হাদীছ শরীফে বলা হয়েছে, প্রত্যেক হিজরী শতকের শুরুতে আল্লাহ পাক এই উম্মতের মাঝে একজন মুজাদ্দিদ (সংস্কারক) পাঠাবেন। যিনি দ্বীনের মাঝে প্রবেশকৃত প্রচলিত বিদয়াত-বেশরা দূরীভূত করবেন। (আবু দাউদ শরীফ) মুজাদ্দিদে যামানের ঈমান এবং আগমনের প্রেক্ষাপট সম্পর্কে বলা হয়েছে তখন হক্ব ছিলছিলাগুলোতেও আমলী দুর্বলতা তথা বিচ্যুতি চলে আসবে। প্রসঙ্গতঃ গত ১ ডিসেম্বর/২০০৫ তারিখে একটি দৈনিকে বিগত দিনের এক হক্ব সিলসিলার ক্ষেত্রে এ বিষয়টি বিশেষভাবে অনুধাবন করা যায়। পত্রিকায় বলা হয়,
আখেরি মুনাজাত ছারছিনা শরীফের
মাহফিল সমাপ্ত
ছারছিনা শরীফের পীর শাহ মোঃ মোহেব্বুল্লা বলেছেন, বর্তমান জামানা ফিৎনা-ফ্যাসাদে ভরপুর। এ থেকে মুক্তি পেতে আমল ঠিক রাখতে হবে। কোরআন ও সুন্নাহর আলোকে নিজেদের গঠন করাই ছারছিনা দরবার শরীফের আদর্শ। জীবনের ভুল-ত্রুটি সংশোধনের জন্য এ মাহফিল। এখানে কোনো রাজনীতি নেই। ঈমান ও আকিদা মজবুত করে আল্লাহ ও রাসুলের প্রতি পূর্ণ বিশ্বাস স্থাপন করতে হবে। (সমকাল- ১লা ডিসেম্বর/০৫)
উল্লেখ্য, উপরের বক্তব্যে তিনি নিজেই বলেছেন, “বর্তমান যামানা ফিৎনা-ফ্যাসাদে ভরপুর। সিনেমা, টিভি, স্যাটেলাইট চ্যানেল, ইন্টারনেট, পর্ণোগ্রাফি সত্যিই বর্তমান যামানায় বিরাট ফিৎনা। যা মুসলমানের চরিত্র হনন করে চলছে। মুসলমানদের ইসলাম থেকে দূরে সরিয়ে নিচ্ছে। ইসলামী আমলের প্রতি বৈরীভাবাপন্ন করে তুলছে। মুসলমানদের ক্রমাগত আযাব গযবে সম্পৃক্ত করছে। আর এসবের মূলে থাকছে ছবি। হাদীছ শরীফে ইরশাদ হয়েছে, যে ঘরে প্রাণীর ছবি থাকে সেখানে রহমতের ফেরেশ্তা থাকে না। আর রহমতহীন ছবিই যতসব গযবের তথা চরিত্র বিধ্বংসী মানসিকতার সূতিকাগার। ছবি তোলার বিরুদ্ধে তাই শত শত হাদীছ শরীফ রয়েছে। অতএব “কুরআন সুন্নাহর আলোকে নিজেদের গঠন করাই ছারছিনা দরবারের আদর্শ”এ কথা বলার পাশাপাশি তিনি নিজেই যখন ছবি তোলেন আর সে ছবিতে তার মোনাজাতের ভঙ্গীটাও যখন দেখা যায় বিদয়াতী কায়দায় এক হাতের আঙ্গুলির মধ্যে আরেক হাত ঢুকিয়ে তখন তা কী রকম বেমানান ও অন্ত:সারশূন্য প্রতিভাত হয় তা বলার অপেক্ষা রাখেনা? ‘জীবনের ভুলত্রুটি সংশোধনের জন্য এ মাহফিল’বললেও তিনি নিজেই ছবি তোলার মত হারাম কাজ করে এক মহা ভুলের শিক্ষা দিলেন। যার প্রমাণ উক্ত ছবিতেও রয়েছে। দেখা যাচ্ছে দু’একজন আগ্রহভরে ক্যামেরার দিকে তাকিয়ে আছেন। অর্থাৎ তারাও ছবির প্রতি আগ্রহী হচ্ছেন। যে কথা প্রথমেই বলা হয়েছিল, মুজাদ্দিদে যামানের তাজদীদের প্রেক্ষাপটে হক্ব সিলসিলাগুলোতে আমলী দুর্বলতা চলে আসে। তাই যেন অনিবার্যভাবে প্রতিভাত হল ছারছিনার মাহফিলে। ভুল সংশোধন, কুরআন-সুন্নাহর উপর চলা, আমল ঠিক রাখা ইত্যাদি আহ্বান জানানোর পরও মোহেব্বুল্লাহ সাহেব নিজেই বোখারী শরীফ, আবু দাউদ শরীফ, তিরমিযী শরীফ ইত্যাদি ছহীহ হাদীছ শরীফে নিষিদ্ধ আমল ছবি তুলে ফেললেন। অতএব, দেখা যায় তার জানানো আহ্বান “বর্তমান ফিৎনা থেকে মুক্তি পেতে হলে আমল ঠিক রাখতে হবে” এর বাস্তবায়ন করতে হলে তথা আমল ঠিক রাখতে হলে এখন একটাই উপায়- যামানার তাজদীদী মুখপত্র মাসিক আল বাইয়্যিনাত পড়া। কারণ ইল্মে লাদুন্নী অথবা রূহানিয়াত ও তায়াল্লুক মায়াল্লার বেমেছাল পূর্ণতা তথা গায়েবী মদদ ও রহমতের কারণে মুজাদ্দিদে আ’যম রাজারবাগ শরীফের হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী-এর তাজদীদী মুখপত্র মাসিক আল বাইয়্যিনাতই দিচ্ছে বর্তমান যামানায় ছহীহ ইসলামের দিক নির্দেশনা। পাশাপাশি বিগত দিনের হক ছিলছিলার ঐতিহ্যের দাবীতে যারা ছবি তোলার সমালোচনায় বিরূপ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করবেন, প্রতিভাত হবে যে তারা খতমে নুবুওওয়াতকে মানে না। সাইয়্যিদুল মুরছালীন, ইমামুল মুরছালীন, খাতামুন্ নাবিয়্যীন হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ছবি তোলার বিরুদ্ধে বলেছেন। সুতরাং তুলনেওয়ালার সমালোচনা না করার অর্থ হল খতমে নুবুওওয়াতকে প্রাধান্য না দেয়া। স্বীকার না করা। আর খতমে নুবুওওয়াতকে প্রাধান্য না দিয়ে ছিলছিলাকে প্রাধান্য দেয়া কোন ধর্মপ্রাণ মুসলমানের কাজ নয়।
-মুহম্মদ মাহবুর্বু রহমান, ঢাকা।
বিৃটিশ গুপ্তচরের স্বীকারোক্তি এবং ওহাবী মতবাদের নেপথ্যে বিৃটিশ ভূমিকা-১৫