বিশ্ব সমাদৃত, হযরত আউলিয়া-ই-কিরাম রহমতুল্লাহি  আলাইহিমগণের অনুপম মুবারক চরিত গ্রন্থ আখবারুল আখইয়ার- (৯৯)

সংখ্যা: ১৩৯তম সংখ্যা | বিভাগ:

মূলঃ হযরত শায়খ আব্দুল হক মুহাদ্দিসে দেহ্লভী রহমতুল্লাহি আলাইহি, ভাষান্তরঃ মুহম্মদ শামসুল আলম

হযরত নাছিরুদ্দীন চেরাগে দেহলভী রহমতুল্লাহি আলাইহি

(ধারাবাহিক)

একদা শায়খ নাছিরুদ্দীন চেরাগে দেহলভী রহমতুল্লাহি আলাইহি-এর সামার মাহফিলে তিনি এই শে’রটি শ্রবণ করে শরীর হেলাতে দুলাতে লাগলেন। তখন তাকে বেকারার, বেচাইন এবং দিওয়ানার মত লাগছিলো।

এটা থেকে বুঝা যায় যে, হযরত চেরাগে দেহলভী রহমতুল্লাহি আলাইহি-এর সামা বা কাছীদার মাহ্ফিলে কোন প্রকার বাদ্যযন্ত্র থাকতো না। কেননা, তিনি ছূফীদের সামা বা কাছীদার মাহ্ফিলে বাদ্যযন্ত্র, দফ বাজানো পছন্দ করতেন না। তিনি এই ইস্তেগরাকের হালে স্বীয় হুজরা শরীফের ছাদে গিয়ে বসে পড়লেন এবং হযরত মাওলানা মুগীসুদ্দীন রহমতুল্লাহি আলাইহিকে তলব করলেন। হযরত মাওলানা ছাহেব রহমতুল্লাহি আলাইহি ঘাবড়িয়ে গেলেন এবং এই অবস্থায় শায়খের সামনে এসে দাঁড়িয়ে গেলেন। তখন তিনি বললেন, মাওলানা ছাহেব! লিখুন, ঐ জায়গাটা কতটা জাহেলিয়াতে পরিপূর্ণ? এই বলে তিনি তাঁকে রুখছত দিলেন। এরপর আর কোনদিন হযরত মাওলানা ছাহেব খানকা শরীফে আসেননি এবং স্বল্প সময়ের ব্যবধানে তিনি ইন্তিকাল করেছেন।

এরপর বর্ণিত রয়েছে, হযরত চেরাগে দেহলভী রহমতুল্লাহি আলাইহি বলেন, আমার কিইবা এমন যোগ্যতা রয়েছে যে, আমি পীর-মুরিদী করি। আজকাল তো লোকজন এটাকে বাচ্চাদের খেলনার জিনিস মনে করে। তারপর তিনি হযরত শায়খ সানাই রহমতুল্লাহি আলাইহি-এর এই শে’র পড়লেন।

হে মুসলমান! শরীয়তের উপর আমল করো। মূলতঃ সত্যিকার অর্থে তুমি যে রাস্তার উপর চলছো সেটা তো বেদ্বীন, বদ্দ্বীনদের রাস্তা যেটাতে নিছক কপাল ঠুকরানো ব্যতীত ফল আশা করা বৃথা। তিনি আরো বললেন, ঈমান হিফাযত করার ফিকিরে থাকো (অহেতুক) কারামত দেখার পিছনে ছুটাছুটি করোনা। আমি এ বিষয়ে চিন্তিত যে, মানুষ কেন (কঠিন) রিয়াজত, মুজাহিদা (সম্পন্ন করা) ব্যতীত লোকদের পিছনে দৌড়ায়?

