প্রসঙ্গঃ ছবি, অশ্লীল ছবি ইনকিলাব ও হাটহাজারীর আহমক শাফী উপাখ্যান

সংখ্যা: ১২২তম সংখ্যা | বিভাগ:

 জাহান্নাম নিজেও তার আযাবের ভয়াবহতা সম্পর্কে সম্যক জ্ঞাত। এমনকি তার কোন কোন অবস্থান সম্পর্কে সে নিজেও ভীত। হাদীছ শরীফে ইরশাদ হয়েছে, আখিরী রসূল, হাবীবুল্লাহ্, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, “তোমরা জুব্বুল হুজন থেকে আল্লাহ্ পাক-এর নিকট পানাহ্ চাও। হযরত ছাহাবা-ই-কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুমগণ বললেন, ইয়া রসূলাল্লাহ্, ইয়া হাবীবাল্লাহ্ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! ‘জুব্বুল হুজন কি?’ জাওয়াবে হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, এটা জাহান্নামের একটি উপত্যকা। যার ভয়াবহতা হতে স্বয়ং জাহান্নাম প্রতিদিন চারশ’বার আল্লাহ্ পাক-এর নিকট আশ্রয় প্রার্থনা করে। হযরত ছাহাবা-ই-কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুমগণ বললেন, সেখানে কে প্রবেশ করবে? হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, ‘ঐ সমস্ত ক্বারী (কুরআন শরীফ পাঠকারী, আলিম) যারা লোক দেখানোর উদ্দেশ্যে কুরআন শরীফ পাঠ করে থাকে।”

পাঠক! আলোচ্য হাদীছ শরীফের একটি প্রতিপাদ্য বিষয় হচ্ছে যে, স্বয়ং জাহান্নাম তারই জাত জুব্বুল হুজন থেকে দিনে চারশ’বারেরও বেশী আশ্রয় প্রার্থনা করে।  ঠিক যেন তদ্রুপই একটা ঘটনা ঘটে গেল সম্প্রতি। গত ২৩শে আগস্ট/২০০৩ থেকে এফডিসিতে অনির্দিষ্টকালের জন্য চলচ্চিত্র শিল্পীদের ধর্মঘট ডাকা হয়। শিল্পী ও প্রযোজকদের মাঝে বিরোধ দেখা দেয়। উল্লেখ্য, তাদের এই দ্বন্দ্ব এবং ধর্মঘটের একই মুখ্য বিষয় ছিল সেটা হলো অশ্লীল ছবি।    প্রসঙ্গতঃ উল্লেখ্য, জুব্বুল হুজনের আযাব যেমন এত তীব্র ও ভয়াবহ যে খোদ জাহান্নামই তা থেকে দিনে চারশ’ বারেরও বেশী পানাহ্ চায় তদ্রুপ অনুমান করার অপেক্ষা থাকেনা যে, চলচ্চিত্রে অশ্লীলতা কত জঘন্য পর্যায়ে পৌঁছেছে যে খোদ চলচ্চিত্র শিল্পীরা পর্যন্ত এখন এর বিরুদ্ধে আন্দোলন করছে, বিরাজমান অশ্লীলতা থেকে পানাহ্ চাইছে।   কিন্তু এতদ্বসত্ত্বেও মূক বধির, অন্ধের মত ভূমিকা পালন করছে তথাকথিত ইসলামী রাজনীতির তাবৎ নেতা-কর্মীরা। বর্তমান সরকারকে তারা তাদের নিজেদের ভাষায় ইসলামপন্থীদের সরকার বলে প্রচার করছে এবং সরকারের শরীক হিসেবেও তারা কাজ করছে। কিন্তু তারপরও খোদ চলচ্চিত্র শিল্পীরা অশ্লীল ছবির বিরুদ্ধে বললেও এদেশের তথাকথিত ইসলামী আন্দোলনের নেতৃবৃন্দ তথা তথাকথিত শাইখুল হাদীছ, মুফতী, মাওলানা, মুফাস্সির, আমীর, খতীবরা আদৌ মুখ খুলেনি।

