“বিশ্ব বাবা দিবস, বিশ্ব মা দিবস পালন ও প্রাসঙ্গিক কথা

সংখ্যা: ১১৯তম সংখ্যা | বিভাগ:

বলুন! হে কাফিরকুল, আমি ইবাদত করিনা তোমরা যার ইবাদত কর এবং তোমরাও ইবাদতকারী নও যার ইবাদত আমি করি। এবং আমি ইবাদতকারী নই যার ইবাদত তোমরা কর, তোমরা ইবাদতকারী নও যার ইবাদত আমি করি। তোমাদের ধর্ম, কর্ম ও কর্মফল তোমাদের জন্য এবং আমার ধর্ম, কর্ম ও কর্মফল আমার জন্য।”(সূরা কাফিরূন)

সূরা কাফিরূনে উল্লিখিত একই বাক্য পুনঃপুনঃ উল্লেখের পেছনে বিশেষ কারণ হল মুসলমানদের ধর্ম ও কর্ম এবং কর্মফল যে কাফিরদের থেকে আলাদা ও স্বতন্ত্র বৈশিষ্ট্যমন্ডিত সেটারই অনবদ্য গুরুত্ব জোরদারভাবে ফুটিয়ে তোলা। তার পাশাপাশি আরও        অনুভব করা যে, কোন ক্ষেত্রেই, কোন বিষয়েই কাফিরের চিন্তা ও কর্মের সাথে মুসলমান সংহতি বা একাত্ত্বতা প্রকাশ করতে পারেনা।

এমনকি যদিও বলা হয়- সত্য কথা বলা, পরোপকার করা, দান করা ইত্যাদি বিষয়ে সব ধর্মেরই আদেশ, উৎসাহ বাণী রয়ে গেছে। সেক্ষেত্রে মুসলমান মাত্রেই সত্য কথা বলতে হয়, দান-সদকা করতে হয়, পরোপকারের মানসিকতা বহন করতে হয়। কিন্তু তা ভিন্ন ধর্মের বাণীর আলোকে বা ভিন্ন ধর্মাবলম্বীদের দ্বারা উদ্ভূত চেতনার প্রবাহে নয়।

এ প্রসঙ্গে হাদীস শরীফে ইরশাদ হয়েছে, “হযরত উমর ইবনে খত্তাব রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু বললেন, “ইয়া রসূলাল্লাহ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! ইহুদী-নাছারাদের কাছ থেকে আমরা অনেক চমকপ্রদ কথা শুনি যা ভাল লাগার মত; সেসব কথা কি আমরা লিখে রাখব?’ একথা শুনে হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর চেহারা মুবারক রক্তিমাভ হয়ে গেল। তিনি বললেন, ইহুদী-নাছারারা যে রকম গোমরাহ হয়ে গেছে তোমরাও কি সেরূপ গোমরাহ হতে চাও? অথচ আমি তোমাদের জন্য স্পষ্ট শরীয়ত নিয়ে এসেছি। স্বয়ং মুসা আলাইহিস্ সালামও যদি আজকে জীবিত থাকতেন তাহলে তাঁর জন্যও আমার শরীয়ত গ্রহণ ব্যতীত কোন গত্যন্তর থাকতনা।” (মিশকাত, মিরকাত)

উপরোক্ত বক্তব্যের আলোকে নিম্নোক্ত আহবান দুটো লক্ষ্যণীয় মে মাসের দ্বিতীয় রবিবার হিসবে ১১ মে বিশ্ব মা দিবস। এদিনে মায়ের হাতে তুলে দিন লাল ফুল অথবা যে কোন উপহার। আর যদি মা বেঁেচ না থাকেন তাহলে তার সমাধিটি সাদা ফুলে ফুলে ভরিয়ে দিন, তার আত্মার শান্তি কামনা করুন।”

