“তোমরা চিন্তিত হয়োনা, পেরেশানীগ্রস্ত হয়োনা। তোমরাই কামিয়াব হবে যদি তোমরা মু’মিন হয়ে থাক।” এ আয়াত শরীফে আল্লাহ পাক কামিয়াব হওয়ার জন্য সূক্ষ্মতিসূক্ষ্মভাবে ইসলাম পালন করার তথা মুত্তাক্বী হওয়ার উপর শর্তারোপ করেছেন। এদেশে তথাকথিত ইসলামী রাজনীতিকরা প্রায় পঞ্চাশ বছর ধরে কাজ করে আসছেন। সময়ের তালে তথাকথিত ইসলামী রাজনীতিকদের সংখ্যা বহুগণ বেড়েছে বৈকি। কমেনি আদৌ। সে তুলনায় উদ্বৃত আয়াত শরীফের প্রেক্ষিতে শতাধিক ইসলামী দল থাকার পরও ইসলামীকরণ হওয়ার কোন লক্ষণ দেশবাসী আজও দেখতে পায়নি। সহজকথা ভুড়ি ভুড়ি নামধারী ইসলামী দল থাকলেও ইসলামীকরণের ক্ষেত্রে তারা কিঞ্চিৎ পরিমাণ সাফল্যও অর্জন করতে পারেনি। সত্যি কথা বলতে গেলে, তারা সেটা চায়ওনি। যদিও নির্বাচনের পূর্বে তারা এদেশের ধর্মপ্রাণ মুসলমানদেরকে, দেশকে ইসলামীকরণ করার ওয়াদা শুনিয়েছিলো। এমনকি সরাসরি ক্ষমতা না পাওয়ায় পর্যায়ক্রমে দেশের ইসলামী আইন জারীর বাহনায় তারা নারী নেতৃত্বও সমর্থন করেছিলো। বলেছিলো নারী নেতৃত্ব গ্রহণ তাদের সাময়িক কৌশলমাত্র। মাত্র কিছুদিনের মধ্যেই তারা এমন অভিনব প্রভাব বলয় তৈরী করবেন যে, খোদ নারী নেতৃত্বই তখন একটার পর একটা ইসলামী আইন জারী করার পাশাপাশি এক সময় নিজেও নেতৃত্ব ছেড়ে দিবেন। কিন্তু সে বাহনা কেবল গাধাকে মূলা দেখানোর মতই হয়েছে। দেশের একটার পর একটা ইসলামী আইন জারীর পরিবর্তে বরং একটার পর আরেকটা অনৈসলামিক আইন নতুন করে সংযোজন হয়েছে ও হচ্ছে। মদের করখানা তৈরী হয়েছে। মদের দাম কমেছে। জায়নামাযের দাম বেড়েছে। প্রসঙ্গতঃ উল্লেখ্য, মুসলিম পারিবারিক আইন প্রায় দেড় হাজার বছরের ঐতিহাসিক গুরুত্ব সমৃদ্ধ। যা মুসলমানদের জন্য এতই স্বতঃসিদ্ধ এবং এতই অনিবার্য ও স্পর্শকাতর যে, সাম্রাজ্যবাদী ব্রিটিশরাও মুসলমানের এই পারিবারিক আইনে কখনো হাত দেয়নি। বৃটিশ প্রণীত ১৯৩৬ সালের ঝযধৎরধয অপঃ এ বলা হয়, “বিপরীতমুখী কোন রেওয়াজ, নীতি অথবা প্রথা বলবৎ থাকা সত্ত্বেও মৃত ব্যক্তির উত্তরাধিকারীর পাওনা, কোন চুক্তি অথবা দানপত্রের মাধ্যমে কিংবা ব্যক্তিগত আইনের যে কোন ব্যবস্থায় প্রাপ্ত অথবা গৃহীত ব্যক্তিগত সম্পত্তিসহ মহিলাদের বিষয় সম্পত্তি বিবাহ, তালাক, জিহার, লিয়ান, খুলা ও মুতা বিবাহসহ, বিবাহ বিচ্ছেদ, ভরন-পোষণ, যৌতুক, অভিভাবকত্ত্ব, দান, ট্রাস্ট ও ট্রাস্টি সম্পত্তি এবং ওয়াক্ফ যাবতীয় ক্ষেত্রে মুসলমান বাদী-বিবাদীর মকদ্দমায় মীমাংসার মাধ্যম হিসেবে মুসলিম ব্যক্তিগত আইনটি কার্যকরী হবে।” কিন্তু এরপর ইসলামের নামে পাকিস্তান হলেও সে পাকিস্তান সরকারই মুসলিম পারিবারিক আইনে হাত দেয়।। ১৯৫৪ সালের আগস্ট মাসে তদানীন্তন পাকিস্তান সরকার বিয়ে ও পারিবারিক আইনের ওপর প্রতিবেদন দাখিলের নিমিত্তে ৭ সদস্যবিশিষ্ট একটি কমিটি গঠন করে। ড. খলিফা সুজাউদ্দীন ওই কমিটির সভাপতি ছিলেন। কমিশনের কাজ শেষ হওয়ার আগে তার মৃত্যু হওয়ায় পাকিস্তান ফেডারেল কোর্টের সাবেক বিচারপতি মিয়া আব্দুর রশিদকে এই কমিটির সভাপতি নিযুক্ত করা হয়। কমিশনে কয়েকজন নামধারী ইসলামী চিন্তাবিদ এবং কিছু তথাকথিত উদারবাদী মহিলা অন্তর্ভুক্ত ছিলেন। তাদের মতামতের ভিত্তিতে, মুসলিম পারিবারিক আইন অধ্যাদেশ ১৯৬১ অনুযায়ী বাধা-নিষেধ আরোপ করা হয়েছে। বলা হয়েছে, ১৯৬১ সালের অনেক মুসলিম পারিবারিক আইন অধ্যাদেশের বিধান অনুসরণ না করে আইনগত কোন তালাক কার্যকর হবে না। ওই আইনে উল্লেখ করা হয়েছে, (১) কোন ব্যক্তি তার স্ত্রীকে তালাক দিতে মনস্থ করলে যে কোন প্রকারেই হোক তালাক উচ্চারণ করার পরই তিনি তালাক দিয়েছেন বলে চেয়ারম্যানকে লিখিত নোটিশ দিয়ে জানাবেন এবং স্ত্রীকেও তার একটি নকল পাঠাবেন। (২) কোন ব্যক্তি ১ উপধারার বিধান অমান্য করলে এক বছর পর্যন্ত বিনাশ্রম কারাদ- বা ১০ হাজার টাকা অর্থদ- বা উভয় প্রকার দ-ে দ-িত হবেন। (৩) চেয়ারম্যানের কাছে প্রেরিত নোটিশের তারিখ থেকে ৯০ দিন অতিবাহিত না হওয়া পর্যন্ত তালাক কার্যকর হবে না। (৪) নোটিশ পাওয়ার ৩০ দিনের মধ্যে চেয়ারম্যান পক্ষদ্বয়ের মধ্যে পুনঃমিলন ঘটানোর জন্য ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন। (৫) তালাক দেয়ার সময় স্ত্রী গর্ভবতী হলে উল্লিখিত ৯০ দিন মেয়াদ বা গর্ভাবস্থা, যা পরে শেষ হবে তা অতিক্রান্ত না হওয়া পর্যন্ত তালাক কার্যকর হবে না। (৬) এই ধারা মতে কার্যকরী তালাক দ্বারা যে স্ত্রীর বিবাহের অবসান করা হয়েছে, সেই স্ত্রীর তৃতীয় কোন ব্যক্তির মধ্যে মধ্যবর্তীকালীন বিয়ে ছাড়াই তার স্বামীর সঙ্গে পুনঃবিবাহের কোনরূপ বাধা থাকবে না, যদি ওই বিয়ে ভঙ্গ তৃতীয়বারের মতো কার্যকর হয়ে থাকে। উল্লেখ্য, ১৯৬১ সালের মুসলিম পারিবারিক আইনের অধ্যাদেশে যে ইসলামী আইন তথা কুরআন-সুন্নাহ্র হুকুম প্রতিফলিত হয়নি তা এবারের নির্বাচনের পূর্বেও তথাকথিত ইসলামী রাজনীতিকরাও গলা ফাটিয়ে উচ্চারণ করেছেন। বরং আইয়ুব খান তখন মার্কিনীদের নেক নজর লাভ কারার জন্য এই আইন প্রণয়ন করেছেন, সেকথাও তারা বলেছেন। আর ক্ষমতায় গেলে তারা ‘আইয়ুব খানের এসব অনৈসলামী আইন রহিত করবেন, সংসদে সংশোধনী আনবেন, মুসলিম পারিবারিক আইনকে পুনঃপ্রচলন করবেন, কার্যতঃ পর্যায়ক্রমে পুরো ইসলামী আইন তারা জারি করবেন’ এই ছিল তথাকথিত ইসলামী রাজনীতিকদের নির্বাচনী ইস্যু। নির্বাচনে সুবিধাজনক অবস্থান না পেয়ে নারী নেতৃত্বের আঁচল ধরে ইসলাম কায়িম করবেন বলে তারা জোট করলেন। জোট সরকারকে ইসলামী সরকার আখ্যা দিলেন। এক নয়, দুই নয়, তিন বছরেরও বেশী পার হয়ে গেলো কিন্তু তথাকথিত ইসলামী দল সমন্বিত জোট সরকার আইয়ুব খান জারিকৃত কুরআন-সুন্নাহর খেলাফ মুসলিম পারিবারিক অধ্যাদেশ তো রদ করেইনি বরং একে একে আরো কিছু নতুন অনৈসলামিক আইন খোদ মুসলিম পারিবারিক আইনেই সংযুক্ত করলো। গত ২৪শে সেপ্টেম্বর/২০০৪ পত্রিকান্তরে বলা হয়, “নারী-পুরুষের বৈষম্য কমাতে বাংলাদেশ সরকার দেশে প্রচলিত বিবাহ আইন সংশোধন করার উদ্যোগ নিয়েছে। নতুন আইনে বাংলাদেশের নারীরাও পারিবারিক আইনে তালাক দেয়ার অধিকার পাবে।” (সব জাতীয় দৈনিক) এরপর গত ১৭ই ফেব্রুয়ারী ২০০৫ ঈসায়ী সব জাতীয় পত্রিকায় আরো প্রকাশিত হলোঃ গতকাল বুধবার জাতীয় সংসদে একটি বিল উত্থাপন করা হয়েছে। ‘দি মুসলিম ম্যারেজ এন্ড ডিভোর্সেস (রেজিষ্ট্রেশন) (সংশোধন) অ্যাক্ট-২০০৫’ শিরোনামে বিলটি উত্থাপন করেন আইন বিচার ও সংসদ বিষয়কমন্ত্রী ব্যারিস্টার মওদুদ আহমেদ। ল এই আইনে রেজিস্ট্রি না করে বিয়ে করলে বর-কনে এবং বিবাহ সম্পাদনকারীকে ২ বছরের বিনাশ্রম কারাদ- ও ৩ হাজার টাকা অর্থদণ্ডের প্রস্তাব করা হয়েছে। এ বিধান লঙ্ঘনকারীদের বিচার সংক্ষিপ্ত আদালতে অনুষ্ঠিত হবে। ইতিমধ্যে মন্ত্রিসভা এ সংক্রান্ত ‘বিবাহ-বিচ্ছেদ নিবন্ধন সংশোধন আইন ২০০৫’ প্রণয়নে নীতিগত অনুমোদন দিয়েছে। সরকার রেজিস্ট্রি বাধ্যতামূলক করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। একই সঙ্গে গরিব মানুষেরাও যাতে রেজিস্ট্রি করতে পারে এ কারণে রেজিস্ট্রি ফি পাঁচ টাকা ধার্যের