প্রসঙ্গঃ ‘ইসলাম ও মুসলমানের স্বার্থ রক্ষায় প্রতিবাদ’ প্রতিবাদের ভাষা ও ধরণ; বৃহত্তর স্বার্থের জন্য ক্ষুদ্রতর স্বার্থ ত্যাগ এবং সহীহ সমঝ

সংখ্যা: ১২৯তম সংখ্যা | বিভাগ:

আল্লাহ্ পাক তাঁর কালাম পাকে ইরশাদ করেছেন, “আজ আমি তোমাদের দ্বীনকে পরিপূর্ণ করলাম, তোমাদের প্রতি আমার নিয়ামত সমূহ পরিপূর্ণ করলাম এবং ইসলামকেই একমাত্র তোমাদের দ্বীন হিসাবে মনোনীত করলাম।” (সূরা মায়িদা/৩)

বলাবাহুল্য, আমাদের মাওলানা ছাহেবরা, নামধারী আলিমরা, তথাকথিত ইসলামী রাজনীতিকরাও এ আয়াত শরীফ আওড়িয়ে থাকেন। এমনকি এর বরাতে তারা ওয়াজের মধ্যেই

**

এই  ইংরেজী বাক্য শুনিয়ে জ্ঞানের গরীমা জাহির করে থাকেন। কিন্তু তাদের সে গরীমা যে কেবলই লৌকিকতা তাদের কাজের মধ্যেই তা প্রতিভাত হয়। কারণ তারা পরিপূর্ণ ইসলামের খেলাফ কাজ- ছবি তুলেন, মাওসেতুং-এর লংমার্চ করেন, গান্ধীর হরতাল করেন, খ্রীষ্টান প্রোটেস্ট্যান্টদের মৌলবাদ দাবী করেন, ব্লাসফেমী আইন চান, হিন্দুদের কুশপুত্তলিকা দাহ্ করেন এবং এসব কিছুই তারা বর্তমান যুগের অনৈসলামিক প্রেক্ষাপটের প্রতিবাদস্বরূপ করেন বলে দাবী করেন।    বর্তমানে অনৈসলামিক সরকারের প্রেক্ষিতে প্রতিবাদের ভাষা ও পদ্ধতি হিসেবে ইসলামের জন্যই তারা সেগুলো করেন বলে প্রচার করেন এবং তা করতে গিয়ে যদিও ইসলামের খেলাফ কাজ করা হচ্ছে কিন্তু তারপরেও ইসলামের বৃহত্তর স্বার্থের জন্য তা করা হচ্ছে বলে তারা মনে করেন।

উল্লেখ্য, তাদের এ মানসিকতার প্রেক্ষিতে আল বাইয়্যিনাতে একটি কথোপকথন শীর্ষক মতামত উল্লেখ করা হয়েছিল-

ু        আচ্ছা আল বাইয়্যিনাতে যে প্রায়ই বলা হয় বিজাতীয় অনুসরণ-অনুকরণ হারাম; সে কথা কি ঠিক?

ঃ হ্যাঁ, ঠিক।

ু বিশেষ করে এ প্রসঙ্গে আল বাইয়্যিনাতে ‘‘হে নবী (ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আল্লাহ পাককে ভয় করুন। আর কাফিরদের ও মুনাফিকদের অনুসরণ করবেন না।’’

“যে ব্যক্তি দ্বীন-ইসলাম ব্যতীত অন্য কোন ধর্ম (বিধর্মী ও বিজাতীয়দের নিয়ম-নীতি ও তর্জ-তরীক্বা) তলব বা অনুসরণ করে, তার থেকে তা কখনই গ্রহণ করা হবেনা এবং সে পরকালে (অবশ্যই) ক্ষতিগ্রস্তদের অন্তর্ভুক্ত হবে।” সুরা আহযাব-এর এ আয়াত শরীফ ও সূরা আলে ইমরান-এর আয়াত  শরীফ কি সত্য নয়?