“জুনের তৃতীয় রোববার হিসেবে ১৫ জুন (২০০৩) বিশ্ব বাবা দিবস। যদি বাবাকে মুহূর্তেই সমান ভালবাসা যায় তারপরেও অন্তত একটি দিন তাদের বিশেষভাবে শ্রদ্ধা জানানো এবং খুশি করা উচিত। এদিনে বাবার হাতে তুলে দিন ভালবাসার উপহার এবং বাবাকে বলুন যে, আপনি তাকে ভালবাসেন। যাদের বাবা বেঁচে নেই তাদের শয্যাস্থান ফুলে ফুলে ভরিয়ে দিন।”

উল্লেখ্য, কথিত এ আহবানের প্রতিক্রিয়া কি বা তা কতটুকু সাড়া জাগিয়েছে তা উপলব্ধি করা যায় পত্রিকান্তরে প্রকাশিত মন্তব্য থেকে। “ ….. বেশ কয়েক বছর ধরে অন্যান্য আর্ন্তজাতিক দিবসের মত বাংলাদেশে বাবা দিবস পালিত হয়ে আসছে।”

“… ফলশ্রুতিতে বাংলাদেশেও মা দিবস জোরালোভাবে পালিত হচ্ছে কয়েক বছর ধরে।” (দৈনিক যুগান্তর)           প্রসঙ্গতঃ সূরা কাফিরূন তথা ইসলামী নীতিমালার আলোকে মুসলমান হিসেবে যা সহজাতভাবে প্রশ্নবিদ্ধ করে তা হলো- ু মায়ের প্রতি ভালবাসা, বাবার প্রতি ভালবাসা প্রকাশ করতে আহবানকৃত তথাকথিত এই বিশ্ববিবেকের পরিচয় কি? ু মে মাসের দ্বিতীয় রোববার ‘মা দিবস’ এবং জুনের তৃতীয় রোববার ‘বাবা দিবস’ উদযাপন দ্বারা কোন ধর্মাবলম্বীকে অনুসরণ করা হয়? ু মুসলমান হিসেবে কুরআন-সুন্নাহ্য় বিবৃত যে পিতা-মাতার প্রতি সন্তানের কর্তব্যবোধ ও অনুভূতি তার তুলনায় তথাকথিত মা দিবস ও বাবা দিবসের চেতনা কি সমুদ্রের তুলনায় ফেনা পরিমাণ চেতনা দাবী করতে পারে?  ু এই ‘বাবা দিবস’ ও ‘মা দিবসের’ সেন্টিমেন্ট মুসলিম চেতনামন্ডিত এই দেশে আমদানীর উদ্দেশ্য কি? ু এটা কি তথাকথিত সংস্কৃতিবাদী তথা সুশীল সমাজের এক নতুন চমক তৈরী তথা চটকদার প্রবক্তা বা একটা ফ্যাশনবাদের নায়ক সাজার আপ্ত অভিলাষ নয়? ু ইতোমধ্যে এ ধারার যে চেতনা আমদানী হয়েছে যথা ‘থার্টি ফাস্ট নাইট’ কালচার ভ্যালেণ্টাইনস ডে, কনসার্ট ইত্যাদি এদেশের ধর্ম-সংস্কৃতিকে কি উজ্জ¦ল করেছে না ক্ষতবিক্ষত করেছে? ু এর দ্বারা কি বাবা-মার প্রতি আবহমানকালের বাঙ্গালী অনুভূতি তথা ঐতিহ্যবাহী পারিবারিক বন্ধনের টান যা বর্তমানে হতচ্ছাড়া পশ্চিমা দেশের ঈর্ষার ও লোভণীয় বস্তু, যা মূলত ইসলামী মূল্যবোধের সুফল বা ইসলামী চেতনা উজ্জীবনের প্রেক্ষাপট তাকে ধ্বংস করার সুদূর প্রসারী ষড়যন্ত্র নয়?

এর দ্বারা কি ইউরোপীয় কালচারের মত বাবা-মাকে বৎসরের নির্দিষ্ট দিনে কার্ড, কিছু ফল বা বই পাঠিয়ে বাঙ্গালী চেতনাকেও সংকুচিত করে নির্দিষ্ট একদিনেই সীমাবদ্ধ করে তৃপ্ত থাকার বা রাখার মানসিকতা গড়ে তোলার অপপ্রয়াস নয়?

