কুরআন শরীফে আল্লাহ পাক ইরশাদ করেন, “তোমরা ঐ কথা বলো কেন, যা তোমরা নিজেরা করো না।”
উল্লেখ্য, ইসলামের ইতিহাসে নবী-রসূল, আউলিয়ায়ে কিরাম, ইমাম-মুজতাহিদ এমন কোন অনুসরণীয় বুযূর্গ ব্যক্তিত্ব নেই; তাঁরা নিজেরা যা করেননি তার জন্য অপরকে বলেছেন বা আহবান করেছেন।
মূলতঃ এটাই ইসলামী আদর্শ।কারণ, নিজে কোন কাজ না করে তার জন্য অপরকে বলা হচ্ছে প্রতারণা করা বা ধোকা দেয়া। আর হাদীছ শরীফে ইরশাদ হয়েছে, “যে ধোকা দেয় সে আমার উম্মত নয়।” আর যে হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর উম্মত নয় সে মুসলমান নয়। ইসলামী শরীয়তে এটাই সর্বসম্মত ফতওয়া।
মাসিক আল বাইয়্যিনাত-এর গত সংখ্যায় “আমরা যুদ্ধ করে দেশ স্বাধীন করেছি”- কুখ্যাত মইত্যা রাজাকারের এই মিথ্যা আস্ফালনের বিপরীতে তার রাজাকারগিরীর দলীলভিত্তিক বিশেষ প্রমাণ পত্রস্থ হয়েছে। তাতে অনেকেই বিস্ফারিত নেত্রে তার মহা মিথ্যাবাদীতা ও নিকৃষ্টতা নির্ণয় করতে পেরেছেন।
কিন্তু অনেক ক্ষেত্রেই সেগুলো ধর্মের বিষয়ে, ধর্মের নামে। অর্থাৎ তারা মুসলমানের সাতে প্রতারণা করেছে। ইসলামের সাথে প্রতারণা করেছে। আল্লাহ পাক ও তাঁর হাবীব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর সাথে ধোকাবাজি, ছলনা শঠতা, প্রতারণা, ঠগবাজি, প্রবঞ্চনা ইত্যাদি করেছে। এজন্য হাদীছ শরীফে এদের সৃষ্টির মধ্যে সর্বাপেক্ষা নিকৃষ্ট বলা হয়েছে।
বিগত ১০ই অক্টোবর ২০০৫ সাল, সোমবার বিকেলে মহানগর নাট্যমঞ্চে ঢাকা মহানগরী জামত আয়োজিত ব্যবসায়ীদের সম্মানে রমযানের তাৎপর্য শীর্ষক আলোচনা সভা ও ইফতার মাহপিলে প্রধান অতিথির বক্তব্যে জামাত আমীর মইত্যা রাজাকার বলেছে, ‘তাক্বওয়াভিত্তিক সমাজ গঠনে সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালাতে হবে। তাক্বওয়া অর্জন করা মানুষের জন্য সর্বশ্রেষ্ঠ পুঁজি। জাতীয়ভাবে তাক্বওয়া প্রতিষ্ঠিত হলে জাতীয় সুফল বয়ে আনবে। কোন বণী আদম জীবনের কার্যকাল, যৌবনকাল, আয়-ব্যয় ও জ্ঞানের হিসাব দেয়া ছাড়া এক কদমও এগুতে পারেনা।” (দৈনিক সংগ্রাম, ১১ই অক্টোবর, ০৫)
উপরোক্ত উদ্ধতিতে দেখা যায় যে, মইত্যা রাজাকার তাক্বওয়া অর্জনের উদাত্ত আহবান জানাচ্ছেন। এবং জীবনের কার্যকাল, যৌবনকাল, আয়-ব্যয়ের হিসাব দেয়ার নছীহত করেছে।
কিন্তু সত্যিই কি তাব্বওয়া অর্জন করার আহবান জানানোর মত তাক্বওয়া মইত্যা রাজাকারের আছে? কারণ, তাক্বওয়া অর্জনের আহবান তো ঐ ব্যক্তিই জানাতে পারেন, যিনি নিজে তাক্বওয়া অর্জন করেছেন। যে আয়াত শরীফ পূর্বেই উল্লেখ করা হয়েছে, আল্লাহ পাক ইরশাদ করেন, “তোমরা ঐ কথা বলো কেন? যা তোমরা নিজেরা পালন করোনা।” এবং এরকম করা যে ধোকা প্রতারণা করা আর ধোকাবাজ ও প্রতারকরা যে আল্লাহ পাক-এর হাবীব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর উম্মত তথা মুসলমান নয় তা ইতোপূর্বে আলোচনা হয়েছে। সেক্ষেত্রে তাক্বওয়ার আহানকারী মইত্যা রাজাকার যে তাক্বওয়াধারী হওয়ার পরিবর্তে কতটুকু দুর্নীতিবাজ, ঠগবাজ, বোমাবাজ ও জঙ্গি মদদদাতা তা নিচের গুটিকয়েক রিপোর্ট সাপেক্ষে সহজেই উপলব্ধি করা যায়।
