প্রসঙ্গ: ‘লিল্লাহিয়াত ও গাইরুল্লাহ’ তথাকথিত ইসলামী রাষ্ট্র ইরানের শিয়া বিপ্লব ও বর্তমান ভাবধারা এবং ইহুদী কানেকশন

সংখ্যা: ১৪৫তম সংখ্যা | বিভাগ:

গাইরুল্লাহ এবং লিল্লাহিয়াত দু’টো পরস্পর বিপরীতমুখী শব্দ। ‘গাইরুল্লাহ’র সহজ অর্থ হলো যা খালিছ আল্লাহ পাক-এর জন্য নয়। আর ‘লিল্লাহিয়াত’ যা শুধু আল্লাহ পাক-এর জন্য করা হয়। হাদীছ শরীফে বর্ণিত হয়েছে, “নিশ্চয়ই কর্মের ফলাফল নিয়তের উপর নির্ভরশীল।” তাফসীরে বলা হয়েছে, “যাদের উদ্দেশ্য আল্লাহ পাক এবং আল্লাহ পাক-এর মনোনীত মত ও পথ তাদের কার্যক্রম এক রকম হয়। আর যাদের উদ্দেশ্য থাকে গাইরুল্লাহ তাদের দৃষ্টিভঙ্গী ও কার্যক্রম হয় অন্য রকম।” এক্ষেত্রে অনন্য দৃষ্টিভঙ্গি দেখিয়েছেন আফজালুন্ নাছ বা’দাল আম্বিয়া হযরত আবু বকর ছিদ্দীক রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু। খলীফা হওয়ার পর একটি সম্প্রদায় যাকাত দিতে অস্বীকার করলো। তিনি তাদের বিরুদ্ধে জিহাদ ঘোষণা করলেন। তখন কেউ কেউ বলেছিলেন, ‘এখন যেহেতু খিলাফতের ক্রান্তিকাল অতএব, এ অবস্থায় যাকাত অস্বীকারকারীদের বিরুদ্ধে জিহাদ না করা হোক। কারণ সে জিহাদে মুসলমানদের জনবল অর্থবলের মারাত্মক ক্ষতি হতে পারে। কিন্তু সেদিকে না তাকিয়ে ছিদ্দীকে আকবর হযরত আবু বকর ছিদ্দীক রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু গর্জে উঠে বললেন, ‘সাবধান! যাকাতের একটা রশি দিতেও যে অস্বীকার করবে তার বিরুদ্ধে আমি জিহাদ ক্ষ্যান্ত করবো না।’ মূলত: তাঁরা সম্পূর্ণরূপে লিল্লাহিয়াতের অধিকারী ছিলেন। লোক কমলো কিংবা বাড়লো সেদিকে তাঁদের খেয়াল ছিলো না। লোক খালিছ কিনা, ইসলামের উপর রয়েছে কিনা সেটাই ছিল তাদের বিবেচ্য বিষয়। প্রসঙ্গত: উল্লেখ্য, এখনও আমাদের দেশে কিছু নামধারী লোক রয়েছে যারা বলে বেড়ায় যে, ‘পৃথিবীতে বর্তমানে ইসলাম বলতে ইরানে রয়েছে। অথবা ইরানে ইসলামী খিলাফত রয়েছে। কিন্তু ইরানীরা শিয়া। তারা আসলে মুসলমান নয়। ইসলামী আক্বীদায় তারা বিশ্বাসী নয়। একথা ইসলামের নামধারী চিহ্নিত জামাত মোটেই গ্রহণ করতে রাজী নয়। বরং তারা স্বপ্নে বিভোর রয়েছে যে তথাকথিত ইসলামী রাজনীতির সুবাদে তারাও একসময় দেশে ইরানী কায়দায় তথাকথিত ইসলামী বিপ্লব করবে।  স্মর্তব্য যে, নিম গাছে কখনো আম হয়না। শিয়া আক্বীদার উপর ভিত্তি করে ইরানে তথাকথিত যে ইসলামী আক্বীদা ও বিপ্লব সাধিত হয়েছিল আসলে ইসলামী মূল্যবোধের উপর ছিলনা।  