[সমস্ত প্রশংসা মহান আল্লাহ পাক রব্বুল আলামীন উনার জন্যে এবং অসংখ্য দুরূদ ও সালাম মহান আল্লাহ পাক উনার হাবীব, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার প্রতি। মহান আল্লাহ পাক উনার অশেষ রহ্মতে “গবেষণা কেন্দ্র মুহম্মদিয়া জামিয়া শরীফ”-উনার ফতওয়া বিভাগের তরফ থেকে বহুল প্রচারিত, হক্বের অতন্দ্র প্রহরী, বাতিলের আতঙ্ক ও আহলে সুন্নত ওয়াল জামায়াত উনার আক্বীদায় বিশ্বাসী এবং হানাফী মাযহাব উনার অনুসরণে প্রকাশিত একমাত্র দলীলভিত্তিক যামানার তাজদীদী মুখপত্র “মাসিক আল বাইয়্যিনাত” পত্রিকায় যথাক্রমে- ১. টুপির ফতওয়া (২য় সংখ্যা) ২. অঙ্গুলী চুম্বনের বিধান (৩য় সংখ্যা) ৩. নিয়ত করে মাজার শরীফ যিয়ারত করা (৪র্থ সংখ্যা) ৪. ছবি ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় হারাম হওয়ার ফতওয়া (৫ম-৭ম সংখ্যা) ৫. জুমুয়ার নামায ফরযে আইন ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয়ে ফতওয়া (৮ম-১০ম সংখ্যা) ৬. মহিলাদের মসজিদে গিয়ে জামায়াতে নামায পড়া মাকরূহ্ তাহ্রীমী সম্পর্কে ফতওয়া (১১তম সংখ্যা) ৭. কদমবুছী ও তার প্রাসঙ্গিক বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (১২তম সংখ্যা) ৮. তাহাজ্জুদ নামায জামায়াতে পড়া মাকরূহ্ তাহ্রীমী ও বিদ্য়াতে সাইয়্যিয়াহ্ এবং তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (১৩তম সংখ্যা) ৯. ফরয নামাযের পর মুনাজাত ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (১৪-২০তম সংখ্যা) ১০. ইন্জেকশন নেয়া রোযা ভঙ্গের কারণ ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (২১-২২তম সংখ্যা) ১১. তারাবীহ্-এর নামাযে বা অন্যান্য সময় কুরআন শরীফ খতম করে উজরত বা পারিশ্রমিক গ্রহণ করা জায়িয ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (২৩-২৪তম সংখ্যা) ১২. তারাবীহ্ নামায বিশ রাকায়াত ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (২৫-২৯তম সংখ্যা) ১৩. দাড়ী ও গোঁফের শরয়ী আহ্কাম ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (৩০-৩৪তম সংখ্যা) ১৪. প্রচলিত তাবলীগ জামায়াত ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (৩৫-৪৬তম সংখ্যা) ১৫. আযান ও ছানী আযান মসজিদের ভিতরে দেয়ার আহ্কাম এবং তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (৪৭-৫০তম সংখ্যা) ১৬. দোয়াল্লীন-যোয়াল্লীন-এর শরয়ী ফায়সালা এবং তার প্রাসঙ্গিক বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (৫১-৫২তম সংখ্যা) ১৭. খাছ সুন্নতী টুপি ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (৫৩-৫৯তম সংখ্যা) ১৮. নূরে মুহম্মদী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ও উনার প্রাসঙ্গিক বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (৬০-৮২তম সংখ্যা) ১৯. ইমামাহ্ বা পাগড়ী মুবারকের আহ্কাম ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কিত ফতওয়া (৮৩-৯৬তম সংখ্যা) ২০. শরীয়তের দৃষ্টিতে আখিরী যোহ্র বা ইহ্তিয়াতুয্ যোহ্রের আহ্কাম এবং তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (৯৭-১০০তম সংখ্যা) ২১. জানাযা নামাযের পর হাত তুলে সম্মিলিতভাবে মুনাজাত করার শরয়ী ফায়সালা ও তার প্রাসঙ্গিক বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (১০১-১১১তম সংখ্যা) এবং ২২. হিজাব বা পর্দা ফরযে আইন হওয়ার প্রমাণ ও তার প্রাসঙ্গিক বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (১১২-১৩১তম সংখ্যা) ২৩. খাছ সুন্নতী ক্বমীছ বা কোর্তা এবং তার প্রাসঙ্গিক বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (১৪০তম সংখ্যা) ২৪. হানাফী মাযহাব মতে ফজর নামাযে কুনূত বা কুনূতে নাযেলা পাঠ করা নাজায়িয ও নামায ফাসিদ হওয়ার কারণ এবং তার প্রাসঙ্গিক বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (১৩২-১৫২তম সংখ্যা) ২৫. ইসলামের দৃষ্টিতে বিশ্বকাপ ফুটবল বা খেলাধুলা’র শরয়ী আহকাম ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয়ে ফতওয়া (১৫৫তম সংখ্যা) ২৬. হানাফী মাযহাব মতে পুরুষের জন্য লাল রংয়ের পোশাক তথা রুমাল, পাগড়ী, কোর্তা, লুঙ্গি, চাদর ইত্যাদি পরিধান বা ব্যবহার করা হারাম ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (১৫৩-১৬০তম সংখ্যা) ২৭. ইসলামের নামে গণতন্ত্র ও নির্বাচন করা, পদপ্রার্থী হওয়া, ভোট চাওয়া ও দেয়া হারাম ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (১৬১-১৭৫তম সংখ্যা) ২৮. কুরআন শরীফ, হাদীছ শরীফ, ইজমা ও ক্বিয়াস-এর দৃষ্টিতে প্রাণীর মূর্তি তৈরি করা ও ছবি আঁকা, তোলা, তোলানো, রাখা, রাখানো, দেখা, দেখানো হারাম নাজায়িয হওয়ার অকাট্য প্রমাণ ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (১৬৮-২৩৭), ২৯. জুমুয়া ও ঈদাইনের খুৎবা আরবী ভাষায় দেয়া ওয়াজিব। আরবী ব্যতীত অন্য কোন ভাষায় খুৎবা দেয়া মাকরূহ তাহরীমী ও