মুরতাদ দাউদ হায়দার একটি মাত্র মুরতাদী কবিতা লিখেই দেশ থেকে নির্বাসিত হয়েছে। নির্বাসিত হয়েছে মুরতাদ তসলিমা নাসরিন। ক্ষমা চেয়ে আত্মরক্ষা করেছে প্রথম আলো সম্পাদক মতি মিয়া। কিন্তু তাদেরই সম পর্যায়ের মুরতাদী করে বহাল তবিয়তে রইছে তথাকথিত জামাতে ইসলাম। দাউদ হায়দার, তসলিমা, মতি মিয়া সবার বিরুদ্ধেই আন্দোলন হয়েছে। কিন্তু একই তবকার মুরতাদী করার পরও জামাতীদের বিরুদ্ধে আন্দোলন হয়নি। তার প্রথম কারণ ঐ বিষয়ই। জামাতীরা ইসলামের লেবাছে বিচরণ করছে। দ্বিতীয় কারণ হিসেবে বলতে হয়, জামাত জনবিচ্ছিন্ন, ধর্মপ্রাণ মুসলমান বিছিন্ন একটি দল। তাদের প্রচারিত ‘কিশোরকণ্ঠ’ পত্রিকার নামই দেশবাসী জানেন না। আর সাধারণ ধর্মপ্রাণ মুসলমান তাদের পত্রিকা হিসেবে আরো পাত্তা দেয় না ও পড়ে না। তাই তারা পত্রিকায় যে মুরতাদী করেছে সেটা এতদিন প্রকাশ পায়নি। উল্লেখ্য, ইসলামের দৃষ্টিতে কোন মুসলমান যদি মহান আল্লাহ পাক-এর হাবীব, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এবং ইসলামের কোন বিষয় নিয়ে এমন কিছু বলে বা মন্তব্য করে বা লিখে যা তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য বা অবজ্ঞা অথবা অবমাননা প্রকাশ পায় তবে তা মুরতাদী হয়। কুরআন সুন্নাহয় এ বিষয়ে দলীল হাজার হাজার রয়েছে। আর সব ইমাম মুজতাহিদ ও ফুক্বাহায়ে কিরাম এ ব্যাপারে একমত এবং সমূহ ফিক্বাহর কিতাবেও তাই লিখা রয়েছে। আল্লাহ পাক তাঁর হাবীব হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সম্পর্কে বলেন, “আমি আপনার আলোচনাকে বুলন্দ করেছি।” কতটুকু বুলন্দ? যে, খোদ কালিমা শরীফের সাথে সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর নাম মুবারক সংযুক্ত করে দিয়েছেন। ক্বিয়ামত পর্যন্ত যদি কেউ ‘লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহু’ পড়ে তারপরেও সে মুসলমান হবে না, যতক্ষণ সে মুহম্মদুর রসূলুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম না পড়বে। স্বয়ং আল্লাহ পাক হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে সম্বোধনে তাঁর নাম মুবারক উচ্চারণে অপূর্ব সম্মান প্রদর্শন করেছেন। তা’যীম-তাকরীম দিয়েছেন। আল্লাহ পাক কখনও শুধু ‘মুহম্মদ’ বলে সম্বোধন করেননি। বরং ত্ব-হা, ইয়া-সীন, ইয়া মুজাম্মিল, ইয়া মুদ্দাসির এভাবে মহা সম্মানজনক লক্বব মুবারকে সম্বোধন করেছেন। জামাত-শিবিররা আখিরী রসূল, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর নাম মুবারক নিয়ে যা করেছে তা ইসলাম বিদ্বেষী ব্রিটিশরাও করেনি। ব্রিটিশরা হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর পিতার নাম মুবারক অবমাননা করার জন্য তাদের অর্ডারলির নাম রাখতো