ফতওয়া বিভাগ- গবেষণা কেন্দ্র মুহম্মদিয়া জামিয়া শরীফ হানাফী মাযহাব মতে পুরুষের জন্য লাল রংয়ের পোশাক তথা রুমাল, পাগড়ী, কোর্তা, লুঙ্গি, চাদর ইত্যাদি পরিধান বা ব্যবহার করা হারাম ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া-৮

সংখ্যা: ১৬০তম সংখ্যা | বিভাগ:

প্রকাশিত ফতওয়াসমূহ

[সমস্ত প্রশংসা আল্লাহ রব্বুল আলামীনের জন্যে এবং অসংখ্য দরূদ ও সালাম আল্লাহ পাক-এর হাবীব, আখিরী রসূল, হুযুর পাক ছল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর প্রতি। মহান আল্লাহ পাক-এর অশেষ রহমতে গবেষণা কেন্দ্র “মুহম্মদিয়া জামিয়া শরীফ”-এর ফতওয়া বিভাগের তরফ থেকে, বহুল প্রচারিত, হজ্বের অতন্দ্র প্রহরী, বাতিলের আতঙ্ক ও আহলে সুন্নত ওয়াল জামায়াতের আকীদায় বিশ্বাসী এবং হানাফী মাযহাব-এর অনুসরণে প্রকাশিত একমাত্র দলীল ভিত্তিক মুখপত্র “মাসিক আল বাইয়্যিনাত” পত্রিকায় যথাক্রমে ১. টুপির ফতওয়া (২য় সংখ্যা) ২. অঙ্গুলী চুম্বনের বিধান (৩য় সংখ্যা) ৩. নিয়ত করে মাজার শরীফ যিয়ারত করা (৪র্থ সংখ্যা) ৪. ছবি ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় হারাম হওয়ার ফতওয়া (৫ম-৭ম সংখ্যা) ৫. জুমুয়ার নামায ফরষে আইন ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয়ে ফতওয়া (৮ম-১০ম সংখ্যা) ৬. মহিলাদের মসজিদে গিয়ে জামায়াতে নামায পড়া মাকরূহ তাহরীমী সম্পর্কে ফতওয়া (১১তম সংখ্যা) ৭. কদমবুছী ও তার প্রাসঙ্গিক বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (১২তম সংখ্যা) ৮. তাহাজ্জুদ নামায আমায়াতে পড়া মাকরূহ তাহরীমী ও বিদয়াতে সাইয়ি‍্যয়াহ এবং তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (১৩তম সংখ্যা) ৯. ফরয নামাযের পর মুনাজাত ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (১৪-২০তম সংখ্যা) ১০. ইনজেকশন নেয়া রোযা ভঙ্গের কারণ ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (২১-২২তম সংখ্যা) ১১. তারাবীহ-এর নামাযে বা অন্যান্য সময় কুরআন শরীফ খতম করে উজরত বা পারিশ্রমিক গ্রহণ করা জায়িয ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (২৩-২৪তম সংখ্যা) ১২. তারাবীহ নামাষ বিশ রাকায়াত ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (২৫-২৯তম সংখ্যা) ১৩. দাড়ী ও গোঁফের শরয়ী আংকাম ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (৩০-৩৪তম সংখ্যা) ১৪. প্রচলিত তাবলীগ জামায়াত ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (৩৫-৪৬তম সংখ্যা) ১৫. আযান ও ছানী আযান মসজিদের ভিতরে দেয়ার আহকাম এবং তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (৪৭-৫০তম সংখ্যা) ১৬. দোয়াল্লীন-যোয়াল্লীন-এর শরয়ী ফায়সালা এবং তার প্রাসঙ্গিক বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (৫১-৫২তম সংখ্যা) ১৭. খাছ সুন্নতী টুপি ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (৫৩-৫৯তম সংখ্যা) ১৮. নূরে মুহম্মদী

ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ও তাঁর প্রাসঙ্গিক বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (৬০-৮২তম সংখ্যা) ১৯. ইমামাহ বা পাগড়ী মুবারকের আহকাম ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কিত ফতওয়া (৮৩-৯৬তম সংখ্যা) ২০. শরীয়তের দৃষ্টিতে আখিরী যোহর বা ইহতিয়াতুয যোহরের আহকাম এবং তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (৯৭-১০০তম সংখ্যা) ২১. জানাযা নামাযের পর হাত তুলে সম্মিলিতভাবে মুনাজাত করার শরয়ী ফায়সালা ও তার প্রাসঙ্গিক বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (১০১-১১১তম সংখ্যায়) এবং ২২. হিজাব বা পর্দা ফরযে আইন হওয়ার প্রমাণ ও তার প্রাসঙ্গিক বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (১১২-১৩১তম সংখ্যা) ২৩. খাছ সুন্নতী কুমীছ বা কোর্তা এবং তার প্রাসঙ্গিক বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া (১৪০তম সংখ্যা) ২৪. হানাফী মাযহাব মতে ফজর নামাযে কুনূত বা কুনুতে নাযেলা পাঠ করা নাজায়িয ও নামায ফাসিদ হওয়ার কারণ এবং তার প্রাসঙ্গিক বিষয়

সম্পর্কে ফতওয়া (১৩২-১৫২তম সংখ্যায়) পেশ করার পর-

২৫ তম ফতওয়া হিসেবে

“হানাফী মাযহাব মতে পুরুষের জন্য লাল রংয়ের পোশাক তথা রুমাল, পাগড়ী, কোর্তা, লুঙ্গি, চাদর ইত্যাদি পরিধান বা ব্যবহার করা হারাম ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া” শুরু করতে

পারায় মহান আল্লাহ পাক-এর দরবারে অসংখ্য শুকরিয়া।

হানাফী মাযহাব মতে পুরুষের জন্য লাল রংয়ের পোশাক তথা রুমাল, পাগড়ী, কোর্তা, লুঙ্গি, চাদর ইত্যাদি পরিধান বা ব্যবহার করা হারাম ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া দেয়ার উদ্দেশ্য

সুন্নতের পথিকৃত, হত্ত্বের অতন্দ্র প্রহরী, দ্বীন ইসলামের নির্ভীক সৈনিক, সারা জাহান থেকে কুফরী, শিরকী ও বিদয়াতের মূলোৎপাটনকারী, বাতিলের আতঙ্ক এবং আহলে সুন্নত ওয়াল জামায়াতের আক্বীদায় বিশ্বাসী একমাত্র দলীলভিত্তিক তাজদীদী মুখপত্র- “মাসিক আল বাইয়্যিনাত” পত্রিকায় এ যাবৎ যত লেখা বা ফতওয়াই প্রকাশ বা পত্রস্থ হয়েছে এবং ইনশাআল্লাহ হবে তার প্রতিটিরই উদ্দেশ্য বা মাকছুদ খালিছ হকু মত-পথ তালাশ করা বা ছহীহ ও সুন্নতী আমলের মাধ্যমে আল্লাহ পাক ও তাঁর হাবীব হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর রেজামন্দি বা সন্তুষ্টি হাছিল করা।

অর্থাৎ “মাসিক আল বাইয়িানাতে” এমন সব লেখাই পত্রস্থ হয়, যা মানুষের ছহীহ আক্বীদা লাভ ও আমলসমূহ পরিশুদ্ধ করণে বিশেষ সহায়ক।

প্রসঙ্গতঃ ‘মাসিক আল বাইয়্যিনাতে’ “হানাফী মাযহাব মতে পুরুষের জন্য লাল রংয়ের পোশাক তথা রুমাল, পাগড়ী, কোর্তা, লুঙ্গি, চাদর ইত্যাদি পরিধান বা ব্যবহার করা হারাম ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া” দেয়ার মাকছুদ এবং উদ্দেশ্যও ঠিক তাই।

স্মর্তব্য যে, মহান আল্লাহ পাক পবিত্র কালামে পাঁকে ‘সূরা মায়িদা’র’ ৮২নং আয়াত শরীফে ইরশাদ করেন,

لَتَجِدَنَّ أَشَدَّ النَّاسِ عَدَاوَةٌ لِلَّذِينَ آمَنُوا الْيَهُودَ وَالَّذِينَ أَشْرَكُوا.

অর্থঃ-“তোমরা তোমাদের সবচেয়ে বড় শত্রু হিসেবে পাবে ইহুদীদেরকে। অতঃপর যারা মুশরিক তাদেরকে।”

বিশেষতঃ বর্তমানে ইহুদীদের এজেন্ট হিসেবে মুসলমানদের ঈমান

আমলের সবচেয়ে বেশী ক্ষতি করছে যারা, তারা হলো- উলামায়ে ‘ছু’। উল্লেখ্য, ইহুদীদের এজেন্ট বাতিল মতাবলম্বী উলামায়ে ‘হু’রা হারাম টিভি চ্যানেল, পত্র-পত্রিকা, কিতাবাদি ও বক্তব্য বা বিবৃতির

মাধ্যমে একের পর এক হারামকে হালাল, হালালকে হারাম, জায়িযকে

নাজায়িয, নাজায়িষকে জায়িয বলে প্রচার করছে।

যেমন, তারা প্রচার করছে- ফরয নামাযের পর মুনাজাত করা

বিদয়াত ও হারাম, নিয়ত করে রওযা শরীফ ও মাযার শরীফ যিয়ারত করা শিরক, কদমবুছী করা নাজায়িয ও শিরক, মাযহাব মানার কোন প্রয়োজন নেই, পীর-মুরীদী শরীয়ত বিরোধী প্রথা, ঈদে মীলাদুন নবী পালন করা বিদয়াত, মীলাদ কিয়াম করা শিরক-বিদয়াত। শবে বরাত পালন করা বিদয়াত। তারাবীহ নামায জরুরী কোন নামায নয়, আট রাকায়াত তারাবীহ পড়লেই চলে ইত্যাদি ইত্যাদি। (নাউযুবিল্লাহ)

অথচ উল্লিখিত প্রতিটি বিষয়ই কুরআন শরীফ ও সুন্নাহ শরীফ তথা শরীয়তসম্মত এবং তন্মধ্যে কোনটা সুন্নত আবার কোনটা

ফরয।

পক্ষান্তরে উলামায়ে ‘ছু’ তথা দুনিয়াদার মাওলানারা ইসলামের নামে ছবি, টেলিভিশন, সিনেমা, নাটক, নোবেল, হরতাল, বেপর্দা হওয়া, নারী নেতৃত্ব মানা, ভোট দেয়া, রোযা অবস্থায় ইনজেকশন নেয়া, মহিলাদের জামায়াতের জন্যে মসজিদে যাওয়া, মহিলাদের বাইরে বের হওয়ার সময় হাত ও মুখ খোলা রাখা, হরতাল করা, লংমার্চ করা, গণতন্ত্র ও ভোট-নির্বাচন করা, ব্লাসফেমী আইন চাওয়া, মৌলবাদী দাবী করা, কুশপুত্তলিকা দাহ করা, টিভি চ্যানেলে প্রোগ্রাম বা অনুষ্ঠান করা ইত্যাদি নাজায়িয কাজগুলোকে জায়িয বলে প্রচার

করছে। (নাউযুবিল্লাহ) অর্থাৎ তাদের উদ্দেশ্য হচ্ছে, মুসলমানদেরকে ইসলাম থেকে সরিয়ে, ইবাদত থেকে সরিয়ে অনৈসলামিক ও হারাম

কাজে মশগুল করে দিয়ে বেঈমান করে দেয়া।

উল্লেখ্য, ইহুদীদের এজেন্ট, বাতিল মতাবলম্বী দাজ্জালে কাৰ্য্যাৰ তথা উলামায়ে ‘হু’রা উল্লিখিত বিষয়গুলোর ন্যায় ‘লাল রংয়ের

পোশাক বা রুমাল’ সম্পর্কেও সমাজে বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছে।

তারা বিভিন্ন পত্র-পত্রিকা, কিতাবাদী ও বক্তব্যের মাধ্যমে প্রচার করে বেড়াচ্ছে যে, ‘পুরুষের জন্য লাল রংয়ের পোশাক পরিধান বা ব্যবহার করা জায়িয।’ (নাউযুবিল্লাহ)

অথচ অসংখ্য, নির্ভরযোগ্য ও অকাট্য দলীলের দ্বারা সুস্পষ্টভাবে

প্রমাণিত যে, হানাফী মাযহাবের মুখতার বা গ্রহণযোগ্য ও

ফতওয়াগ্রাহ্য মতে পুরুষের জন্য লাল রংয়ের পোশাক পরিধান বা ব্যবহার করা হারাম তথা নিষিদ্ধ। অর্থাৎ সম্পূর্ণটা লাল হলে হারাম,

অধিকাংশ লাল হলে মাকরহ তাহরীমী ও কম লাল হলে মাকরূহ তানযীহী। আর যেহেতু হানাফী মাযহাব মতে লাল রংয়ের পোশাক

পরিধান করা পুরুষের জন্য হারাম। তাই এখন যারা তা পরিধান করবে তারা দায়িমীভাবেই হারাম কাজে লিপ্ত থাকবে। অর্থাৎ তারা হারাম কাজ করার গুণাহে গুণাহগার হবে। সাথে সাথে ‘সাদা রংয়ের রুমাল ব্যবহার করা খাছ সুন্নত” এ মহান সুন্নতের আমল থেকে সম্পূর্ণ মাহরুম হয়ে যাবে। অথচ সুন্নতের ইত্তিবাই হচ্ছে মহান আল্লাহ পাক ও তাঁর হাবীব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর খাছ রেযামন্দী বা সন্তুষ্টি লাভের একমাত্র মাধ্যম।

অতএব, যারা লাল রংয়ের পোশাক বা রুমাল সম্পর্কে ভুল, মনগড়া ও বিভ্রান্তিকর ফতওয়া দিয়ে মুসলমানদের ঈমান-আমল ধ্বংস করছে তাদের সেই ঈমান-আমল বিধ্বংসী ফতওয়া থেকে সাধারন মুসলমানদের ঈমান-আমল হিফাজতের লক্ষে ও লাল রুমাল সম্পর্কিত সঠিক ও দলীলভিত্তিক ফায়ছালা তুলে ধরার উদ্দেশ্যেই মাসিক আল বাইয়্যিনাতে “হানাফী মাযহাব মতে পুরুষের জন্য লাল রংয়ের পোশাক তথা রুমাল, পাগড়ী, কোর্তা, লুঙ্গি, চাদর ইত্যাদি পরিধান বা ব্যবহার করা হারাম ও তার সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া” দেয়া হলো। যাতে করে লাল রংয়ের পোশাক বা রুমাল সম্পর্কিত সঠিক ও দলীলভিত্তিক ফায়ছালা অবগত হয়ে সে অনুযায়ী আমল করে আল্লাহ পাক ও তাঁর হাবীব হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর সন্তুষ্টি লাভ করতে পারে। সাথে সাথে যারা লাল রংয়ের পোশাক বা রুমাল নিয়ে বিভ্রান্তিতে রয়েছে তারা বিভ্রান্তি থেকে বেঁচে হজ্বের উপর দায়িম-কায়িম থাকতে পারে।