যেমন এ প্রসঙ্গে Encyclopedia Americana তে বলা হয়েছে, However in recent years following U. S. Customs Countries such as England and Australia have been honoruring Mother’s day with more popularity. In these countries, children are encouraged to these countries, children are cncouraged to send their mother cards and to give them presents as a mark of respect and love.

অর্থাৎ- সম্প্রতিক বছরগুলোতে ইংল্যান্ড ও অস্ট্রেলিয়ার মত দেশগুলো আমেরিকার রীতি অনুসরণ করে আরো বেশী জনপ্রিয়তার সাথে ‘মা দিবস’ পালন করে যাচ্ছে। এসব দেশে মায়ের প্রতি শ্রদ্ধা এবং ভালবাসার নিদর্শন স্বরূপ মাকে কার্ড, উপহার  ইত্যাদি পাঠানোর জন্য শিশুদেরকে উৎসাহিত করা হয়।”

প্রসঙ্গতঃ এই বিশ্ব বাবা দিবস, মা দিবস পালনে পালিত হয়, আরো কত সব অনৈসলামী অনুষঙ্গ? আর এর পটভূমিকাই বা কি? ইতিহাসই বা কি?

মা দিবস পালনের অতীত কথা

 

ইতিহাসবিদদের মতে, বসন্তকালে দেবী মায়ের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে যে উৎসব পালিত হতো, সেটি মা দিবস হিসেবে গণ্য ছিল। প্রাচীন গ্রীক সাম্রাজ্যে এ উৎসব ‘ক্রোনাস’-এর স্ত্রী এবং দেব-দেবীর মাতা ‘রিয়া’-এর সম্মানে উদযাপিত হতো। রোম নগরীতে মা সাইবেলাকে উৎসর্গ করে জাঁকজমকপূর্ণ ভাবে পালিত হতো। খ্রীষ্টের জন্মের ২৫০ বছর আগে এ উৎসব পালিত হতো যা ‘হিলারিয়া’ নামে পরিচিত ছিল। ইংল্যান্ডবাসীরা মা দিবসকে মায়ের জন্য রোববার হিসেবে মান্য করে। এ দিনটি পালিত হতো যিশুর উপবাস স্মরণের উদ্দেশ্যে ইস্টারের পূর্বে, খ্রীষ্টান ধর্মাবলম্বীদের ৪০ দিনের বার্ষিক উপবাসের চতুর্থ রোববার। উত্তর ইংল্যান্ড ও স্কটল্যান্ডে মা দিবসে কেক বানানোর রীতি প্রচলিত ছিল।

বর্তমান মা দিবসের পটভূমিকা

বর্তমানে যে মা দিবস পালন করা হয় এর পেছনে অ্যানা জারভিসের অবদান উল্লেখযোগ্য।

আমেরিকান এই মহিলা মায়ের কথা চিন্তা করে বিয়ে পর্যন্ত করেনি। জারভিসের মা ১৯০৫ সালে মারা যাওয়ার ২ বছর পরে ‘মা দিবস’ পালনের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। জারভিসের জন্য মন্ত্রী, ব্যবসায়ী এমনকি কংগ্রেস সদস্যদের চিঠি দেয়া শুরু করেন।

অ্যানা জারভিসের অনুরোধে ১৯০৮ সালের ১০ মে মায়ের সম্মানে পূর্ব ভার্জিনিয়ার গ্রাফটনের গির্জায় এবং ফিলাডেলফিয়া ওপেনসিলভিয়াতে ‘মা দিবস’ আনুষ্ঠানিকভাবে পালন শুরু হয়। মিস জারভিস প্রথমবার মা দিবস উদ্যাপনের সময় এক ধরণের সাদা, গোলাপি বা লাল ফুল মায়ের ভালবাসার প্রতীক হিসেবে বেছে নিয়েছিলেন। এরপর থেকে লাল ফুলকে বেঁচে থাকা মায়ের প্রতীক এবং সাদা ফুলকে মৃত মায়ের শ্রদ্ধার প্রতীক হিসেবেই গণ্য করা হয়। ১৯১১ সাল থেকে আমরিকার প্রতিটি রাজ্যে মা দিবস পালনের ঘোষণা দেয়া হয়।