বিদয়াতে সাইয়্যিয়াহ ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (১৯২-১৯৩তম সংখ্যা) ৩০. কুরআন শরীফ, হাদীছ শরীফ, ইজমা ও ক্বিয়াস-এর দৃষ্টিতে লাইলাতুন নিছফি মিন শা’বান শবে বরাত-এর আহকাম ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (১৯৫-২১৩তম সংখ্যা), ৩১. কুরআন শরীফ, হাদীছ শরীফ, ইজমা ও ক্বিয়াস-এর দৃষ্টিতে “কুলাঙ্গার, পাপিষ্ঠ ইয়াযীদ লা’নাতুল্লাহি আলাইহি সম্পর্কে শরীয়তের সঠিক ফায়ছালা ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া” (২০৩তম সংখ্যা), ৩২. হানাফী মাযহাব মতে নামাযে সূরা ফাতিহা পাঠ করার পর ইমাম ও মুক্তাদী উভয়ে ‘আমীন’ অনুচ্চ আওয়াজে বা চুপে চুপে পাঠ করাই শরীয়তের নির্দেশ ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (২১২তম সংখ্যা), ৩৩. পবিত্র কুরআন শরীফ, পবিত্র হাদীছ শরীফ, পবিত্র ইজমা শরীফ ও পবিত্র ক্বিয়াস শরীফ উনাদের দৃষ্টিতে সম্মানিত ও পবিত্র মাযহাব চতুষ্ঠয় উনাদের মধ্যে যে কোন একটি সম্মানিত ও পবিত্র মাযহাব মানা ও অনুসরণ করা ফরয ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (২২০তম সংখ্যা থেকে যা এখনো চলছে) পেশ করার পাশাপাশি-
৩৪তম ফতওয়া হিসেবে
“পবিত্র কুরআন শরীফ, পবিত্র হাদীছ শরীফ, পবিত্র ইজমা শরীফ ও পবিত্র ক্বিয়াস শরীফ উনাদের দৃষ্টিতে সম্মানিত ইসলামী মাস ও বিশেষ বিশেষ রাত ও দিনের আমলসমূহের গুরুত্ব, ফযীলত এবং বেদ্বীন-বদদ্বীনদের দিবসসমূহ পালন করা হারাম ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া” পেশ করতে পারায় মহান আল্লাহ পাক উনার দরবার শরীফ-এ শুকরিয়া জ্ঞাপন করছি।
পবিত্র কুরআন শরীফ, পবিত্র হাদীছ শরীফ, পবিত্র ইজমা শরীফ ও পবিত্র ক্বিয়াস শরীফ উনাদের দৃষ্টিতে সম্মানিত ইসলামী মাস ও বিশেষ বিশেষ রাত ও দিনের আমলসমূহের গুরুত্ব, ফযীলত এবং বেদ্বীন-বদদ্বীনদের দিবসসমূহ পালন করা হারাম ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া দেয়ার কারণ
সুন্নতের পথিকৃত, হক্বের অতন্দ্র প্রহরী, দ্বীন ইসলাম উনার নির্ভীক সৈনিক, সারা জাহান থেকে কুফরী, শিরক ও বিদ্য়াতের মূলোৎপাটনকারী, বাতিলের আতঙ্ক এবং আহ্লে সুন্নত ওয়াল জামায়াত উনাদের আক্বীদায় বিশ্বাসী একমাত্র দলীলভিত্তিক তাজদীদী মুখপত্র- “মাসিক আল বাইয়্যিনাত শরীফ” পত্রিকায় এ যাবৎ যত লেখা বা ফতওয়াই প্রকাশ বা পত্রস্থ হয়েছে এবং ইনশাআল্লাহ হবে তার প্রতিটিরই উদ্দেশ্য বা মাকছূদ এক ও অভিন্ন। অর্থাৎ “মাসিক আল বাইয়্যিনাত শরীফ” উনার মধ্যে এমনসব লেখাই পত্রস্থ হয়, যা মানুষের আক্বীদা ও আমলসমূহ পরিশুদ্ধ ও হিফাযতকরণে বিশেষ সহায়ক।
বর্তমানে ইহুদীদের এজেন্ট হিসেবে মুসলমানদের ঈমান আমলের সবচেয়ে বেশি ক্ষতি করছে যারা, তারা হলো “উলামায়ে সূ”। ইহুদীদের এজেন্ট উলামায়ে ‘সূ’রা হারাম টিভি চ্যানেলে, পত্র-পত্রিকা, কিতাবাদি ও বক্তব্য বা বিবৃতির মাধ্যমে মুসলমান উনাদের বিশেষ বিশেষ ফযীলতযুক্ত আমলের রাত ও দিনসমূহ পালন করাকে বিদয়াত, নাজায়িয ও শিরক বলে ফতওয়া দিয়ে মুসলমান উনাদেরকে অশেষ খায়ের, বরকত, নিয়ামত, নাজাত অর্থাৎ রেযামন্দি বা সন্তুষ্টি মুবারক থেকে মাহরূম করছে। যেমন তারা বলে থাকে যে, পবিত্র ঈদে মীলাদুন নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম পালন করা বিদয়াত, শিরক। নাউযুবিল্লাহ! পবিত্র শবে বরাত পালন করা বিদয়াত, নাজায়িয। নাউযুবিল্লাহ! পবিত্র আখিরী চাহার শোম্বাহ শরীফ পালন করা বিদয়াত। নাউযুবিল্লাহ! অনুরূপ আরো অনেক বিষয়কেই তারা বিনা দলীলে মনগড়াভাবে নাজায়িয ও বিদয়াত বলে থাকে। নাউযুবিল্লাহ!
অপরদিকে বেদ্বীনী-বদদ্বীনী অর্থাৎ কাফির মুশরিক, ইহুদী, নাছারাদের যত পর্ব বা দিবস রয়েছে সেগুলোকে শুধু জায়িযই নয় বরং নিয়ামত বলে আখ্যা দিয়ে থাকে। নাউযুবিল্লাহ! যেমন বাইতুল মুকাররমের সাবেক খতীব ওবায়দুল হক্ব প্রকৃতপক্ষে উবাই বলেছিল, “পহেলা বৈশাখ আল্লাহ পাক উনার নিয়ামত।” নাঊযুবিল্লাহ!
অথচ তাদের উপরোক্ত বক্তব্য সম্পূর্ণ মিথ্যা, চরম বিভ্রান্তিকর ও কুফরীমূলক। তাদের এসব বক্তব্যের কারণে তারা নিজেরা যেরূপ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে, তদ্রুপ তাদের উক্ত কুফরীমূলক বক্তব্য ও বদ্ আমলের কারণে সাধারণ মুসলমানগণ ই’তিক্বাদী বা আক্বীদাগত ও আ’মালী বা আমলগত উভয় দিক থেকেই বিরাট ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে।
কারণ, তাদের উক্ত বক্তব্যের কারণে যারা এ আক্বীদা পোষণ করবে যে, “পবিত্র ঈদে মীলাদুন নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম পালন করা বিদয়াত শিরক এবং পহেলা বৈশাখ মহান আল্লাহ পাক উনার নিয়ামত।” নাউযুল্লিাহ! তারা ঈমানহারা হয়ে কাট্টা কাফির ও চির জাহান্নামী হবে। কারণ সম্মানিত ইসলামী শরীয়ত উনার দৃষ্টিতে হালাল বা জায়িয বিষয়কে হারাম বা নাজায়িয বলা এবং হারাম বা নাজায়িযকে হালাল বা জায়িয বলা কুফরী। কেননা কিতাবে স্পষ্টই উল্লেখ আছে যে-
استحلال الـمعصية كفر.
