বিশেষ সুওয়াল

সংখ্যা: ১৭৪তম সংখ্যা | বিভাগ:

সুওয়ালকারীদের নাম-ঠিসাওকানা

সাইয়্যিদ মুহম্মদ আলমগীর হুসাইন, ঢাকা

মুহম্মদ আনোয়ার হুসাইন, মুহম্মদপুর, ঢাকা

মুহম্মদ ছিদ্দীকুল আলম, চান্দিনা, কুমিল্লা

মুহম্মদ আব্দুর রাজ্জাক, শালিখা, মাগুরা

মুহম্মদ আফতাবুদ্দীন, কোনাবাড়ী, গাজিপুর

মুহম্মদ মুহসিনুর রহমান, চাঁপাইনবাবগঞ্জ

মুহম্মদ হারুনূর রশীদ, মাহিগঞ্জ, রংপুর

শাফিয়ী আহমদ, রাজারহাট, কুড়িগ্রাম

মুহম্মদ সদরুল আমীন গোলাপগঞ্জ, সিলেট

মুহম্মদ আশাদুজ্জামান, পলাশবাড়ী, গাইবান্ধা

মুহম্মদ আশফাকুর রহমান, সিংড়া, নাটোর

মুহম্মদ ইছহাকুর রহমান, কসবা, বি.বাড়িয়া

মুহম্মদ শফিকুছ্ ছালেহীন, মতলব, চাঁদপুর

মুহম্মদ মাহবুবুর রহমান, প্রভাকরদী, এন.গঞ্জ

মুহম্মদ হারিছুর রহমান, রাজপাড়া, রাজশাহী

মুহম্মদ কাওছার হুসাইন, বানারীপাড়া, বরিশাল

মুহম্মদ  হাদীউল ইসলাম, পাহাড়তলী,  চট্টগ্রাম

মুহম্মদ কামরুজ্জামান, কুটিয়াদী, কিশোরগঞ্জ

মুহম্মদ আবুল কাশেম, আক্কেলপুর, জয়পুরহাট

মুহম্মদ হাবীবুল্লাহ, কালীহাতি, টাঙ্গাইল

সুওয়াল: বর্তমান সময় যে সমস্ত “সংসদ নির্বাচন” অনুষ্ঠিত হয়। তাতে অন্যান্য দলগুলোর মতো নামধারী ইসলামী দলগুলোও সক্রিয়ভাবে উক্ত নির্বাচনে অংশ গ্রহণ করে তথা প্রার্থী দেয়। ইসলামের নামে যারা নির্বাচনে অংশ নেয় তারা সাধারণতঃ প্রচার করে থাকে যে, গণতন্ত্র আর ইসলাম একই বিষয় এবং তারা যে গণতন্ত্র করছে, সেটা হচ্ছে ইসলামী গণতন্ত্র। তারা গণতন্ত্রের ভিত্তি ভোটকে আমানত, শুপারিশ, উকিল নিয়োগ, স্বাক্ষ্য ইত্যাদি বলে প্রচার করে থাকে।

কেউ কেউ আবার ইসলামী দলকে ভোট দেয়া ফরয-ওয়াজিব বলে থাকে। আরো বলে থাকে যে, ইসলামী দলের  প্রার্থীকে ভোট দিলে জান্নাতের টিকেট পাওয়া যাবে। যেমন জামাত নেতারা কিছুদিন পূর্বে একটি দৈনিক পত্রিকার সাক্ষাতকারে বলেছে, ইসলাম ও গণতন্ত্র একই বিষয়।

বায়তুল মুকাররমের খতীব ওবায়দুল হক বলেছে, “ভোট দেয়া আল্লাহ পাক-এর নির্দেশ অর্থাৎ ফরয। আল্লাহ পাক বলেন, ভোট একটি আমানত। আল্লাহ পাক-এর হাবীব বলেছেন, সৎ লোককে ভোট দিতে হবে।” (দৈনিক সংগ্রাম ১লা জুলাই-২০০৬)

মাহিউদ্দিন খান তার মাসিক মদীনা ডিসেম্বর/৯৯ সংখ্যায় নির্বাচন ভিত্তিক গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় ভোট দান সম্পর্কিত একটি  প্রশ্নের উত্তরে লিখেছে, (ক) ছহীহ্ অর্থে মুসলমানদের প্রকৃত শাসক হচ্ছে পবিত্র কুরআন এবং রসূলের সুন্নাহ্। (খ) প্রচলিত যে কোন শাসন ব্যবস্থায় যদি কুরআন-সুন্নাহ্র প্রাধান্য মেনে নেয়া হয় তবে তা মুসলিম জনগণ বিনা দ্বিধায় মেনে নিতে পারেন। (গ) ভোটের মাধ্যমে নেতা বা শাসক নির্বাচনের বর্তমান যে পদ্ধতি এটা অংকুরিত হয়েছে, ইসলামী শুরা পদ্ধতির মধ্য থেকে। সুতরাং এই পদ্ধতিতে ভোটের রাজনীতি ইসলামে বৈধ নয় এ কথা বলা যাবে না। (ঘ) এ যুগের ভোট প্রদান বাইয়াতের বিকল্প বিবেচিত হতে পারে।

অনুরূপ হাটহাজারী খারেজী মাদ্রাসার মুখপত্র মাসিক মুহীনুল ইসলামের সেপ্টেম্বর-ডিসেম্বর’ ০৬ সংখ্যায়ও ভোট-নির্বাচন সম্পর্কে আলোচনা করতে  গিয়ে লিখেছে, (ক) গণতন্ত্র বা নির্বাচন দুই প্রকার। (১) পাশ্চত্য গণতন্ত্র বা নির্বাচন। (২) ইসলামী গণতন্ত্র বা নির্বাচন। (খ) খুলাফায়ে রাশেদীন ভোটের মাধ্যমে নির্বাচিত হয়েছিলেন (গ) পদপ্রার্থী হওয়া জায়িয। (ঘ) কুরআন সুন্নাহয় ভোটকে স্বাক্ষী, আমানত, সুপারিশ ও প্রতিনিধি নিয়োগ বলে উল্লেখ করা হয়েছে ইত্যাদি অনেক ভুল তথ্য তারা উল্লেখ্য করেছে। পটিয়া খারেজী মাদ্রাসার মুখপত্র “আত্ তাওহীদ” ডিসেম্বর/৯৬, জানুয়ারী/৯৭, জুলাই-আগস্ট/৯৭

সংখ্যায় ভোট-নির্বাচন এমনকি ভোট বেচা-কেনা করাকেও জায়িয ফতওয়া দিয়েছে।

আর উল্লিখিত বিষয়ে তাদের নিকট দলীল তলব করলে তারা সাধারণতঃ মুফতী শফীর মা’য়ারিফুল কুরআন ও ভোটের ইসলামী শরয়ী বিধান এবং শামসুল হক ফরীদপুরী ছাহেবের বক্তব্য তুলে ধরে বলে থাকে যে, তারা ভোটকে জায়িয বলেছেন। এখন আমাদের জানার বিষয় হলোঃ

১৭। যে সকল কথিত মাওলানা, মুফতী, মুহাদ্দিছ, মুফাচ্ছির, শাইখুল হাদীছ, খতীব, পীর, আমীর ইসলামের নামে গণতন্ত্র, ভোট, নির্বাচন করছে, ভোটকে আমানত, স্বাক্ষ্য ফরয-ওয়াজিব বলছে এবং ক্ষমতার লোভে বাতিলের সাথে আতাত করছে তারা হক্কানী  আলিম কিনা? তাদের পিছনে নামায পড়া জায়িয কিনা? তাদের ব্যাপারে শরীয়তের ফায়ছালা কি?

