সকল প্রশংসা মহান আল্লাহ পাক উনার প্রতি এবং উনার হাবীব হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার প্রতি লক্ষ্য কোটি দরূদ ও সালাম এবং আরো দুরূদ ও সালাম পেশ করছি আমাদের প্রাণের আক্বা হযরত মামদূহ মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস সালাম উনার ও উনার আহলে বাইত আলাইহিমুস্ সালাম উনাদের প্রতি।
মহান আল্লাহ পাক তিনি পবিত্র কালামুল্লাহ শরীফ-এ জানিয়ে দিয়েছেন।
“দ্বীনের মধ্যে কোন প্রকার কাঠিন্যতা নেই।” (সূরা হজ্জ: আয়াত শরীফ ৭৮)
আর হাদীছ শরীফ-এ ইরশাদ হয়েছে- “দ্বীন বা শরীয়ত হচ্ছে সহজ।” (বুখারী শরীফ)
সুতরাং ‘পর্দার বিধান’ যেহেতু স্বয়ং রব্বুল আলামীন তিনি দিয়েছেন এবং উনার হাবীব হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি দিয়েছেন, সেহেতু ‘পর্দা’ করাটাই সহজ। আর ‘পর্দা’ না করাটাই কঠিন।
দ্বীন ইসলামে ঈমান আনার অন্যতম শর্তই হচ্ছে কুরআন শরীফ, হাদীছ শরীফ, ইজমা ও ক্বিয়াস তথা শরীয়তের বিধানের উপর প্রথমে বিশ্বাস স্থাপন করা এবং আমল করা। যদি কোন মুসলমান বিনা চু’চেরায় শরীয়তের তর্জ-তরীক্বার উপর বিশ্বাস স্থাপন করতে পারে তবে তখনই সেটা পালন করা তার জন্য সহজ হয়। আর যদি বিশ্বাসের ঘাটতি হয় তখনই সে বিষয় সম্পর্কে পালন করা বা আমলে বাস্তবায়ন করা কঠিন হয়ে পড়ে। আর তাই প্রথমে বিশ্বাস স্থাপন এবং সহজ বিষয়কে সহজভাবে উপলব্ধি করার চেষ্টা করতে হবে। তবেই ‘পর্দা’ পালনের ক্ষেত্রে আর কোন বাধা থাকবে না। ‘চেষ্টা বান্দার তরফ থেকে। আল্লাহ পাক তিনি সেটা পুরা করে দিবেন।
হাদীছ শরীফ-এ রয়েছে- “দুনিয়ার থেকে সতর্ক থাক। মেয়েদের থেকেও সতর্ক থাক। নিশ্চয়ই বণী ইসরাঈলের প্রথম যে ফিৎনা হয়েছিল সেটা মেয়ে সংক্রান্ত।” সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খতামুন নাবিইয়ীন, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি এ ব্যাপারে স্পষ্ট জানিয়ে দিলেন, “দেখ কাবিল হযরত হাবিল আলাইহিস সালাম উনাকে শহীদ করলো। মহান আল্লাহ পাক উনার যমীনে সবচাইতে প্রথম যে হত্যা সংঘটিত হলো তা হলো কাবিলের দ্বারা। কাবিল যে হযরত হাবিল আলাইহিস সালাম উনাকে শহীদ করলো এটার একমাত্র কারণ হচ্ছে, মেয়ে সংক্রান্ত বিষয়।”
হাদীছ শরীফ-এ আরো ইরশাদ হয়েছে, হযরত উসামা ইবনে যায়িদ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু উনার থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আখিরী রসূল হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ করেন, “আমি আমার পরে এমন কোন জিনিস রেখে যাচ্ছি না, যেটা পুরুষদের জন্য সবচাইতে ক্ষতির কারণ এবং ফিতনার কারণ যে বিষয়টা রেখে যাচ্ছি সেটা হচ্ছে মহিলা।’ কাজেই মহান আল্লাহ পাক তিনি পর্দাকে ফরয করে দিয়েছেন। যদি মহিলারা ‘পর্দা’ মেনে চলে; তবে অবশ্যই কোন প্রকারের ফিতনা হবে না। আর ‘পর্দা’ না করলেই মারামারি, কাটাকাটি, খুনা-খুনি, এসিড নিক্ষেপ, ধর্ষণ ইত্যাদি ফিতনা-ফ্যাসাদ ঘটতেই থাকবে। যার বাস্তব উদাহরণ বর্তমান প্রেক্ষাপট। যা আমাদের ঘরের বাইরে, অফিস-আদালতে, রাস্তা-ঘাটে ঘটে যাওয়া বিভিন্ন ঘটনা পত্র-পত্রিকাগুলো খুললেই সবার চোখে পড়ে।
মেয়েদের নিয়ে বিজ্ঞাপন চিত্রের রমরমা ব্যবসা, নাটক-সিনেমায় অভিনয়রত অশালীন নায়ক-নায়িকা এবং এদের ভক্ত অনুরাগীদের দ্বারা বর্তমান দেশের স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়গুলো জিম্মি হয়ে থাকা পাশ্চাত্যের ইহুদী-নাছারা তথা কাফির-মুশরিকদের ঔদ্ধত্য দাপটেরই আরেক বহিঃপ্রকাশ।
সুতরাং মুসলমান দেশ হয়েও পর্দার প্রতি মুহব্বত কোথায়? মহান আল্লাহ পাক এবং উনার হাবীব হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের প্রতি মুহব্বত কোথায়?
