ফরিদপুর উপনির্বাচন ও শাইখুল হদছের আওয়ামী লীগে যোগদান এবং প্রসঙ্গ কথা

সংখ্যা: ১৪৬তম সংখ্যা | বিভাগ:

 হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুমগণ জিজ্ঞেস করলেন, ইয়া রসূলাল্লাহ, ইয়া হাবীবাল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! সৃষ্টির মাঝে উৎকৃষ্ট কে? জবাবে আখিরী রসূল, হাবীবুল্লাহ, নূরে মুজাস্সাম, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, ‘আলিম।’  এরপর হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুমগণ আবার জিজ্ঞেস করলেন, নিকৃষ্ট কে? আখিরী রসূল, হাবীবুল্লাহ, নূরে মুজাস্সাম, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম চেহারা মুবারক ঘুরিয়ে নিলেন। কিন্তু তারপরেও হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুমগণ একবার, দু’বার, তিনবার একই প্রশ্ন করলেন।  অবশেষে হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, “আমাকে ভাল সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করো। খারাপ সম্পর্কে নয়।” হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুমগণ বললেন, ইয়া রসূলাল্লাহ, ইয়া হাবীবাল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! আমাদের যদি খারাপটা সম্পর্কে বলা হতো তবে সে সম্পর্কে আমরা সচেতন হতাম। তার থেকে বিরত থাকতে পারতাম। আখিরী রসূল, হাবীবুল্লাহ, নূরে মুজাস্সাম, রহমতুল্লিল আলামীন, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, ‘সৃষ্টির মধ্যে নিকৃষ্ট হলো নামধারী আলিম তথা ধর্মব্যবসায়ী মাওলানা, মুফতী, খতীব, শাইখুল হাদীছ ইত্যাদি। এর কারণ সম্পর্কে হাদীছ শরীফে বলা হয়েছে যে, এরা দ্বীন বিক্রি করে দুনিয়া হাছিল করে। যেহেতু এরা দ্বীন বিক্রি করে তাই এদের কোন নীতিবোধ থাকে না। এরা হারামকে হালাল করতে পারে। হালালকে হারাম করতে পারে। এরা নিজের কথার বিরুদ্ধে নিজে বলতে পারে। নিজের দেয়া ফতওয়ার বিরুদ্ধে নতুন ফতওয়া দিতে পারে। কিন্তু তার সাথে অনায়াসে আবার নতুন করে কুরআন-সুন্নাহ তথা ইসলামের দোহাই দিতে পারে। এদের সম্পর্কে আল্লাহ পাক ইরশাদ ফরমান, “তোমরা অল্প মূল্যে আমার আয়াত শরীফকে বিক্রি করো না”- এরা হলো ধর্ম ব্যবসায়ী সম্প্রদায়। বলাবাহুল্য, শাইখুল হাদীছ নামধারী এক ব্যক্তি এক্ষেত্রে কুখ্যাত ধর্মব্যবসায়ীরূপে সাব্যস্ত হয়েছেন।  ছবি তোলার বিরুদ্ধে পত্রিকায় বিবৃতি দিয়ে, (সাপ্তাহিক বিচিত্রা ৫ই সেপ্টেম্বর, ১৯৯৭) কিতাব লিখে এখন ধর্মের নামে রাজনৈতিক ফায়দার জন্য তিনি দিব্যি ছবি তুলছেন। নারী নেতৃত্বের বিরুদ্ধে কড়া লিখনী চালিয়েছেন তিনি। যে সব নারী রাজনীতি করে তাদের চরিত্রহীনা বলেছেন। আর এখন সে নারী নেতৃত্বের আচলেই মুখ লুকিয়েছেন। অর্থাৎ নিজের ওয়াজ, ফতওয়া, লিখনীর বিরুদ্ধে নিজেকেই দাড় করাতে মহাসিদ্ধ এই ব্যক্তি।  অতি সম্প্রতি ফরিদপুর-১ আসনের উপনির্বাচনে তার  প্রতারণা প্রকটভাবে প্রমাণিত হয়েছে।  তথাকথিত ইসলামী ঐক্যজোট করলেও আদতে ইসলাম তাদের আদৌ উদ্দেশ্য ছিলনা বিধায় নিজেদের মধ্যে কাজিয়া-ঝগড়া বেঁেধ তা কয়েক খণ্ড হয়েছে।  ফরিদপুর উপনির্বাচনে তাদের সে খন্ডিত, বিরোধি গ্রুপটি শাহ আবু জাফরকে সমর্থন করায়, শাহ আবু জাফরও তাদের কাছে বিরোধি বিবেচিত হলেন। যদিও জোট সরকারের সমর্থণকারী হিসেবে আবু জাফরকেই সমর্থন করা তাদের রীতি ছিলো।  কিন্তু ‘শত্রুর বন্ধু শত্রু’র মতই তারা আবু জাফরের শত্রু হয়ে দাঁড়ালেন। আবার শত্রুর শত্রু বন্ধুর উদাহরণের মতই তারা আওয়ামীলীগকে তাদের বন্ধু হিসেবে গ্রহণ করলেন।  এমনকি দীর্ঘদিনের চিহ্নিত আওয়ামী বিদ্বেষী মহল হবার পরও ফরিদপুর-১ উপনির্বাচনকালে সাচ্চা আওয়ামী দরদী সাজলেন। ‘আওয়ামী লীগ কখনো ক্ষমতায় যেতে পারবে না’- মুফতে কমিনীর এ কথার তীব্র প্রতিবাদ জানালেন। আরো খোলাসা বক্তব্য রাখলেন তথাকথিত শাইখুল হাদীছ আজিজুল হক। বললেন, আমরা বিএনপির সাথে জোটে আছি। আগামী নির্বাচনে আমরা আওয়ামী লীগের সাথেও জোট করতে পারি। (দৈনিক ইনকিলাব, ২৭ আগস্ট-২০০৫) মূলত: তারা করতে পারেনা এমন কোন কাজ নেই। যারা আল্লাহ পাক-এর আয়াতশরীফকে তথা ইসলাম বিক্রি করতে পারে, তাদের দ্বারা কি সম্ভব না হতে পারে? আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে তিনি এযাবতকাল বলে আসছেন যে, “তাদের সময়ে ইসলাম ছিলো না। টুপি-পাগড়ী পড়া যেতনা। এমনকি তার মত বৃদ্ধ লোককেও রংপুর কারাগারে ওজুর পানি দেয়নি। নামায পড়তে দেয়নি। সব আলিম-উলামাদের উপর নির্যাতনের ষ্টীম রোলার চাপিয়েছে আওয়ামী লীগ।”  