বিশ্ব সমাদৃত, হযরত আউলিয়া-ই-কিরাম রহমতুল্লাহি আলাইহিমগণের অনুপম মুবারক চরিত গ্রন্থ আখবারুল আখইয়ার-৯৪ 

সংখ্যা: ১৩৪তম সংখ্যা | বিভাগ:

মুলঃ হযরত শায়খ আবউদল হক মুহাদ্দিসে দেহলভী রহমতুল্লাহি আলাইহি,

ভাষান্তরঃ মুহম্মদ শামসূল আলম

হযরত শায়খ ছূফী বদনী রহমতুল্লাহি আলাইহি জন্মঃ ৬৩৯ হিজরী, ওফাত ৭০৪ হিজরী হযরত খাজা নিযামুদ্দীন আওলিয়া রহমতুল্লাহি আলাইহি বলেন, কায়থালে একজন বুযুর্গ ছিলেন যাকে লোকেরা ‘ছূফী বদনী’ বলে সম্বোধন করতো। তিনি ঐ সময় এতটা ‘তরকে দুনিয়া’ (দুনিয়া বিরাগী) ছিলেন যে, প্রয়োজনের অতিরিক্ত কাপড়ও পরিধান করতেনা।

একবার তিনি বলেন,  “যিনি এ পরিমাণ খাদ্য গ্রহণ করেন যার দরুণ ক্ষুধা নিবৃত্তি হয় এবং শরীরে তাকত (বল) ফিরে আসে এতদ্ভিন্ন এতটুকু কাপড় পরিধান করা যাতে ছতর ঢেকে যায় এই রকম ব্যক্তির অনুসরণ করা চাই।”

যদিও উপরের ক্বওল (মুবারক) অনুযায়ী শায়খ রহমতুল্লাহি আলাইহি-এর আমল পরিলক্ষিত হয় না। অর্থাৎ তিনি নিজে নছীহতের জন্য বুযূর্গীর শর্ত সালিকদের মধ্যে আরোপ করলেও স্বয়ং তিনি সামান্য পরিমাণ খাদ্য গ্রহণ করতেন এবং জরুরত আন্দাজ সতরপুশী করতেন। ‘ফাওয়ায়েদুল ফাওয়াদ’ কিতাবের মধ্যেও তাঁর এই ধরনের হাল বর্ণিত রয়েছে।

‘খাইরুল মাজালিস’ কিতাবের মধ্যে হযরত শায়খ নাছিরুদ্দীন চেরাগে দেহলভী রহমতুল্লাহি আলাইহি হতে বর্ণিত আছে যে, হযরত ছূফী বদনী রহমতুল্লাহি আলাইহি ইবাদতের মধ্যে এতটা যওক, শওক ছিলেন যে, তিনি মসজিদের ভিতর রাত্রি জাগরণ করতেন এবং মেহরাবের নিকটবর্তী নামায আদায় করতেন। আর এটা ছাড়া তাঁর আর কোন কাজ ছিলো না। তাঁর নিকট মানুষের সমাগম সকল সময় লেগে থাকতো।

  একদিন কিছু আলিম সম্প্রদায় তাঁর নিকট আসলেন। তিনি তাদের নিকট প্রশ্ন রাখলেন, “জান্নাতের মধ্যে নামায হবে কিনা?” জবাবে আলিমগণ বললেন, “জান্নাত হচ্ছে প্রতিদানের জায়গা। সেখানে খানা-পিনা, আরাম-আয়েশ করা ব্যতীত অন্য কোন কাজ থাকবে না। ইবাদত-বন্দিগী যা কিছু আছে তা তো দুনিয়ার মধ্যেই করা হয়ে থাকে।”     তিনি একথা শুনে বললেন, ‘যে জান্নাতের মধ্যে নামায নেই, সেই জান্নাতের সাথে আমার কিসের তায়াল্লুক?” এরপর তিনি হিন্দী যবানে একটি বাক্য বললেন, যা বর্ণনাতীত। অতঃপর হযরত চেরাগে দেহলভী রহমতুল্লাহি আলাইহি তাঁর অধিক মর্যাদা, ফযীলতের কথা লিপিবদ্ধ করেছেন।