উপরোক্ত প্রতিটি বিষয় দলীলভিত্তিক বিস্তারিত জাওয়াব দিয়ে আমাদের ঈমান-আক্বীদা ও আমল হিফাযত করবেন বলে আমরা আশাবাদি।

জাওয়াবঃ

ইসলামের নামে বা ইসলামের দোহাই দিয়ে গণতন্ত্র, ভোট, নিবার্চন করা, পদপ্রার্থী হওয়া, ভোট চাওয়া, নিজ দলকে ভোট দেয়া ওয়াজিব ও জান্নাতের টিকেট লাভের কারণ বলা এবং ভোটকে আমানত, সুপারিশ, স্বাক্ষ্য ইত্যাদি বলা সম্পূর্ণ হারাম ও কুফরী। এটাই কুরআন শরীফ, হাদীছ শরীফ, ইজমা ও ক্বিয়াস তথা শরীয়তের চুড়ান্ত, ছহীহ ও গ্রহণযোগ্য ফতওয়া।

অতএব, বলার অপেক্ষা রাখে না যে, গণতন্ত্র, ভোট, নির্বাচন ও পদপ্রার্থী হওয়া সম্পর্কিত তথাকথিত খতীব উবায়দুল হক, নিজামী, আহমদ শফী, মাহিউদ্দীন, আমিনী ও আযীযূল হক- ওহাবী, দেওবন্দী ও জামাতীগংদের উপরোক্ত বক্তব্য সম্পূর্ণ কুরআন, সুন্নাহ, ইজমা ও ক্বিয়াসের খিলাফ বিধায় তা ভুল, অশুদ্ধ, জিহালতপূর্ণ দলীলবিহীন ও কুফরীর অন্তর্ভুক্ত।

 নিম্নে পর্যায়ক্রমে সুওয়ালে উল্লেখিত তাদের প্রতিটি বক্তব্যের খ-নমূলক জাওয়াব প্রদান করা হলো।

(১৭)

যে সকল মাওলানা, মুফতী, মুহাদ্দিছ, মুফাচ্ছির, শাইখুল হাদীছ, খতীব, পীর, আমীর ইসলামের নামে গণতন্ত্র, ভোট, নির্বাচন করছে, ভোটকে আমানত, স্বাক্ষ্য ফরয-ওয়াজিব বলছে তাদের ব্যাপারে শরীয়তের ফায়ছালা কি?

এর জাওয়াবে বলতে হয় যে, যেহেতু কুরআন শরীফ, হাদীছ শরীফ, ইজমা ও ক্বিয়াসের অকাট্য ও অসংখ্য নির্ভরযোগ্য দলীলের ভিত্তিতে প্রমাণিত হয়েছে যে, ইসলামের নামে গণতন্ত্র, ভোট-নির্বাচন করা ও ভোটকে আমানত, স্বাক্ষ্য, ওয়াজিব বলা হারাম ও কুফরী। তাই যে সকল মাওলানা, মুফতী, মুহাদ্দিছ, মুফাচ্ছির, শাইখুল হাদীছ, খতীব, পীর, আমীর ইসলামের নামে গণতন্ত্র, ভোট, নির্বাচন করছে, ভোটকে আমানত, স্বাক্ষ্য ফরয-ওয়াজিব বলছে তারা কস্মিনকালেও হক্কানী আলিম নয় বরং উলামায়ে ‘ছূ’ বা দুনিয়াদার আলিম।

কারণ, আলিম হওয়ার জন্য প্রথমত: শর্ত হলো ঈমান দ্বিতীয়ত: শর্ত হলো তাক্বওয়া। তৃতীয়ত: শর্ত হলো অর্জিত ইলম্ অনুযায়ী আমল।

যেমন এ প্রসঙ্গে কালামুল্লাহ শরীফে ইরশাদ হয়েছে,

الا ان اولياء الله لاخوف عليهم ولا هم يحزنون. الذين امنوا وكانوا يتقون.

অর্থঃ সাবধান! তোমরা জেনে রাখ, “নিশ্চয়ই ওলীআল্লাহ তথা আলিমগণের কোন ভয় নেই এবং তাঁদের কোন চিন্তাও নেই। তাঁদের পরিচয় হচ্ছে যারা ঈমান এনেছেন এবং তাক্বওয়া অবলম্বন করেছেন।” (সূরা ইউনুস-৬২, ৬৩)

অর্থাৎ এখানে ওলীআল্লাহ বা আলিম হওয়ার জন্য ঈমান আনাকে প্রথম শর্ত হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে।

দ্বিতীয়ত: আলিম ঐ ব্যক্তিই যার অন্তরে তাক্বওয়া বা খোদাভীতি রয়েছে। অর্থাৎ যিনি আল্লাহ পাক-এর ভয়ে হারাম, নাজায়িয কাজ থেকে বিরত থাকেন। এ প্রসঙ্গে আল্লাহ পাক পবিত্র কালামে পাকে ইরশাদ করেন,

انما يخشى الله من عباده العلماء.

অর্থঃ “নিশ্চয় আল্লাহ পাক-এর বান্দাদের মধ্য হতে শুধুমাত্র আলিমগণই আল্লাহ পাককে ভয় করেন।” (সূরা ফাতির-২৮)

তৃতীয়তঃ ঐ ব্যক্তিই হাক্বীক্বী আলিম যিনি অর্জিত ইলম্ অনুযায়ী পরিপূর্ণ আমল করেন। যেমন এ প্রসঙ্গে হাদীছ শরীফে আরো ইরশাদ হয়েছে,

عن سفيان ان عمر بن الخطاب رضى الله تعالى عنه قال لكعب من ارباب العلم قال الذين يعملون بما يعلمون قال فما اخرج العلم من قلوب العلماء قال الطمع.

অর্থঃ “হযরত সুফইয়ান ছওরী রহমতুল্লাহি আলাইহি বর্ণনা করেন, হযরত উমর ইবনুল খত্তাব রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু হযরত কা’ব ইবনুল আহ্বার রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুকে জিজ্ঞাসা করলেন, আলিম কে? তিনি উত্তরে বললেন, যাঁরা ইল্ম অনুযায়ী আমল করেন। হযরত উমর ইবনুল খত্তাব রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু পুণরায় জিজ্ঞাসা করলেন, কোন্ জিনিস আলিমদের অন্তর থেকে ইল্ম্কে বের করে দেয়? তিনি উত্তরে বললেন, লোভ অর্থাৎ দুনিয়ার সম্পদ, সম্মান ইত্যাদি হাছিলের আকাঙ্খা।” (দারিমী, মিশকাত)

বিশিষ্ট তাবিয়ী, ইমামুশ্ শরীয়ত ওয়াত্ তরীক্বত ইমাম হযরত হাসান বছরী রহমতুল্লাহি আলাইহিকে জিজ্ঞাসা করা হলো- আলিম কে? তিনি জবাবে বলেন,

         انما الفقيه الزاهد فى الدنيا والراغب الى الاخرة والبصير بذنبه والمداوم على عبادة ربه والورع والكاف عن اعراض المسلمين والعفيف عن اموالهم والناصح لجماعتهم.