প্রস্তাব করা হয়েছে। নিকাহ রেজিষ্ট্রি ব্যতীত অন্য কোন ব্যক্তির বিয়ে সম্পাদনের ক্ষেত্রে পাত্রকে ৩০ দিনের মধ্যে বিয়ে সম্পাদনের বিষয়টি নিকাহ রেজিস্ট্রারকে জানাবেন এবং অবহিত হবার পর রেজিস্ট্রের তাৎক্ষণিক বিয়ে রেজিস্ট্রি করবেন। উল্লেখিত কার্য না করলে তা অপরাধ বলে গণ্য হবে এবং পাত্রকে শাস্তির আওতায় আনা হবে। বিয়ে রেজিস্ট্রেশন না করলে শাস্তির মেয়াদ তিন মাসের স্থলে অনূর্ধ্ব ২ বছর কারাদ- এবং ৫শ’ টাকার স্থলে ৩ হাজার টাকা জরিমানা নির্ধারণ করা হয়েছে। এই আইনের অপরাধের জন্য শাস্তিদানের এখতিয়ার প্রথম শ্রেণীর মেজিস্ট্রেটকে প্রদান করা। উত্থাপিত বিলটিতে বলা হয়েছে, এর ফলে পাত্রের এবং রেজিস্ট্রারের দায়বদ্ধতা সৃষ্টি হবে। এছাড়া অপ্রাপ্ত বয়স্ক নারী ও পুরুষের বিয়ে বন্ধনে আবদ্ধ হবার বিষয়টি নিরুৎসাহিত হবে। (দৈনিক সংগ্রাম, প্রথম আলো, ভোরের কাগজ, ইত্তেফাক, যুগান্তর ইত্যাদি ১৭ ফেব্রুয়ারী/২০০৫) উল্লেখ থাকে যে, সরকারী আইনে মেয়েদের ক্ষেত্রে ১৮ বছর এবং ছেলেদের ক্ষেত্রে ২১ বছর প্রাপ্ত বয়স্ক ধরা হয়েছে। এতদ্বপ্রেক্ষিতে যা আলোচনার বিষয়, আমাদের দেশের তাবত নামধারী ইসলামী দলগুলো নির্বাচনে শরীয়তী আইন কার্যকর করাকে তাদের প্রধান ইস্যু হিসেবে নেন। দেশে পুরো ইসলামী আইন জারী করতে না পারলেও অন্ততঃ সরকার যদি অনৈসলামী আইন বা বেশরীয়তি আইন চালু করে তাহলে তারা এমন প্রতিবাদ জানাবেন যে, সরকার তা সাথে সাথে বন্ধ করতে বাধ্য হবে। এমন প্রতিশ্রুতি তারা দিয়েছিলেন। বিশেষভাবে উল্লেখ্য যে, তথাকথিত ইসলামী রাজনীতিতে যারাই মাওলানা, মুফতী, মুহাদ্দিছ, শাইখুল হাদীছ, মুফাস্সিরে কুরআন, পীর, খতীব ইত্যাদি টাইটেল ধারণ করে বিরাজ করছেন তার বিপরীতে নিদেনপক্ষে শরীয়তী কিছু বিশ্বাস বা ইলম তাদেরকে অর্জন, বিশ্বাস ও স্বীকৃতি দিতে হয়েছে। অতএব, তারা যখন মুফতী, মাওলানা, মুহাদ্দিছ, মুফাস্সিরে কুরআন, শাইখুল হাদীছ, পীর, খতীব ইত্যাদি লক্বব ধারণ করেন তখনতারা এ কথাগুলোও অনিবার্যভাবে প্রচার করেন যে, (১) ১৯৬১ সালের অধ্যাদেশ অনুযায়ী তিন তালাক উচ্চারণ করার সাথে সাথে তালাক কার্যকর হয়না- একথা শরীয়তসম্মত নয়। (যার অসংখ্য দলীল ফিক্বাহ্র কিতাবে রয়েছে।) (২) তালাকের নোটিশ চেয়ারম্যানকে জানাতে হবে এবং না জানালে ১ বছর কারাদ- ও ১০ হাজার