ফ্যাশন শব্দটির উৎপত্তিকারক পশ্চিমারা। এবং পশ্চিমাদের উপর ভর করে ইহুদীরা তাদের স্বভাবজাত কূটকৌশলে তা যথারীতি পাচার এবং বাজারজাত করেছে মুসলিম দেশগুলোতেও। এর প্রমাণ ও উদাহরণ বহু। তারপরেও পাঠকের সুবিধার্থে একটি নমুনা পেশ করা গেলো। গত ১১ই ফেব্রুয়ারী-২০০৭ ঈসায়ী তারিখে দৈনিক আমার দেশ পত্রিকায় ছাপা হয়,
প্যারিস কামস টু ঢাকা ফরাসি মডেলদের বর্ণাঢ্য ফ্যাশন শো
বাংলাদেশ ক্রমপ্রসারিত ফ্যাশন জগতের উপর আস্থা রেখে ফরাসি দূতাবাসের সহায়তায় ঢাকার প্যান প্যাসিফিক সোনারগাঁও হোটেলে অনুষ্ঠিত হলো এক বর্ণিল ফ্যাশন শো। প্যারিস কামস টু ঢাকা শিরোনামের দু’দিনব্যাপী এই ফ্যাশন শো’র গতকাল ছিল শেষ দিন। ৯ ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যায় অনুষ্ঠিত হয় প্রথম দিনের শো। প্যান প্যাসিফিক সোনারগাঁও হোটেলের বল রুমে আয়োজিত বর্ণাঢ্য এই ফ্যাশন শোতে ফ্রান্সের ১২ জন আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন ফ্যাশন ডিজাইনারের ডিজাইন করা পোশাক প্রদর্শন করা হয়। সেই সঙ্গে আয়োজনে অংশ নেয় ফ্রান্সের ১৩ জন আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন মডেল। ফ্রান্সের ডিজাইনারদের পাশাপাশি বাংলাদেশের ডিজাইনার বিবি রাসেল, আনিলা হক, কুহু এবং রীনা লতিফের ডিজাইন করা এক্সক্লুসিভ পোশাকও শো’তে প্রদর্শিত হয়। প্যারিস কামস টু ঢাকা শো’তে বিশ্বখ্যাত সেলিব্রিটিদের জন্য ডিজাইন করা ১২০ টি পোশাক প্রদর্শিত হয়। খ্যাতনামা ডিজাইনারদের পাশাপাশি এদেশের বিভিন্ন ডিজাইন ইনস্টিটিউটের সেরা ছাত্রছাত্রীদের ডিজাইন করা পোশাক র্যাম্প প্যারেডে প্রদর্শনের সুযোগ পায়। জন গিয়ালা, কেনজো টাকাডা, জিন চার্লেস দ্যা ক্যাস্টেল ব্যাজাক, জিন লুইস শেরার, কারডেন, প্যাসকেল গিয়াকমিনি, এমিরিক ফ্রাঙ্কস, গ্রুপি শানেল, জর্জেস শাকরা, লুই-এর মতো বিশ্বখ্যাত ব্রান্ডের উপস্থিতিতে প্যারিস কামস টু ঢাকা শীর্ষক এই শো’তে প্যারিস সৌরভ অক্ষুণœ থাকে পুরো আয়োজন জুড়েই। অনুষ্ঠানে চিফ কো-অর্ডিনেটর হিসেবে ছিলেন এলিজাবেথ ইয়াবেরি। শো প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আমরা বিশ্বাস করি বাংলাদেশ এখন তার সৃজনশীলতা এবং দক্ষতার বিচারে ফ্যাশন সেক্টরে অনেকদূর এগিয়েছে। বিশ্বের অন্যান্য ফ্যাশন