৩৪তম ফতওয়া হিসেবে
“পবিত্র কুরআন শরীফ, পবিত্র হাদীছ শরীফ, পবিত্র ইজমা শরীফ ও পবিত্র ক্বিয়াস শরীফ উনাদের দৃষ্টিতে সম্মানিত ইসলামী মাস ও বিশেষ বিশেষ রাত ও দিনের আমলসমূহের গুরুত্ব, ফযীলত এবং বেদ্বীন-বদদ্বীনদের দিবসসমূহ পালন করা হারাম ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া” পেশ করতে পারায় মহান আল্লাহ পাক উনার দরবার শরীফ-এ শুকরিয়া জ্ঞাপন করছি।
পবিত্র কুরআন শরীফ, পবিত্র হাদীছ শরীফ, পবিত্র ইজমা শরীফ ও পবিত্র ক্বিয়াস শরীফ উনাদের দৃষ্টিতে সম্মানিত ইসলামী মাস ও বিশেষ বিশেষ রাত ও দিনের আমলসমূহের গুরুত্ব, ফযীলত এবং বেদ্বীন-বদদ্বীনদের দিবসসমূহ পালন করা হারাম ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া দেয়ার কারণ
সুন্নতের পথিকৃত, হক্বের অতন্দ্র প্রহরী, দ্বীন ইসলাম উনার নির্ভীক সৈনিক, সারা জাহান থেকে কুফরী, শিরক ও বিদ্য়াতের মূলোৎপাটনকারী, বাতিলের আতঙ্ক এবং আহ্লে সুন্নত ওয়াল জামায়াত উনাদের আক্বীদায় বিশ্বাসী একমাত্র দলীলভিত্তিক তাজদীদী মুখপত্র- “মাসিক আল বাইয়্যিনাত শরীফ” পত্রিকায় এ যাবৎ যত লেখা বা ফতওয়াই প্রকাশ বা পত্রস্থ হয়েছে এবং ইনশাআল্লাহ হবে তার প্রতিটিরই উদ্দেশ্য বা মাকছূদ এক ও অভিন্ন। অর্থাৎ “মাসিক আল বাইয়্যিনাত শরীফ” উনার মধ্যে এমনসব লেখাই পত্রস্থ হয়, যা মানুষের আক্বীদা ও আমলসমূহ পরিশুদ্ধ ও হিফাযতকরণে বিশেষ সহায়ক।
বর্তমানে ইহুদীদের এজেন্ট হিসেবে মুসলমানদের ঈমান আমলের সবচেয়ে বেশি ক্ষতি করছে যারা, তারা হলো “উলামায়ে সূ”। ইহুদীদের এজেন্ট উলামায়ে ‘সূ’রা হারাম টিভি চ্যানেলে, পত্র-পত্রিকা, কিতাবাদি ও বক্তব্য বা বিবৃতির মাধ্যমে মুসলমান উনাদের বিশেষ বিশেষ ফযীলতযুক্ত আমলের রাত ও দিনসমূহ পালন করাকে বিদয়াত, নাজায়িয ও শিরক বলে ফতওয়া দিয়ে মুসলমান উনাদেরকে অশেষ খায়ের, বরকত, নিয়ামত, নাজাত অর্থাৎ রেযামন্দি বা সন্তুষ্টি মুবারক থেকে মাহরূম করছে। যেমন তারা বলে থাকে যে, পবিত্র ঈদে মীলাদুন নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম পালন করা বিদয়াত, শিরক। নাউযুবিল্লাহ! পবিত্র শবে বরাত পালন করা বিদয়াত, নাজায়িয। নাউযুবিল্লাহ! পবিত্র আখিরী চাহার শোম্বাহ শরীফ পালন করা বিদয়াত। নাউযুবিল্লাহ! অনুরূপ আরো অনেক বিষয়কেই তারা বিনা দলীলে মনগড়াভাবে নাজায়িয ও বিদয়াত বলে থাকে। নাউযুবিল্লাহ!
অপরদিকে বেদ্বীনী-বদদ্বীনী অর্থাৎ কাফির মুশরিক, ইহুদী, নাছারাদের যত পর্ব বা দিবস রয়েছে সেগুলোকে শুধু জায়িযই নয় বরং নিয়ামত বলে আখ্যা দিয়ে থাকে। নাউযুবিল্লাহ! যেমন বাইতুল মুকাররমের সাবেক খতীব ওবায়দুল হক্ব প্রকৃতপক্ষে উবাই বলেছিল, “পহেলা বৈশাখ আল্লাহ পাক উনার নিয়ামত।” নাঊযুবিল্লাহ!