টাকা অর্থদ- হবে- এটাও শরীয়তসম্মত নয়। (যার অসংখ্য দলীল ফিক্বাহ্র কিতাবে রয়েছে।) (৩) চেয়ারম্যানের কাছে নোটিশ প্রেরণের পর ৯০ দিন অতিবাহিত না হলে তালাক কার্যকর হবেনা- এটাও শরীয়তস্মত কথা নয়। (যার অসংখ্য দলীল ফিক্বাহ্র কিতাবে রয়েছে।) (৪) তালাক দেয়ার পর চেয়ারম্যান তাদেরকে আবার মিলিয়ে দিলেই তারা আবার স্বামী-স্ত্রী হবে- একথা হানাফী মাযহাব মুতাবিক নয়। স্বৈরাচার আইয়ুব খানের ১৯৬১ সালে অধ্যাদেশের পর, খোদ জোট সরকারের অধীনে ঘোষিত পদক্ষেপঃ ১. নারীরাও পুরুষের মত সমানভাবে তালাক দিতে পারবে। ২. রেজিস্ট্রি না করে বিয়ে করলে বর-কনে এবং বিয়ে সম্পাদনকারীকে ২ বছরের বিনাশ্রম কারাদ- ও ৩ হাজার টাকার অর্থদ-। ৩. ছেলের ক্ষেত্রে ২১ বছর এবং মেয়ের ক্ষেত্রে ১৮ বছরের নিচে বিয়ে করানো যাবে না। তথাকথিত ইসলামী রাজনীতির তল্পিবাহকরা জানেন যে, যে ইসলামকে উপজীব্য করে তারা রাজনীতি করছেন, সে ইসলাম এসব কথা গ্রহণ করেনা, যে শরীয়তী আইন তারা পর্যাক্রমে চালু করবেন বলে সদা প্রচারমুখ সে শরীয়তী আইনে এটা মহা বেশরীয়তী কথা। কারণ, শরীয়তের প্রবর্তক স্বয়ং সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, হাবীবুল্লাহ, ড হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ১৮ বছরের কম বয়স্কা উম্মুল মু’মিনীন গ্রহণ করেছেন, বিয়ে করেছেন। ড হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর শরীয়ত- নাবালেগ-বালেগা উভয়েরই বিয়ে অনুমোদন করেছে। ড হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর শরীয়তে- তিন তালাক উচ্চারণ করার সাথে সাথে তালাক কার্যকর হয়। যা হানাফী মাযহাবের সব কিতাবে উল্লেখ রয়েছে। ড হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর শরীয়তে- তালাক প্রদানের সাথে চেয়ারম্যানের সম্পৃক্তা আদৌ স্বীকৃত নয়। ড মেয়েদের তালাক প্রদানের কথা সরাসরি স্বীকৃত নয়। এবং এভাবে বিবাহ রেজিস্ট্রি করাও সুন্নত হিসেবে গন্য নয়। বরং উপরে যা কিছু বলা হয়েছে, তার প্রায় সবই হারাম বা বিদ্য়াত বলে গণ্য। আর হাদীছ শরীফে ইরশাদ হয়েছে, “প্রত্যেক বিদ্য়াতই গোমরাহী ও পরিত্যাজ্য।” বড়ই পরিতাপ ও গভীর ক্ষোভের বিষয় যে, আজ সে গোমরাহী, হারাম ও বিদ্য়াতী কাজকেই সে বেশরীয়তী আমলকেই, রাষ্ট্রধর্ম ইসলামের