14

হানাফী মাযহাব মতে পুরুষের জন্য লাল রংয়ের পোশাক নিষিদ্ধ হওয়ার প্রমাণ ও সিলেট খারিজী মাদ্রাসার ‘তথাকথিত মুফতী।’ ছাহেবের মনগড়া বক্তব্যের খন্ডনমূলক জাওয়াব

“আমাদের হানাফী মাযহাব মতে, পুরুষের জন্য সম্পূর্ণ বা অধিকাংশ লাল রংয়ের রুমাল বা কাপড় পরিধান করা হারাম ও মাকরূহ তাহরীমী, আর লালের ভাগ কম হলে মাকরূহ তানষীহী”- বাতিলের আতঙ্ক, যামানার তাজদীদী মুখপত্র মাসিক আল বাইয়্যিনাত-এর এ ফতওয়াই ছহীহ, গ্রহণযোগ্য, দলীলভিত্তিক ও কুরআন শরীফ, হাদীছ শরীফ, ইজমা ও কিয়াসসম্মত।

বলার অপেক্ষাই রাখে না যে, মাসিক আল বাইয়্যিনাত থেকে সংকলিত ফতওয়াটিই ছহীহ যা গ্রহণযোগ্য, দলীলভিত্তিক। অর্থাৎ কুরআন শরীফ, হাদীছ শরীফ, ইজমা ও কিয়াসসম্মত। কারণ উক্ত ফতওয়ায় নিজস্ব কোন মত পেশ করা হয়নি। বরং মাসিক আল বাইয়্যিনাত-এর বক্তব্যই হুবহু সংকলন করা হয়েছে মাত্র।

পক্ষান্তরে সিলেট কাসেমুল উলুম খারিজী মাদ্রাসার তথাকথিত মুফতী (!) ‘লাল রং’ সম্পর্কিত উক্ত ফতওয়াটি খণ্ডন করতে গিয়ে যে বক্তব্য পেশ করেছে তা সম্পূর্ণরূপে অশুদ্ধ, বিভ্রান্তিকর, দলীলবিহীন ও জিহালতপূর্ণ হয়েছে।

কথিত মুফতী ছাহেব ক্ষেত্র বিশেষে নিজের মনগড়া মতকে ছাবেত করার লক্ষ্যে কোন কোন হাদীছ শরীফ ও কিতাবের ইবারতের মনগড়া ও ভুল তরজমা ও ব্যাখ্যা দিয়েছে। অর্থাৎ তথাকথিত উক্ত মুফতী ছাহেব তার উক্ত ফতওয়ার মাধ্যমে থোকা

ও প্রতারণার চরম দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে।

মূলত: তথাকথিত উক্ত খারিজী, মুফতী (১) ছাহেব লাল রং

সম্পর্কিত আরবী শব্দের সঠিক অর্থ ও তাহক্বীকু সম্পর্কে অবগত না হওয়ার কারণে এবং হাদীছ শরীফ ও কিতাবের ইবারতসমূহের সঠিক ব্যাখ্যা ও মর্ম অনুধাবনে ব্যর্থ হওয়ার কারণেই লাল রং সম্পর্কে এরূপ 49 2 2 false Feast : 905 প্রদত্ত লাল রং সম্পর্কিত ছহীহ ও দলীলভিত্তিক ফতওয়াটি হৃদয়ঙ্গম করতে চরমভাবে ব্যর্থ হয়েছে।

(পূর্ব প্রকাশিতের পর)

তথাকথিত মুফতী (!) ছাহেবের ১২শ বক্তব্য

সিলেট খারেজী মন্দবাসার তথাকথিত মুফতী (!) ছাহেব আল্লামা মুল্লা আলী ক্বারী রহমতুল্লাহি আলাইহি-এর একখানা বক্তব্য খণ্ডন করতে

গিয়ে মনগড়া এলোমেলো ও স্ববিরোধী কিছু বক্তব্য দিয়েছে। অর্থাৎ সে জোড়া-ভালি দিয়ে প্রমাণ করার ব্যর্থ প্রয়াস চালিয়েছে যে, মুল্লা আলী ক্বারী রহমতুল্লাহি আলাইহি-এর মতে লাল রংয়ের কাপড় পরিধান করা মাকরুহ তানযীহীও নয়।”

তথাকথিত মুফতী (!) ছাহেবের ১২শ বক্তব্যের খণ্ডনমূলক জবাব

অথচ সে নিজেই তার তথাকথিত ও বিভ্রান্তিকর ফতওয়াতে স্বীকার করেছে ও লিখেছে যে, “… লাল কাপড়…. কেহ কেহ মাকরূহে তাহরীমীও বলেছেন। মুল্লা আলী ক্বারী রহমতুল্লাহি আলাইহিও তাঁদের মধ্যে একজন।…..।”

এর একটু পরে তথাকথিত মুফতী (1) ছাহেব আরো লিখেছে, “মোট কথা সর্ব প্রকার লাল কাপড়কে যে সব আলিম মাকরূহ তাহরীমী বলেছেন তাদের মধ্যে মুল্লা আলী ক্বারী রহমতুল্লাহি আলাইহিও একজন।”

তথাকথিত মুফতী (!) ছাহেবের উপরোক্ত স্বীকারোক্তি এটাই প্রমাণ করে যে, সর্ব প্রকার লাল রংয়ের কাপড় পরিধান করা মাকরূহ তাহরীমী এটাই মুল্লা আলী ক্বারী রহমতুল্লাহি আলাইহি-এর চূড়ান্ত অভিমত। যদি তাই হয়ে থাকে তবে তথাকথিত মুফতী (1) ছাহেবের উদ্ধৃত-

لو سلم …… أو لبيان الجواز.

‘জামউল ওসায়েলের’ উপরোক্ত বক্তব্যের কি গুরত্ব থাকতে পারে? তাছাড়া উক্ত ইবারতে স্পষটভাবেই উল্লেখ আছে যে, “যদি মেনে নেয়া হয়” অর্থাৎ “” দ্বারা যদি “লাল জোড়া” মেনে নেয়া হয়।”

কিন্তু মুল্লা আলী কারী রহমতুল্লাহি আলাইহি তো “حلة حمراء” দ্বারা লাল জোড়া মেনে নেননি।” বরং তিনি “حلة حمراء” এর তা’বীলী অর্থ গ্রহণ করেছেন। যেমন এ প্রসঙ্গে ‘মিরকাত শরীফ’-এর ৮ম জিঃ ২৪৩ পৃষ্ঠায় উল্লেখ আছে,

[৩৫৮]

قلت: هو موول عند أبي حنييفة وأصحابه بانها منسوجة بخطوط حمر كما هو شان البرود اليمانية. অর্থঃ- আমি (মুল্লা আলি ক্বারী রহমতুল্লাহি আলাইহি) বলি, ইমাম আবু হানীফা রহমতুল্লাহি আলাইহি ও তাঁর অনুসারীগণের অভিমত হলো “حله حمراء” সম্পর্কিত হাদীছ শরীফ খানা তা’বীলযোগ্য বা ব্যাখ্যা স্বাপেক্ষ। সে মতে, “لة حمراء” হলো সোনালী বা গন্ধম রংয়ের রেখা বিশিষ্ট এক জোড়া পোষাক। এটাই ইয়ামানী পোষাকের বিশেষ বৈশিষ্ট।”

“শামায়িলে তিরমিযীর শরাহ জামউল ওয়াসায়িল”-এর ১ম জিঃ ১১৫ পৃষ্ঠায় উল্লেখ আছে, [৩৫৯-৩৬০]

المراد بالحلة الحمراء في الحديث بردان یمانیان منسوجان بخطوط حمر مع سود كسائر البرود اليمانية … والا فلاحمر البحث منهى عنه ومكروه البس الحديث اخرجه ابو داود من حديث عبد الله بن

عمرو অর্থ ‘হাদীছ শরীফে বর্ণিত “حلة حمراء” এর অর্থ হলো সোনালী বা গন্ধম রংয়ের সাথে কালো রংয়ের রেখা বিশিষ্ট এক জোড়া ইয়ামানী পোষাক। ইয়ামানী সমস্ত পোষাকগুলো এরূপই হয়ে থাকে। অর্থাৎ বা কখনোই লাল হয়না কেননা “আবূ দাউদ শরীফে বর্ণিত হযরত আবদুল্লাহ বিন আমর রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম-এর হাদীছ শরীফ দ্বারা সম্পূর্ণ লাল রংয়ের কাপড় পরিধান করা নিষিদ্ধ ও মাকরূহ তাহরীমী

প্রমাণিত হয়।”

অতএব, প্রমাণিত হলো যে, লাল রংয়ের পোষাক পরিধান করা

মাকরূহ তাহরীমী এটাই হযরত মুল্লা আলী ক্বারী রহমতুল্লাহি আলাইহি-এর চূড়ান্ত অভিমত। আর এ ব্যাপারে তাঁর দলীল হচ্ছে,

আবূ দাউদ শরীফে বর্ণিত হযরত আব্দুল্লাহ বিন আমর রদ্বিয়াল্লাহ তায়ালা আনহু-এর হাদীছ শরীফ। যেমন তিনি উক্ত হাদীছ শরীফের ব্যাখ্যায় “মিরকাত শরীফের’ ৮ম জিঃ ২৫৭ পৃষ্ঠায় লিখেন,

[৩৬১]

فهذا دليلٌ صَرِيحٌ عَلَى تَحْرِيمِ لِّيْسِ التَّوْبِ الْأَحْمَرِ

অর্থঃ (হযরত আব্দুল্লাহ বিন আমর রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু হতে

বর্ণিত) এ হাদীছ শরীফখানা পুরুষদের জন্য লাল রংয়ের পোশাক হারাম বা নিষিদ্ধ হওয়ার সুস্পষ্ট দলীল।”

কাজেই হযরত মুল্লা আলী কারী রহমতুল্লাহি আলাইহি-এর এ চূড়ান্ত অভিমতকে যদি রদ করতে হয় তবে তার বিপরীতে এরূপ সুস্পষ্ট বক্তব্য বা ইবারত উল্লেখ করতে হবে। “যদি মেনে নেয় হয়।” এরূপ অস্পষ্ট ও সন্দেহজনক বক্তব্য দ্বারা উপরোক্ত সুস্পষ্ট ও চূড়ান্ত বক্তব্য কখনোই। রদ হতে পারেনা। সুতরাং তথাকথিত মুফতী (!)। ছাহেব যদি সত্যবাদী হয়ে থাকে তবে সে মুল্লা আলী কারী রহমতুল্লাহি আলাইহি-এর এরূপ একটি বক্তব্য উল্লেখ করুক যেখানে সুস্পষ্টভাবে একথা উল্লেখ আছে যে, মুল্লা আলী ক্বারীর মতে লাল রংয়ের পোষাক

পরিধান করা জায়িষ। মুলতঃ তথাকথিত মুফতী (1) ছাহেব তা কোন দিনও পারবেনা। আর পারবেনা বলেই সে স্বীকার করতে বাধ্য হয়েছে যে, “মোট কথা সর্ব প্রকার লাল কাপড়কে যেসব আলিম মাকরূহ তাহরীমী বলেছেন তাদের মধ্যে মুল্লা আলী ক্বারী রহমতুল্লাহি আলাইহিও একজন।

তথাকথিত মুফতী ছাহেবের ১৩শ বক্তব্য

তথাকথিত মুফতী (!) হাহেবের বক্তব্য হলো- উল্লেখিত ফতওয়ায় ইচ্ছে করেই মনে হয়…….. আল্লামা শামীর মন্তব্যগুলো এড়িয়ে গেলেন।…… তাছাড়া তানবীরুল আবছারের উল্লিখিত ইবারত দ্বারাও মুফতী (!) ছাহেবের উদ্দেশ্য সাবিত হচ্ছে না। কেননা তার দাবী মতে সর্ব প্রকার লাল রংয়ের কাপড় পুরুষের জন্য মাকরূহে তাহরীমী। অথচ উক্ত ইবারতে সর্ব প্রকার লাল রং-এর কথা বলা হয় নাই। বরং উসফুর ও জাফরান হারা রঙানো লালের কথা বলা হয়েছে।”

তথাকথিত মুফতী  ছাহেবের ১৩শ বক্তব্যের খণ্ডনমূলক জবাব

উল্লেখিত ফতওয়ায় ‘তানবীরুল আবছারের’ ইবারতে মোটেও কারচুপি করা হয়নি। এটা তথাকথিত মুফতী (!) ছাহেবের একটি মিথ্যা অভিযোগ বৈ কিছুই নয়। কারণ সে তার ফতওয়ায় প্রমাণ করতে পারে নাই যে, তানবীরুল আবছারের কোন কোন বক্তব্য কারচুপি করা হয়েছে।

মুলতঃ যে যেরূপ সে অপরকেও তদ্রুপ মনে করে থাকে। অর্থাৎ তথাকথিত মুফতী (!) ছাহেব যেহেতু ইবারত কারচুপিতে বিশেষভাবে পারদর্শি তাই সে অপরকেও এরূপ ভাবছে। হাক্বীকৃত তথাকথিত মুফতী (1) ছাহেবই তার তথাকথিত ফতওয়ায় “দুররুল মুখতারের” বক্তব্য উল্লেখ করেছে ঠিকই কিন্তু আল্লামা শামীর চূড়ান্ত ফায়সালাকে ইচ্ছে করেই কারচুপি করে গোপন রেখেছে। কারণ তথাকথিত মুফতী ছাহেব ভাল করেই জানে যে, আল্লামা শামীর শর্বশেষ বা চূড়ান্ত ফায়ছালা যদি তুলে ধরা হয় তবে তথাকথিত মুফতী (1) ছাহেবের তথাকথিত ফতওয়ার কোন ভিত্তিই থাকেনা এবং তার লাল রংকে জায়িয করার মত হীন স্বার্থ চরিতার্থ করারও কোন উপায় থাকেনা। কাজেই তথাকথিত যুফতী (!) ছাহেব যেন তার হীনস্বার্থ চরিতার্থ করার কোন সুযেশ না পায়। তাই তার কারচুপি মূলক চেহারাটি জনসম্মুখে উন্মোচন করে দেয়া হলো।

তথাকথিত মুফতী  ছাহেব উদ্ধৃত ‘দুররুল মুখতারের’ ইবারতটি হলো-

كره ليس المعصفر والمزعفر الأحمر والأصفر للرجال مفاده أنه لا يكره للنساء ( ولا باس بائر الألوان) وفي المجتبى والقهستاني وشرح النقايه لابي المكارم لا باس بلبس الثوب الاحمراه ومفاده ان الكراهة تنزيهية لكن صرح في التحفة بالجهة فاقاد أنها تحريمية وهي المحمل عند الاطلاق قاله المصنف قلت: وللشرنبلالي فيه رسالة نقل ثمانية. اقوال منها انه مستحب (الدر المختار على هامش

الرد ج ۲ ص ۳۵۸)

ফিক্বাহের বিখ্যাত ‘রদ্দুল মুহতার” এর ৯ম জিঃ ৫১৬ পৃষ্ঠায় আল্লামা শামী লাল রং সম্পর্কে বিভিন্ন জনের বিভিন্ন মত উল্লেখ করার পর চূড়ান্ত ফায়ছালা দিয়ে বলেন,

[৩৬২-৩৬৭)

اقبول ولكن جل الكتب على الكراهة كالسراج والمحيط والاختيار المنتقى والذخيرة وغيرها وبه افتى العلامة قاسم.