অথচ তাদের উপরোক্ত বক্তব্য সম্পূর্ণ মিথ্যা, চরম বিভ্রান্তিকর ও কুফরীমূলক। তাদের এসব বক্তব্যের কারণে তারা নিজেরা যেরূপ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে, তদ্রুপ তাদের উক্ত কুফরীমূলক বক্তব্য ও বদ্ আমলের কারণে সাধারণ মুসলমানগণ ই’তিক্বাদী বা আক্বীদাগত ও আ’মালী বা আমলগত উভয় দিক থেকেই বিরাট ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে।
কারণ, তাদের উক্ত বক্তব্যের কারণে যারা এ আক্বীদা পোষণ করবে যে, “পবিত্র ঈদে মীলাদুন নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম পালন করা বিদয়াত শিরক এবং পহেলা বৈশাখ মহান আল্লাহ পাক উনার নিয়ামত।” নাউযুল্লিাহ! তারা ঈমানহারা হয়ে কাট্টা কাফির ও চির জাহান্নামী হবে। কারণ সম্মানিত ইসলামী শরীয়ত উনার দৃষ্টিতে হালাল বা জায়িয বিষয়কে হারাম বা নাজায়িয বলা এবং হারাম বা নাজায়িযকে হালাল বা জায়িয বলা কুফরী। কেননা কিতাবে স্পষ্টই উল্লেখ আছে যে-
اِسْتِحْلَالُ الْـمَعْصِيَةِ كُفْرٌ.
অর্থাৎ “গুনাহের কাজ বা হারামকে হালাল মনে করা কুফরী।” (শরহে আক্বাইদে নাসাফী শরীফ)
অতএব, বলার আর অপেক্ষাই রাখেনা যে, উলামায়ে “সূ”দের উক্ত বক্তব্য সাধারণ মুসলমান উনাদের আক্বীদা বা ঈমানের জন্য বিশেষভাবে হুমকিস্বরূপ।
অনুরূপ উলামায়ে “সূ”দের এ কুফরীমূলক বক্তব্য মুসলমানদের আমলের ক্ষেত্রেও বিশেষ ক্ষতির কারণ। কেননা যারা তাদের উক্ত বক্তব্যের কারণে “পবিত্র ঈদে মীলাদুন নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম পালন করা থেকে বিরত থাকবে এবং হারাম পহেলা বৈশাখ পালন করবে” তারা অশেষ খায়ের, বরকত ও নিয়ামত থেকে বঞ্চিত হওয়ার পাশাপাশি মহান আল্লাহ পাক উনার এবং উনার রসূল, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনাদের কর্তৃক নিষিদ্ধকৃত কাজে তথা হারাম কাজে মশগুল হওয়ার কারণে কঠিন গুনাহগার অর্থাৎ জাহান্নামী হবে। নাউযুবিল্লাহ!
কাজেই, যারা এ ধরনের কুফরী আক্বীদায় বিশ্বাসী ও কুফরী বক্তব্য প্রদানকারী তারা ও হক্ব সমঝদার মুসলমানগণ তারা তাদের ঈমান ও আমলকে যেন হিফাযত করতে পারে অর্থাৎ সকল বিষয়ে আহলে সুন্নত ওয়াল জামায়াত উনাদের আক্বীদা অনুযায়ী আক্বীদা পোষণ করতে পারে এবং পবিত্র কুরআন শরীফ, পবিত্র হাদীছ শরীফ, পবিত্র ইজমা ও ক্বিয়াস মোতাবেক আমল করে মহান আল্লাহ পাক উনার রিযামন্দি হাছিল করতে পারে সে জন্যেই “পবিত্র কুরআন শরীফ, পবিত্র হাদীছ শরীফ, পবিত্র ইজমা শরীফ ও পবিত্র ক্বিয়াস শরীফ উনাদের দৃষ্টিতে সম্মানিত ইসলামী মাস ও বিশেষ বিশেষ রাত ও দিনের আমলসমূহের গুরুত্ব, ফযীলত এবং বেদ্বীন-বদদ্বীনদের দিবসসমূহ পালন করা হারাম ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়াটি” প্রকাশ করা হলো।
পবিত্র কুরআন শরীফ, পবিত্র হাদীছ শরীফ, পবিত্র ইজমাউল উম্মাহ শরীফ ও পবিত্র ছহীহ ক্বিয়াস শরীফ উনাদের দৃষ্টিতে ইসলামী মাস ও বিশেষ বিশেষ রাত, দিন ও সময়ের গুরুত্ব, ফযীলত ও আহকাম এবং তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফাতাওয়া-
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিশ শুহূরিল আ’যম (রবীউল আউওয়াল শরীফ) মাস উনার ফাযায়িল-ফযীলত ও গুরুত্ব