তাতে আল্লাহ পাক-এর রহমত ছিলনা। ছিল ইসলামের নামে এক ধরনের বিকৃত ধর্ম চিন্তা। স্বয়ং রসূলে পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর প্রতি শিয়ারা মহা বেয়াদবিমূলক আক্বীদা পোষণ করে। মনে করে হযরত জীব্রাইল আলাইহিস্ সালাম ভুল করে হযরত আলী রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুকে বাদ দিয়ে হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর প্রতি ওহী নাযিল করেছেন। (নাঊযুবিল্লাহ) প্রথম তিন খলীফা সম্পর্কে তাদের অনভূতি ও বিশ্বাস চরম আপত্তিকর। এমনকি তাদের প্রতি চরিত্রহীনতার অপবাদও তারা দিয়েছে। (নাঊযুবিল্লাহ) অতএব, এ ধরনের দল তারা যতই ইসলামের লেবাসধারী হোক না কেন? আসলে তাদের মুসলমানই বলা যায় না। সে কারণে বলতে হয় ইরানে কখনই ইসলামী বিপ্লব হয়নি। ইসলামী হুকুমত সেখানে প্রতিষ্ঠিত হয়নি। তার একটি বড় প্রমাণ হচ্ছে ইরান নামে তথাকথিত ইসলামী রাষ্ট্রের শাসনতন্ত্রের পৃষ্ঠপোষকতায় বিচার কাঠামোর অনুমোদনেই চলছে ইসলামের নামে ইসলাম বিরোধী কর্মকা-। আগামী ২২-২৮ সেপ্টেম্বর তেহরানে ৮ দেশের মহিলা ক্রীড়াবিদদের অংশ গ্রহণে গেমস অনুষ্ঠিত হবে। অথচ একে তারা নাম দিয়েছে ‘মহিলা ইসলামী গেমস।’ মহিলা ইসলামী গেমস তিন ডিসিপ্লিনে দল পাঠাবে বিওএ স্পোর্টস রিপোর্টার: চতুর্থ ইসলামী মহিলা গেমসে বাংলাদেশ তিনটি ডিসিপ্লিনে অংশ নেবে। ইরানের তেহরান শহরে আগামী ২২ হতে ২৮ সেপ্টেম্বর ৮ দশের ক্রীড়াবিদদের অংশগ্রহণে গেমস অনুষ্ঠিত হবে। … (দৈনিক সংগ্রাম, ১৬ মে-২০০৫, পৃষ্ঠা ১০) মহিলা ইসলামিক গেমসে বাংলাদেশের চার ক্রীড়াবিদ অংশ নেবেন স্পোর্ট রিপোর্টার: সেপ্টেম্বরে অনুষ্ঠেয় মহিলা ইসলামিক গেমসের তিন ইভেন্টে বাংলাদেশের চার প্রতিযোগী অংশ নেবেন। ইরানে অনুষ্ঠিত হবে এ টুর্নামেন্ট। … (দৈনিক যুগান্তর, ১৬ মে-২০০৫, পৃষ্ঠা ১৮) মূলতঃ তথাকথিত ইসলামী রাষ্ট্র ইরানের এই অনৈসলামী অবস্থা একদিনেই রচিত হয়নি। এর ভিত তৈরী হয়েছিল শিয়া মতবাদী রাষ্ট্র গঠনের প্রথম থেকেই। তারা যেহেতু খালিছ মুসলমান ছিলনা। সত্যিকার ইসলামী বোধ ও আক্বীদাও তাদের ছিলনা। ছিল ইসলামের নামে একটা মনগড়া মতবাদ জারির প্রচেষ্টা। তাই তাদের প্রবণতা ছিল দুনিয়ামুখী তথা পশ্চাত্যমুখী। পশ্চাত্যের মূল্যায়ণকে তারা গভীর গুরুত্ব দিত। তাদের থেকে সার্টিফিকেট আশা করত। তারা যাতে কট্টর ইসলামী না বলে সে ভয়ে ভীত থাকত। অর্থাৎ ইসলামী বিপ্লব বললেও কার্যত: মুনাফেকী তৎপরতায় তারা পর্যবসিত ছিল। একারণে তারা কাক হয়ে ময়ুর সাজার উদাহরণ তৈরী করেছিল।  