হ্যাঁ, অবশ্যই সত্য।

এর ব্যাখ্যায় যে  হাদীস শরীফের কিতাব “মুসনাদে আহমদ, সুনানে আবু দাউদ”-এর বরাত দিয়ে মাসিক আল বাইয়্যিনাতে লেখা হয়, “যে ব্যক্তি যে সম্প্রদায়ের সাথে মিল রাখে, সে তাদের দলভুক্ত এবং তার হাশর-নশর তাদের সাথেই হবে।’’ এ হাদীস শরীফ কি সত্য নয়?

জ্বী, তা সত্য তো বটে।

তাহলে লংমার্চ-এর প্রবর্তক কি কট্টর নাস্তিক মাওসেতুং নয়?

হ্যাঁ, তাই।

হরতালের প্রবর্তক কি কট্টর হিন্দু গান্ধী নয়?

হ্যাঁ, গান্ধীই হরতালের প্রবর্তক।

মৌলবাদের প্রবক্তা কি খ্রীষ্টান প্রোটেস্ট্যান্ট নয়?

হ্যাঁ, তারাই।

ব্লাসফেমী আইন কি ইহুদী-নাছারার ধর্ম রক্ষার আইন নয়?

হ্যাঁ, তাই।

কুশপুত্তলিকা দাহ্ কি হিন্দু সংস্কৃতির অন্তর্ভুক্ত নয়?

হ্যাঁ, দৃশ্যতঃ তাই।

যদি তাই হয়ে থাকে তাহলে কুরআন-সুন্নাহর স্পষ্ট নিষেধ থাকার পরও আপনারা এসব বিজাতীয়, বিদ্য়াতী, বিধর্মীয় কাজ করছেন কেন?

আসলে আমরা বর্তমান সময়ের প্রেক্ষাপটে প্রতিবাদের ভাষা হিসেবে তা করছি। যেহেতু লংমার্চ, হরতাল, ব্লাসফেমী, মৌলবাদ, কুশপুত্তলিকাদাহ্ এগুলো এখন সারাবিশ্বে প্রতিবাদের কর্মসূচী তথা ভাষা হিসেবে বহুল অনুসৃত তথা সারা বিশ্বে প্রচলিত। কাজেই এ ভাষায়ই প্রতিবাদ জানালে তাতে সারাবিশ্বের মিডিয়া তৎপর হয়, সরকার বিব্রত বোধ করে। অন্যথায় সনাতন ইসলামী পদ্ধতিতে কাজ করলে, মিডিয়া তাতে আমল দেয়না, স্বদেশ-বিশ্ব কোথাও সাড়া পড়েনা।

মিডিয়ার দৃষ্টি আকৃষ্ট হওয়া, স্বদেশ-বিশ্বে সাড়া পড়াটাই তাহলে প্রতিবাদের ভাষার পিছনে মুখ্য হওয়া উচিৎ।

হ্যাঁ, তবেই তো প্রতিবাদ সফল।

ইরাকের উপর আমেরিকার হামলা সমর্থন করেন?

মোটেও নয়।

এরও তো তাহলে প্রতিবাদ করা দরকার।

হ্যাঁ, অবশ্যই প্রতিবাদ করা দরকার।

জ্বি এরও প্রতিবাদ হয়েছে। আপনি যেভাবে বলেছেন, মিডিয়ার দৃষ্টি আকর্ষিত হওয়া, সারা বিশ্বে টনক নড়া সেভাবেই হয়েছে।

আপনার মতাদর্শের আলোকে মন্তব্য করা হয়েছে।

‘‘যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়া স্টেটের বেশ  কয়েকজন মহিলা শান্তি অভিযানের ক্ষেত্রে বেশ সাহসিকতার পরিচয় দিয়েছেন। বুশ প্রশাসনের ইরাকের প্রতি আগ্রাসী আচরণ এবং সেখানে যুদ্ধের প্রতিরোধ করতে তারা বিবস্ত্র হয়ে শান্তি অভিযানে নেমেছেন, বিবস্ত্র দেহের মাধ্যমে তারা ‘‘নো ওয়্যার, ‘পিস’ লিখে বিশ্বের শান্তিকামী মানুষের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছেন।’’

এদিকে অস্ট্রেলিয়াতেও সাতশ’রও বেশী নারী বিবস্ত্র শরীর দিয়ে ‘নো ওয়ার’ লিখে যুদ্ধের প্রতিবাদ জানিয়েছে।