অর্থাৎ “গুনাহের কাজ বা হারামকে হালাল মনে করা কুফরী।” (শরহে আক্বাইদে নাসাফী শরীফ)
অতএব, বলার আর অপেক্ষাই রাখেনা যে, উলামায়ে “সূ”দের উক্ত বক্তব্য সাধারণ মুসলমান উনাদের আক্বীদা বা ঈমানের জন্য বিশেষভাবে হুমকিস্বরূপ।
অনুরূপ উলামায়ে “সূ”দের এ কুফরীমূলক বক্তব্য মুসলমানদের আমলের ক্ষেত্রেও বিশেষ ক্ষতির কারণ। কেননা যারা তাদের উক্ত বক্তব্যের কারণে “পবিত্র ঈদে মীলাদুন নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম পালন করা থেকে বিরত থাকবে এবং হারাম পহেলা বৈশাখ পালন করবে” তারা অশেষ খায়ের, বরকত ও নিয়ামত থেকে বঞ্চিত হওয়ার পাশাপাশি মহান আল্লাহ পাক উনার এবং উনার রসূল, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের কর্তৃক নিষিদ্ধকৃত কাজে তথা হারাম কাজে মশগুল হওয়ার কারণে কঠিন গুনাহগার অর্থাৎ জাহান্নামী হবে। নাউযুবিল্লাহ!
কাজেই, যারা এ ধরনের কুফরী আক্বীদায় বিশ্বাসী ও কুফরী বক্তব্য প্রদানকারী তারা ও হক্ব সমঝদার মুসলমানগণ তারা তাদের ঈমান ও আমলকে যেন হিফাযত করতে পারে অর্থাৎ সকল বিষয়ে আহলে সুন্নত ওয়াল জামায়াত উনাদের আক্বীদা অনুযায়ী আক্বীদা পোষণ করতে পারে এবং পবিত্র কুরআন শরীফ, পবিত্র হাদীছ শরীফ, পবিত্র ইজমা ও ক্বিয়াস মোতাবেক আমল করে মহান আল্লাহ পাক উনার রিযামন্দি হাছিল করতে পারে সে জন্যেই “পবিত্র কুরআন শরীফ, পবিত্র হাদীছ শরীফ, পবিত্র ইজমা শরীফ ও পবিত্র ক্বিয়াস শরীফ উনাদের দৃষ্টিতে সম্মানিত ইসলামী মাস ও বিশেষ বিশেষ রাত ও দিনের আমলসমূহের গুরুত্ব, ফযীলত এবং বেদ্বীন-বদদ্বীনদের দিবসসমূহ পালন করা হারাম ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়াটি” প্রকাশ করা হলো।
সম্মানিত ইসলামী মাস, বিশেষ বিশেষ রাত, দিন, মুহুর্ত ও সময় সমূহ সম্পর্কে এবং চন্দ্র ও সূর্যের গতিবিধির ব্যাপারে পবিত্র কালামুল্লাহ শরীফ উনার ২৬ খানা পবিত্র আয়াত শরীফ উনাদের তাফসীর বা ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণ
সূর্য ও চন্দ্র এই দু’টি ইসলামী মাস, রাত, দিন, মুহুর্ত ও সময় নিরুপনের ব্যাপারে মানদন্ড হিসেবে বিবেচিত। অর্থাৎ সূর্য ও চন্দ্র উনাদের আবর্তনের কারণে বিশেষ বিশেষ রাত, দিন, মুহুর্ত ও সময়গুলো সুচারুরূপে আগমণ করে থাকে। এজন্য আমরা ইসলামী মাস, রাত, দিন, মুহুর্ত ও সময় ইত্যাদীর আলোচনার পাশাপাশি চন্দ্র ও সূর্যের আবর্তন ও তাদের গতিবিধি সম্পর্কে আলোচনা করবো। যাতে করে বিষয়গুলো স্পষ্ট হয়ে যায় এবং বুঝতে সহজ হয়। নিম্নোক্ত এ সম্পর্কিত পবিত্র আয়াত শরীফ উনাদের তাফসীর বা ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণ উপস্থাপন করা হলো:
পবিত্র আয়াত শরীফ নম্বর-১৭
يُدَبّرُ الْاَمْرَ مِنَ السَّمَاءِ اِِلَى الْأَرْضِ ثُمَّ يَعْرُجُ اِِلَيْهِ فِىْ يَوْمٍ كَانَ مِقْدَارُه اََلْفَ سَنَةٍ مّمَّا تَعُدُّوْنَ. (سورة السجدة اى التنزيل شريفة ۵ الاية الشريفة(
অর্থ: তিনি আকাশ থেকে পৃথিবী পর্যন্ত সমস্ত কর্ম পরিচালনা করেন, অতপর তা উনার কাছে পৌঁছবে এমন একদিনে, যার পরিমাণ তোমাদের গণনায় হাজার বছরের সমান। (পবিত্র সূরাতুস সাজদাহ (তানযীল) শরীফ: পবিত্র আয়াত শরীফ ৫)
অত্র পবিত্র আয়াত শরীফ উনার বিশুদ্ধ
তাফসীর বা ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণ
قال عز وجل: {يُدَبّرُ الْاَمْرَ} يقول: يقضى القضاء {مِنَ السَّمَاءِ اِلَى الْاَرْضِ} يعنى يبعث الملائكة من السماء الى الارض {ثُمَّ يَعْرُجُ اِلَيْهِ} يعنى يصعد إليه. قال ابو الليث رحمه الله: حدثنا عمرو بن محمد باسناده عن الاعمش رحمة الله عليه عن عمرو بن مرة رحمة الله عليه عن عبد الرحمن بن سابط رحمة الله عليه قال: يدبر امر الدنيا اربعة جبرائيل عليه السلام وميكائيل عليه السلام واسرافيل عليه السلام وعزرائيل عليه السلام. اما جبرائيل عليه السلام فموكل بالرياح والجنود واما ميكائيل عليه السلام فموكل بالنبات والقطر واما ملك الموت عليه السلام فموكل بقبض الارواح واما اسرافيل عليه السلام فهو ينزل بالامور عليهم، فذلك قوله عز وجل: {يُدَبِّرُ الْاَمْرَ مِنَ السَّمَاءِ اِلَى الْاَرْضِ ثُمَّ يَعْرُجُ اِلَيْهِ}.
{فِىْ يَوْمٍ كَانَ مِقْدَارُه} يعنى فى يوم واحد من ايام الدنيا كان مقدار ذلك اليوم {اَلْفَ سَنَةٍ مِّمَّا تَعُدُّوْنَ} انتم. وقال القتبى رحمة الله عليه: معناه يقضى فى السماء وينزله مع الملائكة الى الارض، فتوقعه الملائكة عليهم السلام فى الارض.
{ثُمَّ يَعْرُجُ اِلَى السَّمَاءِ} فيكون نزولها ورجوعها فى يوم واحد مقدار المسير، على قدر سيرنا {اَلْفَ سَنَةٍ} لاَنَّ بعد ما بين السماء والارض خمسمائة عام. فيكون نزوله وصعوده الف عام فى يوم واحد. وروى جويبر رحمة الله عليه عن الضحاك رحمة الله عليه {فِى يَوْمٍ كَانَ مِقْدَارُه اَلْفَ سَنَةٍ} قال: يصعد الملك الى السماء مسيرة خمسمائة عام ويهبط مسيرة خمسمائة عام فى كل يوم من ايامكم وهو مسيرة الف سنة.