অর্থঃ- “(লাল রং সম্পর্কে যদিও অনেক অনেক মত পেশ করেছে) কিন্তু আমি বলছি, বড় বড় (হানাফী ফিক্বাহের) কিতাব যেমন, সিরাজুল ওয়াহহাজ, মুহীত, ইখতিয়ার, মুনতাকা, জথীরাসহ আরো অন্যান্য কিতাব সমূহে মাকরূহ তাহরীমী হওয়ার ব্যাপারেই ফতওয়া দেয়া হয়েছে। আর (হানাফী মাযহাবের বিখ্যাত ফক্বীহ) আল্লামা কাসিম রহমতুল্লাহি আলাইহি এর উপরই ফতওয়া দিয়েছেন।”

অর্থাৎ আল্লামা শামীর মতে, লাল রং সম্পর্কে অনেকে অনেক মত

পেশ করলেও বিশুদ্ধ বা ফতওয়াগ্রাহ্য ও মুখতার মত হলো লাল রংয়ের পোষাক পরিধান করা মাকরহ তাহরীমী। তথাকথিত মুফতী (!) ছাহেব দুররুল মুখতার ও শামী কিতাব থেকে লম্বা লম্বা দুটি ইবারত উল্লেখ করল। কিন্তু ফতওয়ায়ে শামীর এ ইবারতটি গোপন করলো কেন? আশা করি তা স্পষ্ট করে বলার কোনই প্রয়োজন নেই।

দ্বিতীয়তঃ উল্লেখিত ফতওয়ায় সর্বপ্রকার লাল রংয়ের পোষাক মাকরূহ তাহরীমী একথা প্রমাণ করার জন্যে শুধুমাত্র তানবীরুল আবছারের ইবারতই উল্লেখ করা হয়নি। বরং সাথে সাথে খুলাছাতুল

ফতওয়া ও ফতওয়ায়ে বাজ্জাজিয়ার ইবারতও উল্লেখ করা হয়েছে। আর উল্লিখিত তিনখানা কিতাবের বক্তব্য দ্বারা সর্ব প্রকার লাল রং

অবশ্যই মাকরুহ প্রমাণিত হয়। যেমন ‘তানবীরুল আবছারের’ ইবারতে উল্লেখ আছে,

[৩৬৮।

وكره ليس المعصفر والمزعفر الأحمر والأصفر للرجال

” লাল রং ও হলুদ রংয়ের পোষাক পরিধান করা মাকরূহ তাহরীমী।” অর্থাৎ এ ইবারতে উছফুর দ্বারা রঙানো লাল ও জাফরানী লাল রংয়ের কথা উল্লেখ আছে।

আর ‘বুলাছাতুল ফতওয়ার’ ইবারতে উল্লেখ আছে,

[৩৬৯]

ويكره ان يلبس الثياب المصبوغة بالعصفر او الزعفران او الورس

অর্থঃ কুসুম বা উছফুর দ্বারা রঙানো লাল, জাফরানী লাল ও ওয়ারস দ্বারা রঙানো লাল রংয়ের কাপড় পরিধান করা মাকরুহ তাহরীমী। এ

1397 ورس ফতওয়ায়ে বাজ্জাজিয়ার ইবারতে উল্লেখ আছে,

[৩৭০)

والورس ويكره الثياب المصبوغة بالزعفران والعصفر

অর্থঃ- জাফরান দ্বারা রঙিত, উছফুর দ্বারা রঙিত ও ওয়ারস বা সাধারণ লাল রং দ্বারা রঙিত কাপড় পরিধান করা মাকরূহ তাহরীমী। অনুরূপ ফতওয়ায়ে কাজীখানেও” উল্লেখ আছে।

অতএব, উল্লিখিত কিতাব সমূহের বক্তব্য দ্বারা মুলতঃ সর্বপ্রকার

লাল রং যেমন- উছফুর দ্বারা রঙানো লাল, জাফরানী লাল ও ওয়ারস

বা সাধারণ লাল রংয়ের পোষাক পরিধান করা মাকরূহ তাহরীমী

প্রমাণিত হয়।

তথাকথিত মুফতী (1) ছাহেব এখানে আরেকটি প্রতারণা ও জালিয়াতি করেছে। সে শুধু মাত্র ‘তানবীরুল আবছারের’ ইবারত উল্লেখ করেছে। খুলাছাতুল ফতওয়া, কাজীখান ও বাজ্জাজিয়ার ইবারতগুলো উল্লেখ করেনি। কারণ সে জানে যে, সেগুলো উল্লেখ করলে এবং সঠিক অর্থ ও ব্যাখ্যা করলে তার হাক্বীকৃত জাহির হয়ে যাবে। তাই সে এরূপ প্রতারণা ও জালিয়াতির আশ্রয় নিয়েছে।

তাছাড়া উক্ত ফতওয়ায় উল্লিখিত ইবারতগুলো উল্লেখ করার পর ‘জামউল ওসায়েল’ থেকে নিম্নোক্ত ইবারত উল্লেখ করা হয়েছে,

[৩৭১]

والتحقيق في هذا المقام ان النهي عن لبس الثوب الاحمر

অর্থঃ- এক্ষেত্রে সঠিক তাহক্বীক্ব বা ফয়সালা হলো লাল কাপড় পরিধান করা সম্পূর্ণই নিষিদ্ধ।” সুবিধাবাদী তথাকথিত মুফতী (!) ছাহেব উক্ত ইবারতের ব্যাপারে কোন কথাই বলেনি। বরং সম্পূর্ণ পাশ কেটে গেছে। কারণ উক্ত ইবারতটি তার সকল বক্তব্যের মূলে কুঠারাঘাত করেছে।

তবে তথাকথিত মুফতী (1) ছাহেব ‘ফতওয়ায়ে মাহমুদিয়ার’ ইবারতের ব্যাপারে কিছু বললেও উক্ত ইবারতের ভুল ব্যাখ্যা দিয়েছে। সে বলেছে “উক্ত কিতাবে খালেছ লাল কাপড় পুরুষদের জন্য মাকরহ বলা হয়েছে অন্য বর্ণ মিশ্রিত লাল কাপড়কে নিষিদ্ধ বলা হয়নি।”

মাহমুদ্দিয়ার” কোথায় উল্লেখ আছে অন্য বর্ণ বিশ্রিত, লাল কাপড় মাকরূহ নয়? যদি সে সত্যবাদিই হতো তবে উক্ত বক্তব্যের পক্ষে দলীল পেশ করলো না কেন?

মুলতঃ ফতওয়ায়ে মাহমুদিয়ার উক্ত ইবারতে অন্য বর্ণ মিশ্রিত লাল কাপড় জায়িয একথা বলা হয়নি। বরং খালিছ লাল রংও যে নিষিদ্ধ সেটাই বুঝানো হয়েছে।

তথাকথিত মুফতি (1) ছাহেবের ১৪শ বক্তব্য

সিলেট খারেজী মাদরাসার তথাকথিত মুফতী (!) ছাহেব উক্ত ফতওয়ায় প্রদত্ত “দলীলসমূহ” শিরোনামের সমালোচনা করতে গিয়ে লিখেছে- “আমরা চ্যালেঞ্জ সহকারে বলতে পারি যে, তাঁর দেয়া তালিকার কোন একটি কিতাব দ্বারা অন্য রং মিশ্রিত লাল কাপড়কে পুরুষের জন্য মাকরূহ তানমীহী প্রমাণ করতে পারবে না।

  • বরং মজার ব্যাপার হচ্ছে যে, তিনি তার তালিকায় এমন কটি কিতাবের নাম উল্লেখ করেছেন যেগুলোতে নিরেট লাল কাপড়কেও – পুরষের জন্য জায়িয বলা হয়েছে।

তথাকথিত মুফতী (1) ছাহেবের ১৪শ বক্তব্যের খণ্ডনমূলক জবাব

সিলেট খারেজী মাদরাসার তথাকথিত মুফতী (!) ছাহেব নিজেকে যতটুকু চালাক বা চতুর ভাবে আসলে সে যে এর চেয়েও বেশী বোকা সেটা হয়ত তার জানা নেই। মূলতঃ তথাকথিত মুফতী (1) ছাহেব উপরোক্ত বক্তব্যের দ্বারা যে শুধু নিজেকে বোকাই প্রমাণ করেছে তা নয়

বরং সাথে সাথে নিজেকে চরম জাহেল হিসেবেও প্রমাণ করেছে। স্মর্তব্য যে, উল্লিখিত কিতাব সমূহ “অন্য রং মিশ্রিত লাল কাপড় মাকরূহ” প্রমাণ করার জন্যে দলীল হিসেবে উল্লেখ করা হয়নি। বরং সর্ব প্রকার লাল কাপড় পুরুষের জন্য নিষিদ্ধ ও গন্ধম বা সোনালী রংয়ের কাপড় জায়িয তা প্রমাণ করার জন্যেই তা উল্লেখ করা হয়েছে। আব উল্লিখিত কিতাব সমূহে অবশ্যই তা উল্লেখ আছে। যেমন উল্লিখিত দলীলসমূহ-

)ক) প্রথম দলীল হচ্ছে “বুখারী শরীফ” এ কিতাবে বর্ণিত حنه حمراء “হুল্লাতুল হামরা” সম্পর্কিত হাদীছ শরীফ দ্বারা প্রমাণিত হয়েছে যে, পুরুষের জন্য গন্ধম বা সোনালী রংয়ের কাপড় পরিধান করা জায়িষ তাছাড়া উক্ত বুখারী শরীফ ২য় জিঃ ৮৭০ পৃষ্ঠায় ১নং টিকায় উল্লেখ আছে,

[৩৭২-৩৭৩)

الثوب الأحمر اختلف في لبس الثياب المصبوغة IOS 2 احمر بالعصفر أو غيره قاباحها جماعة من الصحابة والتابعين و به قال الشافعي منعهما آخرون مطلقا قال البيهقى والصواب تحريم المعصفر عليه للاحاديث الصحيحة التي لو بلغت الشافعي لقال بها وقد أوصا الناس العمل بالحديث الصحيح ذكر ذالك في الروضة.

অর্থঃ- “উছফুর বা অন্য রং দ্বারা রঞ্জিত লাল রংয়ের কাপড় পরিধান করার ব্যাপারে মতভেদ রয়েছে। ইমাম শাফিয়ী রহমতুল্লাহি আলাইহি-এর মতে ছাহাবী ও তাবেয়ীদের এক জামায়াত তা মুবাহ বলেন। ছাহাবী ও তাবেয়ীদের অপর জামায়াত ll বা আমভাবে সর্বপ্রকার লাল কাপড় নিষিদ্ধ হওয়ার মত পেশ করেন। হযরত ইমাম বাইহাক্বী রহমতুল্লাহি আলাইহি বলেন, সঠিক ও বিশুদ্ধ মত হচ্ছে অসংখ্য ছহীহ হাদীছ শরীফ দ্বারা উহুফুর দ্বারা রঞ্জিত লাল কাপড় হারাম প্রমাণিত হয়। ইমাম শাফিয়ী রহমতুল্লাহি আলাইহি-এর নিকট যদি এ বর্ণনাগুলো পৌঁছতো তবে তিনিও তা হারাম ফতওয়া দিতেন। যেহেতু তিনি আমাদেরকে ছহীহ হাদীছ শরীফের উপর আমল করার ব্যাপারে ওহীয়ত করেছেন। অনুরূপ ‘রওযা’ কিতাবেও উল্লেখ আছে।

সুতরাং তথাকথিত মুফতী ছাহেব যে লিখেছে, ‘বুখারী শরীফের’ হাদীছ দ্বারা লাল কাপড় জায়িয প্রমাণিত হয়, তা সম্পূর্ণ মিথ্যা ও ভুল প্রমাণিত হলো। সাথে সাথে এটাও প্রমাণিত হলো যে, উল্লিখিত দলীল সমূহের প্রথম দলীল ‘বুখারী শরীফ’ দলীল হিসেবে সঠিকই রয়েছে। (খ) এরপর তাঁর উল্লিখিত দলীল সমূহের মধ্যে ১৮নং দলীল হচ্ছে

ফিকহের কিতাব ‘মূলতাক্বাত”। তথাকথিত মুফতী (1) ছাহেব উক্ত কিতাবে বর্ণিত ইবারতের মনগড়া ও ভুল অর্থ করেছে। যেমন ফতওয়ায়ে শামী ও আলমগীরীতে “মুলতাক্বাত”-এর বরাতে লিখা হয়েছে,

[৩৭৪-৩৭৬]

عن أبي حنيفة لاباس بالصبغ الأحمر والأسود

আমাদের হানাফীদের মতে উক্ত ইবারতের সঠিক ও গ্রহণযোগ্য অর্থ হলো, “হযরত ইমাম আবু হানাফী রহমতুল্লাহি আলাইহি থেকে বর্ণিত গন্ধম বা সোনালী ও কালো রংয়ের পোষাক পরিধান করতে কোন অসুবিধা নেই।