নিউ সিটিতে ত্রিশ জন বিবস্ত্র দেহে সেন্ট্রাল পার্ক পরিভ্রমণ করে। তুষারপাতের মধ্যে হাড় কাঁপানো শীত উপেক্ষা করে বিবস্ত্র নারীরা পাঁচ ইঞ্চি বরফের উপর শুয়ে পড়ে। তখন তারা “নো বুশ” লেখায় পরিণত হয়।

এর আগে গত নভেম্বরে সানফ্রান্সিসকোতে নারীরা বিবস্ত্র হয়ে ইরাকে হামলার প্রতিবাদ জানিয়েছে।” অর্থাৎ এ কথা এখন বলতে হয় যে, বিবস্ত্র হয়ে প্রতিবাদ করা, বিবস্ত্র শরীরে অক্ষর লেখা এখন হাল যামানার প্রতিবাদের ভাষা হিসেবে গণ্য!

এ প্রসঙ্গে প্রতিবাদী নেত্রী শিহানের বক্তব্য “আমরা সবাই সাধারণ মধ্যবিত্ত এবং মার্জিত পরিবারের সদস্য। আমরা সাধারণতঃ গোসল করতে গিয়েও সম্পূর্ণ কাপড় খুলে রাখিনা। কিন্তু সেই আমরাই প্রতিবাদের ভাষা হিসেবে আমাদের বিবস্ত্র দেহকে ব্যবহার করছি।”

        উল্লেখ্য, তাদের এ মন্তব্য আর আপনাদের বক্তব্যের মাঝে অমিলটা কোথায়?

কি রকম?

যেমন তারাও বলছে যে তারা এমন লোক যারা গোসল করতে গেলেও বিবস্ত্র হয়না; এখন পরিস্থিতির প্রেক্ষাপটে, প্রতিবাদের তীব্র ভাষা হিসেবে প্রকাশ্যেই বিবস্ত্র হচ্ছে।

আর আপনারাও বলছেন যে, বিজাতীয়-বিধর্মীয় আদর্শ, ছবি তোলা, নারী নেতৃত্ব সমর্থন ইত্যাদি হারাম-নাজায়িয তা আপনারা মানেন। কিন্তু এখন পরিস্থিতির প্রেক্ষিতে প্রতিবাদের বলিষ্ঠ ভাষা হিসেবে আপনারা লংমার্চ, হরতাল, মৌলবাদ, ব্লাসফেমী, কুশপুত্তলিকা দাহ, এসব বিজাতীয় কর্মসূচী আপনারা পালন করছেন।” (মাসিক আল বাইয়্যিনাত/১১৫তম সংখ্যা)

মূলতঃ ইসলামী আদর্শ মুতাবিক না চললে তথাকথিত প্রতিবাদের ভাষা হিসেবে এসব অনৈসলামিক কাজের নিত্য নতুন ধারা বের হতেই থাকবে। যেমন ইরাকে হামলার প্রতিবাদে আমরা প্রতিবাদের ভাষা বা ধরণ হিসেবে আরো যেসব কর্মসূচী দেখেছি তার মধ্যে কয়েকটি এখানে উল্লেখ করা হলো-

কুশপুত্তলিকা তৈরী করে সেটা জুতা পেটা করা,   তা কবরস্থ করা, থুথু দেয়া, ঝাড়ূ পেটা করা, অধঃমুখী করা, বুশের ছবি পোড়ানো, দেয়ালে দেয়ালে বুশ-ব্লেয়ারের ব্যঙ্গ কার্টুন অঙ্কন, বুশ-ব্লেয়ারের বিকৃত মাস্ক মুখে লাগিয়ে তাদেরকে ধিক্কার প্রদান, মোমবাতি প্রজ্বলন করে শোকসভা, নাটকে অভিনয়ের মাধ্যমে প্রতিবাদ, মশাল প্রজ্বলন করে প্রতিবাদ, নির্দিষ্ট সময় নিরবতা পালন করে প্রতিবাদ, দশ মিনিট যানবাহনের হর্ণ বাজিয়ে প্রতিবাদ (চট্টগ্রাম), সকাল-সন্ধ্যা যানবাহন বন্ধ রেখে প্রতিবাদ (চট্টগ্রাম), শহীদ মিনারে গণ অনশন পালন, সাদ্দামের ছবি নিয়ে মিছিল করে প্রতিবাদ।