পুরো পশ্চাত্যের অনুসরণেই মগ্ন থেকে তার সাথে তারা ইসলামী লেবেলটাকে এঁটে দিয়েছিল। এতে করে তারা মুসলিম বিশ্বের  কাছে ইসলামী পরিচয় তুলে ধরছিল। যার পেছনে গভীর দুরভিসন্ধি লুকায়িত ছিল। ইসলামের নামে অন্যান্য মুসলিম দেশগুলোকেও ইসলাম থেকে দূরে সরে যাবার প্ররোচনা এর পিছনে কাজ করছিল। ইরানী শিয়ারা সত্যিকার মুসলমান না হওয়ায় ইহুদীরা এ উদ্দেশ্যে সহজেই তাদের সাথে আতাঁত করতে পেরেছিল। এদেশের তথাকথিত মৌলভী সাহেবরা মহিলা ফুটবল, কুস্তির পেছনে নামকাওয়াস্তে আন্দোলন দেখালেও যখন তাদের প্রচারিত ইসলামী রাষ্ট্রই আন্তর্জাতিকভাবে ইসলামী মহিলা গেমসের আয়োজন করে তখন তারা নীরব ভূমিকা পালন ছাড়া অন্য কিছুই দেখাতে পারছেনা।  উদ্ভূত প্রেক্ষিত পটভূমিকায় ধর্মনিরপক্ষ সরকার তাতে স্বদেশেও প্রকাশ্য মহিলা ক্রীড়া প্রতিযোগিতা করার সুযোগ পেয়ে যায়। আর তখন তথাকথিত ইসলামী আন্দোলনকারীদের প্রতিবাদ নিতান্তই মেকী ও অসার প্রতিপন্ন হয়। মূলত এ ষড়যন্ত্রটাই ইহুদীরা করতে পেরেছে ইরানকে ভিত্তি করে। উল্লেখ যে ইরানে তথাকথিত মহিলা ইসলামী গেমস এবারই প্রথম নয়। এবার চলছে তাদের চতুর্থ ইসলামী মহিলা গেমস। কিন্তু এর আগেও তথাকথিত ইসলামী রাষ্ট্র ইরান অলিম্পিকে মহিলা দল পাঠিয়েছে।  আশ্চর্যের কথা রাফসানজানির মেয়েই সেখানে নেতৃত্ব দিয়েছে। আবার খোমেনীর মেয়েকে দেখা গিয়েছে পর্দা বিরোধী আন্দোলনে নেতৃত্ব দিতে। এবং এখন ইরানীদের এই অনৈসলামী মনোভাব এত প্রকাশ্য যে পত্রিকার পাতা উল্টালেই  অথবা ইন্টারনেটে ঢুকলে এ সম্পর্কে বিস্তর তথ্য পাওয়া যায়। এ ধরনের একটি রিপোর্ট নিম্নে পেশ করা হলোঃ

ইরানে পালা বদলের হাওয়া

ইরানে পালা বদলের হাওয়া লেগেছে। লালেহ সিদ্দিক সেই বদলে যাওয়া ইরানের প্রতীক। ২৮ বছরের এই তরুণী বছরের গোড়াতে দেশজুড়ে হৈচৈ ফেলে দেন। ইরানের মতো দেশে এক অভাবনীয় কা- করে বসেন লালেহ। জাতীয় রেসিং চ্যাম্পিয়নশিপের শিরোপা জেতেন তিনি। তাও আবার পুরুষ প্রতিদ্বন্দ্বীদের পেছনে ফেলে। অথচ এতদিন যাবত ইরানের রক্ষণশীল আইনে কোনো প্রতিযোগিতায় নারী-পুরুষের সম্মিলিত অংশগ্রহণ বৈধ ছিলো না। বলা ভালো, নারী পুরুষের সঙ্গে একই প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণের অনুমতি পেতে যথেষ্ট কাঠখড় পোড়াতে হয়েছিল লালেহকে। গত বছর প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণের সুযোগ প্রার্থনা করে জাতীয় রেসিং ফেডারেশনের নামে আদালতে আর্জি জানান তিনি। তার আবেদন গৃহীত হয়। মোটরগাড়ি চালানো প্রতিযোগিতায় পুরুষদের সঙ্গে একত্রে অংশগ্রহণ করেন। কোনো ক্রীড়া প্রতিযোগিতায় পুরুষদের সঙ্গে সুযোগ পাওয়াই প্রথম। এবং প্রথম সুযোগেই বাজিমাৎ। রাষ্ট্রীয় টিভি যদিও লালেহের এই কীর্তি সচিত্র প্রচার করেনি। কেননা, ডায়াসে পুরুষদের উপরে দাঁড়িয়ে ছিলেন তিনি। প্রচার করেছে