সুতরাং দলীল হিসেবে মুলতাত্ত্বাত কিতাবও সঠিক রয়েছে বলে প্রমাণিত হলো।

(গ) ‘শরাফুলালী’ তাঁর উল্লিখিত দলীলসমূহের মধ্যে ২২নং দলীল। শরাম্বলালী। ‘আহমার’ এর ব্যাপারে ৮টি মত পেশ করেছেন। তন্মধ্যে মাকরূহ হওয়ার মতও উল্লেখ আছে। আর উক্ত কিতাবে حمر। ‘আহমার’ মুস্তাহাব হওয়ার যে মত মনগড়া অর্থ করেছে। যেমন উত্ত কিতাবে উল্লেখ আছে,

[৩৭৭]

للشرنبلالي فيه رسالة نقل ثمانية أقوال، منها انه

আমাদের হানাফীদের মতে উক্ত ইবারতের সঠিক ও গ্রহণ যোগ্য অর্থ হলো শরাম্বুলালী একটি রেসালা লিখেছেন। সেখানে। ‘আহমার’ সম্পর্কে ৮টি মত উল্লেখ করেছেন। তন্মধ্যে একটি মত হলো সোনালী বা গন্ধম রং অর্থে । ‘আহমার’ মুস্তাহাব।

হানাফীগণ যে সকল বর্ণনা দ্বারা حمر। ‘আহমার’ বৈধ প্রমাণিত হয়। সে সকল বর্ণনাগুলো তা’বীলী অর্থে গ্রহণ করেছেন। কেননা حمر। শব্দটি লাল ছাড়াও গন্ধম সোনালী বা অন্য অর্থেও ব্যবহৃত হয়। যেহেতু হানাফী মাযহাবে সর্ব প্রকার লাল রং নিষিদ্ধ। আর গন্ধম বা সোনালী রং জায়িষ। তাই যে সকল বর্ণনায় । নাজায়িয বলা হয়েছে সেখানে । অর্থ হচ্ছে ‘লাল’। আর যেখানে । ক বৈধ বলা হয়েছে, সেখানে حمر। অর্থ হচ্ছে গন্ধম বা সোনালী রং। সুতরাং দলীল হিসেবে “শরাম্বুলালী’-এর নাম উল্লেখ করাও সঠিকই রয়েছে।

(ঘ) ‘মুজতবা’ উল্লিখিত দলীল সমূহের মধ্যে ২৪ নং দলীল যেমন- [৩৭৮] وفي المجتبى …… لا باس بليس التوب الاحمر

উক্ত ইবারতের সঠিক ও গ্রহণযোগ্য অর্থ হলো, মুজতবা কিতাবে বর্ণিত আছে, “গন্ধম বা সোনালী রংয়ের কাপড় পরিধান করতে কোন অসুবিধা নেই।”

কাজেই তথাকথিত মুফতী (!) ছাহেব উক্ত ইবারতে বর্ণিত আহমার “حمر।” শব্দের ‘লাল’ অর্থ করে চরম প্রতারণা করেছে। সুতরাং উল্লিখিত অর্থে ‘মুজতবা’ কিতাবের নাম দলীল হিসেবে সঠিকই রয়েছে।

(ঙ) তাঁর ১৫ নং দলীল হচ্ছে, ‘বযলুল মাজহুদ।” ‘বজলুল মাজহুদের’ ৬ষ্ঠ জিঃ ৪৯ পৃষ্ঠায় উল্লেখ আছে,

[৩৭৯]

وعند الآخرين مطلق الحمرة سواء كان من العصفرا و غیره مكروه.

অর্থঃ অপরাপর ফকীহগণের মতে সর্ব প্রকার লাল রং এর পোষাক পরিধান করাই মাকরূহ তাহরীমী।”

উক্ত খণ্ডের উক্ত পৃষ্ঠায় আরো উল্লেখ আছে,

[৩৮০]

وعلى أن للرجل لبس الأحمر على تحريم صريح وهذا دلیل

অর্থঃ পুরুষের জন্য লাল রংয়ের পোষাক পরিধান করা সুস্পষ্ট হারাম। )ثوبان احمران( এ হাদীছ শরীফই তার দলীল।”

অতএব, প্রমাণিত হলো যে, “বযলুল মাজহুদে” লাল কাপড় নিষিদ্ধ বা মাকরূহ হওয়ার বর্ণনা রয়েছে।

তথাকথিত মুফতী (!) ছাহেব এ ক্ষেত্রে বষলুল মাজহুদ থেকে যে ইবারত উল্লেখ করেছে তা গ্রহণযোগ্য নয়। কেননা কিতাবে তার বিপরীত মতও উল্লেখ আছে। যেমন “জামউল ওয়াসায়িল”-এর ১ম জিঃ ১৪৪ পৃষ্ঠায় উল্লেখ আছে,

[৩৮১]

و تحقيق القول فيها ان كانت من حرير غير حمراء ف اسعملها ممنوع لاجل انها من الحرير استعمال الحرير للرجال حرام لا سيما ان كانت مع ذالك حمراء وان كانت غير حرير فالنهي فيها.

অর্থঃ- এ ব্যাপারে মূল তাহক্বীক্বী ফায়ছালা হলো, যদি কাপড় লাল রং ব্যতীতই রেশমী হয় তবে তা রেশমী হওয়ার কারণে হারাম। যেহেতু পুরুষের জন্য রেশমী কাপড় হারাম। একই ভাবে যদি লাল রং সহ রেশমী কাপড় হয় তবেও হারাম। অনুরূপভাবে যদি রেশমী ছাড়া শুধু লাল রংয়ের কাপড় হয় তবে তাও নিষিদ্ধ বা হারাম।”

কাজেই তথাকথিত মুফতী (1) ছাহেব ‘বযলুল মাজহদের’ বরাতে যে লিখেছে, লাল কাপড় যদি রেশমী না হয়…… তাহলে হানাফীদের মতে জায়িয। তা সঠিক ও গ্রহণযোগ্য নয় বলে প্রমাণিত হলো সুতরাং দলীল হিসেবে ‘বষলুল মাজহুদের’ নাম উল্লেখ করাও সঠিক বলে প্রমাণিত হলো।

(চ) তাঁর উল্লিখিত একত্রিশটি কিতাবের মধ্যে ১৪নং কিতাব হচ্ছে, ‘আউনুল মা’বুদ’।

উক্ত কিতাবে লাল রং মাকরহ হওয়ার বর্ণনা উল্লেখ আছে। যেমন ‘আউনুল মা’বৃন্দ’ এর ৪র্থ জিঃ ৯২ পৃষ্ঠায় উল্লেখ আছে,

[৩৮২]

احتج بهذا الحديث القائلون بكراهة ليس الأحمر.

وه ك (ثوبان احمران) ফরীগণ ফতওয়া দেন যে, লাল রংয়ের কাপড় পরিধান করা মাকরূহ তাহরীমী।

অনুরূপভাবে উল্লিখিত ৩১টি কিতাবের প্রতিটিতেই লাল রং হারাম বা মাকরূহ তাহরীমী হওয়ার প্রমাণ রয়ে গেছে। এবার আপনারাই বলুন “ধাপ্পাবাজ কে?” “ধাপ্পাবাজ” তথাকথিত মুফতী ছাহেব এতে কোনই সন্দেহ নেই। কারণ সে ধাপ্পাবাজী করে মিথ্যা দিয়ে সত্যকে ঢাকার চেষ্টা করেছিল।

মূল কথা হলো, দলীল হিসেবে যে ৩১টি কিতাবের নাম উল্লেখ করা হয়েছে, দলীল হিসবে তা ঠিকই রয়েছে। কারণ উল্লিখিত ‘দলীল সমূহ’ আমভাবে লাল রং মাকরূহ বা নিষিদ্ধ হওয়ার ক্ষেত্রেই উল্লেখ করা হয়েছে। খাছ করে “অন্য রং মিশ্রিত লাল কাপড়”-এর ক্ষেত্রে তা দলীল হিসেবে উল্লেখ করা হয়নি। যদি তাই হয়ে থাকে তবে তথাকথিত মুফতী (১) ছাহেবের লোক দেখানো চ্যালেঞ্জের কি মূল্য থাকতে পারে? মূলতঃ উক্ত চ্যালেঞ্জ প্রদান করাও তার আরেকটি প্রতারণা ও ধাপ্পাবাজী।

পক্ষান্তরে তথাকথিত মুফতী (১) ছাহেবের প্রতি “চ্যালেঞ্জ” ছুড়ে দিয়ে বলছি যদি সে সত্যবাদী হয়ে থাকে তবে প্রমাণ করুক যে, অন্য রং মিশ্রিত লাল রং এর ক্ষেত্রে উল্লিখিত “দলীলসমূহ” উল্লেখ করা হয়েছে।

তথাকথিত মুফতী  ছাহেবের চরম প্রতারণা ও ধোঁকাবাজী

তথাকথিত মুফতী ছাহেব তার তথাকথিত ও মিথ্যায় ভরপুর

ফতওয়ার শেষে ‘কিতাবের রেফারেন্স’ শিরোনামে পাইকারী হারে আরবী ও বাংলা ভাষায় ২৮টি কিতাবের নাম উল্লেখ করে চরম জালিয়াতী ও ধোঁকাবাজী” করেছে। জানিনা কিতাবের নামগুলো সে কেন উল্লেখ করেছে। তথাকথিত মুফতী (!) ছাহেব সম্ভবতঃ অন্যদেরকে নিজের মতই বোকা ভাবছে যে, আবরী বাংলায় লিখিত কয়েকটি কিতাবের নাম দেখলেই লোকেরা তার মনগড়া, মিথ্যা ও সাজানো ফতওয়াটি সঠিক ও সতা বলে মেনে নিবে। বস্তুতঃ এ কাজটিও যে তার জালিয়াতী ও ধোকাবাজী তা বলার অপেক্ষাই রাখেনা। তথাকথিত মুফতী (1) ছাহেবের ভালরূপে স্মরণ রাখা দরকার যে, আজকালের জনগণ তার মত জাহিল ও বোকা নয়। বরং তারা ‘আল বাইয়্যিনাত’ পড়ার কারণে অনেক বিজ্ঞ ও সতর্ক। জাহিল ও প্রতারকদের ধোকাবাজী, জালিয়াতী ও প্রতারণা তারা সহজেই বুঝে ফেলে।

ولو كان بعضهم لبعض ظهير

মজার ও হাস্যকর ব্যাপার হলো তথাকথিত মুফতী ছাহেব যে সকল কিতাবগুলোর নাম উল্লেখ করেছে তার প্রায় প্রতিটিতেই পুরুষের জন্য লাল রংয়ের কাপড় অর্থাৎ উছফুর দ্বারা, জাফরান দ্বারা, ওয়ারস দ্বারা বঙ্গানো লাল, গোলাপী লাল, শুধু লাল রংয়ের কাপড় পরিধান করা মাকরুহ বা নিষিদ্ধ বলা হয়েছে। যেমন

(ক) “বুখারী শরীফ” তথাকথিত মুফতী ছাহেবের তালিকার ১ম কিতাব। অথচ উক্ত বুখারী শরীফ ২য় জিঃ ৮৭০ পৃষ্ঠায় ১নং টিকায় উল্লেখ আছে,

[৩৮৩-৩৮৪]

الثوب الاحمر أختف في لبس الثياب المصبوعة احمر بالعصفر او غيره قاباحها جماعة من الصحابة والتابعين وبه قال الشافعي منعهما آخرون مطلقا قال البيهقى والصواب تحريم المعصفر عليه الاحاديث الصحيحة التي لو بلغت الشافعي القال بها وقد أوصاناس العمل بالحديث الصحيح ذکر ذالك في الروضفة.

অর্থঃ- “উছফুর বা অন্য রং দ্বারা রঞ্জিত লাল রংয়ের কাপড় পরিধান করার ব্যাপারে মতভেদ রয়েছে। ইমাম শাফিয়ী রহমতুল্লাহি আলাইহি-এর মতে ছাহাবী ও তাবেয়ীদের এক জামায়াত তা মুবাহ বলেন। ছাহাবী ও তাবেয়ীদের অপর জামায়াত l বা আমভাবে সর্বপ্রকার লাল কাপড় নিষিদ্ধ হওয়ার মত পেশ করেন। হযরত ইমাম বাইহাক্বী রহমতুল্লাহি আলাইহি বলেন, সঠিক ও বিশুদ্ধ মত হচ্ছে অসংখ্য ছহীহ হাদীছ শরীত দ্বারা উছফুর দ্বারা রঞ্জিত লাল কাপড় হারাম প্রমাণিত হয়র ইমাম শাফিয়ী রহমতুল্লাহি আলাইহি-এর নিকট যদি এ বর্ণনাগুলো পৌঁছতো তবে তিনিও তা হারাম ফতওয়া দিতেন। যেহেতু তিনি আমাদেরকে ছহীহ হাদীছ শরীফের উপর আমল করার ব্যাপারে ওন্থীয়ত করেছেন। অনুরূপ ‘রওযা’ কিতাবেও উল্লেখ আছে।

(খ) ‘আবূ দাউদ শরীফ” তালিকার ৩য় কিতাব। অথচ ‘আবূ দাউদ শরীফ’-এর ২য় জিঃ ২০৮ পৃষ্ঠার ২নং হাশিয়ায় উল্লেখ আছে, ৩৮৫-৩৮৬]

وقال على القارى في المرقاة فهذا أى قوله صلى الله عليه وسلم فلم يرد عليه دليل صريح على تحريم ليس الثوب الأحمر للرجال، وعلى أن مرتكب المنهي حال التسليم لا يستحق الجواب والتسليم. وروى الطَّبَرَانِي عَنْ عِمْرَانَ ابْنِ حُصَبْنِ مَرْفُوعًا إيَّاكُمْ وَالْعُمْرَةَ فَإِنَّهَا أَحَبُّ الزِّينَةِ إِلَى

অর্থঃ হযরত আল্লামা মুল্লা আলী ক্বারী রহমতুল্লাহি আলাইহি তাঁর লিখা মিশকাত শরীফের শরাহ ‘মিরকাত শরীফে’ বলেছেন, “হুযুর পাক হল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর বাণীঃ তিনি লাল পোশাক পরিহিত ব্যক্তির সালামের জাওয়াব দেননি।” এই হাদীছ শরীফখানা এই মাসয়ালার স্পষ্ট নির্ভরযোগ্য দলীল। মাসয়ালা হচ্ছে, পুরুষদের জন্য লাল কাপড় পরিধান করা হারাম। নিশ্চয়ই সালামের সময় হারাম কাজে মশগুল ব্যক্তি সালামের জাওয়াব পাওয়ার ও সালাম পাওয়ার হজ্বদার নয়। হযরত ইমাম ত্ববারানী রহমতুল্লাহি আলাইহি হযরত ইমরান ইবনে হুছাইন রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু থেকে ‘মারফু’ সনদে বর্ণনা করেছেন, হুযুর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, তোমরা লাল রং থেকে বেঁচে থাক। কেননা