বরং তাদের পত্রিকা মুখ খুলে যা বলেছে তার কিঞ্চিত প্রমাণ পেশ করা হলো- গত ২৯/০৯/২০০৩ ঈসায়ী তারিখে এদের মতাদর্শের পত্রিকা ইনকিলাবের শেষ পাতায় নিম্নোক্ত খবর পত্রস্থ হয়- “যে হলে যে ছবি দেখানো হবে।” স্টাফ রিপোর্টারের বরাতে এই খবরে বলা হয়, আজ শুক্রবার ঢাকা ও নারায়ণগঞ্জের ২১ টি সিনেমা হলে ১১টি ছবি প্রদর্শিত হবে। এর মধ্যে … হলে …. দেখানো হবে।” (নাউযুবিল্লাহ্)

মুহ্তারাম পাঠক! যেখানে আশা করা গিয়েছিল যে, কমপক্ষে তারা তাদের মানসিকতার পত্রিকা (ইনকিলাবের) মাধ্যমে ছবির বিরুদ্ধে, অশ্লীল ছবির বিরুদ্ধে বলবে সেখানে সেই ইনকিলাবই যখন কোন হলে কোন সিনেমা প্রকাশিত হবে বলে ফলাও করে খবর প্রকাশ করে তখন তথাকথিত ইসলামী আন্দোলনকারীদের মানসিকতা যে আজ কোন পর্যায়ে পৌঁছেছে তা সহজেই অনুধাবনযোগ্য।   অথচ হাক্বীক্বীভাবে বলতে গেলে অশ্লীল ছবি তো দূরের কথা যে কোন প্রাণীর ছবি তোলা বা প্রকাশ করতে দেয়াই ইসলামের দৃষ্টিতে হারাম ও কবীরাহ্ গুণাহ্ এবং তাকে জায়িয বলা কুফরী। ছহীহ্ হাদীছ শরীফে বর্ণিত রয়েছে, ‘যে ঘরে ছবি থাকে সে ঘরে রহমতের ফেরেশ্তা থাকে না।’ ‘ক্বিয়ামতের ময়দানে সবচেয়ে কঠিন শাস্তি হবে ঐ ব্যক্তির যে ছবি তোলে বা আঁকে’ ইত্যাদি।   কিন্তু তারপরেও পেপার-পত্রিকায় তথাকথিত শাইখুল হাদীছ ছাহেবের ছবি দেখা যায়, জাতীয় মসজিদের খতীবের ছবি দেখা যায়, মুফতী শফি ও অন্যান্য মাওলানা-মুফতীদের ছবিও দেখা যায়।   তবে ছবি তোলা যে আদৌ জায়িয নেই এবং এ সম্পর্কিত ৩৫৩টি দলীল সাপেক্ষে মাসিক আল বাইয়্যিনাতে প্রকাশিত প্রাণীর ছবি তোলা সংশ্লিষ্ট ফতওয়াই যে সঠিক তা ওরা বাইরে না মানলেও অন্তরে ঠিকই পোষণ করে। এবং কখনও কখনও ইচ্ছায়-অনিচ্ছায় তা প্রকাশও পেয়ে যায়।    হাটহাজারীর তথাকথিত অখ্যাত পত্রিকার সেপ্টেম্বর/২০০৩ ঈসায়ী সংখ্যায় প্রকাশিত জামিয়া সমাচার শীর্ষক খবরে বলা হয়,   “১লা আগস্ট/২০০৩ ঈসায়ী শুক্রবার হাটহাজারী’র পরিচালক আহমদ শফি ঢাকা সফরের এক পর্যায়ে জাতীয় মসজিদ বাইতুল মুর্কারমে  … জুমা শেষে আয়োজিত ইসলামী ঐক্যজোট বাংলাদেশ-এর মহাসচিব মুফতী ইজাহারের দ্বিতীয় পুত্র মাওলানা মুহম্মদ মূসার সাথে মুহম্মদুল্লাহ্ হাফেজ্জী-এর নাতনী ও হাফেজ আতাউল্লাহ্র একমাত্র কন্যার বিবাহ্ অনুষ্ঠানের মেহমান হিসেবে উপস্থিত থেকে আক্দ পড়িয়ে খুত্বা প্রদান ও মুনাজাত পরিচালনা করেন।