অর্থঃ “ফক্বীহ্ বা আলিম হলো ঐ ব্যক্তি, যে দুনিয়া হতে বিরাগ, পরকালের প্রতি ঝুঁকে আছেন, গুণাহের প্রতি সতর্ক, সর্বদা মহান আল্লাহ্ পাক-এর ইবাদতে মশগুল, পরহিযগার বা সুন্নতের পাবন্দ, মুসলমানের মান-সম্মান নষ্ট করেন না, তাদের সম্পদের প্রতি লোভ করেন না এবং তাঁর অধীনস্থদেরকে নছীহত করেন।” (হিল্ইয়াতুল আওলিয়া)

উপরোক্ত আলোচনা থেকে বুঝা গেলো, আলিম হওয়ার জন্য প্রথমত: শর্ত হলো ঈমান আনা অর্থাৎ আক্বীদা শুদ্ধ রাখা। দ্বিতীয়ত: শর্ত হলো তাক্বওয়া অবলম্বন করা। অর্থাৎ সুন্নতের অনুসরণ করা। তৃতীয়ত: শর্ত হলো অর্জিত ইলম্ অনুযায়ী আমল করা।

অথচ উল্লিখিত মাওলানা, মুফতী, মুহাদ্দিছ, শাইখূল হাদীছ, খতীব, পীর, আমীর যারা ইসলামের নামে গণতন্ত্র, ভোট-নির্বাচন করে তাদের কারো ঈমান বা আক্বীদা শুদ্ধ নয়, সুন্নতের আমল বা তাক্বওয়াও তাদের মধ্যে নেই এবং তারা অর্জিত ইলম অনুযায়ী আমলও করে না। বরং যা বলে তার বিপরীত কাজ করে। যেমন- আজকে যারা ইসলামের নামে গণতন্ত্র, ভোট-নির্বাচন করছে, ছবি তুলছে, নারী নেতৃত্ব মানছে তারাই পূর্বে তাদের কিতাব ও পত্র-পত্রিকায় এগুলোকে হারাম বলে ফতওয়া দিয়েছে। নিম্নে এর কিছু প্রমাণ পেশ করা হলো-

ধারাবাহিক

ছবি সম্পর্কে উলামায়ে “ছূ”দের

 পূর্বের ফতওয়া

স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনের সময় দেয়াল লিখনী দেখা যেত- “৭১’ এর রাজাকার ৯০ এ গণতন্ত্রী সেজেছে।” সত্যিই সাজ পাল্টানোর অদ্ভূত  ক্ষমতা রয়েছে ইসলামের নামধারী ঐ জামাতটির।

আজকে তারা শহীদ মিনারে, স্মৃতিসৌধে ফুল দেয়। নারী নেতৃত্ব সমর্থন করে। ইসলামের নামে তাদের প্রতিষ্ঠাতা মওদুদী কর্তৃক ‘হারাম’ ঘোষিত  নির্বাচনে অংশ গ্রহণ করে।

আজকে জামাতীরা তাদের পূর্ব প্রচারিত হারামকে হালাল করছে, শুধু তাই নয় বরং এসব হারামকে হারাম বলে জামানার তাজদীদী মুখপত্র মাসিক আল বাইয়্যিনাত যে একক ও কঠিন কলমী ও ইলমী জিহাদ চালিয়ে যাচ্ছে, সে জিহাদের প্রতিপক্ষে অবস্থান নিচ্ছে, প্রচ- বিরোধিতা করছে, অপপ্রচার করছে ইসলামের নামধারী ঐ জামাত।

তারা আজ মাথার টুপি খুলে আমেরিকান মহিলা রাষ্ট্রদূতের সাথে হাসি মুখে সাক্ষাত করছে, মহিলা প্রধানমন্ত্রীর সাথে সামনাসামনি রসালো আলাপ করছে, পাশাপাশি বসে থাকছে।

তারা আজ ইসলামের লেবেল এঁটে সিনেমা তৈরী করছে, নাটক করছে, ভিডিও, সিডি ইত্যাদি করছে।

এসব ক্ষেত্রে যে প্রাণীর ছবি তুলতে হচ্ছে, সে ব্যাপার এখন তাদের কাছে নস্যি। বরং আল বাইয়্যিনাত-এর তরফ থেকে টিভি চ্যানেলে তাদের প্রোগ্রাম করার বিরোধিতা করা হয় বলে তারা আল বাইয়্যিনাতকে পাগল বলে প্রচার করছে। এতে করে আল বাইয়্যিনাত-এর সুন্নত আদায় হচ্ছে। কারণ আল্লাহ পাক-এর হাবীব হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে কাফিররা পাগল, যাদুকর বলতো। আল বাইয়্যিনাত যে সত্যিকার ইসলামের উপর আছে নাহক্ব পন্থী ও ধর্মব্যবসায়ী জামাতীদের তরফ থেকে এরূপ পাগল সম্বোধনও এক প্রমাণ বটে।

শত শত হাদীছ শরীফে ইরশাদ হয়েছে, “প্রাণীর ছবি তোলা সম্পূর্ণ নাজায়িয। যে ঘরে প্রাণীর ছবি থাকে সে ঘরে রহমতের ফেরেশতা প্রবেশ করেনা বা থাকেনা। ক্বিয়ামতের দিন সবচেয়ে কঠিন শাস্তি হবে যে ছবি তোলে বা আঁকে।” -এসব হাদীছ শরীফের ভাষ্যকে এখন জামাতীরা তুচ্ছ জ্ঞান করে। এক্ষেত্রে তারা যে মূলত আল্লাহ পাক এর হাবীবকে অস্বীকার করে তদস্থলে নিজেরাই নতুন নবী দাবী করে; তা তারা কি করে অস্বীকার করবে?