হিজরী বছর উনার মাসের সংখ্যা ১২টি। তন্মধ্যে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিশ শুহূরিল আ’যম (রবীউল আউওয়াল শরীফ) মাস হচ্ছেন সমস্ত মাস উনাদের সাইয়্যিদ এবং মহান। সুবহানাল্লাহ! এজন্য এই মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মাস উনাকে বলা হয়, সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিশ শুহূরিল আ’যম, সাইয়্যিদুল আসইয়াদ, সাইয়্যিদুশ শুহূর, শাহরুল আ’যম মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র রবী‘উল আউওয়াল শরীফ। সুবহানাল্লাহ! কেননা, এই মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মাস হচ্ছেন স্বয়ং সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খ্বতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সাথে সংশ্লিষ্ট এবং সম্পৃক্ত। তিনি এই মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মাসে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ করেছেন, এই মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মাসে সর্বপ্রথম সম্মানিত ওহী মুবারক নাযিল হয়েছেন, এই মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মাসে তিনি সম্মানিত হিজরত মুবারক করেছেন এবং এই মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মাসেই তিনি মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিছালী শান মুবারক প্রকাশ করেছেন। সুবহানাল্লাহ! এই মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মাস উনার বেমেছাল শান-মান, ফাযায়িল-ফযীলত, বুযূর্গী-সম্মান মুবারক বুঝার জন্য এতটুকুই যথেষ্ট যে, তূর পাহাড়ে মহান আল্লাহ পাক উনার সম্মানিত আরশে আযীম মুবারক উনার সত্তর হাজার ভাগের এক ভাগ নূর মুবারক বর্ষিত হওয়ার কারণে জলীলুল ক্বদর নবী এবং রসূল হযরত মূসা কালীমুল্লাহ আলাইহিস সালাম উনাকে সেখানে যেতে হয়েছিলো, উনার সম্মানিত না’লাইন শরীফ খুলে। কিন্তু নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নূরুল ফখর মুবারক (মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র না’লাইন শরীফ) উনাদের স্পর্শকৃত মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নূরুশ শরাফত মুবারক (মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ধূলি-বালি মুবারক) পাওয়ার জন্য বেকারর ছিলেন স্বয়ং মহান আল্লাহ পাক উনার সম্মানিত মূল আরশে আযীম মুবারক। সুবহানাল্লাহ! সম্মানিত ও পবিত্র না’লাইন শরীফ উনাদের স্পর্শকৃত সম্মানিত ও পবিত্র ধূলি-বালি মুবারক উনাদের পবিত্রতা, মর্যাদা মূল আরশে আযীম মুবারক থেকেও লক্ষ কোটি গুণ বেশি। সুবহানাল্লাহ! শুধু তাই নয়, মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নূরুল ফখর মুবারক (মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র না’লাইন শরীফ) উনাদের স্পর্শকৃত মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নূরুশ শরাফত মুবারক (মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ধূলি-বালি মুবারক) পেয়ে সম্মানিত মূল আরশে আযীম মুবারক আরো পবিত্রতা হাছিল করেছেন, মর্যাদাবন হয়েছেন এবং অন্য সকলের উপর ফখর করেছেন। সুবহানাল্লাহ! নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নূরুল ফখর মুবারক (মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র না’লাইন শরীফ) উনাদের স্পর্শকৃত মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র নূরুশ শরাফত মুবারক (মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ধূলি-বালি মুবারক) উনাদের মর্যাদা-মর্তবা, শান-মান, ফাযায়িল-ফযীলত, বুযূর্গী-সম্মান মুবারক যদি এতো বেমেছাল হয়ে থাকে, তাহলে সাইয়্যিদু সায়্যিদিশ শুহূরিল আ’যম, সাইয়্যিদুল আসইয়াদ, সাইয়্যিদুশ শুহূর, শাহরুল আ’যম মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র রবী‘উল আউওয়াল শরীফ মাস উনার শান-মান, ফাযায়িল-ফযীলত, বুযূর্গী-সম্মান মুবারক কতো বেমেছাল সেটা সমস্ত জিন-ইনসান, তামাম কায়িনাতবাসী সকলের চিন্তা ও কল্পনার উর্ধ্বে। সুবহানাল্লাহ! যা কস্মিনকালেও ভাষায় প্রকাশ করা সম্ভব নয়। সুবহানাল্লাহ!