সমৃদ্ধ দেশের পাশাপাশি বাংলাদেশও ফ্যাশন নিয়ে নানা ধরনের কাজ করতে এবং করে দেখাতে সক্ষম। তাই আমরা ঢাকার এই এক্সক্লুসিভ ফ্যাশন শো করতে আগ্রহী হয়েছি। আমাদের এই আয়োজন সার্থক হয়েছে। আমি মনে করি, ঢাকার দর্শকদের জন্য প্যারিস কামস টু ঢাকা শো’টি ছিল এক অন্যরকম রোমাঞ্চকর অভিজ্ঞতা। প্যারিস থেকে ১০০ জনের একটি টিম এই শো উপলক্ষে ঢাকায় আসে। টিমে রয়েছে মডেল, ডিজাইনার এবং কোরিওগ্রাফার। উল্লেখ্য, বর্ণিল এই ফ্যাশন শো থেকে প্রাপ্ত সমুদয় অর্থ কেয়ার বাংলাদেশ-এর উন্নয়ন তহবিলে দান করা হবে।” এখানে উল্লেখ্য, কেয়ার একটি চিহ্নিত প্রভাবশালী এনজিও নামধারী খ্রিস্টান মিশনারী সংস্থা। ব্যাপারটা ঘটে যাচ্ছে ব্রিটিশ আমলের খ্রিস্টান পাদরীদের মত। খ্রিস্টান পাদরীরা বাংলায় কুরআন শরীফ, হাদীছ শরীফ অনুবাদ করে তা ছাপাত এবং ছাপিয়ে যা লাভ হতো সে লাভের অর্থ আবার ব্যয় করত মুসলমানদের খ্রিষ্টান বানানোর কাজেই। এ প্রসঙ্গে তাদের সে বিখ্যাত উক্তি উল্লেখ্য। ‘এদেশের মুসলমানদের ধর্মীয় গ্রন্থ বঙ্গানুবাদ করে বিক্রীত যে অর্থ লাভ হচ্ছে তা ব্যয়িত হচ্ছে তাদেরই ধর্ম বিনষ্ট করারই কাজে।’ উল্লেখ্য, এখন খ্রিস্টানরা আরো অনেক দূর এগিয়েছে। মুসলমান চলন-বলন, পোশাক-আশাকে সব সময়ই ছিলো আলাদা তাহজীব তমুদ্দনের অধিকারী। সে সম্পর্কে সন্ত্রস্থ থাকত খ্রিস্টান পরাশক্তি। খোদ ব্রিটিশ আমলে ব্রিটিশ রানী ভিক্টোরিয়া এদেশ সফরে এসে যখন জানতে পারেন যে, এদেশের লোকজন পর্দা পালন করেন। তখন ভিক্টোরিয়া তার হাফস্কার্ট বাদ দিয়ে লম্বা পোশাক পড়ে এদেশে চলাচল করেন। সেক্ষেত্রে আজ এদেশের মুসলমানের এতটুকু অবনতি যে, তারা এখন খোদ মুসলমানকেই প্রায় বস্ত্রহীন বা বিবস্ত্র পোশাক পড়ার প্রকাশ্য তা’লীম দিয়ে যাচ্ছে। নামী-দামি হোটেলগুলোতে ফ্যাশন শো’র আয়োজনে প্রায় নগ্ন ক্যাটওয়ার্কের মাধ্যমে তাদের প্রকাশ্য মহড়া চলছে। কিন্তু এতসব কিছুর পরও নির্বিকার, নিঃশ্চুপ, নিস্তব্ধ এদেশের তথাকথিত ইসলামী রাজনৈতিক দলগুলো। মৌসুমী আর সুবিধাবাদী রাজনীতিবিদদের মতই তারা এসব বিষয়ে নিষ্ক্রিয়তার মৌসুম পার করে। কেবলমাত্র যেসব ক্ষেত্রে বিদেশী কানেকশন ও স্বার্থের ইন্ধন থাকে যেসব বিষয়েই তারা হৈচৈ করে। আর সেটাই হয় তাদের তথাকথিত ইসলামী আন্দোলন। এদিকে ইহুদী-নাছারা-হিন্দুদের