পত্রিকাগুলোতে। বিশেষত নারীদের ম্যাগাজিন ‘জানানা’ ছবিতে দেখা যায়, মেডেল গ্রহণের সময় লালেহর দীঘল কালো চুল শক্ত করে বাঁধা স্কার্ফে। রেসিং ইউনিফর্মের উপর ওভারকোট চড়ানো। এমন পোশাকের শর্ত দিয়েছিল রেস আয়োজকরা। সত্য হলো, পোশাকের নিচে বদলে গেছে অনেক কিছু। তেহরানে দেখা যাবে, মেয়েদের বহুবর্ণিল স্কার্ফগুলো খুবই হালকা করে বাঁধা। পার্লার চর্চিত চুল বেরিয়ে এসেছে বাঁধাহীন। বাধ্যতামূলক ওভারকোটও ক্রমেই সঙ্কুচিত আর আড়ষ্ট হয়ে পড়ছে। তেহরানের রাজপথে হাঁটলে চোখে পড়বে পশ্চিমা বিশেষত মার্কিন ভোগ্যপণ্যের ঢাউস আকৃতির সব বিলবোর্ডে। গ্যাপ, ডিজেল, বেনেটন, ব্ল্যাক অ্যান্ড ডেকার মায় মহিলাদের অন্তর্বাস, ভিক্টোরিয়াস সিক্রেটর’ বিজ্ঞাপন পর্যন্ত শোভা পাচ্ছে এসব বিলবোর্ড। আবার এই রাজপথেই এ বছর পালিত হলো ইরানের ইসলামী বিপ্লবের ২৫তম বার্ষিকী। সেখানে ডাক দেয়া হলো মার্কিন পণ্য বর্জনের। মার্কিন পণ্যের তালিকা সংবলিত লিফলেটও বিতরণ করা হলো। বলা হলো, কেলভিন ক্লেইনের পোশাক বর্জন করা উচিত। কেননা, তারা ইসরায়েলের সঙ্গে ব্যবসা করে। আদতে দেখা গেল, তেহরানে বিলবোর্ডগুলোতে, যেখানে এক সময় আয়াতুল্লাহ খোমেনি আর ইরান-ইরাক যুদ্ধে নিহত সেনাদের ছবি শোভা পেত, সেখানে ঝুলছে কেলভিন ক্লেইনের বিজ্ঞাপন। যদিও ক্লেইন কিংবা ভিক্টোরিয়াস সিক্রেটরের মতো মার্কিন কোম্পানিগুলোর ইরানে ব্যবসা নিষিদ্ধ অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞার কারণে। কিন্তু ইরানি ব্যবসায়ীদের কল্যাণে মার্কিন ব্র্যান্ড পণ্যে দেশটির বাজার সয়লাব। এই ব্যবসায়ীরা বিদেশ থেকে এসব পণ্য কিনে এনে তাদের দোকানে বিক্রি করেন। অনেক ক্ষেত্রে ব্র্যান্ডের নাম বদলে। ইরানের তরুণ শ্রেণীর কাছে আমেরিকার ব্র্যান্ড দারুণ জনপ্রিয়। ২৫ বছর আগে আয়াতুল্লাহ তথাকথিত খোমেনির নেতৃত্বে ইসলামী বিপ্লব দেশটির ২ হাজার ৫০০ বছরের রাজতন্ত্রের অবসান ঘটিয়েছিল। শাহ এবং খোমেনি- দু’আমলেই দেখেছেন এমন অনেক ইরানী মনে করেন, দেশ এখন শাহের আমলের মতোই। কেবল ‘মেয়েদের মাথার স্কার্ফ আর আমেরিকার নিপাত যাক’ এই ে াগান বাদে। বিপ্লব-পরবর্তী মেয়েদের পোশাকের ব্যাপারে যে কড়াকড়ি ছিল তার অনেকটাই এখন শিথিল হয়ে গেছে। ইরানে নারীদের বাধ্যতামূলকভাবে ওভারকোট বা ‘রুপোশ’ পরতে হত। ইদানীং অপেক্ষাকৃত কমবয়েসী মেয়েদের রুপোশ ছোট হতে হতে উরুর উপরে উঠে গেছে। প্রতি বছরই তা কয়েক ইঞ্চি করে কমে যাচ্ছে। আর রুপোশগুলো সঙ্কুচিত হতে হতে এমন অবস্থায় পৌঁছেছে যে সেগুলো বরং নারীদেহের ভাঁজগুলোকে আরো স্পষ্ট করে। ঢিলা স্যালোয়ারের জায়গায় উঠে এসেছে টাইট জিন্স। জিন্সগুলোও ক্রমেই উপরের দিকে উঠছে। পশ্চিমা এক সাংবাদিক কথা বলছিলেন ইরানী মহিলাদের সঙ্গে। একজন বললেন, ‘ক’দিন পরেই তোমার আমার মাঝে বলার মতো কোন পার্থক্য থাকবে না।’ ইরানের বদলে যাওয়ার দৃশ্যটা আরো পরিষ্কার ধরা পড়ে রাজপথগুলোতে। তেহরান পৃথিবীর মধ্যে অন্যতম কসমোপলিটন শহর। রাজপথে রাজ্যের যত গাড়ি। ড্রাইভিং সিটে অসংখ্য নারী। আরব দেশগুলোতে এ দৃশ্য বিরল। বিপ্লব-পরবর্তী সময়ে চেকপয়েন্টগুলোতে ধর্মীয় পুলিশ স্কোয়াড রাতেরবেলা পাহারা দিত। স্বামী কিংবা আত্মীয় ছাড়া কোনো নারী গাড়ি চালিয়ে গেলেই তাকে আটক করা হতো। এখন ইরানের রাজপথে সেই নীতিরক্ষকরা আর নেই। সে জায়গায় এসেছে ট্রাফিক পুলিশ আর মিটার পরিদর্শক। তারা ব্যস্ত রাজপথ শৃঙ্খলা রক্ষার কাজে। ইরানে যেকোনো বয়সী নারী-পুরুষ গাড়ি ড্রাইভ করতে পারে। কাজেই সড়ক দুর্ঘটনার হারও বিশ্বের মধ্যে অন্যতম। ইরানের রাজধানীর রাজপথগুলোর দু’পাশে বিলবোর্ডে ফার্সি আর ইংরেজীতে উৎকীর্ণ ‘সিটবেল্ট বাঁধা বাধ্যতামূলক।’ নতুন ট্রাফিক পুলিশরা এখন পুরুষ বা আত্মীয় নয়, সিটবেল্টটা ঠিকমতো বাঁধা আছে কি না সেটাই তদারকি করে। রাত ৯টার পর তেহরানের রাজপথে নরক গুলজার। ট্রাফিক পুলিশরা ব্যারাকে ফিরে যায় এ সময়। কাজেই ডানে-বামে, সামনে-পেছনে ইচ্ছেমতো চলতে থাকে গাড়ি। ইরানের তরুণদের কাছে এ সময়টা বিশেষ প্রিয়। বিশেষত বৃহস্পতিবার রাতে আফ্রিকা বুলভার্ড এবং অন্যান্য রাজপথে তরুণরা রাস্তায় জ্যাম বাঁধিয়ে বিপরীত লিঙ্গের মনোযোগ আকর্ষণের প্রতিযোগিতায় নামে। জ্যামে আটকে পড়া গাড়ির জানালায় মাথা গলিয়ে চলতে থাকে টুকরো টুকরো প্রেমালাপ, মোবাইল ফোনের নম্বর বিনিময়। ভাগ্যের শিকে ছিঁড়লে সেখান থেকেই তেহরানের বাইরে পিজা পার্লারগুলোয় ডেটিং। জনসম্মুখে ডেটিং তেহরানে এখন চোখ সওয়া ব্যাপার। পিতামাতার সম্মতি থাকলেই চলে। বিপ্লবের প্রথম দিকে স্বামী-স্ত্রী ছাড়া কোন জুটির হাত ধরে হাঁটার সাহস ছিল না। সিনেমা হলগুলোতে পরিদর্শকরা টর্চ জ্বালিয়ে দেখতো কোনো অভদ্র আচরণ হচ্ছে কিনা। উপরন্তু মোট বিয়েশাদীর অর্ধেকরই হতো পারিবারিক আয়োজনে। আর এখন ইরানীরাই বলে, হাত ধরাধরি করে হেঁটে যাওয়া জুটিদের অধিকাংশই অবিবাহিত। প্রেমের বিয়ের সংখ্যা কেবলই বাড়ছে। থিয়েটারেও এখন আর কেউ টর্চ জ্বালিয়ে তদারকি করে না। আর ইরানের সিনেমা হলগুলোতে এখন চলে ‘কিল বিল’ বা ‘ফারেনহাইট ৯/১১’র মতো, হলিউডের সদ্য মুক্তি পাওয়া সেক্সুয়াল সিনেমা। সরকারের অবস্থা তথৈবচ। পশ্চিমা সাংস্কৃতির আগ্রাসনের বিরুদ্ধে ক্রমাগত প্রচারণা চালিয়ে সরকার এখন দেখেও না দেখার ভান করতে হচ্ছে। এক সময় পশ্চিমা সংগীত, সিনেমা বা ফ্যাশনের সিডি খুঁজতে হতো চোরাকারবারীদের কাছে। এখন শহরের সবচেয়ে পশ সুপার মার্কেটগুলোতে থরে থরে সাজানো থাকে ব্রিটনি স্পিয়ার্স বা অ্যামিনেম।  