উপমা ব্যবহার করা আল্লাহ্ পাক-এর সুন্নত। আল্লাহ্ পাক-এর রসূল হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর সুন্নত।
প্রসঙ্গক্রমে আজকে যেসব উলামায়ে ‘ছূ’রা মুজাদ্দিদে আ’যম, ইমামুল আইম্মা, কুতুবুল আলম, আওলাদুর রসূল, রাজারবাগ শরীফের হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী-এর মাহফিলে বাধাদানের বিষয়ে পৈশাচিক হাসি হেসে থাকে এবং এটাকেই ওদের কামিয়াবী ভেবে উল্লসিত হয়, তখন তাদের উপমাটা তেমনই দাঁড়ায় যেমন আবু জেহেল আবু লাহাব গং সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম নামাযরত অবস্থায় তাঁর গায়ের উপর উটের নাড়ি-ভুড়ি চাপিয়ে অট্টহাসিতে ফেটে পড়ত।
মুলতঃ তাদের খুশী, তাদের সে উল্লাস, তাদের সে আনন্দ ছিল পুরোটাই ইবলিসি। জবাবে আল্লাহ্ পাক ইরশাদ করেন, “যারা আপনার শত্রু তারাই তো লেজকাটা নির্বংশ।”
উল্লেখ্য, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আল্লাহ্ পাক-এর হাবীব হিসেবে মনোনীত। মর্যাদার মালিক আল্লাহ্ পাকই তাঁর মর্যাদা ঘোষণা করে বলেছেন, ‘মানুষের কাছে আশ্চর্য লাগছে; আমি ওহী পাঠিয়েছি তাদেরই মধ্য থেকে একজনের কাছে যেন তিনি মানুষকে সতর্ক করেন এবং সুসংবাদ শুনিয়ে দেন ঈমানদারগণকে যে, তাদের জন্য সত্য মর্যাদা রয়েছে তাদের পালনকর্তার কাছে। কাফিররা বলতে লাগল, নিঃসন্দেহে এ লোক প্রকাশ্য যাদুকর।” (সূরা ইউনুছ/২)
কাজেই দুনিয়ার সব লোকেরা যদি অপবাদ রটনা করে, অপপ্রচার করেও কিন্তু তার বিপরীতে আল্লাহ পাক এবং আল্লাহ্ পাক-এর হাবীব হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যদি কাউকে কবুল করে নেন সেক্ষেত্রেই কামিয়াবী এবং তাতেই সব মর্যাদা।
একথা বলার অপেক্ষা রাখেনা যে, জরিপ অনুযায়ী এককভাবে মুজাদ্দিদে আ’যম, ইমামুল আইম্মা, কুতুবুল আলম, মুহ্ইস্ সুন্নাহ্, আওলাদুর রসূল রাজারবাগ শরীফের হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলীই সারা দেশে সবচেয়ে বেশি মাহফিল করে থাকেন। হিসেবানুযায়ী তার বিরোধীতাকারীরা তার বিশ ভাগেরও একভাগ করতে পারেনা। বাংলাদেশের সব জেলা তো বটেই পৌরসভা, থানা, গ্রাম পর্যায়সহ এমনকি সন্দ্বীপ, মহেশখালী, কুতুবদীয়া ইত্যাদি দ্বীপাঞ্চলেও তার মাহফিল হয়ে থাকে। সেক্ষেত্রে কোন বিচ্ছিন্ন ঘটনায় কোনভাবে, কোনস্থানে উলামায়ে ‘ছূ’রা যদি একজোট হয়ে চোরাগোপ্তা হামলা চালাতে সক্ষম হয়, তায়েফবাসীর মত ইট-পাটকেল ছুড়তে সফল হয়, আবু জেহেল, আবু লাহাবের মত বিরোধীতা করতে পারঙ্গম হয়, মিথ্যা অপবাদ প্রচারে দক্ষতা প্রকাশ করে মুসায়লামাতুল কায্যাবের উপযুক্ত শিষ্যরূপে নিজেদের প্রমাণ করে, মুনাফিক মারওয়ানের মত মুনাফিকী করে জটলা বাধাতে দাঙ্গা হাঙ্গামা করতে, ফেৎনা তৈরীতে সমর্থ হয় তবে সে বিচ্ছিন্ন ঘটনাকেই ওরা ইহুদী সংবাদ প্রক্রিয়ার মত ঢালাওভাবে, ফলাও করে, ফুলিয়ে ফাঁপিয়ে অপপ্রচারনার বন্যা বইয়ে দিতে চায়। কিন্তু ওরা এর দ্বারা কি বলতে চায়?