বলাবাহুল্য, মূর্তি তৈরীর কারণে, ছবি হওয়ার কারণে, বিজাতীয় বিধর্মীয় অনুসরণ হওয়ার ফলে অথবা মানুষকে কষ্ট দেয়ার কারণে এসবই হারাম কাজের আওতাভুক্ত হয়। আর হারাম কাজের আমলকে আল্লাহ্ পাক কখনই গ্রহণ করেন না। যদিও দৃশ্যতঃ তা মুসলমানদের পক্ষে বা ইসলামের জন্যই করা হয়।

সম্প্রতি আরো একটি খবর সকলের দৃষ্টি আকষণ করেছে। ২৫শে এপ্রিল/০৪ তারিখে দৈনিক ইনকিলাবে এএফপি পরিবেশিত এক খবরে বলা হয় ঃ

অভিনব কায়দায় প্রতিবাদ

“এএফপিঃ দেখতে মনে হবে খুঁদে একটি পিস্তল। আসলেও তাই। তবে কোন ধাতব পদার্থে এটি তৈরী নয়। নিজের গায়ের চামড়া দিয়ে পিস্তলটি তৈরী করেছেন হল্যান্ডের শিল্পী জোয়ানেকি মেস্তার। সমাজে সহিংসতার বিরুদ্ধে এটা তার অভিনব প্রতিবাদ। পেটের চামড়া ব্যবহার করা হয়েছে এটি তৈরীতে। আগামী মাসে আমষ্টার্ডামে এটি প্রদর্শিত হবে।”

মূলতঃ আমাদের দেশের তথাকথিত ইসলামী রাজনীতিকদের যে প্রবনতা তাতে এটা বিচিত্র কিছু নয় যে ছবি তোলা, হরতাল, লংমার্চ, মৌলবাদ, ব্লাসফেমী আইনের পর দৃষ্টি আকর্ষণের জন্য তারাও ডোনা শিহানের মত বিবস্ত্র হয়ে অথবা হল্যান্ডের শিল্পী জোয়ানেকি মেস্তারের মত পেটের চামড়া কেটে অথবা এ ধরণের অভিনব কায়দায় এরপর ইসলামের নামে প্রতিবাদ করা শুরু করবেন।

মূলতঃ সেক্ষেত্রেই এ লেখার প্রথমে উদ্ধৃত আয়াত শরীফের সমঝ ও আমল দরকার। কারণ ইসলাম পরিপূর্ণ। প্রতিবাদের ধরণ বা ভাষাও এখানে বিবৃত। প্রতিবাদের সীমারেখাও এখানে ব্যক্ত। যেমন জিহাদে গেলেও শিশু-নারীদের হত্যা করা যাবেনা, মৃত ব্যক্তির অঙ্গচ্ছেদ করা যাবেনা, ফলবান বৃক্ষ নিধন করা যাবেনা এমনকি চরম যন্ত্রনাক্লিষ্ট হলেও আত্মহত্যা করা যাবেনা। করলে সে বীর হোক, যতই কাফির নিধনকারী হোক সেও জাহান্নামে যাবে। কারণ সে পরিপূর্ণ ইসলাম নির্দেশিত পথ থেকে বিচ্যূত হয়েছে।

যেমন, বুখারী শরীফের হাদীছ শরীফে ইরশাদ হয়েছে, হযরত সাহল ইবনে সা’দ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু বর্ণনা করেন, “কোন এক জিহাদে আখিরী রসূল, হাবীবুল্লাহ্ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ও মুশরিক-কাফিরদের মধ্যে ভীষণ লড়াই হলো। মুসলমানদের মধ্যে এক ব্যক্তি অত্যধিক বীরত্ব ও তৎপরতার সাথে কাজ করে। সে যখনই একটু সুযোগ পেয়েছে যে কোন কাফিরকে তৎক্ষণাৎ বধ করেছে।