জামাত নেতা মওদুদীর মতে ছবি

তাসবীর তথা চিত্রাঙ্কনের সাথে যে আজকের ফটোগ্রাফীর কোনই পার্থক্য নেই সে ব্যাপারে তাদের প্রতিষ্ঠাতা মওদুদীও একমত।

আর সভা-সমিতি তথা নেতৃবৃন্দের ছবি তোলাও যে দোষমুক্ত নয় বরং সম্পূর্ণই গুনাহর কাজ সে সম্পর্কেও মওদুদীর একই মত। এমনকি এই ছবি দ্বারা যে পর্যায়ক্রমে স্মৃতিপূঁজার তথা মূর্তিপূজার প্রচলন হতে পারে যা কিনা ইসলামের তাওহীদী চেতনাকেই বিনষ্ট করতে পারে সে বিষয়েও মওদুদীর কঠিন ও শক্ত নির্দেশ রয়ে গেছে।

 এ ব্যাপারে মওদুদীর রাসায়েল ও মাসায়েল নামক কিতাবে বর্ণিত রয়েছে:

“… ছবি প্রসঙ্গঃ

প্রশ্নঃ আমার এক ফটোগ্রাফার বন্ধুর ধারণা, ইসলামে ‘তসবীর’ (চিত্র) সংক্রান্ত যে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে, তা ফটোর ব্যাপারে প্রযোজ্য নয়, বিশেষ করে অশ্লীল দৃশ্যের ফটো যদি তোলা  না হয়। এ সীমারেখার প্রতি দৃষ্টি রেখে ফটোগ্রাফীকে পেশা হিসেবে গ্রহণ করা যেতে পারে কি? জাতীয় নেতৃবৃন্দ এবং সভা সমিতির ফটো তোলাতে কোনো দোষ আছে কি?

মওদুদীর জবাবঃ ফটো সম্পর্কে এই নীতিগত কথাটা বুঝে নেয়া দরকার যে, সাধারণভাবে ইসলাম প্রাণসম্পন্ন জীবের ছবি চিত্র সংরক্ষণকে প্রতিরোধ করতে চায়। কেননা মানব ইতিহাসের দীর্ঘ অভিজ্ঞতা প্রমাণ করে যে, এই ছবি চিত্রই অধিকাংশ ফিতনা ও বিপর্যয়ের কারণ হয়েছে। যেহেতু ছবি চিত্র সংরক্ষণ করাটাই ফিতনার মূল কারণ। যেহেতু সেটা কোন পন্থায় সংরক্ষণ করা হবে সে বিষয়ে আলোচনার কোন প্রশ্নই ওঠেনা। পদ্ধতি যেটাই হোক, সর্বাবস্থায় তা নাজায়েযই থাকবে।

কেননা সবগুলো পন্থাই মূল ফিতনা সৃষ্টির ক্ষেত্রে সমভাবে কার্যকর। এ ব্যাপারে ফটোগ্রাফী এবং চিত্রাঙ্কনের মধ্যে কোনো পার্থক্য করা যেতে পারেনা। আর নিষেধাজ্ঞা যেহেতু প্রাণীর ছবি চিত্রের ক্ষেত্রে, এ জন্যে সর্বপ্রকার ছবি চিত্রই হারাম। চাই তা অশ্লীল হোক কিংবা না হোক। অবশ্য অশ্লীল ছবি চিত্র হারাম হওয়ার একটি অতিরিক্ত কারণ রয়েছে।

এই সাধারণ বিধানের মধ্যে ব্যতিক্রম কেবল এতোটুকুই আছে যে, যেক্ষেত্রে ছবি চিত্রের দ্বারা সত্যিই তমদ্দুনিক কোনো কল্যাণ হয়, কিংবা কোনো রাষ্ট্রীয় কাজে একান্ত জরুরী হয়ে পড়ে, সেক্ষেত্রে এগুলো করা যেতে পারে। যেমন পাসপোর্টের কাজে এবং অপরাধীকে সনাক্তের কাজে পুলিশ কর্তৃক ছবি সংরক্ষণ করা। ডাক্তারদের চিকিৎসা বিজ্ঞান শিক্ষাদানের কাজে রোগীদের ছবি চিত্র গ্রহণ করা এবং সামরিক প্রয়োজনে ছবি সংরক্ষণ করা ইত্যাদি।

এরূপ ক্ষেত্রে ছবির ব্যবহার সাধারণ নিষেধাজ্ঞার ব্যতিক্রম হবে। তবে শর্ত হলো, যে উদ্দেশ্যের জন্যে ‘ব্যতিক্রম’ দ্বারা ফায়দা গ্রহণ করা হবে, সেই উদ্দেশ্যটি অবশ্য বৈধ হবে।

কিন্তু নেতৃবৃন্দ ও সভা মিছিলের ছবি চিত্র কোনো অবস্থাতেই ‘বৈধ’ এবং ‘প্রকৃত প্রয়োজনের’ সংজ্ঞায় পড়েনা। বিশেষ করে নেতৃবৃন্দের ছবি তো খোদার বান্দাদের সেই মহাবিপদের নিকটবর্তী করে দেয়, যে কারণে ছবি চিত্রকে হারাম ঘোষণা করা হয়েছে।

এই যে কংগ্রেসের সভায় গান্ধীজির বায়ান্ন ফুট লম্বা ছবি স্থাপন, রাশিয়া কর্তৃক পোল্যান্ড দখল করার পর পোল্যান্ডের প্রতিটি জনপথে স্টালিনের চিত্র স্থাপন, রাশিয়ার প্রতিটি স্থানে লোকদের মাথার উপর স্টালিন এবং পলিট ব্যুরোর সদস্যদের ছবি স্থাপন, জার্মান সৈনিকদের বুকে হিটলারের ছবি লাগিয়ে রাখা এবং হাসপাতালে মৃত্যুর মুহূর্ত পর্যন্ত সেই ছবি চোখে লাগিয়ে জীবন উৎসর্গ করা, সিনেমা হলে ব্রিটিশ রাজ্যের ছবি উদিত হওয়া এবং সাথে সাথে লোকদের দাঁড়িয়ে যাওয়া, শাসন কর্তৃত্বের নিদর্শন স্বরূপ মুদ্রার গায়ে সম্রাটের চিত্র অংকন করা, এসবই কী মূর্তি পূজার উৎসমূল নয়?  ইসলাম এজন্যেই ছবি চিত্র হারাম করেছে, যাতে করে লোকদের মন মগজে আল্লাহ ছাড়া আর কারো শ্রেষ্ঠত্বের চিত্র অঙ্কিত না হতে পারে।

আমি (মওদুদী) তো এজন্যে ছোট বাচ্চাদের ছবি তোলাও অবৈধ মনে করি যে, ভবিষ্যতে হয়তো এদের কাউকে খোদা বানিয়ে নেয়া হবে এবং এসব ছবিই ফিতনার কারণ হয়ে বসবে। আজ পর্যন্ত শ্রীকৃষ্ণের বাল্যচিত্রের পূজা চলছে।

সুতরাং আপনি আপনার বন্ধুকে জানিয়ে দিন যে, শরীয়তের দৃষ্টিকোণ থেকে তার পেশা বৈধ নয়। তিনি যদি খোদাকে ভয় করেন তবে যেনো ক্রমান্বয়ে এ পেশা ত্যাগ করে অন্য কোনো উপার্জন মাধ্যম গ্রহণ করেন। আর তিনি যদি এ কাজই করতে চান, তবে যেনো এটাকে হালাল আখ্যায়িত করার চেষ্টা না করেন।

অনৈতিক অধঃপতনের নিকৃষ্ট পর্যায় হলো, মানুষ যে গুনাহের কাজে লিপ্ত থাকে, মিথ্যা ব্যাখ্যা বিশ্লেষণ দ্বারা সেটাকে সঠিক ও বৈধ আখ্যায়িত করে। এই গর্তে নিমজ্জিত হবার পর কোনো ব্যক্তির সেখান থেকে উঠে আসার সম্ভাবনা থাকেনা।

বিজ্ঞাপনের ছবিঃ

প্রশ্নঃ আজকাল বিজ্ঞাপনের ক্যালেন্ডার প্রভৃতিতে নারীদের ছবি ব্যবহারের ব্যাপক প্রচলন শুরু হয়েছে। এছাড়া খ্যাতিমান ব্যক্তি এবং জাতীয় নেতাদের ছবিও অনুরূপভাবে ব্যবহার করা হয়। তাছাড়া বাণিজ্যিক জিনিসপত্রের ডিব্বা, বোতল এবং প্যাকেটের উপরও অনুরূপ ছবি ব্যবহার করা হয়। এরূপ বিভিন্ন প্রকার ছবির দাপট থেকে একজন মুসলমান ব্যবসায়ী কিভাবে নিজেকে রক্ষা করতে পারে?

