প্রসঙ্গঃ বাঙালী তথা বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদ, জাতীয়তাবাদ ও ইসলাম পক্ষের শক্তির সমন্বয় এবং জাতীয়তাবাদের নামে অতীতের ইসলামী দাবীদারদের বিভ্রান্তি:

সংখ্যা: ১৬৩তম সংখ্যা | বিভাগ:

আতীয়তাবাদের উৎপত্তি মূলত; গ্রীক ও হিব্রুদের থেকে।  তবে আধুনিক জাতীয়তাবাদের  উন্মেষ হয় সপ্তদশ ও অষ্টাদশ শতকে। অধুনা গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে জাতীয়তাবাদকে ধর্ম বা ইসলামের চেয়ে শক্তিশালী মূল্যায়ন করা হয়। এ প্রসঙ্গে আহমদ মূসার উক্তি উল্লেখ্য:  “মতবাদগত শক্তি হিসেবে জাতীয়তাবাদ আজ পৃথিবীতে অপ্রতিরোধ্য শক্তি। এই শক্তির সামনে আর কোনো কিছুই দাঁড়াতে পারছেনা। জাতিসত্তাগতবোধ উন্মেষের পর থেকেই পৃথিবী জুড়ে স্বাধীনতা অর্জন, রক্ষা ও নিজ জাতিকে সম্মানের কাতারে নিয়ে যাওয়ার সংগ্রামে জাতীয়তাবাদ নিয়ামক শক্তি হিসেবে কাজ করে এসেছে। অবশ্য বিকৃত জাতীয়তাবাদ ও উগ্রজাতীয়তাবাদ মানব সভ্যতার ক্ষতিও করেছে বিস্তর। কিন্তু প্রকৃত জাতীয়তাবাদের সঙ্গে উগ্র কিংবা বিকৃত জাতীয়তাবাদের কোনো সর্ম্পক নেই; বরং রয়েছে বৈরিতা। আজকের পরিবর্তিত বিশ্বব্যবস্থায় জাতীয়তাবাদ পেয়েছে নবতর মাত্রা। জাতিসত্তাগত পরিচয় এবং দ্বন্দ্বের মধ্য দিয়েই আজ নির্মিত ও প্রভাবিত  হচ্ছে বিশ্ব রাজনীতির ধারা। বিশ্ব সম্প্রদায়ের অংশীদার হিসেবে বাংলাদেশ ও তার জনগণও সেই ধারা-প্রভাবের মিছিলে সামিল রয়েছে। ২. বাংলাদেশের জনগণ অন্তর্নিহিত ভাবেই চিরকাল জাতীয়তাবাদী।……….” জাতীয়তাবাদ সর্ম্পকে শুধু সাধারণ বুদ্ধিজীবী নয় তথাকথিত ইসলামী চিন্তাবিদদের মাঝেও রয়েছে একই ধরনের চেতনা ও প্রেরণা। “আমাদের আত্ম পরিচয় এবং বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদ” গ্রন্থে সৈয়দ আলী আহসান বলেন, “নানারকম অবস্থান থেকে জাতীয়তাবাদের নানারকম সংজ্ঞা দেয়া যেতে পারে এবং সে সমস্ত সংজ্ঞা সত্য বলে মনেও হতে পারে। কিন্তু এসব সংজ্ঞার উপর নির্ভর করে বিভিন্ন কর্মে  অগ্রসর হলে বিপর্যয়ের সম্ভাবনা বেশী থাকে। অনেকে ধর্মকে জাতীয়তাবাদের উৎস বলে মনে করেন। ধর্মকে জাতীয়তাবাদের সঙ্গে সম্পৃক্ত করার ঘটনা একমাত্র ভারতবর্ষেই ঘটেছে। হিন্দু এবং মুসলমান ধর্মগত বিচারে দু’টি ভিন্ন সম্প্রদায়। কিন্তু তাদের এই ভিন্নত্ব তাদের মধ্যে মানবিক এবং দেশগত বিচ্ছিন্নতা সৃষ্টি করতে পারে না। সুতরাং একটি দেশের সামগ্রিক জাতীয়তাবোধের চেতনার মধ্যে ধর্মেরও অংশ আছে বলে ধরে নিতে পারি, কিন্তু ধর্মটাই সম্পূর্ণ নয়। (ইসলামের দৃষ্টিতে এ বক্তব্য সঠিক নয়। যা পরে আলোচিত হবে ইনশাআল্লাহ্) ধর্মের কারণে পারিবারিক সম্পর্কে অথবা সামাজিক সম্পর্কে কিছু বিশিষ্টতা জন্মে এটা সত্য এবং ধর্মের কারণে পোশাক-আশাক ও খাদ্য স্বভাব এবং মানুষে মানুষে দৃশ্যমান রূপেরও পরিবর্তন ঘটতে পারে। আফ্রিকার দেশগুলোর দিকে তাকালে আমার কথাগুলোর তাৎপর্য বোঝা যাবে। আফ্রিকার পশ্চিমাঞ্চলে সেনেগাল নামক একটি দেশ আছে। এদেশের প্রায় শতকরা পঁচানব্বই ভাগ মুসলমান। কিন্তু  এদেশটিকে