এতদিনের দেয়া এসব জ্বালাময়ী বক্তব্যের পর এখন তিনি বলছেন, সেই দলের সাথেও তিনি আগামীতে জোট করতে পারেন।  মূলত: এটা আল্লাহ পাক-এর কুদরত। তার ফতওয়া অনুযায়ী আওয়ামী লীগের সাথে যোগ দেয়া মানে তাগুতি শক্তির সাথে আতাত করা। ইসলামের বিরোধিতা করা। আল্লাহ পাক ও তাঁর হাবীব, নূরে মুজাস্সাম হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর বিরোধিতা করা। আগামীতে স্বঘোষিত সেই ইসলাম বিরোধি শক্তির সাথে জোট করতে পারেন সেটা তার মুখ দিয়েই আল্লাহ পাক বের করালেন। অর্থাৎ তিনি ইসলামের কত বড় শত্রু হয়ে দাঁড়াতে পারেন (মূলত: এখনও আছেন) সেটা তার দ্বারাই আল্লাহ পাক প্রকাশ্যে প্রমাণ করালেন। তিনি বর্তমানে ক্বওমী মাদ্রাসাগুলোকে বিশ্ববিদ্যালয় রূপান্তরের দাবী জানাচ্ছেন। বিগত সরকার মাদ্রাসা শিক্ষাকে ধ্বংস করে দিয়েছে বলে বারবার উচ্চারণ করেছেন। আর ৫০ বছর মাদ্রাসায় দরস্ দেবার পরও এখন তিনি সেই মাদ্রাসা শিক্ষা বিরোধীদের মাদ্রাসা ধ্বংসকারীদের সাথেই জোট করতে চাইছেন। এক্ষেত্রে ইসলাম, কুরআন-সুন্নাহ, মাদ্রাসা শিক্ষা বন্ধ, তার নিজের নির্যাতন সহ্য করা, আলিম-উলামাদের নির্যাতনের বিষয়, আল্লাহ পাক ও তাঁর রসূল, নূরে মুজাস্সাম হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সবই পিছে পড়ে থাকবে।  শুধু থাকবে একটি বিষয়, বর্তমান জোট সরকার তাকে যতটুকু ক্ষমতার ভাগ দিচ্ছে তার চেয়ে একটু বেশী ভাগ পাওয়া। (নাউযুবিল্লাহ) অপেক্ষাকৃত যে বেশী ভাগটুকু দিলেই এতদিনের অভিযোগকৃত সে ইসলাম বিরোধী, তার নিজকে ও তথাকথিত আলিম-উলামাদের নির্যাতনকারী, মাদ্রাসা শিক্ষা বন্ধকারী, টুপি-পাগড়ী তথা ইসলাম পালনে বাঁধা দানকারী- বিগত সরকারী দলটিও তখন তার কাছে হয়ে যাবে আজকের জোট সরকারের চেয়ে বেশী ইসলাম পক্ষের দল। যেমনটি চিরকালীন অনৈসলামী দল, বিরোধী দল জামাতে ইসলামীও এখন ক্ষমতার ভাগাভাগির প্রশ্নে এখন হয়েছে তাদের সহযোগী দল।  উল্লেখ করা যেতে পারে, এই সহযোগী দলেরও রয়েছে, আজকের ক্ষমতাসীন সরকারী দলের বিরোধিতা করে তথাকথিত শাইখুল হাদীছের নতুন প্রস্তাবিত মিত্র দল তথা আওয়ামী লীগের সাথে আঁতাত করার অবিশ্বাস্য অভিজ্ঞতা। আওয়ামী লীগের সাথে আন্দোলন করে বিএনপিকে ক্ষমতা থেকে বিতাড়িত করার জ্বলন্ত নজীর।  মূলত: ইসলামের ক্ষমতা নামে ভাগাভাগির রাজনীতিতে শাইখুল হদছের ইসলামী ঐক্যজোট আর জামাতে ইসলামীর মধ্যে পার্থক্য নেই কোনও। সবাই এক ক্ষুরে মাথা কামানো।  কাজেই আজকের তথাকথিত শাইখুল হদছও যে তাদের প্রচারিত ইসলাম বিরোধি দল আওলামী লীগের সাথে জোট করতে পারে তা নতুন কিছু নয়। তাদের সহযোগি দল জামাতে ইসলামী পূর্বেই তার নজীর দেখিয়েছে। যা অদূর ভবিষ্যতে শুধু শাইখুল হদছই নয় কমিনী, চর্মনাই তথা তাবত ধর্মব্যবসায়ী ফিরক্বা- তারা সবাই পারে। মূলত: ‘সব কাফিরের ধর্ম এক’- এই হাদীছ শরীফের ভিত্তিতে বলতে হয় সব ধর্মব্যবসায়ীই মুনাফিক। এরা স্বার্থের জন্য বন্ধুকে শত্রু আর শত্রুকে বন্ধু বলতে পারে নিমিষেই। মূলত: যারা হারামকে হালাল করতে পারে, ইসলাম বিক্রি করতে পারে- তারা আর কি ইবা করা থেকে বিরত থাকতে পারে। যে কারণে আখিরী রসূল, হাবীবুল্লাহ, নূরে মুজাস্সাম, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম কাফিরদের চেয়ে এইসব মুনাফিকদেরকে বেশী ক্ষতি ও ভয়ের কারণ বলে উল্লেখ করেছেন। অতএব, কি বর্তমান সরকারী দল, কি বিগত সরকারী দল অথবা অন্যদল বা সাধারণ মুসলমান সবাইকে মুফাস্সিরে কুরআন, শাইখুল হাদীছ, মুফতী, মাওলানা, খতীব নামধারী এসব চিহ্নিত মুনাফিক সম্পর্কে সাবধান থাকতে হবে।  নচেৎ কি দ্বীন, কি দুনিয়া উভয়ক্ষেত্রেই তাদের দ্বারা ক্ষতিগ্রস্ত হবে। কারণ এরা দ্বিমুখী সাপের চেয়েও বেশী ভয়ঙ্কর (নাউযুবিল্লাহ) এরা ধর্মের শত্রু, জাতির শত্রু, দেশের চরম শত্রু। মহান আল্লাহ পাক এদের হতে আমাদের হিফাযত করুন। (আমীন)