যখন যুদ্ধের একটু বিরাম ঘটল এবং নবী করীম ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম নিজস্ব লোকদের সঙ্গে একত্র হলেন, আমি হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর খিদমতে আরজ করলাম, অমুক ব্যক্তি আজ এত অধিক কাজ করেছে যে, আমাদের মধ্যে অন্য আর কেউই ঐ পরিমাণ কাজ করতে পারেনি। হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, সে দোযখী হবে। হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর এ উক্তিতে সকলেই স্তম্ভিত হয়ে গেল। এক ব্যক্তি মনে মনে এ পণ করল, আমি সাথে সাথে থেকে তার অবস্থার অনুসন্ধান করব। সে যেখানেই যে কাজ করে ঐ ব্যক্তি তার সাথে সাথে থাকে। দোযখী কথিত ব্যক্তির অনুসরণকারী তাকে দেখতে পেল, সে এক ভীষণ আঘাত পেয়েছে এবং আঘাতের যন্ত্রণায় ধৈর্যধারণ না করে তরবারী সোজাবস্থায় রেখে তার উপর নিজেকে ফেলে দিয়ে আত্মহত্যা করেছে। অনুসন্ধানী ব্যক্তি এতদদৃষ্টে আখিরী রসূল, হাবীবুল্লাহ্ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর নিকট ছুটে আসলেন এবং ভাবাবেগে বলে উঠলেন, আমি পুনরায় সাক্ষ্য দিচ্ছি আপনি বাস্তবিকই আল্লাহ্ পাক-এর রসূল। হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, কি ব্যাপার? তিনি বললেন, যে ব্যক্তি সম্পর্কে আপনি পূর্বাহ্নে বলেছেন সে দোযখী হবে এবং আপনার উক্তি শুনে সকলেই স্তম্ভিত হয়েছিলো তখন আমি মনে মনে স্থির করেছিলাম, সাথে সাথে থেকে তার অবস্থার অনুসন্ধান চালাব। আমি তার সাথে থেকে দেখতে পেলাম, সে তরবারী সোজা করে রেখে তার উপর নিজেকে পতিত করে আত্মহত্যা করেছে। হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, কোন কোন সময় এরূপ হয় যে, একজন মানুষ প্রকাশ্য দৃষ্টিতে বেহেশ্ত লাভের উপযোগী আমল করতে থাকে বটে কিন্তু সে দোযখী সাব্যস্ত হয়।” (বুখারী শরীফ)

উল্লেখ্য, এই হাদীছ শরীফ থেকে এ কথাই বিশেষভাবে প্রতিভাত হয় যে, জিহাদের মত নেক কাজে বীরবিক্রমে ঝাঁপিয়ে পড়ার পরও এমনকি অনেক শত্রুকে খতম করার পর নিজে আঘাতপ্রাপ্ত হওয়ার পর যন্ত্রণায় অস্থির হয়ে শেষ মুহূর্তে আত্মহনন করার কারণে, শুধুমাত্র ঐ আত্মহনন প্রক্রিয়াটি ইসলাম সিদ্ধ নয় বলে; জিহাদে অদম্য উৎসাহে অংশগ্রহণকারী, বীরত্ব প্রদর্শনকারী, অনেক কাফির হত্যাকারী এমনকি অবশেষে নিজে আত্মহননকারী ব্যক্তি যদি জাহান্নামী হয় তাহলে ইসলামের দৃষ্টিতে ছবি তোলা, মূর্তি তৈরী করা, বিজাতীয় পদ্ধতি অনুসরণ তথা মানুষকে কষ্ট দেয়ার মত ঐসব হারাম পদ্ধতির প্রতিবাদী আমল কি করে গ্রহণযোগ্য হতে পারে? কি করে তাকে ইসলামী বলে আখ্যা দেয়া যেতে পারে? কি করে তা মুসলমানদের জন্য হয়েছে, তার দ্বারা মুসলমানদের প্রতি সহানুভূতি প্রদর্শন করা হয়েছে বলা যেতে পারে? আর কি করে এসব আমলের দ্বারা আল্লাহ্ পাক-এর রহমত কামনা করা যেতে পারে? আর আল্লাহ্ পাক-এর রহমত অর্জন ব্যতিরেকে কি করে মুসলিম বিশ্বে ইহুদী-খ্রীষ্টান আগ্রাসন নির্মূলের আশা করা যেতে পারে?  অথবা স্বদেশে ইসলামী খেলাফত আশা করা যেতে পারে?