এরপরও ইরানের বদলে যাওয়া থেমে নেই। সুপার মার্কেটগুলোতে ক্যানভর্তি শুকরের গোশ্ত থেকে শুরু করে একান্ত রক্ষণশীল ব্যক্তির মোবাইল ফোনে হালে মুক্তি পাওয়া গানের রিংটোন সবই চোখে পড়বে পথ চলতে। এ রিপোর্টটিতে অত:পর মন্তব্য করা হয়েছে, “ইরানের সরকার আসলে সংস্কৃতির প্রশ্নে দ্বিধাবিভক্ত। সংস্কৃতি পালনের স্বাধীনতা কতটুকু হবে তা তারা নিশ্চিত নয়।” মূলত: এর পিছনে একটাই কারণ। তাহলো আসলে ইরানে ইসলামী বিপ্লব হয়নি। খেলাফত কায়িম হয়নি। হয়েছে একটি বাতিল ফিরক্বার বিকৃত ধর্মচিন্তার প্রয়োগ। যা কুরআন-সুন্নাহ  ভিত্তিক ছিলো না যা খালিছ আল্লাহ পাক-এর জন্য ছিলোনা। ছিল মনগড়া বাতিল ফিরক্বা শিয়া রাষ্ট্র গঠনের গাইরুল্লাহ জনিত প্রবণতা।  মূলত: এটি ছিল ইসলামের নামে শিয়া বিপ্লব। যে কারণে তারা ইসলামের লেবেল আঁটলেও পাশ্চাত্য ভাবধারাকেও সংযুক্ত করেছে। তাতে করে ইসলামী প্রচারণা চালালেও সত্যিকার ইসলামী চেতনা সেখানে প্রসারিত হয়নি। ইরানের বর্তমান অনৈসলামী ভাবধারার ফুঁসে উঠা গর্জন তারই প্রমাণ।  মূলত: রাশিয়ার কমুনিস্ট পার্টির মত ইরানেও শিয়া রাষ্ট্র গঠনেও ছিলো ইহুদীদের গভীর ষড়যন্ত্র। ইসলামের নামে অনৈসলামী ভাবধারার প্রবর্তনের একটি মডেল। যাতে করে প্ররোচিত ও প্রতারিত হয় অন্যান্য সুন্নী প্রধান মুসলিম দেশ। নামধারী ইসলামী দল, ইসলামের নামে একটি চিহ্নিত জামায়াতসহ উলামায়ে ‘ছূ’র সে ফাঁদে পা দিলেও শিয়াদের বিরুদ্ধে নিশ্চুপ থাকলেও আল্লাহ পাক-এর অশেষ রহমতে জামানার তাজদীদী মুখপত্র আল বাইয়্যিনাত ঠিকই প্রকৃত সত্য উচ্চারণ করে যাবে ইনশাআল্লাহ।

-মুহম্মদ মাহবুবুর রহমান, ঢাকা।

যুগের আবূ জাহিল, মুনাফিক ও দাজ্জালে কায্যাবদের বিরোধিতাই প্রমাণ করে যে, রাজারবাগ শরীফের হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী হক্ব। খারিজীপন্থী ওহাবীদের মিথ্যা অপপ্রচারের  দাঁতভাঙ্গা জবাব- ১৫

 বিৃটিশ গুপ্তচরের স্বীকারোক্তি এবং ওহাবী মতবাদের নেপথ্যে বিৃটিশ ভূমিকা-১৫ 

কোকাকোলা ও অন্যান্য কোমল পানীয় সম্পর্কে উন্মোচিত সত্য-৩

চাঁদের তারিখ নিয়ে জাহিলী যুগের বদ প্রথার পুনঃপ্রচলন॥ নিশ্চুপ উলামায়ে ‘ছূ’ ঈদ, কুরবানীসহ জামিউল ইবাদত হজ্জও হচ্ছে বরবাদ

শুধু ছবি তোলা নিয়েই বড় ধোঁকা নয়, গণতান্ত্রিক শাসনতন্ত্র চর্চা করে “ইসলামী শাসনতন্ত্র আন্দোলনের” নামেও তিনি মহা ধোঁকা দিচ্ছেন