অর্থ: মহান আল্লাহ আয্যা ওয়া জাল্লা তিনি ইরশাদ মুবারক করেন (তিনি কর্ম পরিচালনা করেন) তিনি কার্য সম্পাদন করেন (আকাশ থেকে পৃথিবী পর্যন্ত) অর্থাৎ হযরত ফেরেশতা আলাইহিমুস সালাম উনাদেরকে আসমান থেকে পৃথিবীতে পাঠান। হযরত আবুল লাইছ সামারকান্দী রহমাতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন: আমাদের কাছে হযরত আমর বিন মুহাম্মাদ রহমাতুল্লাহি আলাইহি তিনি হযরত আ’মাশ রহমাতুল্লাহি আলাইহি উনার সনদে হাদীছ শরীফ বর্ণনা করেছেন, তিনি হযরত আমর বিন মুররাহ রহমাতুল্লাহি আলাইহি থেকে, তিনি হযরত আব্দুর রহমান বিন সাবিত রহমাতুল্লাহি আলাইহি থেকে বর্ণনা করেছেন। তিনি বলেন: দুনিয়ার কাজ চারজন সম্পাদন করেন- হযরত জিবরাঈল আলাইহিস সালাম, হযরত মীকাঈল আলাইহিস সালাম, হযরত ইসরাফীল আলাইহিস সালাম ও হযরত আযরাঈল আলাইহিস সালাম। হযরত জিবরাঈল আলাইহিস সালাম তিনি বাতাস ও সৈন্যবাহিনী পরিচালনার দায়িত্বে রয়েছেন, হযরত মীকাঈল আলাইহিস সালাম তিনি শস্য উৎপাদন ও বৃষ্টি পরিচালনার দায়িত্বে রয়েছেন, মালাকুল মাঊত হযরত আযরাঈল আলাইহিস সালাম তিনি প্রাণীদের প্রাণ সমূহ ক্ববয করার দায়িত্বে রয়েছেন, আর হযরত ইসরাফীল আলাইহিস সালাম তিনি সকলের কাজগুলো রক্ষনাবেক্ষণ করছেন। মহান আল্লাহ আয্যা ওয়া জাল্লা তিনি ইরশাদ মুবারক করেন: ‘তিনি আকাশ থেকে পৃথিবী পর্যন্ত সমস্ত কর্ম পরিচালনা করেন, অতপর তা উনার কাছে পৌঁছবে’
(এমন একদিনে, যার পরিমাণ) যার একদিন দুনিয়ার দিনের হিসেবে (তোমাদের গণনায় হাজার বছরের সমান) তোমাদের গণনা মতে। হযরত কুতবী রহমাতুল্লাহি আলাইহি বলেন: যে কাজের ফায়সালা আসমানে হয়, আর তা সহ হযরত ফেরেশতা আলাইহিমুস সালাম যমীনে আসেন।
‘অতপর তা আকাশে পৌঁছে’ যা নিচে নামে ও উপরে উঠে নির্দিষ্ট পরিমানে একই দিনে, আমাদের সফর দূরত্ব পরিমাণে (হাজার বছরের সমান) কেননা নিশ্চয়ই আসমান ও যমীনের দূরত্বের ব্যবধান পাঁচ শত বছরের রাস্তার সমান। তাই একই দিনে ফেরেশতাদের অবতরণ ও উর্ধ্বারোহণ মোট হাজার বছরের পথ। হযরত জুওয়াইবির রহমাতুল্লাহি আলাইহি তিনি হযরত দ্বহহাক রহমাতুল্লাহি আলাইহি উনার থেকে বর্ণনা করেন যে, তিনি ‘যার পরিমাণ তোমাদের গণনায় হাজার বছরের সমান’ উনার ব্যাখ্যায় বলেন: তোমাদের দুনিয়ার দিনের হিসেব মতে একই দিনে হযরত ফেরেশতা আলাইহিস সালাম তিনি দুনিয়া থেকে আসমানে উঠেন পাঁচ শত বছরের পথ আবার আসমান থেকে দুনিয়ার অবতীর্ণ হন পাঁচ শত বছরের পথ। যা মোটের উপর এক হাজার বছরের পথ। (বাহরুল উলূম অর্থাৎ তাফসীরুস সামারকান্দী পবিত্র সূরাতুস সাজদাহ (তানযীল) শরীফ: পবিত্র আয়াত শরীফ ৫ লেখক: আবুল লাইছ নছর বিন মুহাম্মাদ বিন আহমাদ বিন ইবরাহীম সামারকান্দী হানাফী রহমাতুল্লাহি আলাইহি ৩৭৩ হিজরী, মায়ালিমুত তানযীল অর্থাৎ তাফসীরুল বাগবী)
وقال بعضهم: الف سنة [وخمسون الف] سنة كلها فى القيامة، يكون على بعضهم اطول وعلى بعضهم اقصر، معناه: يدبر الامر من السماء الى الارض مدة ايام الدنيا، ثم يعرج اى يرجع الامر والتدبير اليه بعد فناء الدنيا، وانقطاع امر الامراء وحكم الحكام فى يوم كان مقداره الف سنة وهو يوم القيامة،
واما قوله: “خمسين الف سنة” فانه اراد على الكافر يجعل الله ذلك اليوم عليه مقدار خمسين الف سنة، وعلى المؤمن دون ذلك حتى جاء فى الحديث: “انه يكون على المؤمن كقدر صلاة مكتوبة صلاها فى الدنيا”. وقال ابراهيم التيمى رحمة الله عليه: لا يكون على المؤمن الا كما بين الظهر والعصر.
