প্রসঙ্গঃ ফটোসেশন ও পোজ এবং ছবি ও রিয়া

সংখ্যা: ১২৬তম সংখ্যা | বিভাগ:

 এই দেশের একটি মহল খুব উচ্চকিতভাবে শেরেক শেরেক বলিয়া ঝড় তুলিয়া থাকেন। মাযার যিয়ারত করা শেরেক, পীর ছাহেবের নিকট বাইয়াত হওয়া শেরেক, কদমবুছি করা শেরেক ইত্যাদি বিলকুল জায়িয কাজের মাঝেও তাহারা শেরেকের গন্ধ পাইয়া থাকেন। কিন্তু হাক্বীক্বতে শেরেকের ধরনের প্রতি তাহাদের বিন্দুমাত্র নজর তো নাই বরং আদৌ সমঝ আছে কিনা সেই বিষয়েই ঘোরতর সন্দেহ করা চলে।  হাদীছ শরীফে ইরশাদ হইয়াছে, ‘রিয়া হলো গুপ্ত শেরেক।’ ইহার ব্যাখ্যায় হুজ্জাতুল ইসলাম হযরত ইমাম গাজ্জালী রহমতুল্লাহি আলাইহি বলিয়াছেন, ঘন কালো অন্ধকার রাত্রিতে একটি কালো পাথরের উপর একটি কালো পিপিলিকা আস্তে আস্তে গমন করিলে তাহা উপলব্ধি করা যেমন কঠিন ও সূক্ষ্ম বিষয়, রিয়া উপলদ্ধি করা তাহার চাইতেও বেশী সূক্ষ্ম ও কঠিন বিষয়। ইহার অর্থ হইতেছে, প্রকাশ্য এবং বোধগম্য যেইসব বিষয় রহিয়াছে তাহা তো বটেই বরং যাহা অপ্রকাশ্য এবং সাধারণভাবে উপলদ্ধি করা যায় না কিন্তু খুব গভীর ফিকির বা অতি সূক্ষ্মভাবে খেয়াল করিলে উপলদ্ধি করা যায় যেইসব বিষয় সম্পর্কেও সাবধান থাকিতে হইবে। অথচ পত্রিকায় দেখা যায় যে, মন্ত্রি-মিনিষ্টার ছাহেবরা টিভি ক্যামেরাম্যানের ব্যস্ততা হেতু নির্ধারিত সময়ে বক্তৃতা দিবার আগেই শুধুমাত্র টিভিতে তাহার ছবি দেখাইবার জন্য মাইকের সামনে গিয়া বক্তৃতার ভান করিয়া থাকেন। টিভি ক্যামেরাম্যানরা সেইটাকেই ঝটপট তুলিয়া বাহির হইয়া পড়েন অন্য কোন মন্ত্রী বা প্রধানমন্ত্রী অথবা অন্য কোন অনুষ্ঠান কভার করিবার জন্য। ইহার নাম দিয়াছেন তাহারা ফটোসেশন। জানা গিয়াছে, প্রায় প্রত্যেক মন্ত্রী বা নেতারাই বাসায় গিয়া রাত ৮টার বা রাত ১০টার টিভি খবর খুব ভাল করিয়া পরখ করিয়া থাকেন যে তাহাদের দৃশ্য কতটা ভালভাবে বা কতক্ষণ সময় নিয়া প্রদর্শন করা হইয়াছে। যদি প্রদর্শনের সময়টা বেশীক্ষণ হয় তাহা হইলে তাহারা পুলকিত বোধ করিয়া থাকেন। আর যদি সংক্ষিপ্ত হয় তাহা হইলে উষ্মা প্রকাশ করিয়া থাকেন। এমনকি শুধু টিভি চ্যানেলই নহে, পেপার-পত্রিকায় ছবি উঠাইবার জন্যও তাহারা এক সাথে জড় হন। কেউবা ভিঁড়ের মাঝে নিজের চেহারাটাকে উঁকি মারিয়া তুলিয়া ধরেন। ইহাকে তাহারা নাম দিয়াছেন পোজ দেওয়া। বলাবাহুল্য, এই যে ফটোসেশন বা পোজ ইহার উদ্দেশ্য তো একটাই। যাহাকে বলা হয় লোক দেখানো। অর্থাৎ লোকজন তাহাদের চেহারা দেখুক। তাহাদের প্রচার হউক। মন্ত্রী-মিনিষ্টার বা নেতা হিসাবে তাহাদের নামধাম হউক। তাহাদের সামাজিক অবস্থান তথা প্রতিষ্ঠা আরো প্রসারিত হউক। বলার অপেক্ষা রাখেনা যে ইসলামের পরিভাষায় ইহা  শুধুমাত্র সূক্ষ্ম রিয়া নহে বরং ইহা স্পষ্ট, প্রকাশ্য, দৃশ্যমান খোলামেলা খুব বড় ধরনের রিয়া। অথচ রিয়া সম্পর্কে কুরআন-সুন্নাহ্য় কত কঠোরতা আরোপ করা হইয়াছে তাহা বলাই বাহুল্য। কিন্তু এখন কথা হইলো, এইসব নেতা উপনেতা, অভিনেতা, কর্মকর্তা, বুদ্ধিজীবি ইহাদেরকে এইসব বিষয়ে নছীহত করিবে কে? এইসব টিভিতে ফটোসেশন, পত্রিকায় পোজ দেওয়া যে রিয়া, ইহা যে লোক দেখানো মনোবৃত্তি, ইহা যে খুবই লজ্জাকর, ঘৃণ্য ও ইসলামের দৃষ্টিতে গর্হীত অন্যায় সেই বিষয়ে তাহারা হিদায়েত হইবে কি করিয়া? কারণ, যেইসব শাইখুল হাদীছ, হাদীছ শরীফের ভিত্তিতে; যেইসব মুফাস্সিরে কুরআন কুরআন শরীফের ভিত্তিতে, যেইসব খতীব ছাহেব বয়ানের প্রেক্ষিতে, যেইসব পীর ছাহেব (নামধারী) তাছাউফের ভিত্তিতে তাহাদেরকে নছীহত করিতে পারিতেন তাহারা নিজেরাই আজ কঠিন রিয়া রোগে আক্রান্ত।  তাহারা নিজেরাই আজ প্রধানমন্ত্রীর সাথে বৈঠক করিতে পারিলে ফুলিয়া উঠেন, তাহারা নিজেরাই আজ টিভিতে দৃশ্যমান হওয়ার জন্য ব্যাকুলভাবে লালায়িত থাকেন। তাহারা নিজেরাই পেপার পত্রিকায়, পোষ্টারে তাহাদের ছবি ছাপা না হইলে গোস্বা করেন।  যেইখানে পেপার পত্রিকার লোক, টিভি ক্যামেরার লোক ছবি তুলিতে গেলে তাহাদের শত হস্তে বারণ করিবার কথা ছিল সেইখানে তাহারা সহস্রহস্তে ঐ সব ফটো সাংবাদিকদের উদাত্ত আহবান জানান যাহাতে করিয়া তাহাদের ছবি পেপার-পত্রিকায় ছাপা হয়, টিভিতে তাহারা প্রদর্শিত হয়।  লক্ষ-কোটি ধিক তাহাদের এই রিয়া প্রবণতার প্রতি।