নিশ্চয়ই ইহা শয়তানের কাছে অধিক পছন্দনীয় পোশাক। (গ) “তিরমিযী শরীফ” তালিকার ৪র্থ কিতাব। অথচ ‘তিরমীযী

توْبَانِ أَحْمَرَانِ লাল রং মাকরূহ বা নিষিদ্ধ প্রমাণ করেছেন। যেমন এ প্রসেঙ্গ হাদীছ

শরীফে ইরশাদ হয়েছে,

[৩৮৭-৩৯০]

عَنْ عَبْدِ اللهِ بْنِ عَمْرِو رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُ قَالَ مَرَّ رَجُلٌ وَعَلَيْهِ تَوْبَانِ أَحْمَرَانِ فَسَلَّمَ عَلَى النبي صلى الله عَلَيْهِ وَسَلَّمَ فَلَمْ يَرُدُّ عَلَيْهِ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ السَّلَامَ. هَذَا

حَدِيثُ حَسَنٌ غَرِيبٌ مِنْ هَذَا الْوَجْهِ. অর্থঃ হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আমর রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, একদা লাল বর্ণের দু’টি কাপড় (ইযার ও চাদর) পরিহিত এক ব্যক্তি হযরত নবী করীম ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর পাশ দিয়ে যাওয়ার সময় তাঁকে সালাম দিল। কিন্তু হযরত নবী করীম হল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তার সালামের জাওয়াব দেননি। হযরত আবু ঈসা তিরমিযী রহমতুল্লাহি আলাইহি বলেন, এ হাদীছ শরীফখানা হাসান এবং উপরোক্ত সনদে গরীব। (আবূ দাউদ শরীফ, মিশকাত শরীফ, নাইলুল আওতার)

উক্ত হাদীছ শরীফের ব্যাখ্যায় মুসলিম শরীফের শরাহ ‘ফতহুল মুলহিম লিডক্বী উছমানী’ ৪র্থ জিঃ ৫৫৩, ৫৫৪ পৃষ্ঠায় উল্লেখ আছে,

৩৯১-৩৯২/

وقد استدل به من ذهب الى جواز لبس الأحمر للرجال وهو قول الشافعية والمالكية وجماعة من الحنفية، والمشهور عند الحنفية انهم يكرهون ليس الاحمر الشيطان. الخالص للرجال. وذلك لما اخرجه ابو

داود والترمذي وحسنه.

অর্থঃ- উক্ত হাদীছ শরীফ দ্বারা দলীল দেয়া হয় যে, পুরুষদের জন্য লাল পোশাক জায়িয। ইহা শাফিয়ী, মালিকী ও হানাফী মাযহাবের একটি দলের অভিমত। কিন্তু মাশহুর মতে, হানাফীগণের নিকট পুরুষদের জন্য খালিছ লাল রংয়ের পোশাক মাকরূহ তাহরীমী। যেমনটি হাসান সনদে আবু দাউদ শরীফ ও তিরমিযী শরীফে বর্ণিত আছে। (অনুরূপ আউনুল মা’বুদ কিতাবেও বর্ণিত আছে)

[৩৯৩-৩৯৫

قال الشوكاني في النيل: قد احتج بهذه الاحاديث من قال بجواز لبس الاحمر وهم الشافعية والمالكية وغيرهم … … … وذهبت الحنفية الى الكراهة واحتجوا بحديث عبد الله بن عمرو قال من بالنبي صلى الله عليه وسلم رجل وعليه ثوبان احمران فسلم عليه فلم يرد عليه اخرجه الترمذي وأبو داود.

অর্থঃ- হযরত শাওকানী তাঁর ‘নাইলুল আওতার’ কিতাবে বলেছেন, যারা পুরুষদের জন্য লাল পোশাক জায়িয বলেন, তাঁরা হচ্ছেন শাফিয়ী, মালিকী ও অন্যান্যগণ। حلة حمراء সম্পর্কিত হাদীছ শরীফ তাঁদেরই দলীল। কিন্তু হানাফী মাযহাবে পুরুষদের জন্য লাল পোশাক পরিধান করা মাকরূহ তাহরীমী। তারা দলীল পেশ করে থাকেন, হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে আমর রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু-এর হাদীছ শরীফকে। তিনি বলেছেন, একদা এক ব্যক্তি দুটি লাল কাপড় পরিহিত অবস্থায় হযরত নবী করীম ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর নিকট দিয়ে যাওয়ার সময় তাঁকে সালাম দেয়, কিন্তু তিনি তার সালামের জাওয়াব দেননি। হাদীছ শরীফখানা তিরমিযী শরীফ ও আবূ দাউদ শরীফে বর্ণিত আছে।

(ঘ) ‘বষলুল মাজহুদ’ তালিকার ১৩ তম কিতাব। অথচ ‘বযলুল মাজহুদের’ ৬ষ্ঠ জিঃ ৪৯ পৃষ্ঠায় উল্লেখ আছে,

[৩৯৬]

وعند الآخرين مطلق الحمرة سواء كان من العصفر او غيره مكروه.

অর্থঃ অপরাপর সকল ফকীহগণের মতে সর্ব প্রকার লাল রং এর পোষাক পরিধান করাই মাকরূহ তাহরীমী।”

উক্ত খণ্ডের উক্ত পৃষ্ঠায় আরো উল্লেখ আছে,

[৩৯৭/

وعلى أن للرجل ليس الأحمر على تحريم صريح وهذا دليل.

অর্থঃ পুরুষের জন্য লাল রংয়ের পোষাক পরিধান করা সুস্পষ্ট হারাম। )ثوبان احمران( এ হাদীছ শরীফই তার দলীল।”

(৫) ফতহুল বারী ও উমদাতুল কারী তথা কথিত মুফতী (!) ছাহেবের তালিকার ৬ ও ৭ নং কিতাব। অথচ “ফতহুল বারীতে ও উমদাতুল কারীতে” উল্লেখ আছে,

[৩৯৮-৪০০]

يشير”، الجواز، والخلاف في ذلك مع الحنفية فانهم قالوا بكره وتاولوا حديث الباب بأنهم كانت حلة من برود فيها خطوط حمر، ومن أدلتهم ما اخرجه ابوداؤد من حديث عبد الله بن عمرو قال مر بالنبي صلى الله عليه وسلم رجل وعليه توبان احمران فسلم عليه فلم يرد عليه.

অর্থঃ- এই হাদীছ শরীফ লাল পোশাক জায়িষের ব্যাপারে ইঙ্গিত করে (ইহা শাফিয়ী মাধহাবের মত) এতে হানাফীগণের বিপরীত মত রয়েছে, কেননা তাঁরা বলেন, লাল পোশাক পুরুষদের জন্য মাকরূহ তাহরীমী। তাঁরা অত্র হাদীছ শরীফের ব্যাখ্যা করেন যে, حله ‘হুল্লাহ’ এমন পোশাক যাতে গন্ধম বা সোনালী রংয়ের রেখা থাকে।

তাঁদের (হানাফীগণের) দলীল হচ্ছে; যা হযরত ইমাম আবু দাউদ রহমতুল্লাহি আলাইহি হযরত আব্দুল্লাহ ইবেন আমর রদ্বিয়াল্লাহু তায়াল আনহু-এর হাদীছ শরীফ বর্ণনা করেছেন। তিনি বলেছেন, একদা দু’টি লাল পোশাক পরিহিত এক ব্যক্তি হযরত নবী করীম ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর নিকট দিয়ে যাওয়ার সময় তাঁকে সালাম দেয় কিন্তু হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তার সালামের জাওয়ার দেননি। (অনুরূপ উমদাতুল ক্বারী ও ফতহুল মুলহিম লিশ শিল্পীর আহমদ উছমানী কিতাবে বর্ণিত রয়েছে।)

(চ) ‘আউনুল মা’বুদ’ ভালীকার ১৪ নং কিতাব। উক্ত ‘আউনুল মা’বুদ’-এর ৪র্থ জিঃ ৯২ পৃষ্ঠায় উল্লেখ আছে,

[৪০১

احتج بهذا الحديث القائلون بكراهة ليس

অর্থঃ- “এই হাদীছ শরীফকে ভিত্তি করে উলামায়ে কিরাম রহমতুল্লাহি আলাইহিমগণ ফতওয়া দিয়েছেন যে, লাল কাপড় পরিধান করা মাকরূহ তাহরীমী।

(ছ) “তুহফাতুল আহওযায়ী” তার তালিকার ১৫নং কিভাব। অথচ ‘তুহফাতুল আহওয়াযী’ ৮ম জিঃ ৯১ পৃষ্ঠায় উল্লেখ আছে,

[৪০২-৪০৩

احتج بهذا الحديث القائلون بكراهة لبس الأحمر

অর্থঃ- এই হাদীছ শরীফকে ভিত্তি করে উলামায়ে কিরাম রহমতুল্লাহি আলাইহিমগণ ফতওয়া দিয়েছেন যে, লাল কাপড় পরিধান করা মাকরূহে তাহরীমী। (অনুরূপ ‘নাইলুল আওতার’-এ আছে)

(ঝ) ‘জামউল ওয়াসাইল’ তথাকথিত মুফতী (!) ছাহেব প্রদত্ত

[808]

والتحقيق في هذا المقام ان النهي عن لبس الثوب الاحمر.

অর্থঃ- এক্ষেত্রে সঠিক তাহক্বীক্ বা ফয়সালা হলো লাল কাপড় পরিধান করা সম্পূর্ণই নিষিদ্ধ।”

(ঞ) “ইলাউস সুনান” তার তালিকার ২১নং কিতাব। উক্ত কিতাবে উল্লেখ আছে,

[৪০৫-৪০৭]

لكن صرح في التحفة بالحرمة فافاد أنها تحريمة وهي المحمل عند الاطلاق، قاله المصنف.

অর্থঃ- ‘তুহফাহ’ কিতাবে লাল রং হারাম হওয়ার ব্যাপারে স্পষ্ট বর্ণনা

■ রয়েছে। এতে বুঝা যায় মাকরুহ দ্বারা মাকরহ তাহরীমী উদ্দেশ্য। আর

সাধারণতঃ মাকরূহ বলতে মাকরূহ তাহরীমীই বুঝায়। উহাই ‘তানবীরুল আবছার’-এর মুছাল্লিফ বলেছেন। অর্থাৎ তিনি লাল রংয়ের পোশাক পুরুষদের জন্য মাকরহ তাহরীমীই ফতওয়া দিয়েছেন।

(ট) ‘আশয়াতুল লুময়াত’ সিলেট খারেজী মাদরাসার তথাকথিত

মুফতী (!) ছাহেবের দেয়া তালিকার ২২নং কিতাব। অথচ উক্ত কিতাবে সর্বপ্রকার লাল রং মাকরুহ তাহরীমী হওয়ার ব্যাপারে মুখতার বা ফতওয়াগ্রাহ্য মত উল্লেখ করা হয়েছে। যেমন- ‘আশয়াতুল্ লুময়াত’ ৩য় জিঃ ৫৪২ পৃষ্ঠায় উল্লেখ আছে,

[৪০৮

و مختار در مذهب حنفی کراهت تحریمی است و نماز گزاردن بان مکروه و در رنگ سرخ از غیر معصفر نیز خلاف است و شیخ قاسم حنفی که از اعاظم علماء متاخرین مصر واستاد قسطلانی است تحقیق نموده و فتوی داده که حرمت از بهت لون ست نه صبغ پس هر سرخ حرام و مکروه باشد. অর্থঃ হানাফী মাযহাবের মুখতার তথা অধিক গ্রহণযোগ্য মতে লাল কাপড় পরিধান করা মাকরূহ তাহরীমী। নামাযেও পরিধান করা মাকরহ তাহরীমী। লাল রং উছফুর মিশানোর শর্ত ছাড়াই হারাম। ইহা তাহক্বীকু করে ফয়সালা দিয়েছেন আল্লামা শাইখ ক্বাসিম হানাফী রহমতুল্লাহি আলাইহি। যিনি উলামায়ে মৃতায়াৎথিরীনগণের মধ্যে মিশর এলাকার একজন উচ্চ দরজার আলিম ছিলেন এবং কুস্তালানী রহমতুল্লাহি আলাইহি-এর উস্তায ছিলেন তিনি তাহক্বীক্ব করে ফতওয়া দিয়েছেন যে, লাল কাপড় পুরুষের জন্য নিষিদ্ধ তা লাল রংয়ের কারণেই

উছফুর। মিশানোর কারণে নয়। সুতরাং প্রত্যেক লাল রংই হারাম ও মাকরুহ তাহরীমীর অন্তর্ভুক্ত।

(ঠ) ‘রদ্দুল মুহতার’ তথাকথিত মুফতী (!) ছাহেবের তালিকার ২৪নং কিতাব। রদ্দুল মুহতারে আল্লামা শামী রহমতুল্লাহি আলাইহি লাল রং সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনার পর সর্বশেষ চূড়ান্ত ফায়ছালা দিয়ে লিখেন,

[৪০৯-৪১৪]

اقول ولكن جل الكتب على الكراهة كالسراج والمحيط والاختيار المنتقى

قاسم. افتي العلامة قاس وبه والذخيرة وغيرها

অর্থঃ- “(লাল রং সম্পর্কে যদিও অনেকে অনেক মত পেশ করেছে) কিন্তু আমি বলছি, বড় বড় (হানাফী ফিকাহের) কিতাব যেমন সিরাজুল ওয়াহহাজ, মুহীত, ইখতিয়ার, মুনতাক্বা, জথীরাসহ আরো অন্যান্য কিতাব সমূহে মাকরূহ তাহরীমী হওয়ার ব্যাপারেই ফতওয়া দেয়া হয়েছে। আর (হানাফী মাযহাবের বিখ্যাত ফক্বীহ) আল্লামা কাসিম

রহমতুল্লাহি আলাইহি এর উপরই ফতওয়া দিয়েছেন।” (ড) তথাকথিত মুফতী (1) ছাহেবের তালিকায় ‘মাজমাউল ফতওয়া’ নামক কিতাবও রয়েছে। অথচ উক্ত কিতাবেও লাল রংয়ের কাপড় পরিধান করা মাকরূহ তাহরীমী লিখা হয়েছে। যেমন-

[৪১৫-৪১৬/

وفي مجمع الفتاوى: لبس الاحمر مكروه.