অর্থ: কতক মুফাসসিরূন কিরাম রহমাতুল্লাহি আলাইহিম উনারা বলেন: হাজার বছর [পঞ্চাশ হাজার] বছর এ হিসাবগুলো ক্বিয়ামতের দিনের জন্য নির্ধারিত। এই দিন কারো জন্য লম্বা হবে আবার কারো জন্য অল্প পরিমাণে হবে। তার অর্থ হলো: তিনি আকাশ থেকে পৃথিবী পরিচালনা করেন দুনিয়ার দিনের হিসেবে। অতপর উনার কাছে উঠবে অর্থাৎ উনার দিকে কাজ ও তদবীর প্রত্যাবর্তন হবে দুনিয়া ধ্বংস হওয়ার পর। আমীরদের কাজ এবং হাকিমদের ফায়সালা বন্ধ হবে সেই দিন যে দিনের পরিমাণ হাজার বছরের সমান, তা হচ্ছে ক্বিয়ামতের দিন।
মহান আল্লাহ তায়ালা তিনি ইরশাদ মুবারক করেন: ‘পঞ্চাশ হাজার বছর’ এটা দ্বারা কাফিরদেরকে উদ্দেশ্য করা হয়েছে। মহান আল্লাহ পাক তিনি তাদের জন্য এদিনকে পঞ্চাশ হাজার বছরের সমান করে দিবেন। আর মু’মিন-মুসলমানদের জন্য কি হবে এ সম্পর্কে হাদীছ শরীফ উনার মধ্যে ইরশাদ মুবারক হয়েছে যে: ‘এই পঞ্চাশ হাজার বছর মু’মিনদের জন্য দুনিয়ায় দু’রাকয়াত ফরয নামায পড়ার পরিমাণ সময় হবে’। হযরত ইবরাহীম তাইমী রহমাতুল্লাহি আলাইহি বলেন: মু’মিনদের জন্য তা ছলাতুয্ যুহর ও ছলাতুল আছর উনাদের মধ্যে যে সময়ের ব্যবধান সেরূপ হবে। (মায়ালিমুত তানযীল অর্থাৎ তাফসীরুল বাগবী পবিত্র সূরাতুস সাজদাহ (তানযীল) শরীফ: পবিত্র আয়াত শরীফ ৫ লেখক: মুহইস সুন্নাহ আবূ মুহাম্মাদ হুসাঈন বিন মাসঊদ বাগবী শাফিয়ী রহমাতুল্লাহি আলাইহি ৫১০ হিজরী)
অত্র আয়াত শরীফ এবং উনার তাফসীর থেকে প্রমাণিত হল যে, এই দুনিয়া পরিচালনা করার জন্য মহান আল্লাহ তায়ালা বিশেষ করে চারজন প্রধান ফেরেশতা আলাইহিমুস সালাম উনাদেরকে নিয়োজিত করেছেন। আর দুনিয়ার হিসেবে আখিরাতের একদিন একহাজার বছরের সমান। কিন্তু ক্বিয়ামতের দিনটি কাফিরদের জন্য পঞ্চাশ হাজার বছরের সমান হবে। আর মু’মিন-মুসলমানদের জন্য দু’রাকয়াত ফরয নামায পড়ার পরিমান সময় হবে। সুবহানাল্লাহ।
পবিত্র আয়াত শরীফ নম্বর-১৮
تَعْرُجُ الْمَلَائِكَةُ وَالرُّوْحُ اِلَيْهِ فِىْ يَوْمٍ كَانَ مِقْدَارُه خَمْسِيْنَ اَلْفَ سَنَةٍ. (سورة المعارج شريفة ۴ الاية الشريفة(
অর্থ: হযরত ফেরেশতা আলাইহিমুস সালাম এবং হযরত রূহ তথা জিবরাঈল আলাইহিস সালাম উনারা মহান আল্লাহ তায়ালা উনার দিকে উর্ধ্বগামী হয় এমন একদিনে, যার পরিমাণ পঞ্চাশ হাজার বছর। (পবিত্র সূরাতুল্ মায়ারিজ শরীফ: পবিত্র আয়াত শরীফ ৪)
অত্র পবিত্র আয়াত শরীফ উনার বিশুদ্ধ
তাফসীর বা ব্যাখ্যা-বিশ্লেষণ
تَعْرُجُ الْمَلٰائِكَةُ وَالرُّوْحُ قرأ الكسائى رحمة الله عليه يعرج بالياء على التذكير والباقون بالتاء على التأنيث والجملة صفة للمعارج على طريقة ولقد امر على اللئيم يسبنى والرابط محذوف اى تعرج فيها الملائكة والروح اليه والروح جبرائيل عليه السلام وافرده لفضله او اعظم خلق من الملائكة قلت ويحتمل ان يكون المراد بالروح روح البشر الذى هو من عالم الامر فان ارواح البشر من الاولياء رحمة الله عليهم والانبياء عليهم الصلوة والسلام تعرج من خفض البعد والغفلة الى معارج القرب والحضرة اِلَيْهِ اى الى الله سبحانه او الى عرشه
অর্থ: হযরত ফেরেশতা আলাইহিমুস সালাম ও হযরত রূহ আলাইহিস সালাম উনার দিকে ঊর্ধ্বগামী হন। হযরত কিসাঈ রহমাতুল্লাহি আলাইহি তিনি يعرج ক্রিয়াটিকে পুংলিঙ্গ হিসেবে ى দ্বারা পড়েন। বাকি সকলেই পড়েন স্ত্রীলিঙ্গ হিসেবে ت দ্বারা। এ বাক্যটি الـمعارج উনার বিশেষণ হয়েছে। উভয়ের মধ্যে যোগসূত্র ঊহ্য।
অর্থাৎ تعرج فيها الـملائكة والروح اليه
‘হযরত ফেরেশতা আলাইহিমুস সালাম ও হযরত রূহ আলাইহিস সালাম তাতে আরোহণ করেন উনার দিকে’।
এখানে রূহ দ্বারা হযরত জিবরাঈল আলাইহিস সালাম উনাকে বুঝানো হয়েছে। উনার বিশেষ মর্যাদা এবং হযরত ফেরেশতা আলাইহিমুস সালাম উনাদের মধ্যে সর্ববৃহৎ মাখলূক্ব হওয়ার কারণে স্বতন্ত্রভাবে উনার কথা উল্লেখ করা হয়েছে।
(গ্রন্থকার বলেন) আমার মতে, রূহ দ্বারা মানুষের আত্মাকে বুঝানোর অবকাশও আছে। যা আলামুল আমর তথা আদেশ জগতের অন্তর্ভুক্ত। মানষের মধ্যে হযরত আম্বিয়া তথা নাবী-রসূল আলাইহিমুছ ছলাতু ওয়াস সালাম ও হযরত আউলিয়া কিরাম রহমাতুল্লাহি আলাইহিম উনাদের রূহ মুবারক দূরত্ব ও গাফলতীর নিচুতা থেকে মহান আল্লাহ তায়ালা উনার নৈকট্য ও সান্নিধ্যের ঊর্ধ্বস্তরে আরশে আরোহণ করে।
فِىْ يَوْمٍ كَانَ مِقْدارُه خَمْسِيْنَ اَلْفَ سَنَةٍ الظرف متعلق بمحذوف دل عليه واقع اى يقع العذاب بهم فى يوم كان مقداره خمسين الف سنة يعنى يوم القيامة كذا اخرج البيهقى رحمة الله عليه عن عكرمة رحمة الله عليه عن ابن عباس رضى الله عنها وقال يمان رحمة الله عليه يوم القيامة فيه خمسين موطنا كل موطن الف سنة