ষড়যন্ত্রে ঈদ পোশাকেও এখন আর কোনই ইসলামী অনুভূতি তথা মুসলমানী তাহজীব-তমুদন্ন পালিত হচ্ছে না। ফ্যাশনের এমনকি ঈদ পোশাকের নামে মুসলমান তরুণ-তরুণীদের মাঝে এখন হুযূগ মাতিয়ে দেয়া হয়েছে যে, তারা এখন পুরো ইহুদী-খ্রিস্টানী পোশাক রপ্ত করছে। পত্রিকান্তরে এ বিষয়ে রিপোর্ট হয়, তারুণ্যের ফ্যাশন ট্রেন্ড ফ্যাশন বিষয়টি আগে আমাদের দেশে অনেকটা সেলিব্রেটিকেন্দ্রিক থাকলেও এখন এর বিস্তার লাভ করেছে অনেক। সাধারণ মানুষের কাছেও এখন ফ্যাশনের গুরুত্ব অনেক। মূলতঃ আমাদের দেশের তরুণদের কাছেই এখন পরিপূর্ণ ফ্যাশনের চাহিদা অনেক। তরুণরা এখন সব সময়ই নিত্য নতুন ফ্যাশন নিয়ে ব্যস্ত। পাশ্চাত্য সংস্কৃতির প্রভাবেই আমাদের দেশের ফ্যাশন জগতে এসেছে আমূল পরিবর্তন। যার ফলে দেশীয় সংস্কৃতির পোশাকের পাশাপাশি এখন আমাদের দেশের তরুণরা পছন্দ করছে ওয়েস্টার্ন পোশাক। তাই ফ্যাশন ডিজাইনাররাও দেশী পোশাকের সঙ্গে ওয়েস্টার্ন পোশাক যুক্ত করে তৈরী করছেন নতুন নতুন ফ্যাশন। কাপড়ের রঙ ও ডিজাইনেও এসেছে নানা বৈচিত্র্য। শুধু পোশাকের ফ্যাশনের পরিবর্তন এসেছে তা কিন্তু নয়; পরিবর্তন এসেছে গহনা, জুতার ফ্যাশনেও। পরিবর্তন এসেছে তরুণ-তরুণীদের হেয়ার স্টাইলেও। বর্তমানে পার্টি কিংবা অনুষ্ঠানে মেয়েদের মিনি স্কার্ট বা টপস-প্যান্ট পড়তে দেখা যাচ্ছে। পাশাপাশি ছেলেদের বড় ঢোলা শার্টের পরিবর্তে জায়গা করে নিয়েছে শর্ট শার্ট। সুতরাং বোঝা যাচ্ছে তরুণরা বর্তমানে ছোট পোশাককে ভালোভাবেই গ্রহণ করেছে। আগে গহনা সীমাবদ্ধ ছিল কেবল সোনা-রূপার মধ্যে। কিন্তু এখন তরুণ-তরুণীরা ব্যবহার করছে বিভিন্ন রকম অর্নামেন্টস। তবে ফ্যাশন জগতের এই বিশাল পরিবর্তনের আগে কিন্তু পরিবর্তন হয়েছে মানুষের চিন্তা-ভাবনা, আশা-আকাঙ্খা ও মন-মানসিকতার। তা না হলে ফ্যাশন আজ এ পর্যায়ে এসে পৌঁছাত না। তবে তরুণরাই এর মূল পথপ্রদর্শক। তরুণরা আজ সদা নিত্য নতুন ফ্যাশনের সঙ্গে সম্পর্ক গড়তে উৎসাহী। আজ একটি ফ্যাশন নতুন হলে কাল তা তরুণদের কাছে হয়ে যাচ্ছে পুরনো। তরুণরা যাই পরছে তাই আধুনিক ফ্যাশনে রূপ নিচ্ছে। তারুণ্যের জিন্স: তরুণ-তরুণীরা এখন সমানতালে জিন্স পড়ছে। আগে এ কথা ছিল কল্পনারও বাইরে। জিন্স অনেক আগে থেকে ব্যবহৃত হলেও, তা ছিল শুধুই ছেলেদের পোশাক। এখন