পবিত্র দ্বীন ইসলাম অনুসরণ করেই দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির সংকট থেকে মুক্তি পাওয়া যাবে

সংখ্যা: ২৯৯তম সংখ্যা | বিভাগ:

পবিত্র দ্বীন ইসলামের দৃষ্টিতে ভোক্তাদের জিম্মি করে অর্থকড়ি উপার্জন ঘৃণ্য ও মানবতা বিবর্জিত কাজ। এইসব অবৈধ কর্মকান্ড পরকালে জাহান্নামে যাওয়ার কারণ।

ব্যবসার লক্ষ্যই হলো মুনাফা লাভ। ইসলামে তা হারাম নয়। পবিত্র কুরআন শরীফে মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, ‘মহান আল্লাহ পাক তিনি ক্রয়-বিক্রয়কে হালাল ও সুদকে হারাম করেছেন।’ (সম্মানিত ও পবিত্র সূরা বাক্বারা শরীফ, সম্মানিত ও পবিত্র আয়াত শরীফ ২৭৫)

পবিত্র দ্বীন ইসলামে ব্যবসায় অসততা, জালিয়াতি, ধোঁকাবাজি, ভেজাল মেশানো, শাসক শ্রেণী বা দলীয় লোকজন এবং আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর লোকজন কর্তৃক চাঁদা আদায় ইত্যাদি নিষিদ্ধ।

নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, ‘কেউ যদি খাদ্য গুদামজাত করে কৃত্রিম সংকট তৈরি করে, মহান আল্লাহ পাক তিনি তাকে দুরারোগ্য ব্যাধি ও দারিদ্র্যতা দ্বারা শাস্তি দেন।’ (পবিত্র ইবনে মাজাহ শরীফ, হাদীছ শরীফ : ২২৩৮)

অন্য মহাপবিত্র হাদীছ শরীফে এসেছে, ‘যে ব্যক্তি (সংকট তৈরি করে) খাদ্যশস্য গুদামজাত করে, সে অপরাধী।’ (মুসলিম শরীফ, পবিত্র হাদীছ শরীফ: ১৬০৫)

বাজার দর নিয়ন্ত্রণে বড় বাধা অসাধু ব্যাবসায়িরা। পবিত্র দ্বীন ইসলাম উনার নির্দেশনা হলো পণ্য উৎপাদনের পর তা স্বাধীনভাবে বাজারে প্রবেশ করবে। বাজার মূল্য বৃদ্ধির জন্য তা আটকে রাখতে নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি নিষেধ করেছেন। তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, ‘যে ব্যক্তি ৪০ দিনের খাবার রাখে সে মহান আল্লাহ পাক উনার জিম্মা থেকে বেরিয়ে যায়।’ (মুসান্নাফে ইবনে আবি শায়বা, হাদীছ শরীফ : ২০৩৯৬)

বর্তমানে কৃষির প্রতি অমনোযোগীতাও দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির জন্য কিছুটা দায়ী। কৃষিকাজে অমনোযোগের কারণে খাদ্যপণ্যের সংকট তৈরি হয়ে দ্রব্যমূল্য বাড়তে পারে। পবিত্র দ্বীন ইসলাম কৃষি ভূমির সর্বোত্তম ব্যবহার নিশ্চিত করতে বলেছেন। নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, ‘তোমরা জমিনের পরতে পরতে জীবিকা অন্বেষণ করো।’ (মাজমাউল জাওয়ায়িদ)

ব্যবসায়ীদের অন্যায় মূল্য বৃদ্ধির প্রতিবাদে সকলে বর্ধিত মূল্যের পণ্য বর্জন করতে পারে। কেননা সাইয়্যিদুনা হযরত ফারূকে আ’যম আলাইহিস সালাম উনার পবিত্র খিলাফত উনার সময় গোশতের মূল্য বৃদ্ধি পেলে লোকেরা উনার কাছে অভিযোগ করেন এবং মূল্য নির্ধারণের দাবি জানান। তিনি বলেন, তোমরাই এর মূল্য হ্রাস করে দাও। তাদের কাছ থেকে গোশত কেনা ছেড়ে দাও। (আল বিদায়া ওয়ান নিহায়া : ৯/১৪১)

পাশাপাশি দ্রব্য মূল্য বৃদ্ধির বিপরীতে এমন কঠিন সময়ে ক্রয়-বিক্রয়ে সহজতা অবলম্বন করা সবারই দায়িত্ব। নূরে মুজাসসাম হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তিনি ইরশাদ মুবারক করেন, ‘মহান আল্লাহ পাক এমন একজন ব্যক্তিকে জান্নাতে প্রবেশ করাবেন, যে ক্রেতা, বিক্রেতা, বিচারক ও বিচারপ্রার্থী অবস্থায় সহজতা অবলম্বনকারী ছিল। (সুনানে নাসায়ি শরফি, পবিত্র হাদীছ শরীফ : ৪৬৯৬)

পবিত্র দ্বীন ইসলাম উনার দৃষ্টিতে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি মহান আল্লাহ পাক উনার পক্ষ থেকে এক প্রকার শাস্তি। তাই দ্রব্যমূল্য বেড়ে গেলে পাপ পরিহার করা এবং তাওবা করে ফিরে আসা আবশ্যক।

সর্বোপরি, উল্লেখিত বিষয়ে দেশের সরকারকেই মূল ভূমিকা রাখতে হবে এবং জবাবদীহিতার আওতায় আনতে হবে। কারণ, সরকারের অদক্ষতা, অব্যবস্থাপনা ও দূর্নীতির কারণেই দ্রব্যমূল্যের এহেন অবস্থা।

মহান আল্লাহ পাক আমাদের সবাইকে এই সংকট থেকে রক্ষা করুন। আমিন।

-আহমদ মাশুক মারজান

ঈমানদীপ্ত সম্মানিত মহিলা হযরত উম্মে কায়েস বিন্তে মিহছান রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহা

ঈমানদীপ্ত সম্মানিত মহিলা হযরত আসমা বিনতু উমাইস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহা

মুসলিম পরস্পরের প্রতি হামদরদী থাকা খুবই জরুরী

ঈমানদীপ্ত সম্মানিত মহিলা

ঈমানদীপ্ত সম্মানিত মহিলা হযরত উম্মে ওয়ারাকা রদ্বিয়াল্লাহু তা’য়ালা আনহা