[শয়তান যে মানুষকে নেক ছূরতে ধোকা দেয়, এ বিষয়টি ভালভাবে অনুধাবন করেছিল শয়তানের অনুচর ইহুদী এবং খ্রীষ্টানরা। মুসলমানদের সোনালী যুগ এসেছিল শুধু ইসলামের পরিপূর্ণ অনুসরণের ফলে। শয়তানের চর ইহুদী-খ্রীষ্টানরা বুঝতে পেরেছিল মুসলমানদের মধ্যে বিভেদ, অনৈক্য, সংঘাত সৃষ্টি করতে পারলেই ইসলামের জাগরণ এবং বিশ্বশক্তি হিসেবে মুসলমানদের উত্থান ঠেকানো যাবে। আর তা করতে হবে ইসলামের মধ্যে ইসলামের নামে নতুন মতবাদ প্রবেশ করিয়ে। শুরু হয় দীর্ঘ মেয়াদী পরিকল্পনা; যার মূলে থাকে খ্রীষ্টীয় বৃটিশ সাম্রাজ্যবাদ। জন্ম হয় ওহাবী মতবাদের। ওহাবী মতবাদ সৃষ্টির মূলে থাকে একজন বৃটিশ গুপ্তচর হেমপার। মিসর, ইরাক, ইরান, হেজাজ ও তুরস্কে তার গোয়েন্দা তৎপরতা চালায় মুসলমানদের বিভ্রান্ত করার জন্য। “Confession of a British Spy and British enmity against Islam” গ্রন্থ হচ্ছে হেমপারের স্বীকারোক্তি মূলক রচনা। মূল গ্রন্থ থেকে ধারাবাহিকভাবে তার অনুবাদ প্রকাশ করা হচ্ছে। (ইনশাআল্লাহ)]
(ধারাবাহিক)
সচিব বললেন যে, আমিও সফলতা অর্জন করেছি তবে তিনি আশা করেছিলেন আমি প্রথম হব। তিনি বলতে লাগলেন, শোন হেমপার, পরবর্তী মিশনে তোমাকে দু’টো কাজ করতে হবে। (১) মুসলিমদের দূর্বল জায়গাগুলো খুজে বের করতে হবে। যার মাধ্যমে আমরা তাদের দেহে প্রবেশ করে তাদের শরীরের জোড়াগুলো আলাদা করে ফেলবো। নিশ্চয়ই, শত্রুকে আঘাত করার এটাই পথ।
(২) যেই মুহূর্তে এসব দূর্বল অবস্থানগুলো সনাক্ত করতে পারবে এবং যেভাবে বললাম সেভাবে কাজ করতে পারবে (অন্যভাবে বলতে গেলে মুসলমানদের মধ্যে অনৈক্যের বীজ বপন করে তাদের পরস্পরের মুখোমুখি দাঁড় করিয়ে দিতে পারবে), তখন তুমি হবে সবচেয়ে সফল এজেন্ট এবং মন্ত্রণালয় থেকে মেডেল অর্জন করবে। আমি ছয়মাস লন্ডনে অবস্থান করেছিলাম এবং সে সময়ে আমার চাচাতো বোন ‘মারিয়া ইসভয়’কে বিয়ে করি। তখন আমার রয়স ছিল ২২ এবং মারিয়ার ২৩ বছর। মারিয়া ইসভয় ছিল অত্যন্ত সুন্দরী। তবে তার বুদ্ধ বিবেচনা গড়পড়তা এবং সাধারণ সংস্কৃতিমনা মহিলা। তার সঙ্গে যতটুকু সময় কাটিয়েছি তা ছিল আমার জীবনের সবচেয়ে সুখময় এবং মধুর সময়। আমার স্ত্রী যখন গর্ভবতী এবং আমরা একজন নতুন অতিথির অপেক্ষায় তখনই বার্তা পেলাম যে আমাকে ইরাকের উদ্দেশ্য যাত্রা করতে হবে। আমাদের সন্তান আসার সময়ে এ রকম বার্তা পেয়ে মনটাই খারাপ হয়ে যায়। তবে ছেলের বাবা কিংবা কারো স্বামী হবার যে আবেগ আমার ছিল তার চেয়েও আমার কাছে আমার নিজের দেশ এবং বিশেষত আমার সহকর্মীদের মধ্যে প্রথম হবার গৌরবের বিষয়টি আমার কাছে বেশী গুরুত্ব পায়। ফলে বিনা দ্বিধায় আমি এই দায়িত্বভার গ্রহণ করি। আমার স্ত্রী চেয়েছিল সন্তান ভুমিষ্ঠ না হওয়া পর্যন্ত যেন আমি মিশন স্থগিত রাখি। তথাপি আমি তার কথাকে উপেক্ষা করি। আমরা যখন একে অপরের কাছ থেকে বিদায় নিচ্ছিলাম, দু’জনেই ফুপিয়ে কাঁদছিলাম। আমার স্ত্রী বললো, আমাকে চিঠি লেখা বন্ধ করোনা। আমি তোমাকে আমাদের নতুন সংসার সম্পর্কে লিখবো যা সোনার মত দামী। তার সে সকল কথা আমার হৃদয়ে ঝড় তুলে। আমি প্রায় বাতিল করে দিতে চাচ্ছিলাম আমার সফর। তবু আমি আমার আবেগকে নিয়ন্ত্রণে নিয়ে আসি এবং বিদায় জানিয়ে চুড়ান্ত নির্দেশ নিতে মন্ত্রনালয়ের দিকে যাত্রা করি। ছয় মাস পরে আমি ইরাকের বসরা নগরীতে পৌছি। এই নগরীর অধিবাসীদের আংশিক সুন্নী এবং আংশিক শিয়া। বসরায় ছিল আরবী, পারসী এবং স্বল্প সংখ্যক খ্রীষ্টান গোত্রের বসবাস। জীবনে আমি তখন পারসিয়ান লোকের দেখা পাই।
‘ইসলামের দৃষ্টিতে প্রাণীর ছবি তোলা, রাখা, আঁকা, দেখা হারাম’ মুজাদ্দিদে আ’যমের অনবদ্য তাজদীদ