‘এমন এক দিনে, যা পার্থিব জগতের পঞ্চাশ হাজার বছরের সমান’: فِىْ يَوْمٍ কালাধিকরণের সম্পর্ক ঊহ্য ক্রিয়ার সঙ্গে, যার প্রতি واقع শব্দটি ইঙ্গিত করে। অর্থাৎ তাদের প্রতি শাস্তি নিপতিত হবে এমন এক দিনে, যা পার্থিব পঞ্চাশ হাজার বছরের সমান। অর্থাৎ ক্বিয়ামতের দিবস। হযরত বাইহাক্বী রহমাতুল্লাহি আলাইহি তিনি হযরত ইকরামাহ রহমাতুল্লাহি আলাইহি উনার সূত্রে হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু আলহুমা উনার থেকে অনুরূপ উদ্ধৃত করেছেন।
হযরত ইয়ামান রহমাতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন, ক্বিয়ামত দিবসের আছে পঞ্চাশটি ঘাঁটি। তার প্রত্যেকটি ঘাঁটির সময়কাল এক হাজার বছর।
روى الشيخان رحمة الله عليهما فى الصحيحين عن ابى هريرة رضى الله عنه قال قال رسول الله صلى الله عليه وسلم ما من صاحب كنز لايؤدى زكوة الكنز الا احمى عليه فى نار جهنم فيجعل صفائح فيكوى بها جنباه وجبينه حتى يحكم الله بين عباده فى يوم كان مقداره خمسين الف سنة ثم يرى سبيله اما الى الجنة واما الى النار وما من صاحب ابل لا يودى زكوتها الا اذا كان يوم القيامة بطح لها بقاع قرقركا وفرما كانت تستن عليه لا يفقد منها فصيلا واحدا يطأ باخفافها وتعضه بافواهها كلما مر عليه اوليها رد عليه اخريها فى يوم كان مقداره خمسين الف سنة حتى يقضى بين العباد فيرى سبيله اما الى الجنة واما الى النار وما من صاحب غنم لا يودى زكوتها الابطح له بقاع فرقر لا يفقد منها شيئا ليس فيها عقصاء ولا جلجاء ولا غضباء تنطحه بقرونها وتطأه باظلافها كما مر عليه اوليها رد عليه اخريها فى يوم كان مقداره خمسين الف سنة حتى يقضى بين العباد فيرى سبيله اما الى الجنة واما الى النار واخرج احمد رحمة الله عليه وابو يعلى رحمة الله عليه وابن حبان رحمة الله عليه والبيهقى بسند حسن عن أبى سعيد رضى الله عنه قال سئل رسول الله صلى الله عليه وسلم عن يوم كان مقداره خمسين الف سنة ما اطول هذا اليوم فقال والذى نفسى بيده انه ليخفف على المؤمن حتى يكون اهون من الصلاة المكتوبة يصليها فى الدنيا
অর্থ: হযরত শায়খাঈন অর্থাৎ হযরত ইমাম বুখারী ও ইমাম মুসলিম রহমাতুল্লাহি আলাইহিমা উনাদের হাদীছ গ্রন্থে হযরত আবূ হুরাইরাহ রদ্বিয়াল্লাহু আনহু উনার সূত্রে উদ্ধৃত করেন যে, নূরুম মুজাস্সাম হাবীবুল্লাহ হযরত রসূলুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন যে, ‘সঞ্চিত সোনা-রূপার অধিকারী যে ব্যক্তি তার সোনা-রূপার যাকাত আদায় না করে, ক্বিয়ামতের দিন তার সে সঞ্চয়কে জাহান্নামের আগুনে পুড়িয়ে বহু সংখ্যক পাত তৈরি করা হবে। তারপর তা দিয়ে তার দুই পাঁজর ও কপালে দাগ দেয়া হবে। এভাবে চলতে থাকবে যাবত না মহান আল্লাহ তায়ালা বান্দাদের বিচার শেষ করেন। এটা হবে এমন এক দিনে, যার পরিমাণ পার্থিব জগতের পঞ্চাশ হাজার বছরের সমান। এরপর সে তার পথ দেখবে জান্নাতের দিকে অথবা জাহান্নামের দিকে। আর উটের মালিক যে ব্যক্তি তার উটের যাকাত আদায় না করে, ক্বিয়ামতের দিন তাকে শুইয়ে দেয়া হবে এক সমতল ভূমিতে। দুনিয়াতে এ উটগুলো তার সামনে যে দেহ নিয়ে বিচরণ করত, সে দিন এগুলোকে তার চেয়ে অনেক হৃষ্টপুষ্ট করা হবে। একটা শাবক পর্যন্ত সে অনুপস্থিত পাবে না। সেগুলো তাকে পা দিয়ে পিষ্ট করবে এবং মুখ দিয়ে কামড়াবে। যখনই তার একটি দল তার উপর দিয়ে অতিক্রম করে চলে যাবে, সঙ্গে সঙ্গে অপর একটি দলকে ফিরিয়ে আনা হবে। এটা ঘটবে এমন এক দিনে, যার পরিমাণ হবে পার্থিব জগতের পঞ্চাশ হাজার বছরের সমান, যাবত না বান্দার মাধ্যে বিচার কার্য সমাপ্ত হবে। তারপর সে তার পথ দেখবে হয় জান্নাতের দিকে, নয় জাহান্নামের দিকে। ছাগলের মালিক যে ব্যক্তি তার ছাগলের যাকাত আদায় না করে, ক্বিয়ামতের দিন তাকে শুইয়ে দেয়া হবে এক সমতল ভূমিতে। একটি ছাগলও সে অনুপস্থিত পাবে না। তার মধ্যে কোন বাঁকা শিং বিশিষ্ট, শিংবিহীন কিংবা ভাঙা শিং বিশিষ্ট কোন ছাগল থাকবে না। সেগুলো শিং দিয়ে গুঁতাবে ও খুর দিয়ে পিষ্ট করবে। যখনই তার একটি দল তার উপর দিয়ে অতিক্রম করে চলে যাবে, তখই অপর একটি দলকে ফিরিয়ে আনা হবে। এটা ঘটবে এমন এক দিনে, যার পরিমাণ হবে পার্থিব জগতের পঞ্চাশ হাজার বছরের সমান। অবশেষে বান্দার মাঝে বিচারকার্য সমাধা হবে এবং সে তার পথ দেখবে হয় জান্নাতের দিকে নয় তো জাহান্নামের দিকে।’
হযরত ইমাম আহমাদ রহমাতুল্লাহি আলাইহি, হযরত আবূ ইয়ালা রহমাতুল্লাহি আলাইহি, হযরত ইবনু হিব্বান রহমাতুল্লাহি আলাইহি ও হযরত বাইহাক্বী রহমাতুল্লাহি আলাইহি একটি হাসান স্তরের সনদে হযরত আবূ সাঈদ রদ্বিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণনা করেন। তিনি বলেন, যে দিনের পরিমাণ হবে পঞ্চাশ হাজার বছরের সমান তার দৈর্ঘ সম্পর্কে হযরত রসূলুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাকে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি ইরশাদ মুবারক করেন: ‘সেই সত্তা উনার ক্বসম, যাঁর কুদরতী হাত মুবারকে আমার প্রাণ মুবারক! সে দিনটি মু’মিনদের জন্য অত্যন্ত সংক্ষিপ্ত মনে হবে। এমনকি দুনিয়াতে এক ওয়াক্ত ফরয নামায পড়তে তার যে পরিমাণ সময় লাগত তার চেয়েও কম মনে হবে।’ সুবহানাল্লাহ।