পূর্ব প্রকাশিতের পর
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিশ শুহূরিল আ’যম শরীফ (মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র রবীউল আউওয়াল শরীফ) মাস উনার কতিপয় বরকতময় ঐতিহাসিক বিশেষ মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র রাত ও দিন মুবারক- (২৯)
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ২৮শে সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিশ শুহূরিল আ’যম শরীফ (মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র রবীউল আউওয়াল শরীফ)
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আত তাসি‘য়াহ আলাইহাস সালাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ দিবস মুবারক। সুবহানাল্লাহ!
হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনারা ছিলেন মোট মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ১৩ জন। সুবহানাল্লাহ! সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খ্বতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত খিদমত মুবারক-এ সম্মানিত তাশরীফ মুবারক নেয়ার ধারাবাহিকক্রম মুবারক অনুযায়ী মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আত তাসি‘য়াহ আলাইহাস সালাম তিনি হচ্ছেন ‘আত তাসি‘য়াহ তথা নবম’। এ জন্য উনাকে ‘মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আত তাসি‘য়াহ আলাইহাস সালাম’ বলা হয়। তিনি এই সম্মানিত লক্বব মুবারক দ্বারাই সকলের মাঝে সম্মানিত পরিচিতি মুবারক গ্রহণ করেছেন। সুবহানাল্লাহ!
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আত তাসি‘য়াহ্ আলাইহাস সালাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় ইসম বা নাম মুবারক সাইয়্যিদাতুনা হযরত রায়হানাহ্ বিনতে শাম‘ঊন আলাইহাস সালাম। সুবহানাল্লাহ! উনার মহাসম্মানিত পিতা হচ্ছেন সাইয়্যিদুনা হযরত যায়েদ আলাইহিস সালাম। তিনি ছিলেন জলীলুল ক্বদর নবী ও রসূল সাইয়্যিদুনা হযরত মূসা কালীমুল্লাহ আলাইহিস সালাম উনার সম্মানিত ভাই সাইয়্যিদুনা হযরত হারূন আলাইহিস সালাম উনার সম্মানিত বংশধর। সুবহানাল্লাহ! তিনি ছিলেন বনূ নাযীর গোত্রের। সুবহানাল্লাহ! মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আত তাসি‘য়াহ্ আলাইহাস সালাম তিনি মহাসম্মানিত পিতা আলাইহিস সালাম উনার দিক থেকে সাইয়্যিদুনা হযরত ইবরাহীম খলীলুল্লাহ আলাইহিস সালাম উনার নিকট যেয়ে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সাথে মিলিত হয়েছেন। সুবহানাল্লাহ! যেমন-