মওদুদীর জবাবঃ আপনি নিজে যদি কোনো বিজ্ঞাপন কিংবা ক্যালেন্ডার ছাপেন তবে তা ছবি মুক্ত রাখবেন।

আপনার ব্যক্তিগত প্রয়োজনে যদি ক্যালেন্ডার প্রভৃতি ব্যবহার করতে হয় তবে প্রথমত ছবি বিহীন ব্যবহার করবেন, নতুবা ছবি ঢেকে রাখবেন কিংবা মুছে ফেলবেন। কিন্তু ডিব্বা, বোতল এবং প্যাকেটের ছবি তো সব আর আপনি মুছে ফেলতে পারবেননা। বর্তমান ছবিপূজারী বিশ্ব তো কোনো জিনিসকে ছবি মুক্ত না রাখার ব্যাপারে কসম খেয়ে বসেছে। ডাক টিকেট এবং মুদ্রার উপর পর্যন্ত ছবি ব্যবহার করা হয়। এ সর্বগ্রাসী তাগুতী জীবন ব্যবস্থা নিজের অপবিত্রতা ও নোংরামীকে শিকড় থেকে শাখা প্রশাখা এমনকি পত্র পল্লব পর্যন্ত ছড়িয়ে দিচ্ছে। বাস, নিজের সাধ্যের সীমা পর্যন্ত নিজে আত্মরক্ষা করুন।” (মওদুদী লিখিত রাসায়েল ও মাসায়েল, ২৩৩ পৃষ্ঠা) ….”

দেওবন্দীদের মতে ছবি

৪৫ বাংলাবাজার হাছানিয়া লাইব্রেরী থেকে ১৯৯৯ সালে আগষ্ট মাসে প্রকাশিত তথাকথিত শাইখুল হাদীছ মাওলানা আজিজুল হক রচিত “কোরআন হতে বিজ্ঞান” নামক কিতাবের ২৬০ পৃষ্ঠায় উল্লেখ রয়েছে,        “কারো কারো একথা বলা নিশ্চয়ই ভ্রান্ত যে, ফটো চিত্র নয় বরং ছায়া ও প্রতিবিম্ব, যেমন, আয়না ও পানি ইত্যাদিতে দেখা যায়। সুতরাং আয়নাতে নিজেকে দেখা যেমন জায়েয, ফটোও ঠিক তেমনি জায়েয। এর সুস্পষ্ট জওয়াব হলো, প্রতিবিম্ব ততক্ষণ পর্যন্ত থাকে, যে কোন উপায়ে বদ্ধমূল ও স্থায়ী করে নেওয়া না হয়। যেমন পানি বা আয়নাতে যে প্রতিবিম্ব দেখা দেয়, বিপরীত দিক থেকে সরে গেলে তা আর থাকে না। কিন্তু কোন ঔষধ বা পাউডারের সাহায্যে যদি সেই প্রতিবিম্বকে স্থায়ী করে দেওয়া হয়, তবে একেই চিত্র বলা হবে, এরই নিষেধাজ্ঞা মুতাওয়াতির হাদীছ দ্বারা প্রমাণিত রয়েছে। পাখির আকৃতি বানানো প্রকৃতপক্ষে চিত্রই এবং তা হযরত ঈসা আলাইহিস্ সালামের শরীয়তে জায়েয ছিল, আমাদের শরীয়তে এর বৈধতা রহিত করা হয়েছে।”

নারী নেতৃত্ব সম্পর্কে উলামায়ে

“ছূ”দের পূর্বের ফতওয়া

          মাসিক মদীনার সম্পাদক মাহিউদ্দীন তার  মাসিক মদীনা পত্রিকার জানুয়ারী/৮৯ ঈসায়ী সংখ্যার এক প্রশ্নের উত্তরে বলেছে-

মুহম্মদ আব্দুল হাই

তাড়াইল বাজার, কিশোরগঞ্জ

প্রশ্নঃ  কোন মহিলাকে মুসলিম রাষ্ট্রের রাষ্ট্রপ্রধান বানানো শরীয়ত-সম্মত কিনা? জানালে কৃতজ্ঞ হব।

উত্তরঃ কোন মুসলিম শাসনকর্তা যদি ইসলামী অনুশাসন অনুসরণ করতে যান তবে তার সর্বপ্রথম কর্তব্য দাঁড়ায় স্বীয় ইমামতিতে নামায প্রতিষ্ঠা করা ও জেহাদের নেতৃত্ব দেওয়া। এ দু’টি ক্ষেত্রেই কিন্তু নারীর নেতৃত্ব চলেনা। একজন মহিলা যত বড় বিদূষী ও পূণ্যবতীই হোননা কেন, তাঁর পক্ষে নামাযের ইমামতি করার প্রশ্ন আসেনা। সে মতে কোন নারীর ইসলামী দেশের সর্বোচ্চ শাসন ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হওয়া ইসলামী শরীয়ত সমর্থিত নয়।

          এক হাদীছে শরীফে রয়েছে আল্লাহ পাক-এর রসূল হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেছেন, তোমাদের শাসকগণ যখন হবে কৃপণ আর শাসন ক্ষমতা গিয়ে পড়বে নারীদের হাতে তখন দুনিয়ার পৃষ্ঠদেশ অপেক্ষা অভ্যন্তরভাগই তোমাদের জন্য অধিক মঙ্গল জনক বলে বিবেচিত হবে।”

          হযরত রসূলে করীম ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওযা সাল্লাম-এর সময়কালে পারস্য সম্রাট কিসরার এক কন্যাকে সিংহাসনে বসানো হয়েছিল। এ সংবাদ শুনে আল্লাহ পাক-এর রসূল হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এ মন্তব্য করেছিলেন, “যে জাতি তাদের শাসনকর্তৃত্ব নারীদের হাতে তুলে দেয়, তাদের কখনও মঙ্গল হতে পারে না।

          উপরোক্ত দু’টি হাদীছই সহীহ্ এবং হাদীসের প্রায় সব কয়টি বিখ্যাত কিতাবে রয়েছে।

সেপ্টেম্বর/৯০ ও মার্চ/৯১  ঈসায়ী সালে মাহিউদ্দীন নিজেই লিখেছে,

মুহম্মদ আবদুশ শাকুর

জামেয়া ইসলামিয়া রোড, পটিয়া, চট্টগ্রাম।

প্রশ্নঃ কুরআন-হাদীছ অনুযায়ী কোন মহিলা রাষ্ট্রনায়িকা হতে পারেন কিনা?