শিল্পমন্ত্রীকে দুর্নীতিবাজ আখ্যায়িত করলেন রাজশাহীর কৃষক নেতারা
রাজশাহীর কৃষক নেতারা শিল্পমন্ত্রী মাওলানা মতিউর রহমান নিজামীকে দুর্নীতিবাজ আখ্যায়িত করেছেন। রাজশাহী সাধারণ গ্রন্থাগারে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের উদ্যোগে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে মন্ত্রীর বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ আনেন তারা।
সম্মেলনে জাতীয় কৃষক সমিতির ভাইস প্রেসিডেন্ট ফজলে হোসেন বাদশা বলেন, সরকারি দলের কতিপয় ব্যবসায়ীকে খুশি করতে নির্দিষ্ট দিনে চিনিকল চালূ করা হচ্ছে না। কারণ দেশে চিনি উৎপাদন হলে বিদেশ থেকে চিনি আমদানি করে ওই সব ব্যবসায়ী লাভবান হতে পারবেন না। এ দুর্নীতির সঙ্গে শিল্পমন্ত্রী জড়িত। সম্মেলনে কৃষকরা জানান, রাজশাহীর ২ হাজার কৃষকের ১ কোটি টাকার আখ শুকিয়ে গেছে। তারা সেগুলো জ্বালানী হিসেবে ব্যবহার করছেন। (দৈনিক আমাদের সময়, ২ নভেম্বর, ২০০৫ ঈসায়ী)
মানারাতে শিক্ষার আড়ালে জামাত শিবিরের গোপন কার্যক্রম চলছে
মানারাত ইন্টারন্যাশনাল স্কুল এ্যান্ড কলেজ এখন দেশবাসীর কাছে ঘৃণিত। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের আড়ালে এখানে ঢাকা মহানগর উত্তর জামাত-শিবিরের গোপন কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে। শিবিরের প্রশিক্ষণও চলে। জঙ্গি তৎপরতার তাত্ত্বিক প্রশিক্ষণ দেয়ারও অভিযোগ রয়েছে। একটি গোয়েন্দা সংস্থা এখন এসব বিষয়ে খোঁজখবর নেয়া শুরু করেছে। ওই সংস্থা ‘মানারাত’ সম্পর্কে জানিয়েছে, স্কুলের দারোয়ান থেকে শুরু করে প্রিন্সিপাল পর্যন্ত জামাত-শিবিরের নেতাকর্মী। দলীয় লোক ছাড়া এখানে কারও চাকরি হয় না। স্কুল পরিচালনা বোর্ডে অভিভাবকদের মধ্য থেকে যাদের নেয়া হয়েছে তারাও জামাতের রাজনীতির সাথে সরাসরি জড়িত।
জানা গেছে, এরশাদ আমলে জামাতের আমির মতিউর রহমান নিজামীর স্ত্রী ড. শামসুন্নাহার নিজামী রাজউকের কাছ থেকে নামমাত্র মূল্যে স্কুলের নামে ২ একরেরও বেশী জায়গা নেন। গুলশান-২ এ লেকের ধারের এই জায়গায় গড়ে তোলা হয় মানারাত ইন্টারন্যাশনাল স্কুল এ্যান্ড কলেজ। বর্তমানে এখানে বিশ্ববিদ্যালয় খোলা হয়েছে। এরশাদ আমলের শেষ দিকে জমি নিয়ে সেখানে একটি ছোট্ট টিনের ঘর করা হয়। এরপর ১৯৯১ সালে বিএনপি ক্ষমতায় এলে জামাতের এই স্কুল ফুলে ফেঁপে উঠে।
সৌদি আরব থেকে অর্থ যোগান শুরু হয়। রাতারাতি গেড় তোলা হয় ৩টি ৬ তলা ভবন। চারদিকে উঁচু দেয়াল দিয়ে ঘিরে দেয়া হয়। সৌদি অর্থে গড়ে তোলা এই দুর্গে দিনে স্কুল রাতে জামাতের প্রশিক্ষণ কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহার হয়ে আসছে। (দৈনিক জনকণ্ঠ, ৮ জুন- ২০০৬)
নিজামী চক্র এখনও সক্রিয় কাফকোর প্রধান নির্বাহী পদে পাকিস্তানী