তারুণ্যের প্রতীক জিন্স। আগে জিন্সের ডিজাইন ও কালারে ছিল সীমাবদ্ধতা। এখন জিন্সের ডিজাইন ও কালারে এসেছে অনেক পরিবর্তন। পুরনো দিনের সেই বেলবটম উঠে এসেছে তরুণীদের পরনে। অবশ্য বলিউড নায়িকা কারিনাকে এ যুগের বেলবটমের পথ প্রদর্শক বলা যায়। শুধু কি মেয়েরা, বেলবটম এখন অনেক ছেলেরও পছন্দ। বেল বটমের পাশাপাশি ব্যাগি ও ডার্টি জিন্সও ভালো চলছে। স্কিন টাইপ জিন্স কয়েক বছর আগে ছেলেদের পছন্দের তালিকায় থাকলেও এ ধরনের জিন্স তরুণরা এখন কম পরছে। তবে তরুণীরা টপস ও ফতুয়ার সঙ্গে স্কিন টাইট জিন্স এখন ভালোই ব্যবহার করছে। দিনে দিনে একটি ফ্যাশন পুরনো হয়ে গেলেও, জিন্সের গ্রহণযোগ্যতা কিন্তু কমেনি। বরং বেড়েছে কয়েক গুণ। ছেলেদের ফতুয়া গেঞ্জি, টিশার্ট, শর্ট শার্ট ও পাঞ্জাবির সঙ্গে যেমন জিন্স চলছে তেমনি মেয়েদের টপস, ফতুয়া, কামিজ ও শর্ট কামিজের সঙ্গেও জিন্স খুব চলছে। এছাড়া তরুণ-তরুণীদের কাছে জিন্স একটি কমফোর্টেবল পোশাক বলেও সমাদৃত হচ্ছে। তাই দিনে দিনে জিন্সের ডিজাইন ও কালারে যেমন আসছে বৈচিত্র্য ও পরিবর্তন, তেমনি জিন্সের গ্রহণযোগ্যতা ও চাহিদাও বাড়ছে সমানতালে। কামিজে বৈচিত্র্য: কামিজের ডিজাইন ও কাটিংয়ের পরিবর্তন আসার কারণে কামিজ হচ্ছে আরও বেশি জনপ্রিয়। তরুণীরা সবসময়ই নতুন নতুন ডিজাইনের কামিজ কিনছে ও তৈরী করে নিচ্ছে। কিন্তু পায়ের গোড়া ছুঁই ছুঁই কামিজের পরিবর্তে এ সময় জায়গা করে নিয়েছে হাঁটুর উপর থেকে শুরু করে কোমর পর্যন্ত মাপের কামিজ। যার নাম শর্ট কামিজ। বর্তমানে তরুণীদের কাছে শর্ট কামিজের চাহিদা তুঙ্গে। কেউ পরছে ফুলহাতা শর্ট কামিজ, কেউ পরছে হাফহাতা শর্ট কামিজ আবার কেউ পরছে থ্রি কোয়ার্টার হাতার শর্ট কামিজ। বর্তমানে ভলেস শর্ট কামিজও খুব ভালো চলছে। আগে দ্বিধা থাকলেও এখন রক্ষণশীল পরিবারের মেয়েরাও পরছে ি ভলেস শর্ট কামিজ। শর্ট কামিজের সঙ্গে বেলবটম সালোয়ার অথবা বেলবটম জিন্সও বেশ ভালো চলছে। ফ্যাশন ডিজাইনাররা শর্ট কামিজের চাহিদা দেখে তৈরী করছেন অনেক অনেক ডিজাইনের শর্ট কামিজ। ব্যবহার করছেন সুতিসহ অন্যান্য কাপড়ও। এছাড়াও অনেক তরুণী টেইলার্সে গিয়ে তৈরী করছেন নিজস্ব ডিজাইনের শর্ট কামিজ। শর্ট কামিজের বাজার খুবই ভালো। বিভিন্ন ফ্যাশন হাউজ ও শপিং মলগুলোতে তাই এখন শর্ট কামিজের