বিশ্ব সমাদৃত, হযরত আউলিয়া-ই-কিরাম রহমতুল্লাহি আলাইহিমগণের অনুপম মুবারক চরিত গ্রন্থ আখবারুল আখইয়ার-৯২  মুলঃ হযরত শায়খ আবউদল হক মুহাদ্দিসে দেহলবী রহমতুল্লাহি আলাইহি,

সংখ্যা: ১৩২তম সংখ্যা | বিভাগ:

ভাষান্তরঃ মুহম্মদ শামসূল আলম

(পূর্ব প্রকাশিতের পর)

হযরত শায়খ বুরহানুদ্দীন নাসফী রহমতুল্লাহি আলাইহি

হযরত শায়খ বুরহানুদ্দীন নাসাফী রহমতুল্লাহি আলাইহি সম্পর্কে ‘ফাওয়ায়েদুল ফাওয়াদ’-এর মুছান্নিফ বলেন, হযরত শায়খ বুরহানুদ্দীন নাসাফী রহমতুল্লাহি আলাইহি এক দানিশ মান্দ ছাহেবে হাল সম্পন্ন ওলী ছিলেন। যখন তাঁর নিকট কেউ ইল্ম তলবের জন্য আসতেন তখন তিনি প্রার্থিত ব্যক্তির নিকট তিনটি শর্ত জুড়ে দিতেন। অতঃপর তাকে তা’লীম দিতেন।  প্রথম শর্ত হলোঃ দিন-রাত চব্বিশ ঘন্টার মধ্যে (শুধুমাত্র) একবার খাওয়া। শায়খের মতে, ইলমের জন্যও যাতে পেটের মধ্যে কিছু জায়গা খালি থাকে। দ্বিতীয়তঃ ইল্ম চর্চা করতে গিয়ে ঢিলেমী বা ক্বাযা না করা। যদি (অন্তত) একদিনও ক্বাযা বা অনিয়মতান্ত্রিক হয়ে যায় তখন আমি সাথে সাথেই ত্বালিবে ইল্মকে শিক্ষা দান থেকে হাত গুটিয়ে নিবো এবং অন্য কোন দিন আর তাকে শিক্ষা দিবো না। আর তৃতীয়তঃ যখন রাস্তার মধ্যে আমার সাথে কোন শিক্ষার্থীর সাক্ষাৎ হয়ে যাবে তখন সালাম করে সাথে সাথেই সে সেখান থেকে সরে পড়বে এবং পথের মধ্যে আমাকে যেন কোন তা’যীম-সম্মান দেখানো না হয়। হযরত শায়খ বুরহানুদ্দীন নাসাফী রহমতুল্লাহি আলাইহি-এর ওফাত মুবারকের তারিখ আবজাদ অক্ষর ৭৮৬ বিস্মিল্লাহির রহ্মানির রহীম-এর মতো। হযরত শায়খ আলাউদ্দীন উছূলী  বাদায়ূনী রহমতুল্লাহি আলাইহি  হযরত মাওলানা শায়খ আলাউদ্দীন উছূলী বাদায়ূনী রহমতুল্লাহি আলাইহি অত্যন্ত উঁচু দরজার ছাহেবে কাশ্ফ সম্পন্ন ওলী ছিলেন। এছাড়াও তিনি সুলতানুল মাশায়িখ রহমতুল্লাহি আলাইহি-এর জাহিরী ওস্তাদও বটে।  ‘খাইরুল মাজালিস’ কিতাবে বর্ণিত আছে, হযরত নিযামুদ্দীন আউলিয়া রহমতুল্লাহি আলাইহি ফিক্বাহ্র (বিখ্যাত মশহুর) কিতাব ‘কুদুরী’ তাঁর নিকট পড়েছেন। হযরত মাওলানা শায়খ আলাউদ্দীন উছূলী রহমতুল্লাহি আলাইহি বলেন, ‘কুদুরী’ কিতাবের দরসের পরেই হযরত নিযামুদ্দীন আউলিয়া রহমতুল্লাহি আলাইহি তিন/চার গজের কাপড় নিয়ে পাগড়ী বাঁধা শুরু করেন। এর আগে তাঁর পাগড়ী বাঁধার নিয়মটা পুরোপুরি জানা ছিল না। তাঁর এই পাগড়ী বাঁধার ঘটনাটি হযরত খাজা আলী রহমতুল্লাহি আলাইহি-এর জীবনী অধ্যায়ে পূর্বেই লিখিত হয়েছে।     ‘ফাওয়ায়েদুল ফাওয়াদ’ কিতাবে বর্ণিত রয়েছে, হযরত আলাউদ্দীন উছূলী রহমতুল্লাহি আলাইহি ছোট বেলায় বাদায়ূন শহরের কোন এক গলি দিয়ে যাচ্ছিলেন। তখন হযরত শায়খ জালালুদ্দীন তাবরিযী রহমতুল্লাহি আলাইহি তাঁকে দেখে নিজের কাছে ডেকে আনলেন। ঐ সময় হযরত তাবরিযী রহমতুল্লাহি আলাইহি-এর পবিত্র শরীর মুবারকে যে কোর্তা মুবারক ছিল তা তিনি খুলে ফেললেন এবং হযরত মাওলানা শায়খ রহমতুল্লাহি আলাইহিকে তা পরিয়ে দিলেন। তাঁর মধ্যে যত রকম উন্নত ও উত্তম চারিত্রিক গুণাবলী বিদ্যমান ছিলো তা ঐ পবিত্র বরকতময় লিবাসের কারণেই ছিল।’ উক্ত কিতাবে এটাও রয়েছে যে, হযরত মাওলানা শায়খ রহমতুল্লাহি আলাইহি একটি দাসী খরিদ করে ঘরে নিয়ে আসলেন। তখন দেখতে পেলেন, রোনাজারী আর কান্নাকাটি ব্যতীত যেন দাসীটির আর কোন কাজই নেই।    তিনি দাসীকে জিজ্ঞাসা করলেন, তুমি কেন কাঁদছো? জবাবে দাসীটি বললো, ‘আমি আমার সন্তানদের ছেড়ে এসেছি।’ তখন মাওলানা ছাহেব দাসীটিকে বাইরে নিয়ে আসলেন এবং রাস্তার ঐ পার্শ্বে ছেড়ে আসলেন যেখানে পশুরা চড়ছিলো। ‘ফাওয়ায়েদুল ফাওয়াদ’ কিতাবের লিখক বলেন, হযরত নিযামুদ্দীন আউলিয়া রহমতুল্লাহি আলাইহি যখন এই ঘটনার শেষ শব্দ বা বাক্যটি উচ্চারণ করলেন তখন তাঁর বরকতময় চক্ষু যুগলে পানি এসে গেলো এবং বলতে লাগলেন, যদিও জাহিরী আলিমগণ এই     সমস্ত ঘটনার মুখালিফ বা এটা তাদের মেনে নেয়া বা বুঝার বাইরে, তথাপি তাদের (এতটুকু) ইয়াক্বীন রাখা জরুরী যে, হযরত মাওলানা ছাহেব রহমতুল্লাহি আলাইহি কত বড় কাজ কিভাবে আঞ্জাম দিয়েছেন! হযরত মাওলানা, শায়খ আলাউদ্দীন উছূলী বাদায়ূনী রহমতুল্লাহি আলাইহি-এর কবর শরীফ বাদায়ূনে। লোকজন তাঁর কবর শরীফ যিয়ারত করে রূহানী ফয়েজ, বরকত হাছিল করে থাকে।

বিশ্ব সমাদৃত, হযরত আউলিয়ায়ে কিরাম রহমতুল্লাহি আলাইহিমগণের অনুপম মুবারক চরিত গ্রস্থ আখবারুল আখইয়ার- (৯০)

বিশ্ব সমাদৃত, হযরত আউলিয়া-ই-কিরাম রহমতুল্লাহি আলাইহিমগণের অনুপম মুবারক চরিত গ্রন্থ আখবারুল আখইয়ার-৯১ 

 বিশ্ব সমাদৃত, হযরত আউলিয়া-ই-কিরাম রহমতুল্লাহি আলাইহিমগণের অনুপম মুবারক চরিত গ্রন্থ আখবারুল আখইয়ার-৮৮ 

বিশ্ব সমাদৃত, হযরত আউলিয়া-ই-কিরাম রহমতুল্লাহি আলাইহিমগণের অনুপম মুবারক চরিত গ্রন্থ আখবারুল আখইয়ার-৯৪ 

 বিশ্ব সমাদৃত, হযরত আউলিয়া-ই-কিরাম রহমতুল্লাহি  আলাইহিমগণের অনুপম মুবারক চরিত গ্রন্থ আখবারুল আখইয়ার- (৯৫)