যিনি প্রথম একটি স্বাধীন সত্তা দিলেন তিনি একজন খ্রিষ্টান। ফরাসীদের কাছ থেকে স্বাধীনতা লাভের পর সেনেগালের রাষ্ট্রনায়ক হলেন লিওপোল্ড সেডার সেঙঘর। ইনি বিশ বছর পর্যন্ত রাষ্ট্রপতি ছিলেন এবং সেনেগালের লোকে তাকে খ্রিষ্টান হিসেবে দেখেনি। তাকে দেখেছে নিজেদের প্রতিনিধি হিসেবে। উগান্ডা একটি মুসলিম সংখ্যালঘু দেশ। কিন্তু এই উগান্ডার রাষ্ট্রপতি হয়েছিলেন ইদি আমিন, একজন মুসলমান। এক সময় এদেশটি ব্রিটিশের অধীনে ছিল এবং ব্রিটিশদের ভয়াবহ অত্যাচারের কথা তারা মনে রেখেছিল। দেশ স্বাধীন হবার পরও সে দেশের প্রধান প্রধান অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনা ব্রিটিশদেরই একচেটিয়া অধিকারে ছিল। ইদি আমিন জাতীয়তাবোধে উদ্বুদ্ধ হয়ে তারা দেশ থেকে বিদেশীদের তাড়ালেন এবং কতকগুলো প্রতীকগত আচরণের মধ্যদিয়ে ব্রিটিশদের অপমানিতও করলেন। যেমন, প্রতিষ্ঠিত এবং সম্মানিত কিছু ইংরেজদের কাঁধে চড়ে তিনি ঘুরে বেড়ালেন। এসব অপমান সহ্য করা ইংরেজদের সম্ভবপর হয়নি। তাই তারা একটি আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্রের মাধ্যমে ইদি আমিনকে উৎখাত করলেন। এভাবে আমরা দেখতে পাচ্ছি ধর্মের অধিকারে নয় ইদি আমিন তার দেশগত বা জাতিসত্তার অধিকারে উগান্ডাকে বলিষ্ঠ করতে চেয়েছিলেন। নাইজেরিয়ার ঘানাও অবিকল তাই। নাইজেরিয়া প্রধানত একটি মুসলমান দেশ। নাইজেরিয়ায় ইসলাম প্রবেশ করেছিল খ্রিষ্টীয় নবম শতকে। নাইজেরিয়ায় আবার খ্রিষ্টানরাও একটি প্রধান অংশ। তাছাড়া দেশের প্রত্যন্ত প্রদেশগুলিতে কিছু আদিম  বিশ্বাসের লোকজন আছে। ধর্মবিশ্বাস নাইজেরিয়ার জাতিসত্তা নির্ধারণ করে না। তাই আমরা দেখি যে, এক সময় নাইজেরিয়ার রাষ্ট্র প্রধান একজন খ্রিষ্টান হয়েছিলেন। মূলত দেশগত তাৎপর্যেই সে দেশের জাতিসত্তা নির্ধারিত হয়েছে। ধর্মগত তাৎপর্যে নয়। নাইরেরিয়ায় এক সময় ধর্মগত সঙ্কট দেখা দিয়েছিল। নাইজেরিয়ার বায়াফ্রা নামক প্রদেশের নেতা উজুক স্বাধীনতা ঘোষণা করেছিলেন। বায়াফ্রা ছিল খ্রিস্টান প্রধান প্রদেশ এবং তখন নাইজেরিয়ায় প্রেসিডেন্ট ছিলেন একজন খিস্টান ইয়াকুবু গাওগান। বায়াফ্রায় এক বছরের রক্তক্ষয়ী যুদ্ধে বহু মানুষ হতাহত হয়েছে। শেষ পর্যন্ত উজুক পলায়ন করেন। দেখা যাচ্ছে যে, নাইজেরিয়ায় ধর্মগত জাতিসত্তা পরাজিত হয়েছে দেশগত জাতিসত্তার কাছে। বর্তমানে পাশ্চাত্য জগতের ষড়যন্ত্রে এবং কুচক্রে সুদানে একটি গৃহযুদ্ধ চলছে। সুদানের দক্ষিণাঞ্চলের

ব্রিটিশ গুপ্তচরের স্বীকারোক্তি এবং ওহাবী মতবাদের নেপথ্যে ব্রিটিশ ভূমিকা-৩২

কোকাকোলা ও অন্যান্য কোমল পানীয় সম্পর্কে উন্মোচিত সত্য-১৮

‘ক্লোজআপ ওয়ান তোমাকেই খুঁজছে বাংলাদেশ’- একটি সূক্ষ্ম ও গভীর ষড়যন্ত্রের প্রক্রিয়া অথচ নিশ্চুপ তথাকথিত খতীব, মহিউদ্দীন, আমিনী ও শাইখুল হাদীছ গং তথা তাবত ধর্মব্যবসায়ীরা- (১)

মওদুদীর নীতি থেকেও যারা পথভ্রষ্ট সেই জামাত- জামাতীদের জন্যও ভয়ঙ্কর মুনাফিক॥ আর সাধারণের জন্য তো বলারই অপেক্ষা রাখেনা

প্রসঙ্গঃ আমেরিকায় ইহুদী প্রভাব ও নিয়ন্ত্রণ- ২