বর্তমানে ইসলামের নামে বা মুসলমানের ছূরতে ইসলাম ও মুসলমানদের ক্ষতি সাধনে বা মুসলমানদের ঈমান আমল নষ্ট করণে ইহুদী-নাছারাদের খাছ দালাল বা এজেন্ট হয়ে যারা কাজ করছে তারা হলো-
১। শিয়া, ২। কাদিয়নী, ৩। ওহাবী।
“কাদিয়ানী ফিরক্বা”
আরেকটি অন্যতম গুমরাহ ও কুফরী আক্বীদা সম্বলিত খতমে নুবুওওয়াত অস্বীকারকারী বাতিল ফিরক্বা হচ্ছে- কাদিয়ানী ফিরক্বা। তারা নিজেদেরকে মুসরমান বলে দাবী করলেও হাক্বীক্বতে তারা মুসলমান নয়। কারণ তারা খতমে নুবুওওয়াত অস্বীকারকারী। তাই আহলে সুন্নত ওয়াল জামায়াতের দৃষ্টতে তারা কাট্ট কাফির ও চির জাহান্নামী।
কাদিয়ানী, বাহাইসহ খতমে নুবুওওয়াত অস্বীকারকারী সকলেই কাফির
হাদীছ শরীফে ইরশাদ হয়েছে, “হযরত ছাওবান রদ্বিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত। সাইয়্যিদুল মুরসালীন, খতামুন্্ নাবিয়্যীন হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, নিশ্চয়ই অতি শীঘ্রই আমার উম্মতের মধ্য হতে ত্রিশজন মিথ্যাবাদী বের হবে, তারা প্রত্যেকেই নিজেদেরকে নবী বলে দাবী করবে অথচ আমিই শেষ নবী, আমার পর আর কোন নবী নেই।” (আবূ দাউদ শরীফ, তিরমিযী শরীফ, মিশকাত শরীফ)
অন্য হাদীছ শরীফে ইরশা হয়েছে, আখিরী রসূল, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, “প্রায় ত্রিশজন মিথ্যাবাদী দাজ্জাল বের হবে, তারা প্রত্যেকেই নিজেদেরকে রসূল বলে দাবী করবে। (বুখারী শরীফ, মুসলিম শরীফ) উল্লেখ্য যে, কোন কোন বর্ণনায় ৭০ জনের কথাও উল্লেখ আছে।
মূলকথা হলো, আল্লাহ পাক-এর হাবীব হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর পর বহু লোক নবী দাবী করবে। কিন্তু তারা সকলেই কাট্টা কাফির চির জাহান্নামী। স্বয়ং আখিরী রসূল, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর উপস্থিতিতেই অনেকে নবী দাবী করেছে।
এ প্রসঙ্গে হাদীছ শরীফে উল্লেখ আছে, “আল্লাহ পাক-এর হাবীব হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম একদিন স্বপ্নে দেখলেন, তাঁর দুই হাত মুবারকের মধ্যে দু’টি বলয় বা বালার মত দু’টি জিনিস। স্বপ্নে দেখে হুযূর পাকচ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ফুঁ দিলেন, দেখা গেল সেই বালা দু’টি ভেঙ্গে টুকরা টুকরা হয়ে পড়ে গেল। পরের দিন আল্লাহ্্ পাক-এর রসূল হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুমগণের নিকট বললেন, দেখ দুই ব্যক্তি নবী দাবী করবে। একজন মুসাইলামা আর একজন আসওয়াদ আনসি এবং তারা ধ্বংস হয়ে যাবে।”
দেখা গেল, সত্যি কিছুদিনের মধ্যে তাই হলো। মুসাইলামার বাড়ী ছিল ইয়ামামা। সে আল্লাহ পাক-এর রসূল হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর সাথে সাক্ষাৎ করলো। মূলতঃ বাহ্যিকভাবে সে ঈমান আনলো কিন্তু আন্তরিকভাবে নয়। সে বাড়ীতে গিয়ে চিঠি দিল যে, “ইয়া রাসূলাল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! আপনি আমাকে আপনার রিসালতের অংশিদার করুন অথবা আপনার গদ্দীনশীন করুন।” আল্লাহ পাক-এর রসূল তার বিরুদ্ধে শক্ত চিঠি লিখলেন যে, হে মুসাইলামা! তুমি এখনও তওবা কর, তোমার সময় আছে, নাহলে তোমার শাস্তি কঠিন কঠোর হবে, আর তোমার পরিণতি খুব খারাপ হবে। শেষ পর্যন্ত তাই দেখা গেছে, মুসাইলামা মুসলমানদের বিরুদ্ধে যুদ্ধে শোচনীয়ভাবে লাঞ্ছনার সাথে মারা যায়। হযরত ওহসী রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর কাছে মক্কা বিজয়ের পর মুসলমান হয়েছিলেন। তখন হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছিলেন, “হে ওহসী! তুমি একটু আড়ালে বস। কারণ তোমাকে দেখলে আমার চাচা হযরত হামজা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু-এর কথা স্মরণ হয়ে যায়।” এতে হযরত ওহসী রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু খুবই চিন্তিত হলেন এবং ভাবলেন সত্যিই আমি একটি বিরাট অপরাধ করেছিলাম যখন ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করিনি, তখন হযরত হামজা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুকে শহীদ করে। অবশ্যই এর কাফফারা আমাকে আদায় করতে হবে। তিনি খুব পারদর্শী ছিলেন বল্লম নিক্ষেপের মধ্যে। তাঁর নিক্ষেপ লক্ষ্য ভেদ করতো। মুসাইলামার বিরুদ্ধে যখন যুদ্ধ শুরু হয় তখন তিনি সেই বল্লম নিলেন যেটা দিয়ে হযরত হামজা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুকে শহীদ করেছিলেন এবং ভাবলেন যে, হযরত হামজা রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু ছিলেন হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর চাচা এবং ইসলামের একজন একজন বিশিষ্ট ব্যক্তি, তার বদলে একজন নিকৃষ্ট কাফির মুসাইলামকে কতল করে তার কাফফারা আদায় করবেন। যখনই তিনি মুসাইলামাকে দেখলেন তখনই নিক্ষেপ করলেন সেই বল্লম, আল্লাহ পাক-এর কুদরত, মুসাইলামার এক পাশ দিয়ে ঢুকে অন্য পাশ দিয়ে বেরিয়ে গেল এবং সেখানে সে মারা গেল। (চলবে)
ব্রিটিশ গুপ্তচরের স্বীকারোক্তি এবং ওহাবী মতবাদের নেপথ্যে ব্রিটিশ ভূমিকা-৩২