প্রসঙ্গঃ ‘ইসলামের নামে গণতন্ত্র ও নির্বাচন করা’ এখনই চরম সময়, বিষয়টি ভাবিবার (১৩)

সংখ্যা: ১১৯তম সংখ্যা | বিভাগ:

 “ইসলামের নামে গণতন্ত্র করা হারাম, নির্বাচনে দাঁড়ানো নাজায়িয।” এ ফতওয়া প্রথম উচ্চারণ করেন, বর্তমান যামানার মুজাদ্দিদ, ইমামুল আইম্মা, কুতুবুল আলম, আওলাদে রসূল, রাজারবাগ শরীফের হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী।

গণতন্ত্র একটি প্রচলিত ব্যবস্থা। এই প্রচলিত ব্যবস্থাকে অস্বীকার করলে ঝক্কি-ঝামেলা পোহাতে হয়, বিরূপ প্রতিক্রিয়া সইতে হয়, পাশাপাশি কায়েমী স্বার্থবাদীতা ক্ষুম্ন হয়, “নগদ যা পাই লুটে-পুটে খাই; বাকীর খাতা শুন্য পড়ে থাক” এ সুবিধাবাদী নীতির খিলাফ হয়, তাই তথাকথিত ইসলামী রাজনীতিকরা ইসলাম আর প্রচলিত গণতন্ত্র ভিন্ন জিনিস তা ইসলামী মূল্যবোধের আলোকে বিশ্বাস করতে বাধ্য হলেও প্রকাশ করতে প্রচেষ্ট নয়।

কিন্তু সময়টা যে মুজাদ্দিদে যামানের যুগ। খোদায়ী ইচ্ছায় যে তাজদীদ তিনি করবেন তা ধর্ম ব্যবসায়ীরা না স্বীকার করলেও ধর্মপ্রাণ তথা সাধারণ সমঝদারদের মাঝে তা ঠিকই আলোড়ণ সৃষ্টি করবে, চেতনা তৈরী করবে। অথবা চলমান আবহ বা সময়ের অভিজ্ঞতা তাদেরকে মুজাদ্দিদে যামানের তাজদীদেরই মুখাপেক্ষী করবে।

সাম্প্রতিককালে এর একটি উদাহরণ, নিউজ উইক পত্রিকার সম্পাদক ফরিদ জাকারিয়ার বই “দি ফিউচার অব ফ্রিডম” বইয়ের বক্তব্য তথা উদার গণতন্ত্রের মূল্যায়ন। তার মতে-

“গণতন্ত্রের খাল কেটে আনা হয় স্বৈরাচারী কুমির। “বিশ্বের ৬২% দেশ গণতান্ত্রিক হলেও এই সিস্টেম কোথাও কাজ করে না। ‘গণতন্ত্র’ সবচেয়ে দুর্নীতিপরায়ণ, সবচেয়ে মিথ্যে শব্দ। লৌহমানব টিটো বা সুহার্তোর আমলে যুগো াভ বা ইন্দোনেশিয়ার মানুষ যত সুখে ছিল, গণতন্ত্র সত্ত্বেও সে দেশে আজ আগের সেই সুখ নেই।            জাকারিয়ার মতে, আরব বিশ্বে আজ যদি গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচন দেয়া হয় তাহলে ক্ষমতায় আসবে তারাই যারা আরও স্বৈরাচার ও নিষ্ঠুর। দেশ শাসন করতে স্বৈরাচারের সব ক্ষমতা প্রয়োগ করবে তারা। আর দোহাই দেবে গণতন্ত্রের। উদাহরণস্বরূপ মিসরের হোসনি মোবারক কিংবা জিম্বাবুয়ের রবার্ট মুগাবের মতে, স্বৈরাচার নির্বাচন দিলেও- তারাই নির্বাচনে জিতবে। বৃহত্তর বিশ্বের জন্য গণতন্ত্র কথাটি স্বৈরাচারের রাজনৈতিকরূপ।

মার্কিন ডিপ্লোম্যাট রিচার্ড পুলব্রুক ৯০ দশকের যুগো াভিয়া সম্পর্কে বলেছিলেন ,‘আজ যদি মুক্ত ও নিরপেক্ষ নির্বাচন দেয়া হয় তাহলে নির্বাচিত ব্যক্তিরা হবে রেসিস্ট, ফ্যাসিস্ট এবং সেপারেটিস্ট।’