উল্লেখ্য, বিবাহের খুত্বা প্রদানকালে ফটো সাংবাদিকরা আহমদ শফির ছবি তোলার চেষ্টা করলে আহমদ শফি অত্যন্ত জোরালোভাবে ছবি তুলতে নিষেধ করে সাংবাদিকদেরকে মসজিদের ভিতরে ক্যামেরা নিয়ে প্রবেশের জন্য তিরস্কার করেন এবং কুরআন-হাদীছের আলোকে ছবির নিষিদ্ধতা সম্পর্কে এক নাতিদীর্ঘ বক্তব্য পেশ করেন। তার এই সাহসী ও জোরালো ভাষণে উপস্থিত মুসল্লীগণ ব্যাপকভাবে প্রভাবিত হন।       এখানে উল্লেখ করা আবশ্যক, জামিয়া প্রধান এর আগেও অনেক অনুষ্ঠানে শরীক হয়েছেন এবং সেসব অনুষ্ঠানে বর্তমান যামানার অন্যান্য উলামায়ে ‘ছূ’দের মত তার ছবিও তোলা হয়েছে এবং তখন তিনি তুলতে নিষেধ করেননি।   এখন ৩৫৩টি অকাট্ট দলীল সম্বলিত মাসিক আল বাইয়্যিনাত-এর ফতওয়া খণ্ডাতে না পেরে ইচ্ছায় অনিচ্ছায় হক্ব কথা বলার ক্ষেত্রে আল বাইয়্যিনাত-এর ফতওয়াই তাকে উচ্চারণ করতে হলো। ছবি তোলার কারণে মাসিক আল বাইয়্যিনাতে যেসব তথাকথিত শাইখুল হাদীছ, জাতীয় মসজিদের খতীব তথা মুফতী, মাওলানাদের বিরুদ্ধে লেখা হয় তা যে সম্পূর্ণ ছহীহ্ তা হাটহাজারীর প্রধান পরিচালক ইচ্ছায়-অনিচ্ছায় এতদিন পর মেনে নিল।  মূলতঃ আল বাইয়্যিনাতে মনগড়া কোন কথা বলা হয়নি বা হয়না। বরং কুরআন-সুন্নাহ্য় বিবৃত কথাটিই পুর্ণরূপে প্রকাশ করা হয়। সুতরাং যখন কেউ হক্ব প্রকাশ করে তখন ইচ্ছায়-অনিচ্ছায় আল বাইয়্যিনাত-এর কথাই উচ্চারণ করে। আর কেউ যখন তার মুখালিফ হয় তখন সে গোমরাহ্, বিদ্য়াতী বলেই সাব্যস্ত হয়।

-মুহম্মদ তারীর্ফু রহমান, ঢাকা।

 শুধু আজকের প্রেক্ষাপটে নয়, অতীত ইতিহাস হতেই ইহুদী-খ্রীষ্টানরা মুসলমানদের সবচেয়ে বড় শত্রু মুসলিম সন্ত্রাসবাদ নয়, মার্কিন হামলার পিছনে কি ইহুদী-খ্রীষ্টানরাই দায়ী নয়? -২২  

ইরাকের মীরজাফর সাদ্দাম  রাশিয়ার বেলারুশ যেতে চায় কেন?    

চট্টলার বহুল প্রচলিত দৈনিক পত্রিকার মাধ্যমে প্রকাশ্যে আঞ্জুমানে আল বাইয়্যিনাতের কাছে ক্ষমা চেয়ে তারা রক্ষা পেলো ॥

শুধু আজকের প্রেক্ষাপটে নয়, অতীত ইতিহাস হতেই ইহুদী-খ্রীষ্টানরা মুসলমানদের সবচেয়ে বড় শত্রু মুসলিম সন্ত্রাসবাদ নয়, মার্কিন হামলার পিছনে কি ইহুদী-খ্রীষ্টানরাই দায়ী নয়? -২৩

প্রসঙ্গ রাজারবাগ শরীফের মাহফিলের বিরোধীতা॥ অখ্যাত বাতিল ফিরকাভুক্ত পত্রিকার প্রপাগান্ডা এবং হক্ব ও বাতিলের ফায়সালা