যেখানে উনাদের প্রতি মুহব্বতই নেই, সেখানে পর্দা পালন এদের মতো নামকাওয়াস্তে মহিলাদের জন্য এমনকি পুরুষদের জন্যও কঠিন বিষয়। সুতরাং দ্বীন ইসলামে সুস্পষ্ট বিধানের প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করা তথাকথিত মহিলা পুরুষদের কাম্য নয়। আর উক্ত তথাকথিত সংস্কৃতমনা মহিলা-পুরুষই তথাকথিত ‘নারী অধিকার’ নিয়ে সমোচ্চারিতভাবে আওয়াজ তুলে বিকৃত আশা পোষণ করার জন্য যা পর্দার বিপরীতেই হাজারো প্রমাণ মেলে।
সুতরাং আমরা যেহেতু মুসলমান দাবি করি সেহেতু আমরা আয়াত শরীফ এবং উক্ত হাদীছ শরীফই বিশ্বাস করবো এবং উক্ত হাদীছ শরীফ থেকে ইবরত-নছীহত গ্রহণ করবো এই যে ‘পর্দার মধ্যেই একজন মহিলার ইজ্জত-আবরু, মান-সম্মান ঢেকে থাকে। সেখানে ইবলিস শয়তানও উঁকি ঝুঁকি দিতে পারে না এবং ইবলিস শয়তানের চেলারাও উঁকি-ঝুঁকি দিতে পারে না বা পারবে না। পুরুষরা ইচ্ছায়-অনিচ্ছায় বিভ্রান্ত হবে না; এবং সমাজের বিভিন্ন স্তরের মানুষও ফিতনায় পড়বে না।
অর্থাৎ মহিলা-পুরুষদের অবশ্যই নছীহত গ্রহণ করতে হবে যে, ‘পর্দাই একমাত্র সমস্ত শান্তির মূল। এতে একজন মা, বোন, কন্যা সবাই হিফাযত যেমন থাকবে তেমনি শান্তি তথা ইতমিনানও তাদের মধ্যে থাকবে।’ ফলে একটা সংসার, পরিবার, সমাজ, দেশ তাদেরকে নিয়ে পেরেশানিতে থাকবে না। একজন পুরুষও হিফাযতে থাকবে এবং একটা সংসারে শান্তিও বিরাজ করবে।
মহান আল্লাহ পাক তিনি আমাদেরকে সাইয়্যিদে মুজাদ্দিদে আ’যম মামদূহ হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা আলাইহিস্ সালাম এবং হযরত আম্মা হুযূর ক্বিবলা আলাইহাস সালাম উনাদের ফায়েজ-তাওয়াজ্জুহ’র মাধ্যম দিয়ে প্রত্যেক মহিলা এবং পুরুষদেরকে হাক্বীক্বীভাবে ইছলাহ করে দিন এবং পর্দা পালনে অভ্যস্ত করে দিন, এই আরজি পেশ করছি। আমীন!
-আহমদ আজিমা ফারহা, ঢাকা
ব্রিটিশ গুপ্তচরের স্বীকারোক্তি এবং ওহাবী মতবাদের নেপথ্যে ব্রিটিশ ভূমিকা-৩৪
চাঁদ দেখা এবং নতুন চন্দ্রতারিখ শুরু নিয়ে প্রাসঙ্গিক আলোচনা- ২
কোকাকোলা ও অন্যান্য কোমল পানীয় সম্পর্কে উন্মোচিত সত্য-১৮
কট্টর কমুনিস্ট মাওসেতুং এর নতুন ভাবশিষ্য ফুলতলীর লংমার্চ এবং তার শরয়ী পর্যালোচনা ও প্রসঙ্গ কথা-৩