উত্তরঃ রাষ্ট্রনায়ক যুদ্ধের সেনাপতি এবং মসজিদের ইমামের পদ ইসলামী শরীয়ত অনুযায়ী মহিলাদের জন্য নিষিদ্ধ।

মুহম্মদ গোলাম মোস্তফা

ভাসানীগঞ্জ ডিগ্রী কলেজ, রাজশাহী

প্রশ্নঃ মুসলিম রাষ্ট্রের রাষ্ট্রপ্রধান কোন মহিলা হতে পারে কিনা?

উত্তরঃ  “রাষ্ট্রটি যদি খুলাফায়ে রাশেদীনের আদর্শে ইসলামী শরীয়ত অনুযায়ী পরিচালিত করতে হয় তবে কোন মহিলা সে রাষ্ট্রপ্রধান হতে পারেন না। কেননা খলীফা মুসলিম জনগণের ইমামের দায়িত্বপ্রাপ্ত হয়ে থাকেন।”

 উপরোক্ত দলীলভিত্তিক আলোচনা দ্বারা এটাই প্রামাণিত হলো যে, তারা মুখে যা বলে আমলে তা করে না অর্থাৎ তাদের ইলম অনুযায়ী আমল নেই। অথচ হক্কানী আলিম হওয়ার জন্য একটি অন্যতম শর্ত হচ্ছে ইলম অনুযায়ী আমল।

অতএব তারা কেউই হক্কানী আলিম নয়। বরং তারা হচ্ছে উলামায়ে ‘ছূ’র অন্তর্ভুক্ত।

এ ধরনের উলামায়ে ‘ছূ’দের ব্যাপারেই হাদীছ শরীফে আখিরী রসূল, নূরে মুজাস্সাম, হাবীবুল্লাহ্ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন,

عن انس رضى الله تعالى عنه قال قال رسول اله صلى الله عليه وسلم ويل الامتى من علماء السوء يتخذون هذا العلم تجارة يبيعونها من امراء زما نهم ربحا لانفسهم لااربح الله تجارتهم.

অর্থঃ “হযরত আনাস রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু বর্ণনা করেন, আল্লাহ পাক-এর হাবীব হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন, উলামায়ে ‘ছূ’দের কারণে আমার উম্মতের ক্ষতিসাধন হবে অর্থাৎ জাহান্নামী হবে। তারা ইল্মকে ব্যবসা হিসেবে গ্রহণ করতঃ তাদের যুগের শাসকদের নিকট থেকে অর্থ ও পদ লাভের প্রচেষ্টা চালাবে। আল্লাহ পাক-এর হাবীব হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এ সকল উলামায়ে ছূ’দের বিরুদ্ধে এই বলে বদ্দোয়া করেন যে, “আয় আল্লাহ পাক! যারা নিজেদের ইল্ম দ্বারা দুনিয়াবী সরকারের সাথে ব্যবসা করতে চায় তাদের ব্যবসায় বরকত দিবেন না।” (কানযুল উম্মাল)

হাদীছ শরীফে আরো ইরশাদ হয়েছে,

عن زيتد بن حدير رحمة الله عليه قال قال لى عمر رضى الله تعالى عنه هل تعرف ما يهدم الاسلام قال قلت لا قال يهدمه زلة العالم وجدال المنافق بالكتاب وحكم الائمة المضلين.

অর্থঃ “হযরত যিয়াদ বিন হুদাইর রহমতুল্লাহি আলাইহি বর্ণনা করেন, আমাকে হযরত উমর ফারুক রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু বললেন,  তুমি কি জান কোন্ জিনিস ইসলামকে ধ্বংস করে? আমি বললাম- না, আমি জানিনা। তখন তিনি বললেন, ইসলামকে ধ্বংস করে আলিমের পদস্খলন, মুনাফিকদের কিতাব সম্পর্কে তর্ক-বিতর্ক এবং গোমরাহ শাসকদের আদেশ-নির্দেশ।” (দারিমী, মিশকাত)

স্মর্তব্য যে, উলামায়ে ‘ছূ’ বা ধর্মব্যবসায়ীরা মূলতঃ ইহুদী-খ্রিস্টানদেরই খাছ গোলাম। তারা উলামায়ে ‘ছু’দের মাধ্যমে মুসলমানদের ঈমান আমল বিনষ্ট করার চক্রান্ত করে যাচ্ছে।

এ প্রসঙ্গে মহান আল্লাহ পাক পবিত্র কালামে পাকে ‘সূরা মায়িদা’র’ ৮২নং আয়াত শরীফে ইরশাদ করেন,

لتجدن اشد الناس عداوة للذين امنوا اليهود والذين اشركوا.

অর্থঃ “তোমরা তোমাদের সবচেয়ে বড় শত্রু হিসেবে পাবে ইহুদীদেরকে। অতঃপর যারা মুশরিক তাদেরকে।”

মূলতঃ এই ইহুদীরাই মুনাফিক সেজে আখিরী রসূল, সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক  ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া  সাল্লামকে কষ্ট দিয়েছিল, তাঁকে শহীদ করার চক্রান্ত করেছিল। এই ইহুদীরাই মুনাফিকী করে হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুমগণের পরস্পরের মাঝে দ্বন্দ্ব সৃষ্টি করার অপপ্রয়াস চালিয়েছিল। আর মূলতঃ এই ইহুদীরাই মুসলমানের ঈমান-আমল  বিনষ্ট করে দ্বীন ইসলামে ফিৎনা সৃষ্টি করার লক্ষ্যে বিভিন্ন বাতিল ফিরকার জন্ম দিয়েছে। অর্থাৎ শিয়া, খারিজী, মু’তাযিলা, জাবারিয়া, ক্বদরিয়া, বাহাই, কাদিয়ানী ও ওহাবী ইত্যাদি বাতিল ফিরকাগুলো ইহুদীদেরই এজেন্ট।

বর্তমানে ইহুদীদের এজেন্ট হিসেবে মুসলমানদের ঈমান আমলের সবচেয়ে বেশী ক্ষতি করছে যারা, তারা হলো ‘উলামায়ে ‘ছু’। ইহুদীদের এজেন্ট এসকল উলামায়ে ‘ছূ’রা হারাম টিভি চ্যানেল, পত্র-পত্রিকা, কিতাবাদি ও বক্তব্য বা বিবৃতির মাধ্যমে একের পর এক হারামকে হালাল, হালালকে হারাম, জায়িযকে নাজায়িয, নাজায়িযকে জায়িয বলে প্রচার করছে।  যেমন, তারা প্রচার করছে- ঈদে মীলাদুন্ নবী ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম পালন করা বিদ্য়াত ও শিরক্, ফরয নামাযের পর মুনাজাত করা বিদয়াত ও হারাম, নিয়ত করে রওযা শরীফ ও মাযার শরীফ যিয়ারত করা শিরক, কদমবুছী করা নাজায়িয ও শিরক, মাযহাব মানার কোন প্রয়োজন নেই, পীর-মুরীদী শরীয়ত বিরোধী প্রথা, মীলাদ-ক্বিয়াম করা র্শিক-বিদ্য়াত, শবে বরাত পালন করা বিদ্য়াত, তারাবীহ নামায জরুরী কোন নামায নয়, আট রাকায়াত তারাবীহ পড়লেই চলে ইত্যাদি ইত্যাদি। (নাঊযুবিল্লাহ)