এ লিখার প্রথমে উপমার কথা বলা হয়েছে। ওদের উপমাটা তাহলে কি দাঁড়ায়?
মূলতঃ ইসলামে, আমাদের কাছে, আল বাইয়্যিনাত এবং তাদের পাঠকের কাছে গ্রহণযোগ্য না হলেও, বিশ্বাস্য না হলেও, স্বীকার্য না হলেও, প্রকাশিতব্য না হলেও ওরা মূলতঃ এটাই প্রমাণ করতে চায়, এটাই বলতে চায়, এটাই প্রকাশ করতে চায় যে, ৭০ হাজার শাহাদাতপ্রাপ্ত নবী-রসূল আলাইহিমুস্ সালাম-এর চেয়ে রাজারবাগ শরীফের হযরত পীর ছাহেব ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী-এর মর্যাদা বেশী। (মহান আল্লাহ্ পাক আমাদের এ কুফরী কথা হতে হেফাযত করুন।)
বলাবাহুল্য, উলামায়ে ‘ছূ’রা রাজারবাগ শরীফের বিরুদ্ধে প্রপাগান্ডা করতে গিয়ে প্রকারান্তরে অনৈসলামিক এ কথাই বারবার লিখে চলছে। কারণ বণী ইস্রাইলের ৭০ হাজার নবী-রসূল আলাইহিমুস্ সালাম শহীদ হয়ে গিয়েছেন, অতীত হয়ে গিয়েছেন, যাদের একজন উম্মতও ছিলনা সেখানে যদি সংখ্যার দ্বারাই শ্রেষ্ঠত্ব হয় সেখানে সভা করার দ্বারাই যদি হক্ব নাহক্ব ফায়সালা হয়, তাহলে তো বলতে হয় যে, উলামায়ে ‘ছূ’দের বক্তব্যানুযায়ী ৭০ হাজার নবী-রসূল আলাইহিমুস্ সালাম সবাই ছিলেন নাহক্ব। (নাউযুবিল্লাহ্)
কারণ তাদের একজন উম্মতও ছিলনা আর সে সময়ের নবী-রসূল আলাইহিমুস্ সালাম-এর বিরুদ্ধে কাফির রাজা-প্রজাদের সভার পর সভা হয়েছে এবং মাত্র একজন নবী-রসূল আলাইহিমুস্ সালামগনের বিরুদ্ধে তাদের সভায় হাজার হাজার গুণ বেশী লোক হয়েছে। অর্থাৎ ৭০ হাজার নবী-রসূল আলাইহিমুস্ সালাম সারা জীবনে একটি মাহফিলও করতে পারেনি।
তাহলে কি উলামায়ে ‘ছূ’রা এই বলতে চায় যে, নবী-রসূল আলাইহিমুস্ সালামগণের বিপরীতে ঐ সময়ের ঐসব কাফির, জালিম, রাজা-প্রজারাই হক্ব হয়ে গিয়েছিল। (নাউযুবিল্লাহ্) পাশাপাশি রাজারবাগ শরীফ বিরোধী তথা উলামায়ে ‘ছু’রা কি তাহলে এই বলতে চাচ্ছেনা যে, রাজারবাগ শরীফের হযরত পীর ছাহেব ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলীও নবী-রসূল আলাইহিমুস্ সালামগণের চেয়ে শ্রেষ্ঠ। (আল্লাহ পাক এ কুফরী আক্বীদা হতে আমাদের হিফাযত করুন) কারণ উক্ত নবী রসূল আলাইহিমুস্ সালামগণের তো একজনও উম্মত ছিলনা। একটা মাহফিলও তাদের হয়নি।পক্ষান্তরে রাজারবাগ সিলসিলার লাখ লাখ মুরীদ রয়েছে, হাজার হাজার মাহফিল হচ্ছে। মূলতঃ এইসব উলামায়ে ‘ছূ’রা এতই নিরেট জাহিল ও অজ্ঞ যে তারা রাজারবাগ শরীফের বিরোধিতা করতে গিয়েও বিরোধিতা করতে পারেনা।
উলামায়ে ‘ছূ’রা এটাই প্রমাণ করছে যে, পৃথিবীতে বিধর্মীরাই হক্ব। কারণ ছয়শ কোটিরও অধিক বাসিন্দার মধ্যে মাত্র ১৫০ কোটি মুসলমান। তার মধ্যে আবার শিয়া, রাফিজী, খারিজী, জামায়াতী, ওহাবী ইত্যাদি ফিরকাবন্দী; তাহলে হক্বপন্থী মুসলমান কয়জন। আর পৃথিবীতে মুসলমানদের মাহফিল হয় কতগুলি? বরং কাফিরদেরই মিটিং হয় তদাপেক্ষা অনেক বেশী। তাহলে কি তারাই হক্ব হয়ে গেল?