‘আন্তর্জাতিক মা দিবস সংগঠন’ প্রথমে ১২ ডিসেম্বর ১৯১২ সাল থেকে মা দিবস পালন করেছিল।

এ প্রসঙ্গে Encyclopedia Britannica তে বলা হয়েছে, The celebration of Mother’s Day is said to have started in Grafton wich Anna Jarvis observed the anniversary of her mother’s death 1908 at the Andrews Methodist church.

অর্থাৎ- কথিত আছে যে, অ্যানা জারভিসের উদ্যোগে গ্রাফটনে সর্বপ্রথম মা দিবস পালিত হয়। ১৯০৮ সালে এন্ড্রজ মেথোডিস্ট চার্চে অ্যানা জারভিসের মাতার মৃত্যুবার্ষিকী হিসেবে তা উদযাপিত হয়।

আনুষ্ঠানিক ঘোষণার প্রেক্ষাপট

          যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট, মন্ত্রিসভা এবং কংগ্রেসের সদস্যদের অনুরোধে সাদাফুল পরা একদল প্রতিনিধি ১৯১৩ সালের মে মাসে আনুষ্ঠানিক ‘মা দিবস’ পালনের ঘোষণা দেয়।

১৯১৪ সালের ৮মে এক যৌথ অনুমোদনে কংগ্রেস মে মাসের দ্বিতীয় রোববার ‘মা দিবস’ পালনের ঘোষণা করে যা এখন পর্যন্ত চলে আসছে।

বাবা দিবসের আলোচনা

১৯০৯ সালে মনোরা ডড মা দিবসের একটি আলোচনা অনুষ্ঠানে বক্তৃতা শোনেন। বাড়িতে ফিরে আসার পরপরই তার খেয়াল হলো তার বাবার কথা;  মাবিহীন যে বাবা ছয় ভাইবোনকে যত্নে লালন করেছেন, করেছেন প্রতিষ্ঠিত। তার বাবা ছিলেন আমেরিকার স্বাধীনতা সংগ্রামের এক লড়াকু সৈনিক উইলিয়াম জ্যাকসন স্মার্ট। তার স্ত্রী আমেরিকার মুক্তির জন্য লড়াই করে মৃত্যু বরণ করেছিল, এরপর জ্যাকসন আবারও নতুনভাবে জীবনযুদ্ধে নেমে পড়েন ছয়টি বাচ্চাকে নিয়ে। পূর্ব-ওয়াশিংটনে গ্রাম্য পরিবেশে তিনি ছয় সন্তান লালন পালনের ব্রত গ্রহণ করেন। ডড সিদ্ধান্ত নিলেন, তার বাবাকে বিশেষ সম্মানে সম্মানিত করবেন। আর সেই চিন্তা থেকেই বাবা দিবসের সূত্রপাত। সেবার একান্ত ব্যক্তিগতভাবে বাবা দিবস পালন করেন ডড। কিন্তু পরের বছরের জন্য প্রস্তুতি শুরু করে দেন তিনি। ওয়াশিংটনে ১৯১০ সালের জুন মাসে পালিত হয় প্রথম বাবা দিবস। দিনটিকে সমর্থন জানায় রাজ্যের গভর্ণর এবং শহরের মেয়র।

এ প্রসঙ্গে The World Book Encyclopedia তে বলা হয়েছেঃ Through Sonora Dodds efforts, Spckane celebrated (The Spokano Ministerial Association and the iocal Young Men’s Christian Association (YMCA) Supported it) the first Father’s Day on June 19, 1910. The custom later spread to other countries.