অথচ উল্লিখিত প্রতিটি বিষয়ই কুরআন শরীফ ও সুন্নাহ শরীফ তথা শরীয়তসম্মত এবং তন্মধ্যে কোনটা সুন্নত আবার কোনটা  ফরয।

পক্ষান্তরে উলামায়ে ‘ছূ’ তথা দুনিয়াদার মাওলানারা ইসলামের নামে গণতন্ত্র করা, ছবি, টেলিভিশন, সিনেমা, নাটক, নোবেল, বেপর্দা হওয়া, নারী নেতৃত্ব মানা, ভোট দেয়া, রোযা অবস্থায় ইনজেকশন নেয়া, মহিলাদের জামায়াতের জন্যে মসজিদে যাওয়া, মহিলাদের বাইরে বের হওয়ার সময় হাত ও মুখ খোলা রাখা, হরতাল করা, লংমার্চ করা, গণতন্ত্র করা, ব্লাসফেমী আইন চাওয়া, মৌলবাদী দাবী করা, কুশপুত্তলিকা দাহ করা, টিভি চ্যানেলে প্রোগ্রাম বা অনুষ্ঠান করা ইত্যাদি নাজায়িয কাজগুলোকে জায়িয বলে প্রচার করছে এবং নিজেরাও তা আমল করছে।  (নাঊযুবিল্লাহ)

অর্থাৎ তাদের উদ্দেশ্য হচ্ছে, মুসলমানদেরকে ইসলাম থেকে সরিয়ে, ইবাদত থেকে সরিয়ে অনৈসলামিক ও হারাম কাজে মশগুল করে দিয়ে বেঈমান করে দেয়া।

মূলতঃ যুগে যুগে দুনিয়া লোভী উলামায়ে ‘ছূ’রা দুনিয়াবী ফায়দা লুটার উদ্দেশ্যে হারামকে হালাল ও হালালকে হারাম ফতওয়া দিয়ে আসছে। যেমন, ক্বাইয়্যূমে আউয়াল হযরত মুজাদ্দিদে আলফে ছানী রহমতুল্লাহি আলাইহি-এর যামানায় উলামায়ে ‘ছূ’ আবুল ফযল, ফৈজী ও মোল্লা মুবারক নাগোরী গংরা বাদশাহ আকবরকে সন্তুষ্ট করে দুনিয়াবী কিছু ফায়দা লাভের উদ্দেশ্যে কুরআন শরীফ ও সুন্নাহ শরীফের মনগড়া অপব্যাখ্যা করে বহু হারামকে হালাল ও হালালকে হারাম ফতওয়া দিয়েছিল।

বর্তমান যামানার উলামায়ে ‘ছূ’ তথাকথিত পীর, আমীর, খতীব, শাইখুল হাদীছ, মুফতী, মুফাস্সিরে কুরআন ও তার অনুসারী গংরা যেন আবুল ফযল গংদেরই পূর্ণ মিছদাক তথা নমুনা।

দুনিয়াবী ফায়দা লাভের উদ্দেশ্যে এবং খানিকটা পদ লাভের প্রত্যাশায় তারা নাজায়িয ও হারাম কাজগুলো নির্দ্বিধায় করে যাচ্ছে। সাথে সাথে নাজায়িয ও হারাম কাজগুলোকে হালাল বলে ফতওয়া দিচ্ছে। বস্তুতঃ এরাই হচ্ছে হাদীছ শরীফে বর্ণিত দাজ্জালের চেলা।

এদের সম্পর্কে হাদীছ শরীফে ইরশাদ হয়েছে,

عن ابى هريرة رضى الله عنه قال قال رسول الله صلى الله صلى الله عليه وسلم يكون فى اخر الزمان دجالون كذابون يأتونكم من الاحاديث بما لم تسمعوا انتم ولا اباؤكم فاياكم واياهم لا يضلو نكم ولا يفتنو نكم.

অর্থঃ “হযরত আবূ হুরাইরা রদ্বিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, হযরত রসূলুল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন, আখিরী যামানায় কিছু সংখ্যক মিথ্যাবাদী দাজ্জাল বের হবে, তারা তোমাদের নিকট এমন সব (মিথ্যা-মনগড়া) কথা উপস্থাপন করবে, যা তোমরা কখনো শুননি এবং তোমাদের বাপ-দাদারাও শুনেনি। সাবধান! তোমরা তাদের থেকে দূরে থাকবে এবং তোমাদেরকে তাদের থেকে দূরে রাখবে। তবে তারা তোমাদেরকে গোমরাহ্ করতে পারবে না এবং ফিৎনায় ফেলতে পারবেনা।” (মুসলিম শরীফ, মিশকাত)

উল্লেখ্য, ইহুদীদের এজেন্ট, ওহাবী মতাবলম্বী দাজ্জালে কায্যাব তথা উলামায়ে ‘ছূ’রা উল্লিখিত বিষয়গুলোর ন্যায় “গণতন্ত্র, ভোট-নির্বাচন” সম্পর্কেও সমাজে বিভ্রান্তি ছড়াচ্ছে। তাই এদের থেকে আমাদের সতর্ক থাকা ফরয-ওয়াজিব।

প্রকৃতপক্ষে সত্য কথা বলতে গেলে বলতে হয় যে, আওয়ামুন্ নাছ বা সাধারণ লোক কুরআন সুন্নাহ্ সম্পর্কে অজ্ঞ বা তাদের পর্যাপ্ত জ্ঞানই নেই। কারণ তারা কুরআন শরীফ, হাদীছ শরীফ পড়েওনি এবং সে সম্পর্কে তারা শিক্ষা গ্রহণও করেনি। যার ফলে তাদের পক্ষে শরীয়তের দৃষ্টিতে হালাল-হারাম, হক্ব-নাহক্ব, ঈমান ও কুফরীর মধ্যে পার্থক্য করে সৎ মত ও সৎ পথে পরিচালিত হওয়া দুরূহ ব্যাপার।

এক্ষেত্রে উলামায়ে ‘ছু’ অর্থাৎ যারা দ্বীন বিক্রি করে দুনিয়া হাছিল করে, তারাই তাদের দুনিয়াবী স্বার্থ উদ্ধারের জন্য সাধারণ লোককে হারাম-নাজায়িয ও গুণাহের কাজ থেকে বাধা দেয়ার পরিবর্তে ইচ্ছায়-অনিচ্ছায় কুফরী-শিরেকীর দিকে ধাবিত করে থাকে এবং করছে।

উল্লেখ্য, যে সকল মাওলানা, মৌলভী ও ইমাম ছাহেব গণতন্ত্র, ভোট-নির্বাচনের বিষয়ে সাধারন লোকদেরকে সতর্ক করার পরিবর্তে তাদের সাথে মিলে মিশে একাকার হয়ে গেছে বা যাবতীয় হারাম কাজে লিপ্ত হয়েছে। তারা মূলত: কুরআন শরীফে বর্ণিত সেই বণী ইসরাঈলী রাহবারদের ন্যায়। যাদের সম্পর্কে আল্লাহ পাক ইরশাদ করেন,

لولا ينههم الربنيون والاحبار عن قولهم الاثم واكلهم السحت لبئس ما كانوا يصنعون.

