বিশ্ব সমাদৃত,হযরত আউলিয়া-ই-কিরাম রহমতুল্লাহি  আলাইহিমগণের অনুপম মুবারক চরিত গ্রন্থ আখবারুল আখইয়ার-৮২

সংখ্যা: ১১৮তম সংখ্যা | বিভাগ:

হযরত শায়খ জামাল হাঁসূবী রহমতুল্লাহি আলাইহি

(জন্মঃ ৬২৮ হিজরী, ওফাতঃ ৭০০ হিঃ)

মূলঃ হযরত শায়খ আব্দুল হক মুহাদ্দিসে দেহ্লভী রহমতুল্লাহি আলাইহি, ভাষান্তরঃ মুহম্মদ শামসুল আলম

হযরত শায়খ জামাল হাঁসূবী রহমতুল্লাহি আলাইহি খুব বড় বক্তা ও দৃঢ়চিত্ত মনের অধিকারী ছিলেন। নসবনামা সিলসিলার দিক থেকে তিনি ইমামে আ’যম, হযরত ইমাম আবূ হানিফা রহমতুল্লাহি আলাইহি-এর সাথে মিলিত হয়েছেন। তিনি হযরত বাবা ফরিদুদ্দীন গন্জে শোকর রহমতুল্লাহি আলাইহি-এর বড় বড় খলীফাদের মধ্যে শামিল। তিনি যাহিরী-বাতিনী কামালতের অধিকারী ছিলেন। হযরত বাবা ছাহেব রহমতুল্লাহি আলাইহি-এর সাথে তাঁর সম্পর্ক খুবই গাঢ় ছিল। আর এর দরুন তিনি বার বৎসর হাঁসীতে তাঁর ছোহবতে ছিলেন। তিনি তাঁর সম্পর্কে বলেন, জামাল আমার জামাল (অর্থাৎ জামাল আমার কামালিয়ত-এর সৌন্দর্য) এবং কখনও এমনও বলতেন যে, জামাল আমার কামনা, বাসনা।”       হযরত ফরিদুদ্দীন মাসউদ গন্জে শোকর রহমতুল্লাহি আলাইহি যাকে খিলাফত দিতেন তাঁকে হযরত শায়খ জামাল হাঁসূবী রহমতুল্লাহি আলাইহি-এর নিকট প্রেরণ করতেন। যদি শায়খ জামাল রহমতুল্লাহি আলাইহি তা কবুল করে নিতেন তবে বাবা ছাহেব সেই খিলাফতনামা মনজুর করে নিতেন। কিন্তু যদি শায়খ জামাল রহমতুল্লাহি আলাইহি ঐ খিলাফতনামার প্রতি নারাজ থাকতেন তবে বাবা ছাহেব রহমতুল্লাহি আলাইহি সেই খিলাফতনামাকে কেটে দিতেন এবং দ্বিতীয়বার আর সেই খিলাফতনামাকে কবুল করতেন না। এবং এ সম্পর্কে তিনি বলতেন, ‘যে খিলাফতনামা জামাল ছিড়ে ফেলে সেটাকে ফরীদ জোড়া লাগান না।’  একদিন এক ব্যক্তি হাঁসী থেকে বাবা ছাহেব রহমতুল্লাহি আলাইহি-এর খিদমতে আসলো। তিনি তাঁকে জিজ্ঞেস করলেন, আমার জামাল কেমন আছেন? সেই ব্যক্তি বললো, আমাদের মাখদুম (হযরত শায়খ জামাল রহমতুল্লাহি আলাইহি) যেদিন থেকে আপনার সাথে (রূহানী) সম্পর্ক স্থাপন করেছেন সেই সময় থেকে রিয়াজত-মুজাহাদার মধ্যে মশগুল রয়েছেন। লোকজনের সাথে দেখা-সাক্ষাৎ বন্ধ করে দিয়েছেন এবং ক্ষধার্থ থাকাকে ইখতিয়ার করেছেন। হযরত বাবা ছাহেব রহমতুল্লাহি আলাইহি এসব শুনে খুব খুশী হলেন এবং আলহামদু লিল্লাহ্ বলে আল্লাহ্ পাক-এর শুকরিয়া আদায় করলেন এবং এ দোয়া করলেন, “আল্লাহ্ পাক তাঁকে খুশী রাখুন।”