অর্থাৎ- সনোরা ডডের চেষ্টায় ১৯১০ সালের ১৯ শে জুন স্পোকেন (আমেরিকার একটি স্থান) সর্বপ্রথম ‘বাবা দিবস’ উদযাপিত হয়। স্পোকেন মিনিস্টেরিয়াল এসোসিয়েশন এবং স্থানীয় খ্রীষ্টান যুব সংঘ (ওয়াই, এম, সি, এ) তাতে সমর্থন যোগায়। পরবর্তীতে ক্রমান্বায়ে অন্যান্য দেশেও ‘বাবা দিবস’ পালিত হয়ে থাকে।

কালক্রমে বাবা দিবস

১৯১০ সালের ১৯ জুন: শুরু হলো বিশ্ব বাবা দিবস। ১৯২৪ সালে প্রেসিডেন্ট কেলভিন কুলিজ জনসমাবেশে জাতীয় বাবা দিবসের পরিকল্পনাকে স্বাগত জানায়। ১৯২৬ সালে জাতীয় বাবা দিবস কমিটির সদস্যরা প্রথমবারের মত নিউইয়র্ক সিটিতে সমবেত হয়। ১৯৫৬ সালে বাবা দিবস কংগ্রেসের প্রস্তাবনায় পাশ হয়। ১৯৬৬ সালে প্রেসিডেন্ট লিন্ডসন জনসন’ বাবা দিবসকে জাতীয় ছুটির দিন হিসেবে ঘোষণা করেন। ১৯৭২ সালে প্রেসিডেন্ট লিন্ড রিচার্ড নিক্সন একটি আইনে স্বাক্ষর করেন যেখানে বলা হয়, বাবা দিবস একটি সরকারী ছূটির দিন যা জুন মাসের তৃতীয় রবিবারে পালিত হবে। ১৯৯৯ সালে বাবা দিবস পঞ্চম জনপ্রিয় কার্ড আদান-প্রদান দিবস হিসেবে স্থান করে নেয়। প্রায় ৯৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলার মূল্যের কার্ড এই দিন আদান-প্রদান হয়ে থাকে।

অতএব, দেখা যায় যে, এই মা দিবস, বাবা দিবস পালন করতে গেলে ইহুদী খ্রীষ্টানদেরই পায়রবী করতে হয়। তাদেরই সংস্কৃতির মুখাপেক্ষী হতে হয়। জীবিত মাকে লাল ফুল দেয়া আর মৃত মায়ের সমাধিতে সাদা ফুল ছিটিয়ে দেয়া শুধুমাত্র এই সংস্কৃতিই নয়, পোট্রেট অব দ্যা মাদার এন্ড সিস্টার, ‘দ্যা ম্যাডোনা উইথ লং নেক,’ ইত্যাদি চিত্রশিল্পের জয়গান তথা ছবিসহ হাজারো হারাম কাজের দিকে ঝুকে যেতে হয়।

সুতরাং বলার অপেক্ষা রাখেনা যে আসলে এটি শয়তানের ওয়াসওয়াসা ছাড়া আর কিছুই নয়। কারণ এতে ওহীর মূল্যবোধকে অবমাননা করা হয়। ইসলাম যে পরিপূর্ণ তথা কুরআন-সুন্নাহর বাণীই যে অনেক বেশী জীবন্ত ও ফলপ্রদ তা অস্বীকার করা হয়। অথচ ‘মায়ের পদতলে সন্তানের বেহেশত বা পিতার সন্তুষ্টিতে খোদার সন্তুষ্টি।    অথবা কুরআন শরীফে বর্ণিত “তোমার পালনকর্তা আদেশ করেছেন যে, তাকে ছাড়া অন্য কারো ইবাদত করোনা এবং পিতামাতার সাথে সদ্ব্যবহার কর। তাদের মধ্যে কেউ অথবা উভয়েই যদি তোমার জীবদ্দশায় বার্ধক্যে উপনীত হয়, তবে তাদেরকে ‘উহ্’ শব্দটিও বলোনা এবং তাদেরকে ধমক দিওনা এবং বল তাদেরকে শিষ্টাচারপূর্ণ কথা। তাদের সামনে ভালবাসার সাথে; দয়ার হাত বিছিয়ে দাও এবং বল; হে পালনকর্তা, তাদের উভয়ের প্রতি রহম কর। যেমন তারা আমাকে শৈশব কালে লালন-পালন করেছেন।” (সূরা বণী ইসরাঈল/২৩-২৪)