এ দেশে জোট সরকারের এদেশে আইন করে, জেল-জরিমানা জারি করে মুসলমানদের করাতে বাধ্য করা হচ্ছে। কিন্তু তারপরেও নিশ্চুপ, নির্বিকার, নিষ্ক্রিয় দেশে শরীয়তী আইন চালুর, আল্লাহ পাক-এর আইন জারীর, ইসলমী শাসনতন্ত্র দাবীব, খেলাফত কায়েমের প্রবক্তরা দাবীকৃত ইসলামী সরকার তথা জোট সরকারের দাবীদার তথাকথিত মুফতী, মাওলানা, শাইখুল হাদীছ, মুফাস্সিরে কুরআন, পীর, খতীব ছাহেবেরা। মূলতঃ কুরআন শরীফের ভাষায়, “এদের অন্তর মরে গেছে।” জোট সরকারের সুবিধাভোগী হওয়ার তথা এম.পি, মন্ত্রীত্ব বাগানোর তাড়নায় ও কোন্দলে এদের অন্তর থেকে ইসলামের নূর নিভে গেছে। ইল্মী জজ্বা ও অনুভূতি সব উবে গেছে। ইসলাম না করেও এরা ইসলামের লেবেলই শুধ সেঁটে থাকছে। কারণ, ইসলামের নামে রাজনৈতিক ফায়দা হাছিলের জন্য এটাই এদের অনিবার্য পুঁজি। তাই জোট সরকারের ক্ষমতার ভাগীদার হওয়ার পরও তারা কার্যতঃ কোনই ইসলামী আইন বাস্তবায়ন করতে পারলোনা। বরং একের পর এক অনৈসলামী আইন জারীতে সহায়ক ভূমিকা পালন করলো। সহযোগিতে পরিণত হলো। কিন্তু এরপরেও লজ্জার মাথা খেয়ে আগামী নির্বাচনেও এরা প্রথমতঃ ইসলাম কায়েমের কথা বলবে। এরপর ক্ষমতায় যেয়ে পর্যায়ক্রমে ইসলামী আইন বাস্তবায়নের জন্য আবারো নারী নেতৃত্বের সাথে জোট বাঁধবে অথবা সহযোগিতে পরিণত হবে। মূলতঃ এরা এখন লজ্জাহীন, চশমখোর শ্রেণীতে পরিণত হয়েছে। হাদীছ শরীফে ইরশাদ হয়েছে, “যার লজ্জা নেই, তার ঈমান নেই।” সত্যিই এদের অন্তর থেকে ঈমান চলে গেছে। যদিও তাদের মুখে বড় বড় ইসলামী কথায় খৈ ফুটেছে। কিন্তু সেটা কেবল ইসলাম ব্যবহার করে তাদের রাজনৈতিক ফায়দা হাছিলের জন্যই। এ বিষয়কে নির্দেশ করে হাদীছ শরীফে ইরশাদ হয়েছে, “আখিরী জামানায় একদল লোক বের হবে, তাদের কথাগুলো হবে নবীদের মত, অন্তরটা নেকড়ে বাঘের মত, আমলটা হবে ফেরআউনের মত। ঈমান তাদের কণ্ঠনালরি নীচে নামবে না।” যার সরাসরি উদাহরণ ক্ষমতার প্রশ্নে বর্তমান নামধারী ইসলামী ঐক্যজোটের কোন্দলের পর কোন্দল, পরস্পর কাদা ছোড়াছুড়ি, অবশেষে মন্ত্রী, এম.পি হওয়ার প্রশ্নে চার দফা ভাঙ্গন এবং অব্যাহত হিংস্র ঝগড়া-কাজিয়া। মহান আল্লাহ পাক আমাদের এ সম্প্রদায় হতে হেফাযত করুন। (আমীন)
-মুহম্মদ ওয়ালীউল্লাহ, ঢাকা।
বৃটিশ গুপ্তচরের স্বীকারোক্তি এবং ওহাবী মতবাদের নেপথ্যে বৃটিশ ভূমিকা-১১