অর্থঃ- ‘মাজউল্ ফাতাওয়া’ কিভাবে বর্ণিত আছেঃ পুরুষদের জন্য লাল রংয়ের পোশাক মাকরূহ তাহরীমী। (অনুরূপ ইলাউস্ সুনানে উল্লেখ আছে)

অনুরূপভাবে তথাকথিত মুফতী (!) ছাহেব প্রদত্ত তালিকার

অন্যান্য কিতাবগুলোতেও পুরুষের জন্য লাল রংয়ের কাপড় মাকরূহ বা নিষিদ্ধ হওয়ার মত উল্লেখ আছে। এতে কি এটাই প্রমাণিত হয়

না যে, তথাকথিত মুফতী (!) ছাহেব মূলতঃ “কিতাবের রেফারেন্স” শিরোনামে ঢালাওভাবে কিছু কিভাবের নাম উল্লেখ করে চরম

ধোকাবাজী, জালিয়াতী ও প্রতারণা করেছে।

তথাকথিত মুফতী (!) ছাহেবের স্ববিরোধী ও এলোমেলো বক্তব্য

তথাকথিত মুফতী (!) ছাহেবের কথিত ফতওয়াটি যেহেতু মনগড়া ও দলীলবিহীন এবং সে যেহেতু উক্ত ফতওয়ায় মিথ্যার আশ্রয় নিয়েছে। তাই তার উক্ত ফতওয়ায় অনেক স্ববিরোধী ও এলোমেলো বক্তব্য পরিলক্ষিত হয়। (১)

যেমন সে তার কথিত ফতওয়ার ৪ পৃষ্ঠায় ‘বষলুল মাজহুদের’ বরাতে লিখেছে,

فيحمل على القيد بالمعصفر لان ما صبغ بالحمرة غير المعصفر فلاباس به. অর্থঃ … তবে অত্র احمران দ্বারা উছফুর দ্বারা রঞ্জিতই উদ্দেশ্য।

কেননা উছফুর ব্যতীত অন্য লাল দ্বারা রঞ্জিত কাপড় পরিধান করতে কোন আপত্তি নেই।” অর্থাৎ তথাকথিত মুফতী (1) ছাহেব উক্ত ইবারত দ্বারা এটাই প্রমাণ করতে চেয়েছে শুধু মাত্র উহফুর দ্বারা রঞ্জিত লাল কাপড়ই পুরুষের জন্য হারাম বা নিষিদ্ধ।

অথচ একই ফতওয়ার ১০ পৃষ্ঠায় তথাকথিত মুফতী (1) হাহেব শামী, কিতাবের বরাতে লিখেছে,

ففى جامع الفتاوي قال ابو حنيفة والشافعي

و مالك يجوز لبس المعصفر.

‘জামিউল ফতওয়া’ কিতাবে বলা হয়েছে, আবূ হানীফা, মালিক, শাফিয়ী রহমতুল্লাহি আলাইহি বলেন, উছফুর দ্বারা রঙ্গানো কাপড় পরা পুরুষের জন্য জায়িয। এটা সিলেট খারেজী মাদ্রাসার তথাকথিত মুফতী (!) ছাহেবের স্ববিরোধী বক্তব্য নয় কি?

(৫)

সিলেট খারেজী মাদরাসার তথাকথিত মুফতী (1) ছাহেব তার অজ্ঞতাসূচক ফতওয়ার ৯ পৃষ্ঠায় দুররুল মুখতারের বরাতে লিখেছে “উছফুর ও জাফরান দ্বারা রঙ্গানো লাল… কাপড় পুরুষেদের জন্য

নিষিদ্ধ, মাকরুহ তাহরীমী।

অর্থাৎএখানে সে স্বীকার করেছে যে, শুধু উছফুর নয় জাফরান দ্বারা রঙ্গানো লাল কাপড়ও মাকরূহ তাহরীমী।

অথচ তথাকথিত মুফতী (1) ছাহেব তার কথিত ফতওয়ার ১৯ পৃষ্ঠায় গিয়ে “আলোচনার সার সংক্ষেপ” শিরোনামে লিখলো ” গ. উছফুর ব্যতীত অন্য রং দ্বারা রঙ্গানো নিরেট লাল কাপড় পুরুষদের জন্য মাকরূহ তানযিহী।”

অর্থাৎ তার এ বক্তব্য প্রমাণ করে যে, শুধু মাত্র উছফুর দ্বারা রঙ্গানো লাল কাপড়ই মাকরূহ তাহরীমী জাফরান দ্বারা রঙ্গানো লাল কাপড়

মাকরুহ তাহরীমী নয়।

তথাকথিত মুফতী (!) ছাহেবের এরূপ স্ববিরোধী, পরস্পর বিরোধী ও এলোমেলো বক্তব্যের হেতু কি? মূলতঃ হেতু আর কিছুই নয়। যেহেতু সে মনগড়া ও দলীলবিহীন ভাবে কিতাবের বক্তব্যের অপব্যাখ্যা

করে লাল কাপড়কে জায়িয করার হীন অপচেষ্টা চালিয়েছে তাই তার

বক্তব্যগুলো তার অজান্তেই স্ববিরোধী, পরস্পর বিরোধী ও

এলোমেলো হয়েছে। আর তার এই স্ববিরোধী, পরস্পর বিরোধী ও এলোমেলো বক্তব্যগুলোই প্রমাণ করে যে, সে কথিত ফতওয়ায় চরম ও নির্লজ্জভাবে মিথ্যা ও প্রতারণার আশ্রয় নিয়েছে।

লাল রং নিষিদ্ধ হওয়া সম্পর্কিত ইখতিলাফ সমূহের সঠিক ফায়ছালা”

লাল রং নিষিদ্ধ হওয়ার ব্যাপারে কিতাবে তিনটি মত পরিলক্ষিত হয়। যথা- ১. হারাম, ২. মাকরুহ তাহরীমী ও ৩. মাকরুহ তানযীহী।

মূলত। যে কাপড়টি সম্পূর্ণ বা অধিকাংশ লাল কেউ কেউ বলেন তা হারাম। আবার কেউ কেউ বলেন, মাকরূহ তাহরীমী। যেমন এ প্রসঙ্গে ‘আবূ দাউদ শরীফ’-এর ২য় জিঃ ২০৮ পৃষ্ঠার ২নং হাশিয়ায় উল্লেখ আছে,

[৪১৭-৪১৮)

وقال على القرى في المرقاة فهذا أي قوله صلى الله عليه وسلم فلم يرد عليه دلیل صريح على تحريم

لبس الثوب الأحمر للرجال

অর্থঃ হযরত আল্লামা মুল্লা আলী ক্বারী রহমতুল্লাহি আলাইহি তাঁর লিখা মিশকাত শরীফের শরাহ ‘মিরকাত শরীফে’ বলেছেন, “হুযূর পাক হল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর বাণীঃ তিনি লাল পোশাক পরিহিত ব্যক্তির সালামের জাওয়াব দেননি।” এই হাদীছ শরীফখানা এই মাসয়ালার স্পষ্ট নির্ভরযোগ্য দলীল। মাসয়ালা হচ্ছে, পুরুষদের জন্য লাল কাপড় পরিধান করা হারাম।

‘শামায়িলুত্ তিরমিযী’ শরীফের শরাহ ‘আল্ মাওয়াহিবুল্ লাদুন্নিয়া’-এর ৭২ পৃষ্ঠায় উল্লেখ আছে,

৪১৯-৪২১)

فا لأحمر البحث منهى عنه أشد النهي.

অর্থঃ পরিপূর্ণ লাল রংয়ের পোশাক নিষেধ তথা হারাম। এমনকি শক্ত হারাম। (অনুরূপ জামউল ওয়াসায়িল, শরহুল মানাবী মিছরী কিতাবে বর্ণিত রয়েছে। অর্থাৎ উল্লিখিত বর্ণনাসমূহ দ্বারা প্রমাণিত হয় যে পুরুষের জন্য পূর্ণ লাল রংয়ের পোষাক পরিধান করা হারাম।

আর ‘তুহফাতুল আহওয়াযী’ ৮ম জিঃ ৯১ পৃষ্ঠায় উল্লেখ আছে,

[৪২২-৪২৩]

احتج بهذا الحديث القائلون بكراهة ليس الأحمر. অর্থঃ- এই হাদীছ শরীফকে ভিত্তি করে উলামায়ে কিরাম রহমতুল্লাহি আঃলাইহিমগণ ফতওয়া দিয়েছেন যে, লাল কাপড় পরিধান করা মাকরূহে তাহরীমী। (অনুরূপ ‘নাইলুল আওতার’-এ আছে) ‘ফতহুল মুলহিম লিততত্ত্বী উছমানী’ ৪র্থ জিঃ ৫৫৩, ৫৫৪ পৃষ্ঠায় উল্লেখ আছে, [৪২৪-৪২৫) والمشهور عند الحنفية أنهم يكرهون ليس الأحمر الخالص للرجال، وذلك لم اخرجه ابو داؤد والترمذى وحسنه

অর্থঃ মাশহুর মতে, হানাফীগণের নিকট পুরুষদের জন্য খালিছ লাল রংয়ের পোশাক মাকরূহ তাহরীমী। যেমনটি হাসান সনদে “আবু দাউদ শরীফ ও তিরমিযী শরীফে বর্ণিত আছে। (অনুরূপ আউনুল মা’বুদ কিতাবেও বর্ণিত আছে) অর্থাৎ উপরোক্ত বর্ণনা দ্বারা লাল কাপড় মাকরূহ তাহরীমী প্রমাণিত হয়।

অতএব, উপরোক্ত বর্ণনা দ্বারা প্রমাণিত হলো যে, খালিছ বা সম্পূর্ণ লাল বা অধিকাংশ লাল রংয়ের কাপড় পুরুষদের জন্য পরিধান করা হারাম ও মাকরুহ তাহরীমী। যেহেতু উচ্ছ্বল রয়েছে (যা উক্ত ফতওয়ায় উল্লেখ করা হয়েছে। কিন্তু তথাকথিত মুফতী (1) তার কথিত ফতওয়ায় সে ব্যাপারে কোনও কথাই বলে নাই।) উদ্বুলটি হলো- الأكثر حكم الكل অর্থাৎ অধিকাংশটা সম্পূর্ণরই হুকুম রাখে।

আর যে লাল কাপড়টি সম্পূর্ণ বা অধিকাংশ লাল নয়। বরং হালকা বা কম লাল তা পরিধান করা হারাম বা মাকরূহ তাহরীমী নয় বরং মাকরূহ তানযীহী। যেমন এ প্রসঙ্গে ফতহুল বারী’ ১০ জিঃ ৩০৬ পৃষ্ঠায় উল্লেখ আছে,

[৪২৬-৪২৮।

يكره ليست الثوب المشبع بالحمرة دون ما كان صبغه حقيقا

অর্থঃ পরিপূর্ণ লাল পোশাক পুরুষাদের জন্য পরিধান করা মাকরূহ তাহরীমী। কিন্তু যদি হালকা লাল রংয়ের পোশাক হয় তাহলে মাকরূহ তাহরীমী নয়। অর্থাৎ তা মাকরূহ তানযীহী। (অনুরূপ উমদাতুল ক্বারী,

আউনুল মা’বুদ কিতাবে বর্ণিত আছে)

উপরোক্ত দলীলভিত্তিক আলোচনা দ্বারা অকাট্যভাবেই প্রমাণিত হলো যে, সম্পূর্ণ লাল বা অধিকাংশ লাল রংয়ের কাপড় পরিধান করা পুরুষদের জন্য হারাম ও মাকরূহ তাহরীমী। আর হালকা বা কম লাল বংয়ের কাপড় পরিধান করা মাকরূহ তানযীহী। লাল রং নিষিদ্ধ হওয়া সম্পর্কিত ইখতিলাফ বা মত সমূহের এটাই সঠিক ও গ্রহণযোগ্য ফায়ছালা। এর বিপরীত মত পেশ করা জিহালত ও গোমরাহী বৈ

কিছুই নয়।

তথাকথিত মুফতী (!) ছাহেব হানাফী দাবিদার হয়ে শাফিয়ী মাযহাব মুতাবিক ফতওয়া দিয়ে চরম জিহালতী ও গোমরাহীর পরিচয় দিয়েছে

উপরোক্ত দলীল ভিত্তিক ও খণ্ডনমূলক আলোচনা দ্বারা সুস্পষ্ট ও অকাটাভাবেই প্রমাণিত হলো যে, আমাদের হানাফী মাযহাব মুতাবিক পুরুষের জন্য সর্বপ্রকার লাল রংয়ের পোষাক পরিধান করা হারাম ও মাকরূহ তাহরীমী। আর শাফিয়ী ও মালেকী মাযহাবে সর্বপ্রকার লাল কাপড় পরিধান করা জায়িয। কাজেই তথাকথিত মুফতী (!) হাহেব হানাফী মাযহাবের দাবীদার হয়ে শাফিয়ী ও মালেকী মাযহাব মুতাবিক ফতওয়া দিয়ে চরম জিহালতী ও গোমরাহীর পরিচয় দিয়েছে। কেননা মাযহাবের অনুসারীদের জন্য শাফিয়ী বা অন্যান্য

হানাফী মাযহাবের অনুসরণ করা সম্পূর্ণরূপে হারাম ও গোমরাহীর নামান্তর। মাযহাব সম্পর্কে উলামায়ে কিরাম রহমতুল্লাহি আলাইহিমগণের

চূড়ান্ত ফতওয়া হচ্ছে, আলিম, মুফতী, মুহাদ্দিছ, আল্লামা ও সর্বসাধারণ সকলের জন্য যেকোন একটি মাযহাব গ্রহণ করা ফরযে আইন। আর এক মাযহাবের অনুসারী অন্য মাযহাবের ইখতিলাফী মাসয়ালা অনুযায়ী আমল করাও হারাম। কারণ এতে শরীয়তের

বিধানের প্রতি ইনকার ও ইহানত অর্থাৎ অস্বীকার ও তুচ্ছ-তাচ্ছিল করা হয়। নিম্নে মাযহাবের আবশ্যকতা ও যে কোন একটি মাযহাব অনুযায়ী আমল করার প্রতি গুরুত্বারোপের দলীল ভিত্তিক আলোচনা

করা হল। ” তাফসীরে আহমদিয়া”-এর ৩৪৩/৩৪৪ পৃষ্টায় উল্লেখ আছে,

[৪২৯] فيكون كل من المذاهب الأربعة حقا أي مجتهد بهذا المعنى فالمقلد اذا قلد احدا التزامه ولا يؤل الى اخر.