ক্ষমতার অপব্যবহার ও দলীয়করণ করেই ক্ষান্ত হচ্ছে না শিল্প মন্ত্রণালয়ের জামাতী চক্র। নিজামীর হাতে গড়া এই চক্রটি চট্টগ্রামের কাফকো সারকারখানায় প্রধান নির্বাহী পদে নিয়মনীতিকে পদদলিত করে এক পাকিস্তানী নাগরিককে নিয়োগ দিয়েছে। সম্পূর্ণ বেআইনীভাবে এই নিয়োগের মাধ্যমে বিদায়ী বিএনপি-জামাত জোট সরকারকে তুষ্ট করার পাশাপাশি পাকিস্তানপ্রীতির এক নির্লজ্জ নজির স্থাপন করেছে নিজামীর প্রেতাত্মারা। এ নিয়ে কাফকোর বিদেশী শেয়ারহোল্ডার এবং কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মধ্যে ক্ষোভ বিরাজ করছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, ৯০ দশকের গোড়ার দিকে বাংলাদেশ সরকার ও কয়েকটি দাতাদেশের যৌথ বিনিয়োগের ভিত্তিতে কাফকো সারকারখানা প্রতিষ্ঠিত হয়। কারখানাটিতে বাংলাদেশ সরকারের ৪৪ শতাংশ, জাপানের ২৮ শতাংশ এবং ডেনমার্কের দু’জন, নেদারল্যান্ডের একজন এবং ব্রিটেনের একজন প্রতিনিধি রয়েছে। পদাধিকার বলে বাংলাদেশ সরকারের প্রতিনিধি ছাড়াও জাপানের তিনজন, ডেনমার্কের দু’জন, নেদারল্যান্ডের একজন এবং ব্রিটেনের একজন প্রতিনিধি রয়েছে। পদাধিকার বলে বাংলাদেশ সরকারের শিল্প মন্ত্রণালয়ের সচিব এর চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করেন। প্রতিষ্ঠার পর থেকেই কারখানাটিতে পর্যায়ক্রমে একজন ব্রিটিশ নাগরিক প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) হিসাবে দায়িত্ব পালন করে আসছেন।
গত বছরের মাঝামাঝি সময়ে কারখানার সিইও পদ শূণ্য হয়। এই সুযোগে তৎকালীন শিল্পমন্ত্রী ও জামাতের আমির মাওলানা মতিউর রহমান নিজামী একজন পাকিস্তানী নাগরিককে সিইও’র আকর্ষণীয় ও লোভনীয় পদে নিয়োগ দিতে উঠেপড়ে লেগে যান। নিজামীর ‘পাকিস্তানী প্রীতির’র এই ইচ্ছ পূরণে অগ্রসৈনিক হিসাবে কাজ করেন মন্ত্রণালয়ে তাঁর প্রিয়পাত্র শিল্পসচিব নুরুল আমিন। নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে একজন পাকিস্তানী নাগরিককে যৌথ বিনিয়োগের কারখানায় নিয়োগ দিতে তিনি সর্বাত্মক চেষ্টা চালান। এই প্রক্রিয়ায় বেছে নেয়া হয় নিজামীর ঘনিষ্ঠ পাকিস্তানী নাগরিক মোঃ কায়সার জামালকে।
সে সময় কাফকোর বিদেশী শেয়ারহোল্ডার এবং কর্মকর্তা কর্মচারীদের তীব্র আপত্তি সত্ত্বেও শিল্প সচিব নিজামীর অপূর্ণ ইচ্ছা পূরণ করতে এই নিয়োগ চূড়ান্ত করেন। সূত্র মতে, প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা হিসেবে জামাল কায়সারের মাসিক বেতন ১৮ হাজার ৩৩৩ দশমিক ৩৩ মার্কিন ডলার; বাংলাদেশী মুদ্রায় যার পরিমাণ প্রায় ১৩ লাখ টাকা। তাঁর আবাসনের জন্য আড়াই লাখ টাকায় মাসিক ভাড়ায় একটি বাড়িও ভাড়া করা হয়েছে। যোগ্যতা না থাকা সত্ত্বেও বিপুল পরিমাণ অর্থব্যয়ে এই পাকিস্তানী নাগরিকের পুনর্বাসনে ক্ষব্ধ কাফকোর বিদেশী শেয়ারহোল্ডার ও কর্মকর্তা কর্মচারীরা।
উল্লেখ্য, শিল্প মন্ত্রণালয়ের অধীনে বাংলাদেশে রসায়ন শিল্প করপোরেশনের (বিসিআইসি) মাধ্যমে কাফকো সারকারখানা পরিচালিত হয়। (দৈনিক জনকণ্ঠ, ১৮ ফেব্রুয়ারী, ২০০৭)
নিজামীর সুপারিশে আনা ৩২শ’ মেট্রিক টন রক সালফার গেলো কই?