কালেকশনও ভালো। ফতুয়ার প্রাধান্য: বর্তমানে তরুণ-তরুণীদের কাছে ফতুয়া খুবই জনপ্রিয়। আগে ফতুয়া শুধু ছেলেদের পোশাক হিসেবে ব্যবহৃত হলেও, এখন কিন্তু আর সে রকম নয়। মেয়েরাও এখন কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন জায়গায় ব্যবহার করছে ফতুয়া। ফলে ফতুয়াই যে এখনকার তরুণ-তরুণীদের সবচে’ প্রিয় পোশাক, একথা বললেও ভুল হবে না। ফ্যাশন হাউজগুলোতেও এখন তাই ফতুয়ার জয়জয়কার। আগে ফতুয়া ছিল হাফহাতা ও দু’ একটি রঙের মধ্যেই সীমাবদ্ধ। কিন্তু এখন ফতুয়ার কালার ও প্রিন্টের কোনও সীমাবদ্ধতা নেই। ছেলেদের জন্য এখন পাওয়া যাচ্ছে হাফহাতা ও ফুলহাতা ফতুয়া। আর পাওয়া যাচ্ছে কলারওয়ালা ও কলার ছাড়া। মেয়েদের ফতুয়ায় ডিজাইন রয়েছে অনেক রকম। বিশেষ করে হাতার ডিজাইন রয়েছে ভ্যারাইটি। তেমনি কালার ও সাউজ রয়েছে বিভিন্ন রকম। ফতুয়ার সঙ্গে জিন্স পরতেই তরুণরা বেশী পছন্দ করছে। ফতুয়া একদিকে যেমন ফ্যাশনেবল অন্যদিকে তেমনি কমফোর্টেবল। ওয়েস্টার্ন আউটফিটের জনপ্রিয়তা: বিভিন্ন পোশাকের পাশাপাশি এখন তরুণ-তরুণীরা পছন্দ করছে ওয়েস্টার্ন পোশাক। বর্তমানে মেয়েদের জনপ্রিয় পোশাক হলো স্কার্ট। তরুণীরা স্কার্টের সঙ্গে পরছে টপস, শার্ট প্রভৃতি। বর্তমানে লং স্কার্ট তরুণীদের কাছে বেশ গ্রহণযোগ্যতা পেয়েছে। এখন লং স্কার্টের চল না থাকলেও অনেক তরুণী আছেন যারা হাঁটুর উপর পর্যন্ত মিনি স্কার্ট পরতেও পছন্দ করেন। স্কার্টের পাশাপাশি আধুনিক অনেক মেয়েই বর্তমানে টপস ও জিন্স পরতে পছন্দ করেন। শার্ট আর জিন্স, টি-শার্ট আর জিন্স অথবা ঘাগড়া পরছেন এখনকার অনেক তরুণীরা। মেয়েদের পাশাপাশি ছেলেরা এখন ওয়েস্টার্ন পোশাকের প্রতি আসক্ত। ছেলেরা এখন ঢোলা জিন্সের সঙ্গে পরছে বিভিন্ন ধরনের টি-শার্ট। কাঁধে ঝোলাচ্ছে কাঁধ ব্যাগ। তবে ওয়েস্টার্ন পোশাকের মধ্যে ছেলেদের সবচে’ প্রিয় পোশাক হলো শর্ট শার্ট। এছাড়া শর্ট গেঞ্জিও খুব ভালো চলছে এখন। তবে যে যাই পরুক, ওয়েস্টার্ন পোশাক যে তরুণ-তরুণীদের মনে একটি জায়গা করে নিয়েছে, তা কিন্তু বোঝা যাচ্ছে। হেয়ার স্টাইল: পোশাকের পরিবর্তনের পাশাপাশি আমাদের দেশে চুলের স্টাইলেও এসেছে পরিবর্তন। তরুণীরা এখন আর চুল বড় করার প্রতিযোগিতায় না নেমে চুলের স্টাইলের প্রতিযোগিতায় নেমেছে। বিউটি