يخرج عن الوجوب ولكن ينبغى ان يقلد অর্থঃ- “যখন চার মাযহাবের প্রত্যেকটিই হক্ক হিসেবে সাব্যস্ত হলো, তাই এ অর্থে মুকাল্লিদের জন্য যে কোন একটি মাযহাবের ইমামকে অনুসরণ করাও ওয়াজিব। অতএব, যে ব্যক্তি কোন এক মাযহাবের ইমামকে অনুসরণ করবে সে শুধু সেটাই আঁকড়িয়ে ধরে থাকবে। অন্য কোন মাযহাবের অনুসরণ করবে না।”

এ প্রসঙ্গে “তাফসীরে আহমদিয়া” কিতাবের ৩৪৪ পৃষ্ঠায় আরো উল্লেখ আছে যে,  [৪৩০]

واما الثاني وهو انه اذا التزم الطبعية يجب عليه ان يدوم على مذهب التزامه ولا

ينتقل الى مذهب اخر.

অর্থঃ- “দ্বিতীয়তঃ কোনও মাযহাবকে প্রকৃতভাবে গ্রহণ করলে দারিমীভাবে সে মাযহাবেরই অনুসরণ করা ওয়াজিব। তাই এক মাযহাব পরিবর্তন করে অন্য মাযহাব গ্রহণ করা যাবেনা তথা হারাম।

“কিমিয়ায়ে সায়াদাত”-এর ২৩৫ পষ্ঠায় উল্লেখ আছে,

[৪৩১]

گو مخالف صاحب مذهب خود کردن زد هیچ

অর্থঃ- “নিজ মাযহাবের ইমামের বিলাফ করা কারো জন্যেই জায়িয

کس روا نبود

নেই।

“কিমিয়ায়ে সায়াদাত”-এর ২৩৫ পষ্ঠায় আরো উল্লেখ আছে,

[৪৩২]

خلاف اجتهاد صاحب مذهب خود کاری کند او عاصی است پس حقیقت حرام است.

অর্থঃ- “নিজ ইমামের ইজতিহাদের খিলাফ কোন কাজ করলে সে ব্যক্তি গুনাহগার হবে এবং প্রকৃতপক্ষে তা করা হারাম হবে।” “ইকদুলজিদ”-এর ১ম খণ্ডের ৮৯ পৃষ্ঠায় উল্লেখ আছে,

[৪৩৩

المرجح عند الفقهاء أن العامي المنسب

له مذهب لا يجوز مخالفته.

অর্থঃ- “ফকীহগণের নিকট প্রাধান্যপ্রাপ্ত মত এই যে, কোন মাযহাব পন্থী সাধারণ ব্যক্তির জন্যে নিজ মাযহাবের খিলাফ কোন আমল করা জায়িয নেই।”

Rave a mort reagate area is a উলুমিদ্দীন” কিতাবে উল্লেখ করেন,

[৪৩৪]

بل على المقلد اتباع مقلده في كل تفصيل فان مخالفة للمقلد متفق على كونه منكرا بين المحققين.

অর্থঃ- “প্রত্যেক মুকাল্লিদের প্রতিটি বিষয়েই একই ইমামের অনুসরণ করা ওয়াজিব। কেননা বিজ সকল ইমামের এটাই মত যে, নিজ মাযহাবের খিলাফ করা নিষিদ্ধ।”

প্রসিদ্ধ “তাহরীর” নামক কিভাবে উল্লেখ আছে,

[৪৩৫]

وكذا للعامى الانتقال من مذهب إلى

مذهب في زماننا لا يجوز لظهور الخيانة.

অর্থঃ- “সর্ব সাধারণের জন্য বর্তমান যুগে এক মাযহাব ছেড়ে অন্য

মাযহাবের অনুসরণ করা জায়িয নেই বরং হারাম। কারণ এতে দ্বীনের

খিয়ানত প্রকাশ পায়।”

আল্লামা জালালুদ্দীন সুষ্কৃতী রহমতুল্লাহি আলাইহি তাঁর “জাযীলুল মাযহাব কিতাবে উল্লেখ করেন,

[৪৩৬]

اليوم من تحول من مذهبه فبئس ما صنع.

অর্থঃ- “বর্তমান যুগে যে ব্যক্তি নিজ মাযহাব হতে ফিরে অন্য মাযহাবের

আমল করে সে অতি জঘন্য কাজ করলো।”

আল্লামা মুল্লা আলী ক্বারী রহমতুল্লাহি আলাইহি তার বিখ্যাত কিতাব “আল মালুমা” এ উল্লেখ করেন,

[৪৩৭]

قالوا الواجب على المقلد المطلق اتباع مجتهد في جميع المسائل

অর্থঃ- “বিজ্ঞ আলিমগণ বলেন, কোন ইমামের অনুসরণকারীর প্রতি

যাবতীয় বিষয়ে শুধু তাঁরই অনুসরণ করা ওয়াজিব।” নির্ভরযোগ্য তাফসীর গ্রন্থ “তাফসীরে আহমদিয়া”-এর ৩৪৬ পৃষ্টায় উল্লেখ আছে,

[৪৩৮]

قد وقع الاجماع على ان الاتباع انما يجوز للاربع فلا يجوز الاتباع لابي يوسف و محمد وزفر وشمس الائمة اذا كان قولهم مخالفا لاربع وكذا لا يجوز الاتباع.

অর্থঃ “ইজমা সাব্যস্ত হয়েছে যে, শুধু মাত্র মাযহাবের চার ইমামের হারাম। যেমন, হযরত ইমাম আবু ইউসুফ রহমতুল্লাহি আলাইহি, হযরত ইমাম মুহম্মদ রহমতুল্লাহি আলাইহি, হযরত ইমাম যুফার রহমতুল্লাহি আলাইহি, হযরত ইমাম শামছুল আইম্মা রহমতুল্লাহি আলাইহি তাঁদের ইত্তিবা বা অনুসরন করাও জায়িয নেই বরং হারাম। তাদের কথার উপরও আমল করা জায়িষ হবেনা। যখন তাঁরা চার ইমামের মধ্যে যে কোন ইমামের মতের খিলাফ (কোন মাযহাবের অনুসরনীয় ইমাম) মত পোষণ করে থাকেন।”

“তাফসীরে আহমদী” কিতাবের ৩৪৫ পৃষ্টায় উল্লেখ আছে, [৪৩৯]

لا يجوز الانتقال من مذهب الى مذهب اخر كذلك لا يجوز ان يعمل في مسئلة

على مذهب وفي أخرى على اخر. অর্থঃ- “এক মাযহাবের পক্ষে যেমন অন্য মাযহাবে প্রত্যাবর্তন করা নাজায়িয তথা হারাম। ঠিক তেমনিভাবে যে কোন একটি মাসয়ালায় এক মাযহাবের অনুসরণ আবার অন্য একটি মাসয়ালায় অন্য এক মাযহাবের অনুসরণ করাও জায়িয নেই বরং হারাম।”

“দুররুল মুখতার” কিতাবের ১ম খণ্ডের ৬ পৃষ্টায় উল্লেখ আছে,

[880]

إِنَّ حُكْمَ الْمُلْفِقِ بَاطِلُ بِالْإِجْمَاعِ.

অর্থঃ- “সর্বসম্মতিক্রমে শরীয়তে মুলফিক বাতিল তথা ভ্রষ্ট ও পরিত্যাজ্য।” (আর মুলফিক ঐ ব্যক্তিকে বলে, যে দুই মাযহাবের মাসয়ালাকে একত্র করে আমল করে।)

“দুররুল মুখতার” কিতাবে তাযিরের অধ্যায়ে আরো উল্লেখ আছে,

[৪৪১

من ارتحل إلى مذهب الشافعي يعزر.

অর্থঃ- “যে ব্যক্তি নিজ মাযহাবের আমল পরিত্যাগ করে শাফিয়ী (কিংবা অন্যান্য) মাযহাবের অনুসরণ করে সে শাস্তির উপযুক্ত।” “তাফসীরে আহমদী” এর ৩৪৬ পৃষ্ঠায় উল্লেখ আছে,

[৪৪২]

لا يَجُوزُ لِلْحَفِي الْعَمَلَ عَلَى مَذْهَبِ الشَّافِعِي

رَحْمَةُ اللهِ عَلَيْهِ.

অর্থঃ- “হানাফীদের জন্য শাফিয়ী মাযহাবের (মাসয়ালার উপর)

আমল করা নাজায়িষ তথা হারাম।”

উপরোক্ত বিস্তারিত দলীল ভিত্তিক আলোচনার মাধ্যমে প্রমাণিত হল যে, এক মাযহাবের অনুসারীরা সকল বিষয়েই সেই মাযহাবের অনুসরণ করবে। কোন বিষয়ে নিজ মাযহাবকে বাদ দিয়ে অন্য মাযহাবের অনুস্বরণ করা জায়িয নেই।

লাল বংয়ের মাসয়ালাটিও এমন একটি মাসয়ালা। তথাকথিত মুফতী ছাহেব হানাফী মাযহাবের মাসয়ালা লাল রং হারাম বিধানকে শ্যাফিয়ী মাযহাবের দলীল দিয়ে জায়িয করার চেষ্টা করেছে। তাই তার এহেন কর্ম অবৈধ ও কুফরীমূলক হয়েছে। কেননা সে নিজেদের কৃত শরীয়তের খিলাফ আমলকে বৈধ প্রমাণ করার জন্য অন্য মাযহাবের মতকে হানাফী মাযহাবের উপর প্রাধান্য দিয়েছে। আর হানাফী মাযহাবের অনুসারীদেরকে মাযহাব বিরোধী আমলে উদ্বুদ্ধ করেছে।

পরিশিষ্ট

সিলেট খারেজী মাদ্রাসার তথাকথিত মুফতী (!) ছাহেব এর লাল কাপড় সম্পর্কিত মনগড়া দলীলবিহিন ও জিহালত পূর্ণ ফতওয়ার বিস্তারিত ও দলীল ভিক্তিক খগুনমূলক আলোচনা দ্বারা যে বিষয়গুলো প্রমাণিত হয়েছে তা হলো-

১. আমাদের হানাফী মাযহাবের মুখতার বা গ্রহণযোগ্য ও ফতওয়াগ্রাহ্য মতে পুরুষের জন্য সর্বপ্রকার লাল রংয়ের কাপড় পরিধান করা হারাম ও মাকরূহ তাহরীমী। এ ব্যাপারে হানাফীদের দলীল হচ্ছে হযরত আব্দুল্লাহ বিন আমর রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু বর্ণিত ثُوْبَانِ أَحْمَرَانِ হাদীছ শরীফ। যা আবু দাউদ ও তিরমিযী শরীফে বর্ণিত রয়েছে।

২. শাফেয়ী মাযহাবে পুরুষের জন্য সর্বপ্রকার লাল রংয়ের কাপড় পরিধান করা জায়িয। এ ব্যাপারে শাফেয়ীদের দলীল হচ্ছে, হযরত বারা ইবনে আযিব রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু বর্ণিত শরীফ। যা বুখারী শরীফে বর্ণিত রয়েছে। হাদীছ

৩. হানাফীগণ যেহেতু লাল কাপড় হারাম বা নিষিদ্ধ হওয়ার পক্ষে তাই হানাফীগণ বুখারী শরীফে বর্ণিত হযরত বারা ইবনে আযিব রদ্বিয়াল্লাহ তায়ালা আনহু বর্ণিত হাদীছ শরীফকে তা’বীলী বা ব্যাখ্যামূলক অর্থে তথা সোনালী বা গন্ধম রং অর্থে গ্রহণ করেছেন। লাল অর্থে নয়।

৪. কেননা লুগাতী বা আভিধানিক তাহক্বীক্ বা বিশ্লেষণ দ্বারা সুস্পষ্টভাবে প্রমাণিত হয়েছে যে, ” ‘আহমার’ শব্দটি সোনালী ও গন্ধমসহ আরো অনেক অর্থে ব্যবহৃত হয়। আর সোনালী বা গন্ধম রং জায়িয হওয়ার ব্যাপারে কারো কোন দ্বিমত নেই। ৫. লাল রং হারাম হওয়া সম্পর্কিত সমস্ত হাদীছ শরীফগুলোই

ছহীহ হাসান ও মারফু। এগুলোকে ঢালাওভাবে যঈফ ও জাল বলা জিহালত ও গোমরাহী বৈ কিছুই নয়।

৬. ফিক্বাহের কিতাবসমূহে লাল রং সম্পর্কে বিভিন্ন মত উল্লেখ আছে। তবে মুখতার বা ফতওয়াগ্রাহ্য মত হলো, পুরুষের জন্য রহমতুল্লাহি আলাইহি, হযরত ইমাম শামছুল আইম্মা রহমতুল্লাহি আলাইহি তাঁদের ইত্তিবা বা অনুসরন করাও জায়িয নেই বরং হারাম। তাদের কথার উপরও আমল করা জায়িষ হবেনা। যখন তাঁরা চার ইমামের মধ্যে যে কোন ইমামের মতের খিলাফ (কোন মাযহাবের অনুসরনীয় ইমাম) মত পোষণ করে থাকেন।”

“তাফসীরে আহমদী” কিতাবের ৩৪৫ পৃষ্টায় উল্লেখ আছে, [৪৩৯]

لا يجوز الانتقال من مذهب الى مذهب اخر كذلك لا يجوز ان يعمل في مسئلة

على مذهب وفي أخرى على اخر. অর্থঃ- “এক মাযহাবের পক্ষে যেমন অন্য মাযহাবে প্রত্যাবর্তন করা নাজায়িয তথা হারাম। ঠিক তেমনিভাবে যে কোন একটি মাসয়ালায় এক মাযহাবের অনুসরণ আবার অন্য একটি মাসয়ালায় অন্য এক মাযহাবের অনুসরণ করাও জায়িয নেই বরং হারাম।”

“দুররুল মুখতার” কিতাবের ১ম খণ্ডের ৬ পৃষ্টায় উল্লেখ আছে,

[880]

إِنَّ حُكْمَ الْمُلْفِقِ بَاطِلُ بِالْإِجْمَاعِ.