বস্তুতঃ তাঁর সম্পর্কে এই ধরণের একটি ঘটনাও বর্ণিত আছে যে, “একবার তিনি একটি সুউচ্চ জায়গায় উঠলেন। যেখানে তাঁর সাথে এক (মরদে গইব) অদৃশ্য মানব বা রেজালুল গইবের সাথে সাক্ষাত হলো। তিনি সেই অদৃশ্য মানবকে জিজ্ঞাসা করলেন, “হযরত ছূফী বদনী রহমতুল্লাহি আলাইহি কি ধরণের লোক?” জবাবে অদৃশ্য মানব বললো, “তিনি একজন বুযূর্গ শ্রেণীর মানুষ।” কিন্তু আফসুস! এতটুকু বলার পর তিনি ইস্তিগফারে মশগুল হলেন এবং যবানে আসতাগ্ফিরুল্লাহ্ পড়তে শুরু করলেন। এতটুকু বলার পর হযরত ছূফী বদনী রহমতুল্লাহি আলাইহি বলেন, সেই ‘রেজালুল গইব’ ছূফী ছাহেব রহমতুল্লাহি আলাইহি-এর দিকে অগ্রসর হয়ে ইস্তিগ্ফার পড়তে শুরু করলো। যদি সে ইস্তিগফার না পড়তো তবে আমি সেই উঁচু জায়গা থেকে তাকে এমনভাবে আছাড় দিতাম যাতে তাঁর গর্দান ভেঙ্গে যেতো।”

তাঁর সম্পর্কে আরো বর্ণিত রয়েছে যে, “তিনি যখন যিকরুল্লাহ্তে মশগুল হতেন তখন তাঁর হাত-পা, মাথা সব (শরীর থেকে) আলাদা আলাদা হয়ে যেতো। কেউ প্রশ্ন করলো, “হযরত ছূফী বদনী রহমতুল্লাহি আলাইহি কোন যামানার বুযূর্গ?” হযরত চেরাগে দেহলভী রহমতুল্লাহি আলাইহি ইরশাদ করেন, “তিনি শাইখুল ইসলাম হযরত ফরিদুদ্দীন মাসউদ গন্জে শকর রহমতুল্লাহি আলাইহি-এর যামানা পর্যন্ত ছিলেন।” এটাও লিখিত আছে যে, তাঁর মাযার মুকাদ্দাস-এর উপর কোন পাখি বসতে বা মাযার মুবারকের উপর দিয়ে কেউ কোনদিন পাখি উড়ে যেতে দেখেননি।

বিশ্ব সমাদৃত, হযরত আউলিয়ায়ে কিরাম রহমতুল্লাহি আলাইহিমগণের অনুপম মুবারক চরিত গ্রস্থ আখবারুল আখইয়ার- (৯০)

বিশ্ব সমাদৃত, হযরত আউলিয়া-ই-কিরাম রহমতুল্লাহি আলাইহিমগণের অনুপম মুবারক চরিত গ্রন্থ আখবারুল আখইয়ার-৯১ 

বিশ্ব সমাদৃত, হযরত আউলিয়া-ই-কিরাম রহমতুল্লাহি আলাইহিমগণের অনুপম মুবারক চরিত গ্রন্থ আখবারুল আখইয়ার-৯২  মুলঃ হযরত শায়খ আবউদল হক মুহাদ্দিসে দেহলবী রহমতুল্লাহি আলাইহি,

 বিশ্ব সমাদৃত, হযরত আউলিয়া-ই-কিরাম রহমতুল্লাহি আলাইহিমগণের অনুপম মুবারক চরিত গ্রন্থ আখবারুল আখইয়ার-৮৮ 

 বিশ্ব সমাদৃত, হযরত আউলিয়া-ই-কিরাম রহমতুল্লাহি  আলাইহিমগণের অনুপম মুবারক চরিত গ্রন্থ আখবারুল আখইয়ার- (৯৫)