বিশ্ব সমাদৃত, হযরত আউলিয়ায়ে কিরাম রহমতুল্লাহি আলাইহিমগণ উনাদের অনুপম মুবারক চরিত গ্রন্থ আখবারুল আখইয়ার-১০৮

সংখ্যা: ১৪৮তম সংখ্যা | বিভাগ:

পূর্ব প্রকাশিতের পর

হযরত শায়খ নূরুদ্দীন রহমতুল্লাহি আলাইহি

হযরত শায়খ নূরুদ্দীন রহমতুল্লাহি আলাইহি হযরত শায়খ কুতুবুদ্দীন রহমতুল্লাহি আলাইহি-এর ফরজন্দ (সন্তান) ছিলেন।

বর্ণিত আছে যে, যখন বাদশাহ সুলতান মুহম্মদ তুঘলক শায়খ মুনাওওয়ার রহমতুল্লাহি আলাইহিকে স্বীয় রাজ দরবারে আহবান করলেন তখন হযরত শায়খ নূরুদ্দীন রহমতুল্লাহি আলাইহিও পিছনে পিছনে তথায় গেলেন। তখন সময়টা তাঁদের জন্য খুবই দুঃসময় ছিল। সেখানকার আক্রমনাত্বক ও ভয়ঙ্কর অবস্থা দেখেই তিনি ভয় পেয়ে বেহুশ হয়ে পরলেন।  যখন হযরত শায়খ কুতুবুদ্দীন মুনাওওয়ার রহমতুল্লাহি আলাইহি তাঁর বেহুশী অবস্থার কথা জানতে পারলেন তখন তিনি বললেন, নূরুদ্দীন! শুনো সম্মান, মহত্ত্ব, বরত্ত্ব খাছ করে আল্লাহ পাক-এরই জন্য (কোন রাজা বাদশাহ্র জন্য নয় সুতরাং ভয়ের কিছু নেই)। পিতার একথা শ্রবণ করে হযরত শায়খ নূরুদ্দীন রহমতুল্লাহি আলাইহি বলতে লাগলেন, “সম্মানিত বুযুর্গ পিতার এ মহান বাণী শ্রবন করে আমার অন্তর এমন মজবুত হয়েছে যে, আমার অন্তর থেকে রাজদরবারের সকল ভয় তৎক্ষনাৎ দূরীভূত হয়ে গিয়েছে।” হযরত শায়খ নুরুদ্দীন রহমতুল্লাহি আলাইহি-এর মাযার শরীফও স্বীয় পূর্ব পুরুষদের মাযার শরীফের কাছে অবস্থিত।

হযরত শায়খ হুস্সামুদ্দীন মুলতানী

রহমতুল্লাহি আলাইহি

 

হযরত শায়খ হুস্সামুদ্দীন রহমতুল্লাহি আলাইহি হযরত খাঁজা নিজামুদ্দীন আউলিয়া রহমতুল্লাহি আলাইহি-এর অন্যতম খলীফা ছিলেন। তিনি পরিপূর্ণভাবেই পূর্ববর্তী বুযুর্গানের দীনের তর্য তরীক্বা অনুযায়ী জীবন যাপন করতেন। যুহুদ ও দরবেশী, তাক্বওয়া, পরহিযগারীতে স্বীয় যামানায় শীর্ষস্থানীয় ছিলেন।

তিনি বিবাহিত ছিলেন। তাঁর সম্পর্কে হযরত শায়খ নিজামুদ্দীন আউলিয়া রহমতুল্লাহি আলাইহি ইরশাদ করেন যে, দিল্লী শহর হযরত শায়খ হুস্সামুদ্দীন রহমতুল্লাহি আলাইহি-এর নেতৃত্বাধীনেই পরিচালিত। বর্ণিত আছে যে, একবার তিনি জায়নামায কাধে করে কোথাও যাচ্ছিলেন, এমতাবস্থায় তাঁর জায়নামায কাধ থেকে পরে গেলো। কিন্তু তিনি তা টের পেলেন না। কিছুদূর চলে যাওয়ার পর জনৈক ব্যক্তি পিছন থেকে শায়খ, শায়খ, বলে অনেক আওয়াজ করতে লাগলো। তিনি নিজেকে শায়খ বলে মনে করতেননা। যার কারণে তিনি লোকটির দিকে কোন কর্ণপাত না করে চলতেই লাগলেন। লোকটি দ্রুত তাঁর সামনে গিয়ে আরয করলো, আমি আপনাকে জায়নামায নেয়ার জন্য বহুবার ডাকাডাকি করলাম কিন্তু আপনি কোন ভ্রুক্ষেপই করলেননা।