এমনকি আল্লাহ্ পাক-এর রসূল হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর যামানায়ও যদি আমরা দেখি তবে বলতে হয়, বিভিন্ন ঐতিহাসিক সূত্রানুযায়ী সে যুগে মানুষের সংখ্যা ছিল সর্বাধিক ত্রিশ কোটি। আর হযরত ছাহাবা-ই-কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুমগণের সংখ্যা ছিল সোয়া লাখ। সব মিলে মুসলমানের সংখ্যা ছিল প্রায় তিন লাখ। অর্থাৎ অনুপাতিক হারে পৃথিবীর মোট জনসংখ্যার ক্ষেত্রে হাজারে একজন।
প্রসঙ্গতঃ আল্লাহ্ পাক এর রসূল হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, “ইসলাম অল্প সংখ্যক লোকের দ্বারা শুরু হয়েছে, শেষও হবে অল্প সংখ্যায়। আর অল্প সংখ্যক লোকের জন্যই সুসংবাদ।”
উল্লেখ্য, এই অল্প সংখ্যক হচ্ছেন যারা হক্ব পন্থী। তারা ইসলামকে ইসলামের আলোকে মেনে চলেন। তারা ইসলামকে খন্ড বিখন্ড করেন না, তারা ছবি তোলেন না, বেপর্দা হন না, লংমার্চ করেন না, হরতাল, ব্লাসফেমী, মৌলবাদ, ইসলামের নামে গণতন্ত্র, নির্বাচন ইত্যাদি হারাম কাজ করেন না।
মূলতঃ রাজারবাগ বিরোধী উলামায়ে ‘ছূ’রা এতই জালিম ও জাহিল যে, তারা রাজারবাগ শরীফের মাহফিলে ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করতে পেরেছে, এতেই আনন্দিত হয়েছে। কিন্তু তাদের এ আনন্দ যে সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে ইট-পাটকেল ছুড়ে রক্তাক্তকারী; পৃথিবীর তাবত আশিকে রসূলদের দুশমন, চরম জালিম, কাফির তায়েফবাসীর অন্তর্ভুক্ত করেছে তা তারা আদৌ ভেবে দেখেছে কি? অথচ, তারা আজ পর্যন্ত রাজারবাগ শরীফের হযরত পীর ছাহেব ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী-এর কোন কথা, কাজ, আমল ইত্যাদি একটিতেও কোন ভুল ধরতে পারেনি, পারেনি রাজারবাগ শরীফ থেকে দেয়া প্রকাশ্য বাহাছের চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করতে। তাই তারা এখন ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করে জালিম তায়েফবাসীর উত্তরসূরী হয়েই আনন্দে গদগদ হতে চাচ্ছে। আর এদের প্রসঙ্গে আল্লাহ্ পাক ইরশাদ ফরমান, ‘আমি আমার নিদর্শনসমূহ হতে তাদেরকে ফিরিয়ে রাখি, যারা পৃথিবীতে অন্যায়ভাবে গর্ব করে। যদি তারা সমস্ত নিদর্শন প্রত্যক্ষ করে ফেলে তবুও তা বিশ্বাস করবেনা আর যদি হিদায়েতের পথ দেখে তবে সে পথ গ্রহণ করবেনা। অথচ গোমরাহীর পথ দেখলে গ্রহণ করে নেয়। এর কারণ তারা আমার নিদর্শনসমূহকে মিথ্যা বলে মনে করছে এবং তা থেকে বেখবর রয়েছে। বস্তুতঃ যারা মিথ্যা জেনেছে আমার আয়াতসমুহকে এবং আখিরাতের বিষয়গুলোকে তাদের যাবতীয় কাজকর্ম বিধ্বংস হয়ে গেছে। তেমন বদলাই তারা পাবে যেমন আমল তারা করত।’
-মুহম্মদ ওয়ালীউল্লাহ বাসাবো, ঢাকা।
ইরাকের মীরজাফর সাদ্দাম রাশিয়ার বেলারুশ যেতে চায় কেন?
প্রসঙ্গঃ ছবি, অশ্লীল ছবি ইনকিলাব ও হাটহাজারীর আহমক শাফী উপাখ্যান