রূপগঞ্জ থানাধীন মুড়াপাড়া এলাকায় অবস্থিত ওয়াটা কেমিক্যালের ফ্যাক্টরির নামে চলতি বছরের মার্চ মাস থেকে নভেম্বর পর্যন্ত মোট ৩২শ’ মেট্রিক টন রাসায়নিক রক সালফার টিএসপি থেকে বেআইনীভাবে আনা হয়েছে। এ রক সালফার বোমা তৈরীর কাজে ব্যবহৃত হয়। এ অপকর্মটি শিল্পমন্ত্রী মতিউর রহমান নিজামীর সুপারিশক্রমে হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
সুত্র জানায়, মুড়াপাড়া এলাকায় অবস্থিত কেমিক্যাল ফ্যাক্টরির ৯৮% শেয়ারের মালিকান কর্তৃপক্ষকে মাত্র ২% শেয়ারের মালিক খোদেজা হক স্থানীয় একটি প্রভাবশালী মহলের সহযোগিতায় জোরপূর্বক বের করে দেয়। পরে শিল্পমন্ত্রী মতিউর রহমান নিজামীর ভাতিজা সান্টুর সহযোগিতায় এবং শিল্পমন্ত্রীর সুপারিশক্রমে ২% শেয়ারের মালিক খোদাজা হক ওয়াটা কেমিক্যালের নামে টিএসপি থেকে ৩২শ’ মেট্রিক টন রাসায়নিক দ্রব্য রক সালফার বের করে আনে। শিল্পমন্ত্রীর সুপারিশক্রমে বেআইনীভাবে আনা রক সালফার কি কাজে ব্যবহৃত হয়েছে তার সঠিক তদন্ত হলে দেশে সিরিজ বোমার রহস্য বের হয়ে আসতে পারে বলে অভিজ্ঞ মহল মনে করেন। (দৈনিক জনকণ্ঠ, ১৮ ডিসেম্বর, ২০০৫)
উল্লেখ্য, হাদীছ শরীফে ইরশাদ হয়েছে, ধর্মব্যবসায়ীরা সৃষ্টির নিকৃষ্ট জীব। সাধারণ ভাষায় আমরা বলে থাকি- খারাপ, খুব খারাপ, অতি খারাপ।
কিন্তু নিকৃষ্ট কাকে বলা হয়? খারাপের মধ্যে যে সর্বশেষ পর্যায়ের বা সবচেয়ে বেশী খারাপ, যার পরে আর খারাপি হতে বা খারাপ হতে পারে না তাকেই বলা হয় নিকৃষ্ট।
রাজাকার, আল বাদর হোতা কুখ্যাত মইত্যা রাজাকার যে কুখ্যত ধর্ম ব্যবসায়ী তা সবারই জানা। তবে হাদীছ শরীফ মুতাবিক সে যে নিকৃষ্ট এবং নিকৃষ্টরূপে তার মুল্যায়ণ সাধারণের অনেকেই করতে ব্যর্থ হয়।
তবে তার ভদ্রবেশী, মুখোশধারী বক্তব্য আর আমলের প্রেক্ষিতে খুব সহজেই তার নিকৃষ্টতা নির্ণয় করা যায়।
তাক্বওয়ার ওয়াজকারী, আয়-ব্যয়ের হিসেব দেয়ার নছীহতকারী কুখ্যাত মইত্যা রাজাকার নিজেই যে কত বড় দুর্নীতিবাজ, ধড়িবাজ, ঠগবাজ, জালিয়াত, শঠ, দুর্নীতিবাজ, চোর, বোমাবাজ, জঙ্গি মদদদাতা তা উপরের গুটিকতক রিপোর্টেই বিশেষভাবে প্রতিভাত ও প্রমাণিত হয়েছে।