পার্লারের বদৌলতে এখন যে কেউই দিতে পারছে নিজের ফেসকাট অনুযায়ী চুলের কাট। তরুণীরা কেউ করছে লেয়ার কাট, কেউ করছে স্ট্যাপ কার্ট আবার কেউ করছে কালি। অনেক তরুণী করছে বলিউড সেলিব্রেটি প্রিতী, রানী, কারিনা, ঐশ্বরিয়া ও শিল্পা কাট। অনেক তরুণী ফ্যাশনের দিকটি মাথায় রেখে একেক অকেশনে চুল বাঁধছে একেক রকম করে। চুলের স্টাইলে ছেলেরাও পিছিয়ে নেই। এক বাটি তেল দিয়ে মাথা আচড়িয়ে বের হতে তারা নারাজ। সেলুনে গিয়ে তারা করছে নিজস্ব স্টাইলের হেয়ার কাট। ছেলেদের হেয়ার কাটের মধ্যে স্কয়ার, লেয়ার ও বাবরী কাট ভালো চলছে এখন। তবে এখন প্রায় সব তরুণ-তরুণী কালার করাচ্ছে চুলে। যেন চুলে কালার করার জোয়ার বইছে। রঙের মধ্যে এখন ভালো চলছে গোল্ড, এ্যাশ, রেড, ব্লু প্রভৃতি। গহনা ফ্যাশন: সবকিছু মিলিয়ে ফ্যাশন একথা তরুণরা এখন ভালো করেই বোঝে। তাই তরুণ-তরুণীরা স্টাইলিস্ট পোশাকের পাশাপাশি ব্যবহার করছে মানানসই গহনা। তবে গহনা এখন আর সোনা-রুপার মধ্যে সীমাবদ্ধ নেই। বিভিন্ন ধনের গহনা পরছে তরুণ-তরুণীরা। পোড়ামাটির গহনা, কাঠের গহনা মাটির গহনা, মুক্তার গহনা, ইমিটেশন এখন বেশ জনপ্রিয় তরুণ-তরুণীদের কাছে। মেয়েদের গ-ি পেরিয়ে ছেলেরা ব্যবহার করছে চেইন, বালা, রিং, কানের টপ প্রভৃতি। আর মেয়েরা এখন বিভিন্ন জায়গায় চলাচল করতে ইমিটেশন ব্যবহার করতেই বেশী পছন্দ করছে। বিভিন্ন ফ্যাশন হাউজ, গিফট শপ, মার্কেট ও শপিংমলেও তাই ছেলেমেয়েদের গহনার কালেকশনের কমতি নেই। স্টাইল প্রকাশে এক্সেসরিজ: স্টাইল প্রকাশে এক্সেসরিজের জুড়ি নেই। তরুণ-তরুণী সবাই এখন ব্যবহার করছে এক্সেসরিজ। তরুণীরা অনেকেই ব্যবহার করছে ব্রেসলেট অথবা ব্রেসলেট টাইপ ঘড়ি। জিন্স ও টপসের সঙ্গে ব্যবহার করছে মানানসই ও স্টাইলিস্ট বেল্ট। অনেকে আবার পিঠে, বাজুতে, পায়ে ও কাঁধে লাগাচ্ছেন স্থায়ী অস্থায়ী ট্যাটু। অনেক তরুণীই পরছে স্টাইলিস্ট সানগ্লাস। ক্যাপ বা হেডও ব্যবহার করে অনেক তরুণী। চোখের সৌন্দর্য বাড়াতে অনেকে ব্যবহার করছে লেন্স। তরুণীদের মতো তরুণরাও ব্যবহার করছে এক্সেসরিজ, হাতে লিস্ট বেল্ট বা ব্রেসলেট পরা এখন তরুণদের কাছে নিয়মিত ব্যাপার। অনেকে ব্যবহার করছে বড় ডায়ালের ঘড়ি। অনেক তরুণই সানগ্লাস ও ক্যাপ পরার মাধ্যমে প্রকাশ করছে নিজের স্টাইল। কেউবা