“আমি মানুষকে তার পিতা-মাতার সাথে সদ্ব্যবহারের জোর নির্দেশ দিয়েছি। তার মাতা-তাকে কষ্টের পর কষ্ট করে রেহেম শরীফে ধারণ করেছে। তার দুধ ছাড়ানো দু’বছরে হয়। নির্দেশ দিয়েছি যে, আমার প্রতি ও তোমার পিতা- মাতার প্রতি কৃতজ্ঞ হও।” (সূরা লোকমান/১৪) এই আয়াত শরীফদ্বয় মুসলিম সন্তানের হৃদয়ে বাবা-মার প্রতি যে অভূতপূর্ব ভালবাসা, মুহব্বত, খিদমত ও আদব-লেহাজের অনুভূতি তৈরী করে; ক্বিয়ামত পর্যন্ত অপর কোন বাণী, চেতনা বা মূল্যবোধ তার ধারকাছের অনুভূতিও তৈরী করতে পারবেনা।

কারণ, এ যে ওহী। এ ওহীর তাছির বেমেছাল হৃদয়গ্রাহী। যে কারণে এখনও বিশ্বের মুসলমানগণ বাবা-মা কেন্দ্রিক পারিবারিক বন্ধনে আবদ্ধ। আর এ বন্ধনই পশ্চিমা সভ্যতার বল্গাহীন জীবন থেকে মুসলমানদের রক্ষা করছে।

কাজেই পশ্চিমা তথা ইহুদী-খ্রীষ্টানদের নজর এই রক্ষা কবচ তথা মুসলমানদের পারিবারিক বন্ধন ও মূল্যবোধ বিনষ্ট করণের দিকে। সেক্ষেত্রে বাবা-মার প্রতি ইসলামী চেতনা অবলুপ্ত করে বছরে একদিন একটি কার্ড আর কিছু ফল পাঠিয়ে বাবা-মা দিবস সংস্কৃতি প্রচলনের মাধ্যমেই ওরা অনেকাংশে সফল হবে বলে মনে করছে। কাজেই সচেতন মুসলমানকে এখনি এ বিষয়ে সঠিক ভূমিকা নিতে হবে। মহান আল্লাহ্ পাক রহমত ও গায়েবী মদদের মালিক।

-মুহম্মদ মাহবুবুর রহমান, ঢাকা।

আকবরের আমলের উলামায়ে ‘ছূ’দের উত্তরাধিকারী মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে দ্বীন-ই-ইলাহীর আদলে দ্বীন-ই-জুমহুরী প্রচলনে তারা এক হয়েছে-৪

প্রসঙ্গঃ গণতন্ত্র; এখনই চরম সময়, বিষয়টি ভাবিবার- ১০

একটি অভূতপূর্ব ওয়াজ শরীফ এবং কম্পিউটারে কুরআন শরীফ, মাজার শরীফের উপরে ভাসমান দৃশ্য ও তাঞ্জানিয়ার সেই ছেলের কথা

প্রসঙ্গঃ দরসে বুখারীর পঞ্চদশ বছর পূর্তি নামধারী জাহিরী আলিমদের ডামাডোলের বিপরীতে মুজাদ্দিদুয্ যামানের পরিচয়

আকবরের আমলের উলামায়ে ‘ছূ’দের উত্তরাধিকারী মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে দ্বীন-ই-ইলাহীর আদলে দ্বীন-ই-জুমহুরী প্রচলনে তারা এক হয়েছে-৫