(বান্দা নাওয়াজ) সাইয়্যিদ মুহম্মদ গিয়াসু দারাজ রহমতুল্লাহি আলাইহি বলেন, আমি তখন দিল্লীতে অবস্থান করছি। যে সময় হযরত শায়খ রহমতুল্লাহি আলাইহি হায়াতে যিন্দিগীতে ছিলেন। এক বৎসর দিল্লীতে বৃষ্টির অভাব দেখা দিয়েছিলো। লোকজন হযরত শায়খ রহমতুল্লাহি আলাইহি-এর সাথে অত্যন্ত আযীযী ইনকিসারীর সাথে ছলাতুল ইস্তেস্কার নামায আদায় করলেন। এবং শায়খের মাধ্যমে বৃষ্টির জন্য দোয়া করা হলো। কিন্তু বৃষ্টি হলোনা। অগত্যা সকলকে ফিরে আসতে হলো। এরপর আমি তাঁর দরবার শরীফে হাজিরা দিলাম। তিনি আমাকে দেখে বললেন, কি ব্যাপার, তুমি আমাদের সাথে ইস্তেস্কার নামাযে শরীক হলেনা?  আমি বললাম, জী-হ্যাঁ। তিনি বললেন, আজ (স্বচক্ষে) তুমি দেখলে, মানুষ আমার সম্পর্কে এটা-ওটা এবং আরো কি যেন বলাবলি করছিলো। আমি অনেক লোকজন সহকারে (শহরের বাইরে মাঠে) আসলাম। লাখো কোশেশ, চেষ্টা করলাম। কিন্তু বৃষ্টি হলোনা। অবশেষে দুঃখ ভারাক্রান্ত এবং নিরাশ হয়ে আমাদের প্রত্যাবর্তন করতে হলো। (মানুষের ধারণা ছিল আমি বুঝি সবকিছু করে দেখাতে পারি) কিন্তু আজ আল্লাহ রব্বুল আলামীন দেখিয়ে দিলেন যে, আল্লাহ পাক-এর কাজ ও ক্ষমতার মধ্যে কারো কোন ক্ষমতা নেই।

(দোয়া কবুল হওয়া না হওয়া যদিও আল্লাহ পাক-এর ইচ্ছার উপর নির্ভরশীল। কিন্তু এটাও সত্য ওলীআল্লাহগণের দোয়া নিঃসন্দেহে কবুলযোগ্য। অবশ্য কিছু কিছু ক্ষেত্রে ব্যতিক্রমও হতে পারে। কেননা, আল্লাহ পাক-এর ভেদ বা রহস্য বুঝা মুশকিল। আমরা অবশ্যই এক্ষেত্রে হযরত শায়খ রহমতুল্লাহি আলাইহি-এর দোয়া কবুল না হওয়া সম্পর্কিত ব্যপারটি আল্লাহ পাক-এর রহস্যের অন্তর্ভুক্ত ধরে নিবো।)

এছাড়াও বান্দা নাওয়াজ গিয়াসু দারাজ রহমতুল্লাহি আলাইহি হযরত নাছিরুদ্দীন চেরাগে দেহলভী রহমতুল্লাহি আলাইহি-এর বরাত দিয়ে বলেন, তিনি অর্থাৎ হযরত শায়খ রহমতুল্লাহি আলাইহি ইরশাদ ফরমান, আমি যখন ছোট ছিলাম এবং মসজিদে উস্তাদের কাছে পড়ছিলাম তখন মসজিদের নিকটে একটা শুস্ক বৃক্ষ ছিলো। একটা কুকুর প্রতিদিন সেই বৃক্ষের নিচে এসে বসতো এবং যা কিছু সে (তার ভাষায়) বলতো আমি সেটা ভাল করে বুঝে নিতাম।

 বিশ্ব সমাদৃত, হযরত আউলিয়া-ই-কিরাম রহমতুল্লাহি  আলাইহিমগণের অনুপম মুবারক চরিত গ্রন্থ আখবারুল আখইয়ার- (৯৫)

বিশ্ব সমাদৃত, হযরত আউলিয়া-ই-কিরাম রহমতুল্লাহি  আলাইহিমগণের অনুপম মুবারক চরিত গ্রন্থ আখবারুল আখইয়ার- (৯৬)

বিশ্ব সমাদৃত, হযরত আউলিয়া-ই-কিরাম রহমতুল্লাহি  আলাইহিমগণের অনুপম মুবারক চরিত গ্রন্থ আখবারুল আখইয়ার- (৯৭)

বিশ্ব সমাদৃত, হযরত আউলিয়া-ই-কিরাম রহমতুল্লাহি  আলাইহিমগণের অনুপম মুবারক চরিত গ্রন্থ-আখবারুল আখইয়ার-(৯৮)

বিশ্ব সমাদৃত, হযরত আউলিয়া-ই-কিরাম রহমতুল্লাহি  আলাইহিমগণের অনুপম মুবারক চরিত গ্রন্থ আখবারুল আখইয়ার-১০১