আব্দুল্লাহ। কিন্তু এ যাবত ইহুদী-খ্রিস্টানরা ব্যঙ্গচিত্র করলেও হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর নাম মুবারক নিয়ে ব্যঙ্গ করার সাহস পায়নি। অথচ জামাত-শিবির তাই করেছে। জামাত-শিবির তাদের ‘কিশোরকণ্ঠের’ ১৯৯৮ সালের নভেম্বর সংখ্যায় শুধু কদুর সাথেই হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর নাম মুবারক সংযুক্ত করেনি বরং তাদের লেখাটা এমনভাবে উপস্থাপন করেছে যে, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে রান্নার বিষয় হিসেবে পেশ করেছেন। (নাউজুবিল্লাহ) সাম্প্রতিককালে এ বিষয়টি নিয়ে লেখালেখি হচ্ছে। বিষয়টি জামাত-শিবিরের আমীর, সেক্রেটারী এবং শিবির সভাপতিরাও অবগত। আর (কিশোর কণ্ঠ, নভেম্বর, ১৯৯৮ইং) তৎকালীন শিবিরের সভাপতিই ছিল উক্ত ব্যঙ্গ কাহিনীর পত্রিকা কিশোর কণ্ঠের সম্পাদক। সে এখন জামাতের কেন্দ্রীয় নেতা। কিন্তু তারপরেও তারা আজো পর্যন্ত কোন ক্ষমা প্রার্থনা করছে না। যার দ্বারা এটাই প্রমাণিত হয় সাঈদী, গো’আযমসহ জামাত আমীর নিজামী তথা গোটা জামাত-শিবির গং সবাই মুরতাদ এবং তারা এখনো মুরতাদীতে বহাল রয়েছে। স্বাধীনতা বিরোধী জামাত-শিবির দেশের স্বাধীনতার বিপক্ষে কাজ করার জন্য; ’৭১-এর হত্যা, লুণ্ঠন, রাহাজানির জন্য আজো পর্যন্ত ক্ষমা চায়নি। পাশাপাশি এত বড় মুরতাদীর পরও তারা এখনও ক্ষমা চায়নি। তারা শুধু দেশেরই শত্রু নয়, তারা ধর্মেরও শত্রু। তারা দ্বীন ইসলামের শত্রু। জামাত-শিবির গং আল্লাহ পাক ও তাঁর হাবীব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর শত্রু। জামাত-শিবিরই ইহুদী-নাছারাদের ইসলাম নিয়ে ব্যঙ্গ করার পথ দেখিয়েছে। তাদের কারণেই ইহুদী-নাছারারা এবং দেশে ইসলাম বিরোধিরা ইসলামকে নিয়ে ব্যঙ্গ করার দুঃসাহস পেয়েছে। মুরতাদ মতি ও জামাত-শিবিরের মুরতাদদের প্রতি শরীয়তের একই হুকুম বলবৎ হবে। আর একইভাবে এসমস্ত মুরতাদদের বিচারের ব্যবস্থা করতে হবে। অতএব, দুনিয়ার সমস্ত মুসলমানদের জন্য ফরজ এ সমস্ত মুরতাদদের কঠোরভাবে দমন করা ও এদের প্রতি কঠিন শাস্তির ব্যবস্থা নেয়া। পাদটীকাঃ প্রসঙ্গতঃ জামাত-শিবিরের পত্রিকা ‘কিশোরকণ্ঠে’ নভেম্বর ১৯৯৮ সংখ্যায় যে মহা মুরতাদীমূলক কৌতুক ছাপানো হয়েছিলো নিম্নে তা হুবহু উল্লেখ করা হলো। শিক্ষক ছাত্রকে বলল, শিক্ষকঃ কালু তোর পিতার নাম কি? ছাত্রঃ সাদেক। শিক্ষকঃ এই বেআদব, তোকে না কতবার বলেছি যে কোন নামের পূর্বে মোহাম্মদ বলতে হয়। (কিছু দিন পর) শিক্ষকঃ কালু আজ তোর মা কি পাক করেছে? ছাত্রঃ স্যার, মোহাম্মদ কদু।
সংগ্রহেঃ মুহাম্মদ মাসুদ, আমিরাবাদ এম, এম, সি মাদ্রাসা, ফেনী।
-মুহম্মদ আরিফুর রহমান, ঢাকা।
ব্রিটিশ গুপ্তচরের স্বীকারোক্তি এবং ওহাবী মতবাদের নেপথ্যে ব্রিটিশ ভূমিকা-৩২