স্মর্তব্য যে, হাদীছ শরীফে ইরশাদ হয়েছে, আমি তোমাদের জন্য দু’টো জিনিস রেখে যাচ্ছি- একটি হলো কুরআন শরীফ অপরটি সুন্নাহ্। যতক্ষণ তোমরা তা আঁকড়িয়ে ধরে রাখবে ততক্ষণ কামিয়াব থাকবে। যখনই তোমরা তা থেকে বিচ্যুত হবে তখনই লাঞ্ছিত ও পদদলিত হবে।

কাজেই কুরআন-সুন্নাহ্র খেলাফ মনগড়া বা বিজাতীয় প্রতিবাদী আমলের দ্বারা কোনদিনই কামিয়াব হওয়া যাবে না। আর এ ধরণের নাজায়িয প্রতিবাদী কর্মসূচীকে বৃহত্তর স্বার্থের জন্য বৃহত্তর ইসলামী কাজের জন্য ক্ষুদ্রতর ইসলামী কাজ পরিত্যাগ করার প্রচারণাও স্পষ্টতঃ মুনাফিকী, ছলনা, প্রতারণা, ধোকা ও ধর্মব্যবসা ছাড়া আর কিছুই নয়। কারণ ইসলাম পরিপূর্ণ তা কুরআন শরীফেই বলা হয়েছে।

 সুতরাং ইসলামের জন্য অনৈসলামী পদ্ধতিতে প্রতিবাদ ইসলামকেই অস্বীকার করা অথবা ইসলামকে নাকেছ বা অপরিপূর্ণ ঘোষণা করার শামীল। আর তথাকথিত ইসলামী বৃহত্তর স্বার্থের জন্য ক্ষুদ্রতর ইসলামী আমল পরিত্যাগ করে কখনও কামিয়াব হওয়া যাবেনা যা প্রদত্ত হাদীছ শরীফে বর্ণিত হয়েছে। এরপরও যারা তা বুঝতে চাইবে না তাদের প্রতি আস্সালামু আলাইকুম।

-মুহম্মদ মাহবুর্বু রহমান, ঢাকা।

রাজারবাগ শরীফের হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী আল্লাহ পাক-এর হাবীব হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর হাক্বীক্বী নায়িব ও ওয়ারিছ। তাঁর বিরোধিতাকারীরা মুনাফিক, কাফির ও শয়তানের অনুসারী- ৬

‘ইসলামের দৃষ্টিতে প্রাণীর ছবি তোলা, রাখা, আঁকা, দেখা হারাম’ মুজাদ্দিদে আ’যমের অনবদ্য তাজদীদ

ইমাম সম্মেলনে অর্ধনগ্ন খ্রীষ্টান মহিলা মেরীর পর এবার খোলামেলা হিন্দু মহিলা সুনিতা মুখার্জী তথাকথিত ইমামদের প্রতি নিস্প্রোয়জন ছিল প্রধানমন্ত্রীর নছীহত

ইতিহাসের নিরীখে, বর্তমান সংবিধান প্রণেতা গণপরিষদেরই কোন আইনী ভিত্তি বা বৈধতা ছিল না। গত ৫৪ বৎসর দেশবাসীকে যে অবৈধ সংবিধানের অধীনে বাধ্যগত করে রাখা হয়েছিলো এর প্রতিকার দিবে কে? ৯৮ ভাগ জনগোষ্ঠী মুসলমানের দ্বীন ইসলামের প্রতিফলন ব্যাতীত কোন সংবিধানই বৈধ হতে পারে না কারণ দেশের মালিক ৯৮ ভাগ জনগোষ্ঠী মুসলমান

তথাকথিত জাতীয় খতীবের নববর্ষ পালন জিহালতি আর গোমরাহীর চরম মিশ্রণ