বিশ্ব সমাদৃত, হযরত আউলিয়ায়ে কিরাম রহমতুল্লাহি আলাইহিমগণ উনাদের অনুপম মুবারক চরিত গ্রন্থ আখবারুল আখইয়ার-১০৭

সংখ্যা: ১৪৭তম সংখ্যা | বিভাগ:

হযরত শায়খ কুতুবুদ্দীন মুনাওওয়ার

রহমতুল্লাহি আলাইহি

(ধারাবাহিক)

হযরত শায়খ রহমতুল্লাহি আলাইহি সুলতান মুহম্মদ তুঘলকের কাছে যাওয়ার সময় বারবাক্বী বংশীয় প্রতিনিধি ফিরোজ শাহ্-এর কাছে বললেন, আমি দরবেশ ও ফকির মানুষ, শাহী মজলিসে যাওয়ার এবং তাদের সাথে কথোপকথন করার তর্য-তরীক্বা জানিনা। তখন ফিরোজ শাহ্ তাঁকে বললেন, আপনার বিরুদ্ধে মানুষ বাদশাহকে অনেক কিছু এলোমেলো কথা বলেছে। সুতরাং আপনি খুব ভদ্র, বিনয়ী স্বভাবের প্রতি বিশেষ সজাগ দৃষ্টি রাখবেন। বাদশাহ্ যখন জানতে পারলেন যে, হযরত শায়খ রহমতুল্লাহি আলাইহি এসেছেন তখন তিনি (শায়খ রহমতুল্লাহি আলাইহি-এর রোবের কারণে) বসা থেকে দাঁড়িয়ে গেলেন। বাদশাহ্ স্বীয় কামান (পিস্তল) হাতে নিয়ে গুলি ছুরছিলো কিন্তু হযরত শায়খ রহমতুল্লাহি আলাইহিকে দেখে বাদশাহ্ ঘাবড়িয়ে গেলো এবং তা’যীম-তাকরীম করার লক্ষ্যে হযরত শায়খ রহমতুল্লাহি আলাইহি-এর সামনে এগিয়ে এসে মুসাফাহা করলো। কিন্তু হযরত শায়খ কুতুবুদ্দীন মুনাওওয়ার রহমতুল্লাহি আলাইহি বাদশাহ্র হাত এমনভাবে মজবুত করে ধরলেন, যা সে ছুটাতে পারলো না। যদিও এই জালিমের তলোয়ারের আঘাতে অনেক উলামায়ে কিরামগণই নির্যাতিত হয়েছেন। কিন্তু হযরত শায়খ রহমতুল্লাহি আলাইহি-এর রো’বের কারণে যে, বাদশাহ্ তাঁর সামনে আসার সাথে সাথেই নিরূপায় হয়ে শেষ পর্যন্ত একথা বললো যে, হযরত! আমরা আপনার এলাকায় এসেছি কিন্তু আপনি আমাদের সংশোধনের জন্যও আসেননি অথবা আমাদেরকে আপনার সোহবত অর্জনেরও সুযোগ দেননি। হযরত শায়খ রহমতুল্লাহি আলাইহি একথা শ্রবনান্তে বললেন, প্রথমত: আপনি হাঁসী এলাকা দেখতে এসেছেন। তারপরে সাক্ষাতের কথা। যার ফলশ্রুতিতে এ ফকির আপনার কাছে এসেছেন। যদিও এ ফকিরের জানা নেই যে, কিভাবে বাদশাহ্র দরবারে আসতে হয় ও কথাবার্তা বলতে হয়। এ ফকির তথায় অবস্থান করে বাদশাহ্ ও অন্যান্য সকল মুসলমানদের ইসলাহ বা সংশোধনের দোয়ায় মশগুল থাকার কারণেই আমি মাজুর হয়ে এখানে এসেছি। হযরত শায়খ রহমতুল্লাহি আলাইহি-এর এসকল কথা বাদশাহ্র মধ্যে খুবই তাছির করলো যার কারণে বাদশাহ্ খুশী হয়ে বারবাক্বী সম্প্রদায়ের