اُمُّ الْمُؤْمِنِيْنَ سَيِّدَتُنَا حَضْرَتْ رَيْـحَانَةُ بِنْتُ زَيْدِ بْنِ عَمْرِو بْنِ خَنَافَةَ بْنِ شَـمْعُوْنَ بْنِ زَيْدِ )عَدَدُ الْاٰبَاءِ عَلَيْهِمُ السَّلَامُ غَيْرُ مَرْوِىٍّ( بْنِ النَّضِيْرِ بْنِ النَّحَّامِ بْنِ نَاخُوْمِ بْنِ الْـخَزْرَجِ بْنِ الصَّرِيْحِ بْنِ التَّوْمَانِ بْنِ السِّبْطِ بْنِ الْيَسَعِ بْنِ سَعْدِ بْنِ لَاوِىِّ بْنِ خَيْرِ بْنِ النَّجَّامِ بْنِ تَنْحُوْمَ بْنِ عَازِرِ بْنِ عَيْزَرِ بْنِ هَارُوْنَ بْنِ عِمْرَانَ بْنِ قَاهَاتِ بْنِ لَاوِىِّ بْنِ يَعْقُوْبَ بْنِ اِسْحَاقَ بْنِ اِبْرَاهِيْمَ عَلَيْهِمُ السَّلَامُ
১. اُمُّ الْمُؤْمِنِيْنَ سَيِّدَتُنَا حَضْرَتْ رَيْـحَانَةُ عَلَيْهَا السَّلَامُ উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত রায়হানাহ্ আলাইহাস সালাম।
২. زَيْدٌ عَلَيْهِ السَّلَامُ سَيِّـدُنَـا حَضْرَتْ সাইয়্যিদুনা হযরত যায়েদ আলাইহিস সালাম।
৩. عَمْرٌو عَلَيْهِ السَّلَامُ سَيِّـدُنَـا حَضْرَتْ সাইয়্যিদুনা হযরত ‘আমর আলাইহিস সালাম।
৪. سَيِّـدُنَـا حَضْرَتْ خَنَافَةُ عَلَيْهِ السَّلَامُ সাইয়্যিদুনা হযরত খনাফাহ্ আলাইহিস সালাম।
৫. شَـمْعُوْنُ عَلَيْهِ السَّلَامُ سَيِّـدُنَـا حَضْرَتْ সাইয়্যিদুনা হযরত শাম‘ঊন আলাইহিস সালাম।
৬. زَيْدٌ عَلَيْهِ السَّلَامُ سَيِّـدُنَـا حَضْرَتْ সাইয়্যিদুনা হযরত যায়েদ আলাইহিস সালাম।
৭. عَدَدُ الْاٰبَاءِ عَلَيْهِمُ السَّلَامُ غَيْرُ مَرْوِىٍّ কয়েকজন মহাসম্মানিত পূর্বপুরুষ আলাইহিমুস সালাম উনাদেও সম্মানিত ও পবিত্র ইসম বা নাম মুবারক (কিতাবে) বর্ণিত নেই।
৮. النَّضِيْرُ عَلَيْهِ السَّلَامُ سَيِّـدُنَـا حَضْرَتْ সাইয়্যিদুনা হযরত নাযীর আলাইহিস সালাম।
৯. اَلنَّحَّامُ عَلَيْهِ السَّلَامُ سَيِّـدُنَـا حَضْرَتْ সাইয়্যিদুনা হযরত নাহ্হাম আলাইহিস সালাম।
১০. نَاخُوْمُ عَلَيْهِ السَّلَامُ سَيِّـدُنَـا حَضْرَتْ সাইয়্যিদুনা হযরত নাখূম আলাইহিস সালাম।
১১. اَلْـخَزْرَجُ عَلَيْهِ السَّلَامُ سَيِّـدُنَـا حَضْرَتْ সাইয়্যিদুনা হযরত খয্রায আলাইহিস সালাম।
১২. الصَّرِيْحُ عَلَيْهِ السَّلَامُ سَيِّـدُنَـا حَضْرَتْ সাইয়্যিদুনা হযরত ছরীহ্ আলাইহিস সালাম।
১৩. التَّوْمَانُ عَلَيْهِ السَّلَامُ سَيِّـدُنَـا حَضْرَتْ সাইয়্যিদুনা হযরত তাওমান আলাইহিস সালাম।
১৪. عَلَيْهِ السَّلَامُ سَيِّـدُنَـا حَضْرَتْ السِّبْطُ সাইয়্যিদুনা হযরত সিব্ত্ব আলাইহিস সালাম।
১৫. اَلْيَسَعُ عَلَيْهِ السَّلَامُ سَيِّـدُنَـا حَضْرَتْ সাইয়্যিদুনা হযরত আল ইয়াসা’ আলাইহিস সালাম।
১৬. سَيِّـدُنَـا حَضْرَتْ سَعْدٌ عَلَيْهِ السَّلَامُ সাইয়্যিদুনা হযরত সা’দ আলাইহিস সালাম।
১৭. سَيِّـدُنَـا حَضْرَتْ لَاوِىٌّ عَلَيْهِ السَّلَامُ সাইয়্যিদুনা হযরত লাওই আলাইহিস সালাম।
১৮. خَيْرٌ عَلَيْهِ السَّلَامُ سَيِّـدُنَـا حَضْرَتْ সাইয়্যিদুনা হযরত খইর আলাইহিস সালাম।
১৯. اَلنَّجَّامُ عَلَيْهِ السَّلَامُ سَيِّـدُنَـا حَضْرَتْ সাইয়্যিদুনা হযরত আন নাজ্জাম আলাইহিস সালাম।