অর্থঃ- “সর্বসম্মতিক্রমে শরীয়তে মুলফিক বাতিল তথা ভ্রষ্ট ও পরিত্যাজ্য।” (আর মুলফিক ঐ ব্যক্তিকে বলে, যে দুই মাযহাবের মাসয়ালাকে একত্র করে আমল করে।)

“দুররুল মুখতার” কিতাবে তাযিরের অধ্যায়ে আরো উল্লেখ আছে,

[৪৪১

من ارتحل إلى مذهب الشافعي يعزر.

অর্থঃ- “যে ব্যক্তি নিজ মাযহাবের আমল পরিত্যাগ করে শাফিয়ী (কিংবা অন্যান্য) মাযহাবের অনুসরণ করে সে শাস্তির উপযুক্ত।” “তাফসীরে আহমদী” এর ৩৪৬ পৃষ্ঠায় উল্লেখ আছে,

[৪৪২]

لا يَجُوزُ لِلْحَفِي الْعَمَلَ عَلَى مَذْهَبِ الشَّافِعِي

رَحْمَةُ اللهِ عَلَيْهِ.

অর্থঃ- “হানাফীদের জন্য শাফিয়ী মাযহাবের (মাসয়ালার উপর)

আমল করা নাজায়িষ তথা হারাম।”

উপরোক্ত বিস্তারিত দলীল ভিত্তিক আলোচনার মাধ্যমে প্রমাণিত হল যে, এক মাযহাবের অনুসারীরা সকল বিষয়েই সেই মাযহাবের অনুসরণ করবে। কোন বিষয়ে নিজ মাযহাবকে বাদ দিয়ে অন্য মাযহাবের অনুস্বরণ করা জায়িয নেই।

লাল বংয়ের মাসয়ালাটিও এমন একটি মাসয়ালা। তথাকথিত মুফতী ছাহেব হানাফী মাযহাবের মাসয়ালা লাল রং হারাম বিধানকে শ্যাফিয়ী মাযহাবের দলীল দিয়ে জায়িয করার চেষ্টা করেছে। তাই তার এহেন কর্ম অবৈধ ও কুফরীমূলক হয়েছে। কেননা সে নিজেদের কৃত শরীয়তের খিলাফ আমলকে বৈধ প্রমাণ করার জন্য অন্য মাযহাবের মতকে হানাফী মাযহাবের উপর প্রাধান্য দিয়েছে। আর হানাফী মাযহাবের অনুসারীদেরকে মাযহাব বিরোধী আমলে উদ্বুদ্ধ করেছে।

পরিশিষ্ট

সিলেট খারেজী মাদ্রাসার তথাকথিত মুফতী (!) ছাহেব এর লাল কাপড় সম্পর্কিত মনগড়া দলীলবিহিন ও জিহালত পূর্ণ ফতওয়ার বিস্তারিত ও দলীল ভিক্তিক খগুনমূলক আলোচনা দ্বারা যে বিষয়গুলো প্রমাণিত হয়েছে তা হলো-

১. আমাদের হানাফী মাযহাবের মুখতার বা গ্রহণযোগ্য ও ফতওয়াগ্রাহ্য মতে পুরুষের জন্য সর্বপ্রকার লাল রংয়ের কাপড় পরিধান করা হারাম ও মাকরূহ তাহরীমী। এ ব্যাপারে হানাফীদের দলীল হচ্ছে হযরত আব্দুল্লাহ বিন আমর রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু বর্ণিত ثُوْبَانِ أَحْمَرَانِ হাদীছ শরীফ। যা আবু দাউদ ও তিরমিযী শরীফে বর্ণিত রয়েছে।

২. শাফেয়ী মাযহাবে পুরুষের জন্য সর্বপ্রকার লাল রংয়ের কাপড় পরিধান করা জায়িয। এ ব্যাপারে শাফেয়ীদের দলীল হচ্ছে, হযরত বারা ইবনে আযিব রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু বর্ণিত শরীফ। যা বুখারী শরীফে বর্ণিত রয়েছে। হাদীছ

৩. হানাফীগণ যেহেতু লাল কাপড় হারাম বা নিষিদ্ধ হওয়ার পক্ষে তাই হানাফীগণ বুখারী শরীফে বর্ণিত হযরত বারা ইবনে আযিব রদ্বিয়াল্লাহ তায়ালা আনহু বর্ণিত হাদীছ শরীফকে তা’বীলী বা ব্যাখ্যামূলক অর্থে তথা সোনালী বা গন্ধম রং অর্থে গ্রহণ করেছেন। লাল অর্থে নয়।

৪. কেননা লুগাতী বা আভিধানিক তাহক্বীক্ বা বিশ্লেষণ দ্বারা সুস্পষ্টভাবে প্রমাণিত হয়েছে যে, ” ‘আহমার’ শব্দটি সোনালী ও গন্ধমসহ আরো অনেক অর্থে ব্যবহৃত হয়। আর সোনালী বা গন্ধম রং জায়িয হওয়ার ব্যাপারে কারো কোন দ্বিমত নেই। ৫. লাল রং হারাম হওয়া সম্পর্কিত সমস্ত হাদীছ শরীফগুলোই

ছহীহ হাসান ও মারফু। এগুলোকে ঢালাওভাবে যঈফ ও জাল বলা জিহালত ও গোমরাহী বৈ কিছুই নয়।

৬. ফিক্বাহের কিতাবসমূহে লাল রং সম্পর্কে বিভিন্ন মত উল্লেখ আছে। তবে মুখতার বা ফতওয়াগ্রাহ্য মত হলো, পুরুষের জন্য সর্বপ্রকার লাল রং হারাম ও নিষিদ্ধ। যা ফতওয়ায়ে শামী, আশয়াতুল লুময়াত ও আবু দাউদের বর্ণনা দ্বারা সুস্পষ্টভাবে প্রমাণিত হয়েছে।

৭. পূর্বে প্রদত্ত ফতওয়ায় “দলীল সমূহ” শিরোনামে যেসকল কিতাব সমূহের নাম উল্লেখ করা হয়েছে তা দলীল হিসেবে সঠিকই রয়েছে। তথাকথিত মুফতী (1) হাহেব অজ্ঞতার কারণে এগুলোর সমালোচনা করেছে।

৮. তথাকথিত মুফতী (1) ছাহেব নিজের বাতিল মতকে ছাবেত করতে গিয়ে “কিতাবের রেফারেন্স” শিরোনামে যেসকল কিতাবের নাম উল্লেখ করেছেন। সেসকল কিতাবেই লাল রং হারাম ও মাকরহ হওয়ার বর্ণনা উল্লেখ আছে।

৯. তথাকথিত মুফতী ছাহেব নিজের বাতিল মতকে ছাবেত করার ব্যর্থ চেষ্টা করতে গিয়ে কোন কোন কিতাবের ইবারতের ভুল ও মনগড়া অর্থ ও ব্যাখ্যা করেছে। আবার কোন কোন ইবারত কারচুপি ও কাট-সাট করেছে। যা তার প্রতারণা ও গোমরাহীর আলামত।

১০. পূর্ণ বা অধিকাংশ লাল রংয়ের পোষাক পরিধান করা হারাম ও মাকরূহ তাহরীমী। আর হালকা বা কম লাল হলে মাকরূহ তানযীহী। নির্ভরযোগ্য কিতাবের বর্ণনা দ্বারা এটাই প্রমাণিত হয়।

১১. লাল রংয়ের সাথে অন্য রং মিশ্রিত থাকলে তা জায়িয” একথা সম্পূর্ণই ভুল ও মনগড়া। নির্ভরযোগ্য কোন কিভাবেই এটা উল্লেখ নেই।

১২. হানাফী মাযহাবের অনুসারীদের জন্য শাফেয়ী মাযহাব অনুযায়ী ফতওয়া দেয়া বা আমল করা সম্পূর্ণরূপেই হারাম। তথাকথিত মুফতী (1) হানাফী দাবীদার হয়ে শাফেয়ী মাযহাবের অনুসরণ করে চরম জিহালতী ও গোমরাহীর পরিচয় দিয়েছে।

১৩. তথাকথিত মুফতী (1) ছাহেব বিনা দলীলে, মনগড়াভাবে কেতুয়ী দলীল দ্বারা হারাম প্রমাণিত লাল কাপড় জায়িয প্রমাণ করার অপচেষ্টা করে কাট্টা-কুফরী করেছে। কেননা আক্বায়িদের কিতাবে উল্লেখ আছে,

اسْتِحْلَالُ الْمُعْصِيَةِ كُفْرٌ

অর্থঃ- “গুনাহ বা হারাম কাজকে হালাল বা জায়িয করার চেষ্টা করাও কুফরী।” (শরহুল আক্বায়িদিন্ নাসাফিয়্যহ)

আর যে কুফরী করে সে মুরতাদ হয়ে যায়, তার জিন্দেগীর সমস্ত নেক আমল বরবাদ হয়ে যায়, হজ্জ করে থাকলে হজ্জ বাজিল হয়ে যায়, বিবাহ করে থাকলে বিবাহ বাতিল হয়ে যায়, তওবা না করা পর্যন্ত তার পিছনের নামায পড়া অথবা তার জানাযা পড়া হারাম। ইসলামী খিলাফত থাকলে তাকে তওবা করার জন্য তিন দিন সময় দেয়া হতো, তিন দিনের মধ্যে তওবা না করলে তার একমাত্র শাস্তি মৃত্যুদণ্ড।

আল্লাহ পাক আমাদের সকলকে ছহীহ সমঝ দান করুন ও প্রদত্ত ফতওয়া মুতাবিক আমল করে আল্লাহ পাক ও তাঁর হাবীব হয়ূব পাক হুল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর খাছ রেযামন্দি হাছিল করার তাওফীক দান করুন। (আমীন)

প্রকাশ্য বাহাছের চ্যালেঞ্জ

রাজারবাগ শরীফ-এর হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী ইসলামের সকল বিষয়েই আহলে সুন্নত ওয়াল জামায়াত তথা কুরআন শরীফ, হাদীছ শরীফ, ইজমা ও কিয়াস সম্মত আক্বীদা পোষণ করেন এবং আমল করে থাকেন। যারা রাজারবাগ শরীফ-এর হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী-এর বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালায় এবং তাঁর আক্বীদা-আমল সম্পর্কে মিথ্যা কথা বলে থাকে তাদের প্রতি-

রাজারবাগ শরীফ-এর তরফ থেকে শর্ত সাপেক্ষে প্রকাশ্য বাহাছ ও চ্যালেঞ্জ ঘোষণা করা হচ্ছে

প্রাথমিক শর্তসমূহঃ (১) বাহাহু প্রকাশ্য ও সুবিধাজনক স্থানে ব্যাপক প্রচার-প্রসার করে নির্দিষ্ট সময়ে হতে হবে। (২) বাহাছের দু’ মাস পূর্বে চুক্তিনামায় আবদ্ধ হতে হবে। (৩) নিরপেক্ষ লোকের তত্ত্বাবধানে বাহাছ অনুষ্ঠানে প্রয়োজনীয় নিরাপত্তার ব্যবস্থা রাখতে হবে। (৪) বাহাছের মানন্দও হবে কুরআন শরীফ, হাদীছ শরীফ, ইজমা ও কিয়াস। (৫) বিরোধীপক্ষের আক্বীদা ও আমলের দলীলও পেশ করতে হবে। (৬) বাহাছের বিষয়সমূহের ব্যাপারে বাহাছের পনের দিন পূর্বে প্রত্যেককেই তার বিপরীতপক্ষের কাছে দলীল ভিত্তিক লিখিত ফায়ছালা পেশ করতে হবে এবং যারা বাহাছে অংশগ্রহণ করবে তারা স্বয়ং নিজ হাতে তাতে স্বাক্ষর করবে। (৭) বাহাছের অন্যান্য শর্তসমূহ উভয়পক্ষের আলোচনা সাপেক্ষে নির্ধারিত হবে।

উল্লেখ্য, রাজারবাগ শরীফের বিরোধীরা অপপ্রচার করে থাকে যে, “রাজারবাগপন্থীদের বাহাছের জন্য আহবান করা হয়, কিন্তু তারা সাড়া দেয় না।” তাদের এ কথাটি সম্পূর্ণ মিথ্যা ও ভিত্তিহীন। বরং রাজারবাগ শরীফ-এর পক্ষ থেকেই মাহফিলসমূহে প্রকাশ্যে এবং পত্রিকার অনেক সংখ্যাতেই তাদেরকে বাহাছের আহবান জানানো হয়েছে ও হচ্ছে। অথচ তারাই সে আহবানে সাড়া দেয়নি ও দিচ্ছেনা। সাড়া দিবে বলেও আমরা মনে করিনা। কারণ বাতিল ও নাহকু পন্থীদের লক্ষ-ঝক্ষ কেবল নির্ধারিত বৃত্তের মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকে। হক্কপন্থীদের সামনে আসতে তাদের চিরকালের ভয়। আর এটাই স্বাভাবিক।

(সমাপ্ত)

হানাফী মাযহবা মতে ফযর নামযে কুনূত বা কুনূতে নাযেলা পাঠ করা নাজায়িয ও নামায ফাসিদ হওয়ার কারণ এবং তার প্রাসঙ্গিক বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া-৭

হানাফী মাযহাব মতে ফযর নামাযে কুনূত বা কুনূতে নাযেলা পাঠ করা নাজায়িয ও নামায ফাসিদ হওয়ার কারণ এবং তার প্রাসঙ্গিক বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া- ৮

ফতওয়া বিভাগ ফতওয়া বিভাগ- গবেষণা কেন্দ্র মুহম্মদিয়া জামিয়া শরীফ হানাফী মাযহাব মতে ফযর নামাযে কুনূত বা কুনূতে নাযেলা পাঠ করা নাজায়িয ও নামায ফাসিদ হওয়ার কারণ এবং তার প্রাসঙ্গিক বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া-১০

ফতওয়া বিভাগ: হানাফী মাযহাব মতে ফযর নামাযে কুনূত বা কুনূতে নাযেলা পাঠ করা নাজায়িয ও নামায ফাসিদ হওয়ার কারণ এবং তার প্রাসঙ্গিক বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া-১১

ফতওয়া বিভাগ: হানাফী মাযহাব মতে ফযর নামাযে কুনূত বা কুনূতে নাযেলা পাঠ করা নাজায়িয ও নামায ফাসিদ হওয়ার কারণ এবং তার প্রাসঙ্গিক বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া-১২