অর্থঃ “দরবেশ ও আলিমরা কেন তাদেরকে পাপের কথা বলা থেকে এবং হারাম খাওয়া থেকে নিষেধ করেনা? তারা খুবই মন্দ কাজ করছে।” (সূরা মায়িদা-৬৩)

হাদীছ শরীফে ইরশাদ হয়েছে,

عن عبد الله بن مسعود رضى الله تعالى عنه قال قال رسول الله صلى الله عليه وسلم لما وقعت بنو اسرائيل فى المعاصى تهتهم علمأؤهم فلم ينتهوا فجالسوهم فى مجالسهم واكلو هم وشاربوهم فضرب الله قلوب بعضهم ببعض فلعنهم على لسان داود وعيسى ابن مريم ذلكى بما عصوا وكانوا يعتدون قال فجلسى رسول الله صلى الله عليه وسلم وكان متكئا فقال لا والذى نفسى بيده حتى تأطروهم اطرا.

অর্থঃ “হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু বর্ণনা করেন, আল্লাহ পাক-এর হাবীব হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন, যখন বণী ইসরাইল পাপাচারে লিপ্ত হলো তখন তাদের আলিমগণ (প্রথম প্রথম) তাদেরকে এই কাজে বাঁধা দিলো কিন্তু তারা বিরত হলোনা। অতঃপর ঐ সমস্ত আলিমগণ তাদের সাথে উঠাবসা ও খানাপিনায় শরিক হয়ে পড়লো। ফলে আল্লাহ তায়ালা তাদের পরস্পরের অন্তরকে পাপাচারে কুলষিত করে দিলেন। তখন আল্লাহ তায়ালা হযরত দাউদ আলাইহিস্ সালাম ও হযরত ঈসা ইবনে মরিয়ম আলাইহিস্ সালাম-এর মাধ্যমে তাদের উপর লা’নত করলেন। আর এটা এই কারণে যে, তারা আল্লাহ পাক-এর নাফরমানিতে লিপ্ত হয় এবং সীমালংঘন করে। বর্ণনাকারী বলেন, এই সময় আল্লাহ পাক-এর হাবীব হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম হেলান দিয়ে বসেছিলেন; অতঃপর তিনি সোজা হয়ে বসে বললেন, ‘সেই পবিত্র সত্তার কসম! যার হাতে আমার প্রাণ, তোমরা ততক্ষণ পর্যন্ত আল্লাহ পাক-এর শাস্তি হতে রেহাই পাবেনা যতক্ষণ পর্যন্ত তোমরা যালিম ও পাপীদেরকে তাদের পাপকার্যে বাধা প্রদান না করবে।” (তিরমিযী, আবু দাউদ)

উল্লেখ্য, উলামায়ে ‘ছূ’দের হারাম কাজকে সমর্থন ও হারাম কাজে মশগুল হয়ে যাওয়াতে শুধু তারাই আল্লাহ পাক-এর গযবে পতিত হবে তা নয় বরং তাদের এ অপকর্মের কারণে গোটা জাতী গযবে পতিত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। কারণ, হাদীছ শরীফে ইরশাদ হয়েছে,

عن جابر رضى الله تعالى عنه قال قال رسول الله صلى الله عليه وسلم اوحى الله عزوجل الى جبرئيل عليه السلام ان اقلب مدينة كذا وكذا باهلها فقال يارب ان فيهم عبدكى فلانا لم يعصكى طرفة عين قال فقال اقلبها عليه وعليهم فان وجهه لم يتمعر فى ساعة قط.

অর্থঃ “হযরত জাবির রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু বলেন, আল্লাহ পাক-এর হাবীব হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ইরশাদ করেন, আল্লাহ পাক হযরত জিব্রীল আলাইহিস্ সালামকে নির্দেশ দিলেন যে, অমুক অমুক শহরকে তার অধিবাসীসহ উল্টিয়ে দাও। তিনি বললেন, ‘আয় আল্লাহ পাক! এদের মধ্যে তো আপনার অমুক এক বান্দা আছে, যে মুহূর্তের জন্যও আপনার নাফরমানী করেনা।’ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, তখন আল্লাহ পাক বললেন, তাকেসহ সকলের উপরই শহরটিকে উল্টিয়ে দাও। কারণ, তার সম্মুখে পাপাচার হতে দেখে মুহূর্তের জন্যও সে তার চেহারা একটু বাঁকাও করেনা।” (বায়হাক্বী, মিশকাত)

তাফসীরে উল্লেখ করা হয়, আল্লাহ পাক হযরত ইউশা বিন নুন আলাইহিস্ সালাম-এর উপর ওহী নাযিল করলেন, ‘হে আমার নবী! আপনার উম্মতের মধ্যে এক লক্ষ লোককে ধ্বংস করে দেয়া হবে, যার মধ্যে ষাট হাজার লোক সরাসরি গুণাহে লিপ্ত (গোমরাহ)। তখন হযরত ইউশা বিন নুন আলাইহিস্ সালাম বললেন, ‘আয় আল্লাহ পাক ষাট হাজার লোক সরাসরি গুণাহে লিপ্ত তাই তাদের ধ্বংস করে দেয়া হবে কিন্তু বাকী চল্লিশ হাজার লোককে ধ্বংস করা হবে কেন?” তখন আল্লাহ পাক বললেন, “যেহেতু তারা ঐ গুণাহে লিপ্ত লোকদের সাথে মিলা-মিশা ও উঠা-বসা করে এবং সম্পর্ক রাখে আর গুণাহের কাজে বাধা দেয় না, তাই তাদেরকেসহ ধ্বংস করে দেয়া হবে এবং ধ্বংস করে দেয়া হলো।” কাজেই বর্তমানেও যারা হারামকে হালাল আর হালালকে হারাম ফতওয়া দিবে এবং সাধারণ লোকদেরকে হারাম নাজায়িয কাজ থেকে ফিরায়ে রাখার পরিবর্তে নিজেরাই হারাম নাজায়িয কাজে মশগুল হচ্ছে তারাও আল্লাহ পাক-এর গযবে পতিত হয়ে অবশ্যই অবশ্যই ধ্বংস হয়ে যাবে। যেমন ধ্বংস হয়েছে মালউন ইবলিস ও কাদিয়ানী।

অসমাপ্ত

পরবর্তী সংখ্যার অপেক্ষায় থাকুন

সুওয়াল-জাওয়াব বিভাগ

সুওয়াল-জাওয়াব বিভাগ

সুওয়াল-জাওয়াব বিভাগ

সুওয়াল-জাওয়াব বিভাগ

সুওয়াল-জাওয়াব বিভাগ