কেউ কেউ মনে করেন যে, কুখ্যাত মইত্যা রাজাকারের মুখে ‘আমরা যুদ্ধ করে দেশ স্বাধীন করেছি’– এটা বুঝি সবচেয়ে বড় ধাপ্পাবাজি, মিথ্যা ও প্রতারণা। কিন্তু ইসলামের দৃষ্টিতে তার মত প্রতারক, প্রবঞ্চক, ঠগ, শঠ, চোর, বর্বর, মৌলবাদ, দুর্নীতিবাজ, বোমাবাজ, ধড়িবাজ, ৭১-এর খুন ও ধর্ষণ এবং আজকের জঙ্গি মইত্যার মুখে তাক্বওয়ার ওয়াজ করা ও আয় ব্যয়ের তথা আমলের হিসেব দেয়ার আহবান আরো বড় প্রতারণা ও প্রবঞ্চনা।
উল্লেখ্য, গুণাহ-পাপ এবং অন্যায় থেকে বেঁচে নেক কাজ বা পরোপকার করার নাম বা অর্থ হলো, সাধারণ নেককার হওয়া। ইসলামী শরীয়তের দৃষ্টিতে তাক্বওয়ার স্থান তারও ঊর্ধ্বে। যেমন, ইমামে আ’যম, আবু হানিফা রহমতুল্লাহি আলাইহি-এর অজান্তে তাঁর এক কর্মচারী কাপড়ের সামান্য খুঁৎ না দেখিয়ে বিক্রি করে। তিনি তা জানতে পেরে সেদিনের বিক্রিত ৩০ হাজার দিরহাম দান করে দেন। সন্দেহজনক কাজ থেকেও অনেক দূরে থাকা বা পরহিয থাকার নামই পরহিযগারী বা তাক্বওয়া। তাহলে সে তাক্বওয়ার আহবানের জন্য কতবড় নেককার হওয়ার প্রয়োজন?
কিন্তু কুখ্যাত মইত্যা রাজাকারের মত বদকার যখন তার কু-মুখে সে তাক্বওয়ার ওয়াজ করে, তখন সে কত বড় ধোকাবাজ, ঠগবাজ, ধাপ্পাবাজ, ধড়িবাজ, শঠ, প্রতারক, প্রবঞ্চক প্রতিভাত ও প্রমাণিত হয় তা ভাষায় অব্যক্ত।
তবে হাদীছ শরীফের ভাষায় বলতে হয় যে, দুনিয়াতেই জাহান্নামী বলে বিবেচিত হয়। মুকে দাঁড়ি, মাথায় টুপি থাকলেও সেটা ইসলঅমের সাথে প্রতারণা বলেই প্রতিভাত হয়।
কারণ, হাদীছ শরীফ মুতাবিক সে আখেরী রসূল, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর উম্মত তথা মুসরমানই নয়। হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, যে ধোকা দেয় সে আমার উম্মত নয়। কাজেই ইনশাআল্লাহ সেদিন বেশী দূরে নয় যেদিন কথিত গণ আদালতের বিচারে পার পাওয়া এসব রাজাকাররা শরয়ী আদালতে মুসলমান ও ইসলামের সাথে প্রতারণার প্রেক্ষিতে অ-উম্মত তথা অমুসলমান বলে প্রমাণিত হবে। দুনিয়াতেই জাহান্নামী বলে প্রতিভাত হবে। যেমন, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন, যে আমার নামে মিথ্যা বলে সে যেন দুনিয়ায় থাকতেই তার স্থান জাহান্নামে নির্ধারণ করে নেয়।”
দুনিয়াতেই জাহান্নামী হিসেবে চিহিত এইসব ঠগবাজদের তথা ইসলামের নামে ধর্মব্যবসা ও মুসরমানদের সাথে প্রতারণা করার খাহেশ তখন চিরতরে মিটাবে ইনশাআল্লাহ।
-খন্দকার মুহম্মদ মুসলিম, ঢাকা।
ব্রিটিশ গুপ্তচরের স্বীকারোক্তি এবং ওহাবী মতবাদের নেপথ্যে ব্রিটিশ ভূমিকা-৩২