ফ্রেঞ্চকাট দাড়িতে বা লম্বা চিপেও প্রকাশ করছে স্টাইল এবং পোশাক-আশাক-গহনাসহ সবদিক দিয়ে এখনকার তরুণ-তরুণীরা হতে চায় ফ্যাশন সচেতন।” (সূত্র: দৈনিক আজকের কাগজ) তাদের কাছে এ অনুভূতি এখন জোরদার করা হয়েছে যে, যুগ পাল্টেছে, চিন্তা-ভাবনা পাল্টেছে, ফ্যাশন পাল্টেছে। তাই বড় পোশাকের বদলে ছোট পোশাক পছন্দ করছে তরুণ-তরুণীরা। শর্ট ড্রেসের ট্রেন্ডে তারা এখন খুব মেতেছে। উপরোক্ত সংবাদ ভাষ্যে এটাই বিশেষভাবে প্রতিভাত হয় যে, আজকে মুসলমান তরুণ-তরুণীরা তাদের পোশাক-আষাক, মনোবৃত্তি, চাল-চলন পুরোই ইহুদী-খ্রিস্টান হয়ে গেছে। অথচ হাদীছ শরীফে ইরশাদ হয়েছে, ‘যে যে জাতির সাথে মিল রাখবে তার হাশর-নশর তাদের সাথেই হবে।’
কিন্তু মুসলমান তরুণ-তরুণীরা বিষয়টাকে সেভাবে দেখছেনা। এটাকে তারা মূল্যায়ণ করছে ফ্যাশন হিসেবে। কিন্তু ইহুদী-নাছারারা যে, ঠিকই ফ্যাশনের নামে মুসলমান তরুণ-তরুণীদের ভিতর থেকে ইসলামী মূল্যবোধ অপসারিত করে দিচ্ছে সে বিষয়টি তারা আদৌ উপলব্ধি করতে পারছে না। পাশাপশি ফ্যাশনের নামে শর্টকামিজ, ভিলেজ কামিজ, টপস, শর্ট ফতুয়া, জিন্স ইত্যাদির নামে তারা যে মুসলিম তরুণীদের প্রায় বস্ত্রহীন বা বিবস্ত্র করে রাস্তায় বের করে দিচ্ছে তাও তারা বুঝে উঠতে পারছে না। বিষয়টি এমনই বিস্তার লাভ করেছে যে, এখন গল্পের সে শিশুও অবশিষ্ট নেই যে, নতুন ফ্যাশনের নামে পোশাকবিহীন রাজা বা ব্যক্তিকে বলবে, রাজা তো বস্ত্রহীন বা বিবস্ত্র। (নাউযুবিল্লাহ) সত্যিই এতটাই মনোবিকার ঘটেছে আজ মুসলমানের। মুসলমানের ধর্মীয় উৎসব- ঈদের নামে আজকে তারা চালু করছে ঈদ ফ্যাশন। আর সে ফ্যাশনের নামে চলছে পুরোদস্তর ওয়েস্টার্ণ আর হিন্দুদের পূজার পোশাকের প্রচলন। আর সে মুসলমানই কখনো কখনো হায়-হুতাশ করে মুসলমান কেন মার খাচ্ছে। অথচ সে মুসলমানের আমল অনুভূতি সবই যেন ওয়েস্টার্ন হয়ে গেছে। শুধু নামটা থেকে গেছে মুসলমানী। যেমন বলতেই রোযার ঈদ, অথচ এ ঈদের নামে যা কিছু হচ্ছে সবই রোযার আদর্শের খেলাফ, ইসলামী শরীয়তের খেলাফ। এ যেন ইসলামের সাথে, আল্লাহ পাক-এর সাথে উপহাস করা। তাই আবারো বলতে হয়, আজ মুসলমানই তাদের অবণতির জন্য পুরোই দায়ী।
-মুহম্মদ ওলীউর রহমান, ঢাকা।
ব্রিটিশ গুপ্তচরের স্বীকারোক্তি এবং ওহাবী মতবাদের নেপথ্যে ব্রিটিশ ভূমিকা-৩২