মূলতঃ ইসলামের মূল ভিত্তিই যখন বে-রিয়ার উপর প্রতিষ্ঠিত তখন রিয়ার দ্বারা জর্জরিত হইবার ফলে তাহাদের গোটা কার্যক্রমই এখন একের পর এক অনৈসলামী বা হারাম কাজের দিকে ধাবিত হইতেছে।  এই রিয়া  রোগে আক্রান্ত হইবার ফলেই তাহারা আজ ছবি তুলিবার মত হারাম কাজে হরদম মশগুল রহিয়াছে। অথচ ছবি তোলা সম্পর্কে হাদীছ শরীফে ইরশাদ হইয়াছে, “কিয়ামতের ময়দানে ঐ ব্যক্তির সবচাইতে কঠিন শাস্তি হইবে যে ছবি তোলে বা আঁকে।” কাজেই দেখা যাইতেছে এক হারাম আরেক হারামের দিকে ধাবিত করে। তাহারা যেইভাবে ছবি তুলিতেছে তাহাতে প্রতিভাত হয় যে, তাহারা শক্ত রিয়া রোগে আক্রান্ত। অথচ এই রিয়া সম্পর্কে হাদীছ শরীফে হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ ফরমাইয়াছেন, “কিয়ামতের দিন রিয়াকারকে চারটি নামে ডাকা হইবে। হে কাফির! হে গুনাহ্গার! হে বিদ্রোহী! হে ক্ষতিগ্রস্ত। তোমাদের সব সাধনা মাটি হইলো। সব পুরস্কার বাজেয়াপ্ত হইলো। কাজেই তোমাদের আর কোন প্রাপ্য নাই। হে ধোকাবাজ! রিয়ার জন্য এইসব কাজ করিতে বলিয়া আজ এই তোমার প্রতিদান।” অতএব, পাঠক! ইসলামের নামধারী এইসব রিয়াকার তথা ধোকাবাজ হইতে সাবধান। -মুহম্মদ তারীফুর রহমান, ঢাকা।

 শুধু আজকের প্রেক্ষাপটে নয়, অতীত ইতিহাস হতেই ইহুদী-খ্রীষ্টানরা মুসলমানদের সবচেয়ে বড় শত্রু মুসলিম সন্ত্রাসবাদ নয়, মার্কিন হামলার পিছনে কি ইহুদী-খ্রীষ্টানরাই দায়ী নয়? -২২  

ইরাকের মীরজাফর সাদ্দাম  রাশিয়ার বেলারুশ যেতে চায় কেন?    

চট্টলার বহুল প্রচলিত দৈনিক পত্রিকার মাধ্যমে প্রকাশ্যে আঞ্জুমানে আল বাইয়্যিনাতের কাছে ক্ষমা চেয়ে তারা রক্ষা পেলো ॥

প্রসঙ্গঃ ছবি, অশ্লীল ছবি ইনকিলাব ও হাটহাজারীর আহমক শাফী উপাখ্যান

শুধু আজকের প্রেক্ষাপটে নয়, অতীত ইতিহাস হতেই ইহুদী-খ্রীষ্টানরা মুসলমানদের সবচেয়ে বড় শত্রু মুসলিম সন্ত্রাসবাদ নয়, মার্কিন হামলার পিছনে কি ইহুদী-খ্রীষ্টানরাই দায়ী নয়? -২৩