قلت فعلى هذا التأويل لا تصادم بين هذه الاية وبين قوله تعالى فى تنزيل السجدة يدبّر الامر من السماء الى الارض ثم يعرج اليه فى يوم كان مقداره الف سنة مما تعدون اذ معناه يحكم الله تعالى بالامر وينزل به جبرائيل عليه السلام من السماء الى الارض ثم يعرج اليه جبرائيل عليه السلام فى يوم من ايام الدنيا وكان قدر سيره الف سنة خمسمائة سنة نزوله وخمسمائة عروجه لان ما بين السماء والارض خمسمائة عام يعنى لو سار تلك المسافة واحد من بنى ادم لم يقطعه الا فى الف سنة لكن الملائكة عليهم السلام يقطعون فى يوم واحد بل فى ادنى زمان،
(তাফসীরকার বলেন) আমি বলব, এ ব্যাখ্যা হিসেবে আলোচ্য আয়াত শরীফ এবং সূরাহ তানযীল আস-সাজদাহ উনার আয়াত শরীফ উনাদের মধ্যে কোনই বিরোধ থাকে না। সেই পবিত্র সূরাহ মুবারকে বলা হয়েছে যে, র্অর্থাৎ তিনি আকাশ হতে পৃথিবী পর্যন্ত সমুদয় বিষয় পরিচালনা করেন। তারপর একদিন সমস্ত কিছুই উনার সমীপে উঠানো হবে- যে দিনের পরিমাপ হবে তোমাদের হিসেবে হাজার বছরের সমান। পবিত্র সূরাতুস্ সাজদাহ: ৫। অর্থাৎ মহান আল্লাহ তায়ালা পরিচালনা বিষয়ে আদেশ করেন। হযরত জিবরাঈল আলাইহিস সালাম তা নিয়ে আকাশ হতে পৃথিবীতে অবতরণ করেন। এরপর হযরত জিবরাঈল আলাইহিস সালাম দুনিয়ার এক দিনে তার নিকট আরোহণ করেন। এভাবে উনার সর্বমোট হাজার বছরের পথ পরিভ্রমণ করা হয়। অবতরণে পাঁচশ’ বছরের পথ। অর্থাৎ কোন মানুষ যদি এ পথ পরিভ্রমণ করতে চায়, তবে তার সময় লাগবে এক হাজার বছর। কিন্তু হযরত ফেরেশতা আলাইহিমুস সালাম উনারা এ গোটা পথ এক দিনেই, বরং তারও কম সময়ে অতিক্রম করতে পারেন।
اخرج البيهقى رحمة الله عليه من طريق ابى طلحة رحمة الله عليه عن ابن عباس رضى الله عنهما فى قوله تعالى تعرج اليه فى يوم كان مقداره الف سنة مما تعدون قال هذا فى الدنيا تعرج الملائكة عليهم السلام فى يوم كان مقداره الف سنة وفى قوله تعالى فى يوم كان مقداره خمسين الف سنة قال هذا يوم القيامة جعله الله تعالى على الكافرين مقدار خمسين الف سنة
হযরত ইমাম বাইহাক্বী রহমাতুল্লাহি আলাইহি তিনি হযরত আবূ তালহাহ রহমাতুল্লাহি আলাইহি উনার বর্ণনা সূত্রে হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আব্বাস রদ্বিয়াল্লাহু আনহুমা উনার থেকে উদ্ধৃত করেন যে, তিনি পবিত্র আয়াত শরীফ
تعرج اليه فى يوم كان مقداره الف سنة مما تعدون
উনার ব্যাখ্যায় বলেন, এটা দুনিয়ার কথা। হযরত ফেরেশতা আলাইহিমুস সালাম উনারা এক দিনে আরোহণ করেন এমন দূরত্বে যার পরিমাণ এক হাজার বছরের সমান। তিনি পবিত্র আয়াত শরীফ
يوم كان مقداره خمسين الف سنة
উনার ব্যাখ্যায় বলেন, এটা ক্বিয়ামত দিবসের কথা। মহান আল্লাহ তায়ালা সে দিনকে কাফিরদের জন্য পঞ্চাশ হাজার বছরের সমান দীর্ঘ করেছেন।
وقيل المراد من الايتين يوم القيامة يكون على بعضهم اطول وعلى بعضهم اقصر حتى يكون على المؤمنين اهون من الصلاة المكتوبة كما مر واخرج الحاكم رحمة الله عليه والبيهقى رحمة الله عليه عن ابى هريرة رضى الله عنه مرفوعا وموقوفا يكون على المؤمنين كمقدار ما بين الظهر والعصر وحينئذ معنى قوله تعالى يدبّر الامر من السماء الى الارض مدة ايام الدنيا ثم يعرج اى يرجع الامر والتدبير اليه بعد فناء الدنيا وانقطاع امر الامراء وحكم الحكام فى يوم كان مقداره الف سنة
কেউ কেউ বলেন, উভয় পবিত্র আয়াত শরীফ উনাদের মধ্যেই ক্বিয়ামত দিবসের কথা বলা হয়েছে। কারো পক্ষে তা দীর্ঘ হবে, আবার কারো পক্ষে হবে সংক্ষিপ্ত। এমনকি মু’মিনদের জন্য এক ফরয নামাযের সময়ের চেয়েও তা সংক্ষিপ্ত হবে। যেমন পূর্বে উল্লেখ করা হয়েছে। হযরত হাকিম রহমাতুল্লাহি আলাইহি ও হযরত বাইহাক্বী রহমাতুল্লাহি আলাইহি উনারা মারফূ’ ও মাওকূফ সূত্রে হযরত আবু হুরাইরাহ রদ্বিয়াল্লাহু আনহু উনার থেকে বর্ণিত হাদীছ শরীফ উদ্ধৃত করেন যে, (নূরুম মুজাস্সাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন:) মু’মিন উনাদের জন্য তা হবে পবিত্র যুহর ও পবিত্র আছর উনাদের মধ্যবর্তী সময়ের সমপরিমাণ। এমতাবস্থায় পবিত্র আয়াত শরীফ উনার অর্থ দুনিয়ার মেয়াদকালে তিনি যাবতীয় বিষয় পরিচালনা সম্পর্কে যে ফায়সালা করেন তা নিয়ে হযরত জিবরাঈল আলাইহিস সালাম আসমান হতে পৃথিবীতে আসেন এবং অনুযায়ী সংশ্লিষ্ট দায়িত্বশীলগণ কাজকর্ম আঞ্জাম দেয়। তারপর যখন দুনিয়া ধ্বংস হয়ে যাবে, নেতৃবর্গের নেতৃত্বের অবসান ঘটবে শাসক শ্রেণীর শাসন-শোষণ সাঙ্গ হবে, তখন আদেশ দান ও পরিচালনার বিষয়টি উনারই কাছে ফিরে যাবে, আর তা ঘটবে এমন এক দিনে, যার পরিমাণ হবে এক হাজার বছরের সমান।
