-হযরত মাওলানা মুফতী সাইয়্যিদ মুহম্মদ আব্দুল হালীম
মুজাদ্দিদুয্ যামান সম্পর্কে
আক্বলী ও নক্বলী দলীল
ইমামে আ’যম রহমতুল্লাহি আলাইহি সম্পর্কে মানুষ মনে করতো যে, তিনি সব কিছুই জানেন।” তার ইল্মের বাইরে কোন কিছু নেই। (সুবহানাল্লাহ) একদা একজন লোক এসে জানালো যে, হুযূর! আমি আমার ঘরে মাটির নিচে অনেক টাকা পুঁতে রেখেছিলাম। কিন্তু এখন তা খুঁজে পাচ্ছি না। বেয়াদবী মাফ করবেন, দয়া করে বলে দিন সেই টাকা কোথায় আছে।
ইমামে আ’যম রহমতুল্লাহি আলাইহি বললেন, তোমার টাকা তুমি কোথায় রেখেছো আমি তা কি জানি? সে ব্যক্তি বললো, হুযূর! আপনি সব জানেন।”
ইমামে আ’যম রহমতুল্লাহি আলাইহি কোন উপায় না দেখে সেই ব্যক্তির বাড়ীতে গেলেন। ঘরের ভিতর প্রবেশ করতঃ এক স্থানের দিকে নির্দেশ করে বললেন, এখানে খুঁড়ে দেখ। আদেশ যথাযথভাবে পালিত হলো। দেখা গেল সত্যি সেখানেই সেই টাকা রয়েছে। (সুবহানাল্লাহ)
খলীফাতুল্লাহ, খলীফাতু রসূলিল্লাহ, ইমামুল আইম্মাহ, মুহ্ইস্ সুন্নাহ, কুতুবুল আলম, মুজাদ্দিদে আ’যম, আওলাদে রসূল, সাইয়্যিদুনা ইমাম রাজারবাগ শরীফের হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী-এর ক্ষেত্রেও তার ব্যতিক্রম হয়নি। তিনিও সেই মাক্বামে অধিষ্ঠিত মহান ব্যক্তিত্ব।
ইমামে আ’যম, হযরত ইমাম আবু হানিফা রহমতুল্লাহি আলাইহি-এর সাথে তাঁর রূহানী তায়াল্লুক বা গভীর নিসবত রয়েছে।
একবার বিশেষ কারণে তিনি বললেন, একদিন আমি কিতাবাদী মুতায়ালা করতেছিলাম। সে অবস্থায় একটু তন্দ্রা আসলো। তখন দেখতে পেলাম। আমার সামনে সামনে একজন লোক হাঁটছেন। আমি তাঁর পিছনে পিছনে চলছি। কিছুদূর চলার পর তিনি দাঁড়ালেন। অতঃপর আমাকে হাতছানী দিয়ে নিকটে ডাকলেন। তাঁর চেহারা মুবারক ছিল অত্যন্ত উজ্জ্বল ও সুন্দর। আমি তাঁর কাছে গেলাম। তিনি আমার শরীর মুবারকে হাত বুলালেন ও কপাল মুবারকে চুম্বন দিয়ে বললেন, আমি ইমামে আ’যম, হযরত ইমাম আবূ হানীফা রহমতুল্লাহি আলাইহি। আজ আমার সমস্ত ইল্ম, হিকমত ও সমঝ আপনাকে হাদিয়া করলাম। (সুবহানাল্লাহ)
খলীফাতুল্লাহ, খলীফাতু রসূলিল্লাহ, ইমামুল আইম্মাহ, মুহ্ইস সুন্নাহ, কুতুবুল আলম, মুজাদ্দিদে আ’যম, আওলাদে রসূল, সাইয়্যিদুনা ইমাম রাজারবাগ শরীফের হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী আরো বললেন, আমি একদিন স্বপ্নে দেখতে পেলাম আফজালুল আওলিয়া, ইমামে রব্বানী হযরত মুজাদ্দিদে আলফে ছানী রহমতুল্লাহি আলাইহি-কে। তিনি আমার হুজরা শরীফে তাশরীফ আনলেন। সালাম-কালাম বিনিময় শেষে অনেক কথা-বার্তা হলো। এক পর্যায়ে তিনি আমাকে বললেন, “আপনি কি মুজাদ্দিদ হবেন?” আমি বললাম, “আমি কিভাবে মুজাদ্দিদ হতে পারি। আমার তো কোন ইল্ম-কালাম নেই।” [মুলতঃ তিনি বিনয়বশত উক্ত উক্তি ব্যক্ত করেছেন। নচেৎ তিনি বাস্তবিক পক্ষেই বাহরুল উলূম ছিলেন] তিনি বললেন, এ ব্যাপারে কোন চিন্তাই করবেন না। আল্লাহ পাক সমস্ত ইল্ম এবং হিকমতই আপনাকে দান করবেন। (সুবহানাল্লাহ)
উল্লেখ্য যে, ‘মুজাদ্দিদুয্ যামান’ এর স্বপ্ন নিছক কোন স্বপ্ন নয়। মুজাদ্দিদুয্ যামান-এর স্বপ্নের গুরুত্ব ও তাৎপর্য অপরিসীম। যেখানে হাদীছ শরীফে মু’মিন ব্যক্তির সত্য স্বপ্নকে নুবুওওয়াতের ছিচল্লিশ ভাগের এক ভাগ বলা হয়েছে। সেখানে “মুজাদ্দিদুয্ যামান” ব্যক্তিত্বের স্বপ্নের গুরুত্ব-তাৎপর্যের গভীরতা যে আরো কত ব্যাপক হতে পারে তা সহজেই অনুমেয়।
হাদীছ শরীফে ইরশাদ হয়েছে, হযরত আতা ইবনে ইয়াছার রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু বলেন, নিশ্চয়ই আখিরী রসূল, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন, “আমার পরে নুবুওওয়াতের কোন ধারা বাকি থাকবে না। তবে মুবাশ্শিরাত বা সুসংবাদের ধারা অব্যাহত থাকবে। তাঁরা (হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম) আরজ করলেন, ইয়া রসূলাল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মুবাশ্শিরাত কি? তিনি বললেন, সু-স্বপ্ন। যা কোন আল্লাহওয়ালা ব্যক্তি দেখে অথবা কোন আল্লাহওয়ালা ব্যক্তি সম্পর্কে অপর কাউকে দেখানো হয়। আর এই প্রকার সু-স্বপ্ন নুবুওয়াতের ছিচল্লিশ ভাগের একভাগ।” (মুয়াত্তায়ে ইমাম মালেক-৩৭৮, তানবীরুল হাওয়ালিক-৬৮৯, মাছওয়া-২/৩৮৬, মুনতাকা-৯/৪১৬, ফাতহুল মালিক-১০/২৩৮, কাবাস- ৪/৩৩০, শরহুয্ যুরকানী-৪/৪৫১, আওযাজুল মাসালিক-১৫/৮১)