প্রতিনিধি ফিরোজ শাহ্কে নির্দেশ দিলেন যে, হযরত শায়খ রহমতুল্লাহি আলাইহি যা কিছুই চান তা সবই পুরো করে দাও। এটা শ্রবণ করে হযরত শায়খ রহমতুল্লাহি আলাইহি বললেন, আমি এ সকল সম্পদের প্রত্যাশী নই বরং আমার চাহিদা হচ্ছে আল্লাহওয়ালা হওয়া এবং পূর্ব-পুরুষদের ছিলছিলার উপরে ইস্তিকামাত থাকা।  তখন বাদশাহ্ ফিরোজ শাহ্ ও জিয়া বিরুনীকে হযরত শায়খ রহমতুল্লাহি আলাইহি-এর খিদমতে একলক্ষ টাকা পেশ করার জন্য নির্দেশ দিলেন। এটা শুনে হযরত শায়খ রহমতুল্লাহি আলাইহি বললেন ‘নাউযুবিল্লাহ।’ এ ফকির কস্মিনকালে উহা গ্রহণ করবে না। ফিরোজ শাহ্ ও জিয়া বিরুনী এটা বাদশাহ্কে জানালে বাদশাহ আরো পঁচিশ হাজার টাকা বাড়িয়ে দিতে আদেশ করলেন। (বাদশাহ্ ধারনা করলেন, হযরত শায়খ রহমতুল্লাহি আলাইহি উহা কম মনে করে তা গ্রহণে অস্বীকৃতি জানিয়েছেন।) হযরত শায়খ মুনাওওয়ার রহমতুল্লাহি আলাইহি এটাও গ্রহণ করেননি। বরং তিনি বললেন, সুবহানাল্লাহ! এ ফকিরের এত টাকার দরকার নেই বরং দু’সের খেজুর ও এক ছটাক ঘিই যথেষ্ট। ফিরোজ শাহ্ ও জিয়া বিরুনী বললেন, রাজ দরবার থেকে এর চেয়ে কম আমরা কাউকে দান করিনা।  পরিশেষে হযরত শায়খ রহমতুল্লাহি আলাইহি জরুরত আন্দাজ কিছু হাদিয়া গ্রহণ করলেন। যার কিছু স্বীয় বুযূর্গদের মাজার শরীফে ইসালে ছওয়াবের জন্য খরচ করেছেন এবং বাকি অংশ অন্যান্য আল্লাহওয়ালা লোকদেরকে বণ্টন করে দিয়েছেন। এর কিছুদিন পরেই হযরত শায়খ কুতুবুদ্দীন মুনাওওয়ার রহমতুল্লাহি আলাইহি হাঁসী এলাকার দিকে রওয়ানা হলেন। হযরত শায়খ রহমতুল্লাহি আলাইহি-এর মাজার শরীফ তাঁর পরদাদার কবরস্থানে অবস্থিত। (অসমাপ্ত)

বিশ্ব সমাদৃত, হযরত আউলিয়া-ই-কিরাম রহমতুল্লাহি  আলাইহিমগণের অনুপম মুবারক চরিত গ্রন্থ আখবারুল আখইয়ার- (৯৯)

বিশ্ব সমাদৃত, হযরত আউলিয়া-ই-কিরাম রহমতুল্লাহি  আলাইহিমগণের অনুপম মুবারক চরিত গ্রন্থ আখবারুল আখইয়ার-১০১

বিশ্ব সমাদৃত, হযরত আউলিয়া-ই-কিরাম রহমতুল্লাহি  আলাইহিমগণের অনুপম মুবারক চরিত গ্রন্থ আখবারুল আখইয়ার-১০

বিশ্ব সমাদৃত, হযরত আউলিয়া-ই-কিরাম রহমতুল্লাহি  আলাইহিমগণের অনুপম মুবারক চরিত গ্রন্থ আখবারুল আখইয়ার-১০৩

বিশ্ব সমাদৃত, হযরত আউলিয়ায়ে কিরাম রহমতুল্লাহি আলাইহিমগণ উনাদের অনুপম মুবারক চরিত গ্রন্থ আখবারুল আখইয়ার-১০৪