২০. تَنْحُوْمُ عَلَيْهِ السَّلَامُ سَيِّـدُنَـا حَضْرَتْ সাইয়্যিদুনা হযরত তানহূম আলাইহিস সালাম।
২১. سَيِّـدُنَـا حَضْرَتْ عَازِرٌ عَلَيْهِ السَّلَامُ সাইয়্যিদুনা হযরত ‘আযির আলাইহিস সালাম।
২২. سَيِّـدُنَـا حَضْرَتْ عَيْزَرٌ عَلَيْهِ السَّلَامُ সাইয়্যিদুনা হযরত ‘আইযার আলাইহিস সালাম।
২৩. سَيِّـدُنَـا حَضْرَتْ هَارُوْنُ عَلَيْهِ السَّلَامُ সাইয়্যিদুনা হযরত হারূন আলাইহিস সালাম।
২৪. سَيِّـدُنَـا حَضْرَتْ عِمْرَانُ عَلَيْهِ السَّلَامُ সাইয়্যিদুনা হযরত ‘ইমরান আলাইহিস সালাম।
২৫. سَيِّـدُنَـا حَضْرَتْ قَاهَاتٌ عَلَيْهِ السَّلَامُ সাইয়্যিদুনা হযরত ক্বহাত আলাইহিস সালাম।
২৬. سَيِّـدُنَـا حَضْرَتْ لَاوِىٌّ عَلَيْهِ السَّلَامُ সাইয়্যিদুনা হযরত লাওই আলাইহিস সালাম।
২৭. سَيِّـدُنَـا حَضْرَتْ يَعْقُوْبُ عَلَيْهِ السَّلَامُ সাইয়্যিদুনা হযরত ইয়া’কূব আলাইহিস সালাম।
২৮. سَيِّـدُنَـا حَضْرَتْ اِسْحَاقُ عَلَيْهِ السَّلَامُ সাইয়্যিদুনা হযরত ইসহাক্ব আলাইহিস সালাম।
২৯. سَيِّـدُنَـا حَضْرَتْ اِبْرَاهِيْمُ عَلَيْهِ السَّلَامُ সাইয়্যিদুনা হযরত ইবরাহীম আলাইহিস সালাম।
(ইবনে সা’দ ৮/১২৯, ‘উয়ূনুল আছার ২/৩৮৮, আল মুখতাছারুল কাবীর ১/১০০, সুবুলুল হুদা ওয়ার রশাদ ৫/১৫)
উল্লেখ্য যে, মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আত তাসি‘য়াহ্ আলাইহাস সালাম উনার মহাসম্মানিতা আম্মাজান আলাইহাস সালাম উনার সম্মানিত ইসম বা নাম মুবারক কিতাবাদিতে পাওয়া যায় না।
মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আত তাসি‘য়াহ্ আলাইহাস সালাম তিনি আনুষ্ঠানিকভাবে মহাসম্মানিত নুবুওওয়াত ও রিসালত মুবারক প্রকাশের ১৯ বছর পূর্বে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ২৮শে সাইয়্যিদু সাইয়্যিদিশ শুহূরিল আ’যম শরীফ ইয়াওমুছ ছুলাছা’ শরীফ মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিলাদতী শান মুবারক প্রকাশ করেন। সুবহানাল্লাহ!
৬ষ্ঠ হিজরী শরীফ উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ২৩শে মুহররমুল হারাম শরীফ লাইলাতু সাইয়্যিদি সাইয়্যিদিল আইয়্যাম শরীফ (লাইলাতুল ইছনাইনিল আযীম শরীফ) নুরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সাথে মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আত তাসি‘য়াহ আলাইহাস সালাম উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ‘আযীমুশ শান নিসবাতে ‘আযীম শরীফ অনুষ্ঠিত হন। তখন দুনিয়াবী দৃষ্টিতে উনার সম্মানিত বয়স মুবারক ছিলেন ৩৬ বছর ৯ মাস ২৫ দিন। সুবহানাল্লাহ! তিনি ৫ বছর ১ মাস ১৯ দিন নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার সম্মানিত খিদমত মুবারক উনার আনজাম মুবারক দেন। সুবহানাল্লাহ!