وقيل الظرف فى هذه الاية اعنى قوله تعالى فى يوم كان مقداره خمسين الف سنة متعلق بيعرج كما هو متعلق فى سورة التنزيل ووجه الجمع بين الايتين ان المراد فى اية سورة التنزيل انه يدبر الامر من السماء الى الارض ثم يعرج اليه من الارض الى السماء فى يوم وقدر مسيره الف سنة لان ما بين السماء والارض خمسمائة عام فصار نزوله وعروجه الف سنة والمراد فى هذه السورة مدة المسافة من منتهى الارض السابعة الى منتهى اعلى السموات فوق السماء السابعة قال البغوى رحمة الله عليه روى ليث رحمة الله عليه عن مجاهد رحمة الله عليه ان مقدار هذا خمسين الف سنة وقال محمد بن اسحق رحمة الله عليه لو سار ابن ادم من الدنيا الى موضع العرش سيرا طبيعنا له سار خمسين الف سنة
আলোচ্য আয়াত শরীফ অর্থাৎ
فى يوم كان مقداره الف سنة
উনার কালাধিকরণ فى يوم উনার সম্পর্ক يعرج উনার সঙ্গে, যেমন, পূর্বোক্ত পবিত্র সূরাহ সাজদাহ উনার আয়াত শরীফ উনার মধ্যে তাই হয়েছে। এমতাবস্থায় উভয় পবিত্র আয়াত শরীফ উনাদের মধ্যে সামঞ্জস্য বিধান হবে এভাবে যে, সূরাহ সাজদাহ উনার আয়াত শরীফ উনার মধ্যে বুঝানো হয়েছে- মহান আল্লাহ তায়ালা আকাশ হতে পরিচালনার বিষয় পৃথিবীতে অবতীর্ণ করেন এবং পরে তা পৃথিবী হতে উনার কাছে উঠে এক দিনে। উনার সর্বমোট ভ্রমণপথ এক হাজার বছর পরিমাণ। কেননা, আকাশ ও পৃথিবীর মধ্যবর্তী দূরত্ব পাঁচশ বছরের পথ। কাজেই উনার অবতরণ ও আরোহণ মিলিয়ে দাঁড়ায় এক হাজার বছর। আর আলোচ্য সূরায় সপ্তম যমীনের শেষ সীমা হতে সপ্তম আকাশের ঊর্ধ্বস্থিত সর্বশেষ সীমা পর্যন্ত গোটা পথের পরিমান বুঝানো হয়েছে। হযরত বাগবী রহমাতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন, হযরত মুজাহিদ রহমাতুল্লাহি আলাইহি উনার থেকে হযরত লাইছ রহমাতুল্লাহি আলাইহি তিনি বর্ণনা করেন, এ পথের সর্বমোট পরিমাণ পঞ্চাশ হাজার বছর। হযরত মুহাম্মাদ বিন ইসহাক্ব রহমাতুল্লাহি আলাইহি তিনি বলেন, কোন আদম সন্তান যদি দুনিয়া থেকে আরশ পর্যন্ত সফর করে তবে এতে তার সময় লাগবে পঞ্চাশ হাজার বছর।
ومن هاهنا قالت الصوافية العلية ان فناء القلب الذي يحصل للصوفى بالجذب من الله تعالى بتوسط النبى صلى الله عليه وسلم والمشائخ لو اراد واحد ان يحصله بالعبادات والرياضات من غير جذب من الشيخ فانما يحصل له فى زمان كان مقداره خمسين الف سنة واذا لم يتصور بقاء احد بل بقاء الدنيا الى هذه المدة ظهر ان الوصول الى الله تعالى من غير جذب منه تعالى بتوسط احد من المشائخ كما هو المعتاد وبلا توسط روح رجل كما يكون لبعض الايسين من الافراد محال والله المستعان.
এ কারণেই মহান ছূফী রহমাতুল্লাহি আলাইহিম উনারা বলেন, নূরুম মুজাস্সাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এবং হযরত মাশায়িখে কিরাম রহমাতুল্লাহি আলাইহিম উনাদের ওয়াসীলায় মহান আল্লাহ তায়ালা উনার পক্ষ হতে এক বিশেষ আকর্ষণের মাধ্যমে ছূফী উনারা ক্বলবের ফানা অর্জন করে থাকেন। কিন্তু কেউ যদি শায়খের ওয়াসীলালব্ধ সে আকর্ষণ ছাড়া ইবাদত-বন্দেগী ও রিয়াযাত দ্বারা সরাসরি সে ফানা অর্জন করতে চায়, তবে তা করতে পারবে বটে, তবে সময় লাগবে পঞ্চাশ হাজার বছর। অথচ এত দীর্ঘদিন কারো বেঁচে থাকা বরং পৃথিবীই যে এতদিন টিকে থাকবে তা কোন প্রকার কল্পনা করা যায় না। সুতরাং এ কথা পরিস্ফুট হয়ে ওঠে যে, শায়খ উনার ওয়াসীলায় মহান আল্লাহ তায়ালা উনাকে প্রাপ্তির সাধারণ রীতি কিংবা ব্যক্তি বিশেষের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য করো রূহানী প্রভাব লাভের ব্যবস্থা ছাড়া মহান আল্লাহ তায়ালা পর্যন্ত পোঁছা সম্ভব নয়। মহান আল্লাহ তায়ালা উনিই সকল বিষয়ে সাহায্যকারী। (আত-তাফসীরুল মাযহারী পবিত্র সূরাতুল্ মায়ারিজ শরীফ: পবিত্র আয়াত শরীফ ৪ লেখক: হযরত মুহাম্মাদ ছানাউল্লাহ হিন্দী পাণীপথী নক্শাবন্দী হানাফী মাতুরীদী রহমাতুল্লাহি আলাইহি ওয়াফাত: ১২১৬ হিজরী)
অনুরূপ তাফসীর বর্ণনার তারতম্য অনুযায়ী নিম্নোক্ত তাফসীর উনার কিতাব সমূহে উল্লেখ রয়েছে: তাফসীরুত ত্ববারী, তাফসীরুল কুরতুবী, মাদারিকুত্ তানযীল বা তাফসীরুন নাসাফী, তাফসীরুস সামারকান্দী, তাফসীরু ইবনে কাছীর, তাফসীরুল খাযিন, তাফসীরুল বাগবী, রূহুল বয়ান, রূহুল মায়ানী, আদ-দুররুল মানছূর, মাফাতীহুল গইব বা আত-তাফসীরুল কবীর বা তাফসীরুয রাযী, যাদুল মাসীর ফী ইলমিত তাফসীর লিল্ জাওযী, তাফসীরু বাইযাবী, তাফসীরুল কাশশাফ ইত্যাদী।
অত্র আয়াত শরীফ এবং উনার তাফসীর থেকে প্রমাণিত হল যে, ক্বিয়ামতের দিনটি কাফিরদের জন্য পঞ্চাশ হাজার বছরের সমান হবে। আর মু’মিন-মুসলমানদের জন্য দু’রাকয়াত ফরয নামায পড়ার পরিমান সময় হবে। সুবহানাল্লাহ। মূলত: সময় উনার নিয়ন্ত্রণকারী মহান আল্লাহ তায়ালা তিনিই। যা উপরোক্ত তাফসীর মূলক ব্যাখ্যা থেকে স্পষ্ট জানা যায়।
অসমাপ্ত
পরবর্তী সংখ্যার অপেক্ষায় থাকুন