-মুহম্মদ ওয়ালীউর রহমান, ঢাকা।

যুগের আবূ জাহিল, মুনাফিক ও দাজ্জালে কায্যাবদের বিরোধিতাই প্রমাণ করে যে, রাজারবাগ শরীফের হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী হক্ব। খারিজীপন্থী ওহাবীদের মিথ্যা অপপ্রচারের  দাঁতভাঙ্গা জবাব- ১৫

 বিৃটিশ গুপ্তচরের স্বীকারোক্তি এবং ওহাবী মতবাদের নেপথ্যে বিৃটিশ ভূমিকা-১৫ 

কোকাকোলা ও অন্যান্য কোমল পানীয় সম্পর্কে উন্মোচিত সত্য-৩

চাঁদের তারিখ নিয়ে জাহিলী যুগের বদ প্রথার পুনঃপ্রচলন॥ নিশ্চুপ উলামায়ে ‘ছূ’ ঈদ, কুরবানীসহ জামিউল ইবাদত হজ্জও হচ্ছে বরবাদ

শুধু ছবি তোলা নিয়েই বড় ধোঁকা নয়, গণতান্ত্রিক শাসনতন্ত্র চর্চা করে “ইসলামী শাসনতন্ত্র আন্দোলনের” নামেও তিনি মহা ধোঁকা দিচ্ছেন