পশ্চিমে লিবারেল ডেমোক্রেসি সম্পর্কে জাকারিয়ার অভিমত হল “পশ্চিমের গণতান্ত্রিক অবকাঠামোয় মানুষের সব ধরণের সাংবিধানিক অধিকার থাকবে, যাকে বলা হয়- Constifutional Liberalism; বাস্তবে-গণতন্ত্রের সঙ্গে এই Constifutional Liberalism এর কোন সম্পর্ক নেই। বাস্তবতা ও সংবিধান দুটো কখনোই এক হয়নি। এমনকি পশ্চিমেও নয়। কেননা হিটলার নিজেও অবাধ নির্বাচনে জয়লাভ করে সাংবিধানিকভাবে জার্মানির চ্যান্সেলর হয়েছিলেন, তা সত্ত্বেও গত ৫০ বছরে পশ্চিমের গণতন্ত্র এবং স্বাধীনতা ছিল অভিন্ন। কিন্তু আজ পশ্চিমে এই দুটো ধারা পরস্পরবিরোধী। সেখানে গণতন্ত্র হু-হু করে ছড়াচ্ছে আর মানুষের স্বাধীনতা কমছে।  ফরিদ জাকারিয়ার অভিমত হলো, গণতন্ত্র শব্দটি আজ বড় উৎকট লাগে। বড় গোলমেলেও লাগে। তাই আমেরিকার গণতন্ত্রকে আজ বলা উচিত মিলিটারি এবং ধর্মীয় ফ্যাসিবাদী গণতন্ত্র। ‘প্রচণ্ড ধার্মিক’ বুশ এবং এটর্নি জেনারেল জন অ্যাসক্রফট গণতন্ত্রের নামে তাদের খ্রিষ্টান মৌলবাদকে ক্ষমতার মাধ্যমে উসকে দিচ্ছেন। কিন্তু সমালোচনা নিষিদ্ধ। করলেই জেল। কারণ এগুলো নাকি জাতির নিরাপত্তাকে ক্ষুন্ন করে। ইস্যুটা হল হোমল্যান্ড সিকিউরিটি।”

অতএব, পাঠক! জাকারিয়ার এ বক্তব্যের প্রেক্ষিতেও আমরা বলতে পারি, “হে ইসলামের নামে নির্বাচনকারী তথাকথিত ইসলামী দলসমূহ! এখনও সময় আছে আপনারা সংশোধন হোন। নতুবা একদিন দেখবেন, যামানার মুজাদ্দিদের তাজদীদের জোয়ারে জনরোষ আপনাদের বিরুদ্ধে ফুঁসে উঠেছে।

‘ইসলামের নামে গণতন্ত্র হারাম’ রাজারবাগ শরীফের হযরত মুরশিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লহুল আলী-এর এ তাজদীদী ফতওয়া তাদের ঈমানী চেতনায় এমন খোদায়ী জজ্বা তৈরী করেবে তার জোয়ারে আপনারা খড়-কুটার মত ভেসে যাবেন, নিশ্চিহ্ন হয়ে যাবেন।

-মুহম্মদ ওয়ালীউল্লাহ্, বাসাবো, ঢাকা।

আকবরের আমলের উলামায়ে ‘ছূ’দের উত্তরাধিকারী মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে দ্বীন-ই-ইলাহীর আদলে দ্বীন-ই-জুমহুরী প্রচলনে তারা এক হয়েছে-৪

প্রসঙ্গঃ গণতন্ত্র; এখনই চরম সময়, বিষয়টি ভাবিবার- ১০

একটি অভূতপূর্ব ওয়াজ শরীফ এবং কম্পিউটারে কুরআন শরীফ, মাজার শরীফের উপরে ভাসমান দৃশ্য ও তাঞ্জানিয়ার সেই ছেলের কথা

প্রসঙ্গঃ দরসে বুখারীর পঞ্চদশ বছর পূর্তি নামধারী জাহিরী আলিমদের ডামাডোলের বিপরীতে মুজাদ্দিদুয্ যামানের পরিচয়

আকবরের আমলের উলামায়ে ‘ছূ’দের উত্তরাধিকারী মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে দ্বীন-ই-ইলাহীর আদলে দ্বীন-ই-জুমহুরী প্রচলনে তারা এক হয়েছে-৫