তিনি জবাবে বললেন, ভাই আমি শায়খ নই বরং আমি একজন সাধারণ ফকির। মানব সমাজে একথা প্রসিদ্ধ যে তিনি অধিকাংশ সময়ই ইলমে শরীয়তের কিতাব হিদায়া ও বযুদী এবং ইলমে তাছাউফের কিতাব কুওয়াতুল কুলুব ও ইহ্ইয়াউ উলুমিদ্দীন কিতাব মুতয়ালা করতেন।

বর্ণিত হয়েছে যে, হযরত শায়খ হুস্সামুদ্দীন রহমতুল্লাহি আলাইহি কা’বা শরীফ যিয়ারত (হজ্জ পালন) করে দিল্লীতে ফিরে আসার পর হযরত শায়খ নিজামুদ্দীন আউলিয়া রহমতুল্লাহি আলাইহি বললেন, যে ব্যক্তি হজ্জ পালন করে সে যেন রওজা মুবারক যিয়ারতের জন্য আলাদা নিয়ত করে নেয়। হজ্জ পালনের নিয়ত দ্বারা রওজা মুবারক জিয়ারত করা ঠিক নয়। স্বীয় শায়খের এ মহান বাণী শ্রবনান্তে তিনি পূনরায় রওজা মুবারক জিয়ারতের নিয়ত করে নিলেন।

“খায়রুল মাজালিস” কিতাবে শায়খ নাসিরুদ্দীন চেরাগে দেহলভী রহমতুল্লাহি আলাইহি কর্তৃক বর্ণিত আছে, একদা তিনি ও হযরত মাওলানা হুস্সামুদ্দীন মুলতানী রহমতুল্লাহি আলাইহি এবং মাওলানা শরফুদ্দীন রহমতুল্লাহি আলাইহি এই তিনজন বুযুর্গ হযরত খাঁজা নিজামুদ্দীন আউলিয়া রহমতুল্লাহি আলাইহি-এর দরবার শরীফে হাজির হলেন। তখন খাঁজা নিজামুদ্দীন আউলিয়া রহমতুল্লাহি আলাইহি মাওলানা হুস্সামুদ্দীন রহমতুল্লাহি আলাইহিকে লক্ষ্য করে বললেন, যে ব্যক্তি দিনের বেলা রোযা রাখে এবং সারারাত ইবাদত-বন্দিগীতে কাটিয়ে দেয় তবে সে বিধবা নারীদের ন্যায় মর্যাদা লাভ করে।

যদি আল্লাহ পাক-এর কোন মাখলুকের উপকারের কাজের মধ্যে ব্যস্ত থেকেও ইবাদত-বন্দিগী করা হয় তাহলে তাকেও এক প্রকার যিকরুল্লাহ বা ইবাদত বলা হয়। যদিও সে কোন কাজে মশগুল। (অসমাপ্ত)

বিশ্ব সমাদৃত, হযরত আউলিয়া-ই-কিরাম রহমতুল্লাহি  আলাইহিমগণের অনুপম মুবারক চরিত গ্রন্থ আখবারুল আখইয়ার- (৯৯)

বিশ্ব সমাদৃত, হযরত আউলিয়া-ই-কিরাম রহমতুল্লাহি  আলাইহিমগণের অনুপম মুবারক চরিত গ্রন্থ আখবারুল আখইয়ার-১০১

বিশ্ব সমাদৃত, হযরত আউলিয়া-ই-কিরাম রহমতুল্লাহি  আলাইহিমগণের অনুপম মুবারক চরিত গ্রন্থ আখবারুল আখইয়ার-১০

বিশ্ব সমাদৃত, হযরত আউলিয়া-ই-কিরাম রহমতুল্লাহি  আলাইহিমগণের অনুপম মুবারক চরিত গ্রন্থ আখবারুল আখইয়ার-১০৩

বিশ্ব সমাদৃত, হযরত আউলিয়ায়ে কিরাম রহমতুল্লাহি আলাইহিমগণ উনাদের অনুপম মুবারক চরিত গ্রন্থ আখবারুল আখইয়ার-১০৪