তিনি ১১ হিজরী শরীফ উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ৫ই মুহাররমুল হারাম শরীফ ইয়াওমুল খমীস শরীফ মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র বরকতময় বিছালী শান মুবারক প্রকাশ করেন। সুবহানাল্লাহ! তিনি দুনিয়ার যমীনে মোট ৪১ বছর ৯ মাস ৭ দিন সম্মানিত অবস্থান মুবারক করেন। সুবহানাল্লাহ!
খালিক্ব! মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন-
اَلنَّبِـىُّ اَوْلـٰى بِالْمُؤْمِنِيْنَ مِنْ اَنْفُسِهِمْ وَاَزْوَاجُهۤٗ اُمَّهٰتُهُمْ.
অর্থ: “নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি হচ্ছেন মু’মিন উনাদের নিকট উনাদের জানের চেয়ে অধিক প্রিয়, উনাদের মহাসম্মানিত পিতা ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এবং উনার মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র ‘আযওয়াজুম মুত্বহহারাত’ (মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম) উনারা হচ্ছেন সমস্ত মু’মিন উনাদের মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মাতা আলাইহিন্নাস সালাম।” সুবহানাল্লাহ! (সম্মানিত ও পবিত্র সূরা আহযাব শরীফ : সম্মানিত ও পবিত্র আয়াত শরীফ ৬)
এই সম্মানিত ও পবিত্র আয়াত শরীফ উনার মধ্যে মু’মিন বলতে একমাত্র যিনি খালিক্ব¡ মালিক রব মহান আল্লাহ পাক তিনি ব্যতীত হযরত নবী-রসূল আলাইহিমুস সালাম উনারাসহ সমস্ত জিন-ইনসান, তামাম কায়িনাতবাসী সকলেই উদ্দেশ্য। সুবহানাল্লাহ! উনারা সকলেই মু’মিন। উনারা প্রত্যেকেই নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার প্রতি সম্মানিত ঈমান মুবারক এনেছেন। সুবহানাল্লাহ! নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার প্রতি সম্মানিত ঈমান মুবারক আনার পরেই মহান আল্লাহ পাক তিনি সমস্ত হযরত নবী-রসূল আলাইহিমুস সালাম উনাদেরকে সম্মানিত নুবুওওয়াত ও রিসালাত মুবারক হাদিয়া মুবারক করেছেন। সুবহানাল্লাহ!
কাজেই মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনারা হচ্ছেন একমাত্র মহান আল্লাহ পাক তিনি এবং উনার মাহবূব হাবীব, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি অর্থাৎ উনারা ব্যতীত সমস্ত হযরত নবী-রসূল আলাইহিমুস সালাম উনারাসহ সমস্ত জিন-ইনসান, তামাম কায়িনাতবাসী সকলের মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র মাতা আলাইহিন্নাস সালাম। সুবহানাল্লাহ! আর মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র উম্মুল মু’মিনীন সাইয়্যিদাতুনা হযরত আত তাসি‘য়াহ আলাইহাস সালাম তিনি হচ্ছেন মহাসম্মানিত ও মহাপবিত্র হযরত উম্মাহাতুল মু’মিনীন আলাইহিন্নাস সালাম উনাদের মধ্যে একজন বিশেষ ব্যক্তিত্বা মুবারক। সুবহানাল্লাহ! উনার শান-মান, ফাযায়িল-ফযীলত, বুযূর্গী-সম্মান মুবারক এক কথায় তিনি শুধু মহান আল্লাহ পাক তিনি নন এবং উনার মাহবূব হাবীব, নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি নন; এছাড়া সমস্ত শান-মান, ফাযায়িল-ফযীলত, বুযূর্গী-সম্মান মুবারক উনাদের অধিকারিণী। সুবহানাল্লাহ! উনাকে সম্মানিত মুহব্বত মুবারক করা, উনার সম্মানিত তা’যীম-তাকরীম মুবারক করা, সম্মানিত ছানা-ছিফত মুবারক করা এবং উনার সম্মানিত খিদমত মুবারক উনার আনজাম মুবারক দেয়া সমস্ত জিন-ইনসান, তামাম কায়িনাতবাসী সকলের জন্য ফরযে আইন। সুবহানাল্লাহ! মহান আল্লাহ পাক তিনি আমাদের সবাইকে সেই তাওফীক্ব দান করুন। আমীন!
অসমাপ্ত- পরবর্তী সংখ্যার অপেক্ষায় থাকুন