলামী আদর্শ বিস্তারের বিকল্প নেই

পার্বত্য চট্টগ্রাম এবং উত্তরাঞ্চলসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে চলছে অবাধ খ্রিস্টান ধর্মান্তরিতকরণ। বিষয়টি অদূর ভবিষ্যতে গভীর শঙ্কার। রহস্যজনক কারণে নীরব সরকার