বর্ণিত আছে যে, একদিন হযরত শায়খ জামাল হাঁসূবী রহমতুল্লাহি আলাইহি এ হাদীস শরীফ শুনলেন যে,

القبور روضة من رياض الجنة او حفرة من حفر النيران.

অর্থঃ- “কবর হচ্ছে জান্নাতের বাগানসমূহের মধ্য হতে একটি বাগান অথবা জাহান্নামের গর্তসমূহের মধ্য হতে একটি গর্ত।”

তখন তিনি পেরেশান এবং হয়রান হয়ে গেলেন এবং এ হাদীস শরীফের সতর্কতামূলক বাণী শ্রবণ করার পর বেকারার অবস্থার মধ্যে রইলেন। তাঁর ইন্তিকালের পর লোকজন কয়েক দফা চেষ্টা করেছিলেন যাতে তার মাযার মুবারক পাকা করা হয় এবং গম্বুজ বিশিষ্ট হয়।

পরিশেষে মাযার মুবারক পাকা করা এবং গম্বুজ বিশিষ্ট করার জন্য লোকজন মাটি খুঁড়তে লাগলেন। মাটি খুঁড়তে খুঁড়তে যখন লোকজন মাযার মুবারকের (একদম) নিকটবর্তী হলেন তখন দেখতে পেলেন, ক্বিবলার দিকে একটি ছিদ্র দেখা যাচ্ছে। আর ঐ ছিদ্র দিয়ে জান্নাতের খুশবু আসছে। (সুবহানাল্লাহ্)

সুতরাং মানুষজন সাথে সাথে ঐ ছিদ্রটি বন্ধ করে দেয় এবং সে স্থান ত্যাগ করে। পরবর্তীতে মাযার মুবারক বন্ধ করে দিয়ে তার উপর দিয়ে গম্বুজ বানিয়ে দেয়া হয়। হযরত শায়খ জামাল রহমতুল্লাহি আলাইহি রিসালা, কবিতা, শে’র লিখেছেন। আরবী ভাষায় লিখিত তাঁর একটি রিসালা রয়েছে। যার মধ্যে বিবিধ কামালত এবং ছন্দমূলক কবিতা সন্নিবেশিত হয়েছে। কিতাবটির নাম হচ্ছে, ‘মুলহিমাত।’

বিশ্ব সমাদৃত, হযরত আউলিয়ায়ে কিরাম রহমতুল্লাহি আলাইহিমগণ উনাদের অনুপম মুবারক চরিত গ্রন্থ আখবারুল আখইয়ার

বিশ্ব সমাদৃত,হযরত আউলিয়া-ই-কিরাম রহমতুল্লাহি  আলাইহিমগণের অনুপম মুবারক চরিত গ্রন্থ আখবারুল আখইয়ার

বিশ্ব সমাদৃত,হযরত আউলিয়া-ই-কিরাম রহমতুল্লাহি  আলাইহিমগণের অনুপম মুবারক চরিত গ্রন্থ আখ্বারুল আখইয়ার (৭৮)

বিশ্ব সমাদৃত,হযরত আউলিয়া-ই-কিরাম রহমতুল্লাহি  আলাইহিমগণের অনুপম মুবারক চরিত গ্রন্থ আখ্বারুল আখইয়ার (৭৯) হযরত শায়খ আবুল ফাতাহ রুকনুদ্দীন রহমতুল্লাহি আলাইহি

আখবারুল আখইয়ার-৮০