সব প্রশংসা মহান আল্লাহ পাক উনার জন্য। সাইয়্যিদুল মুরসালীন, ইমামুল মুরসালীন, খাতামুন নাবিয়্যীন, নূরে মুজাসসাম, হাবীবুল্লাহ হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার প্রতি অফুরন্ত দুরূদ ও সালাম।
æময়মনসিংহের ফুলবাড়ীয়া উপজেলার ১১নং রাধাকানাই ইউনিয়নের রাধাকানাই উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক মো. আ. কুদ্দুছ মাস্টার বোরকা পরার কারণে তার স্কুলের ৯ম শ্রেণীর এক ছাত্রীকে কানে ধরে মাঠ চক্কর দেয়াসহ কান ধরে উঠবস করিয়েছে বলে খবর পাওয়া গেছে। গত ১ এপ্রিল দুপুর ১টার দিকে এ ঘটনাটি ঘটেছে বলে বিলম্বে প্রাপ্ত খবরে জানা গেছে। স্থানীয় সাংবাদিকরা ঘটনাটি অনুসন্ধান করতে গিয়ে স্থানীয়দের কাছে সত্যতা পাওয়া গেছে। তবে অভিযোগ করার কেউ সাহস পাচ্ছে না। রাধাকানাই ইউপি চেয়ারম্যান মো. রেজাউল করিম বলেন, তিনি ঘটনাটি একজন লোকের মাধ্যমে শুনেছেন। কিন্ত স্কুলের প্রধান শিক্ষক ও ম্যানেজিং কমিটির কেউ না আসায় তিনি আমলে নেননি। এ প্রসঙ্গে স্কুল ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি শিমুল তরফদার এর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, এরকম ঘটনা আমি শুনিনি, তবে গত বুধবার আমি স্কুলে গিয়েছিলাম এবং ওই অভিভাবককে ডেকে জিজ্ঞাসাবাদ করি, সে তো কোন কিছু বলল না। এ ব্যাপারে সহকারী প্রধান শিক্ষক মো. আ. কুদ্দুছ মাস্টার বলেন, ঘটনাটি সঠিক নয় এবং অভিভাবকের কোন অভিযোগ নেই। একাধিক সূত্রে প্রকাশ, এই নিন্দনীয় ঘটনাটি প্রচার হওয়ার সাথে সাথে প্রধান শিক্ষক আবু রায়হান তরফদার ও সহকারী প্রধান শিক্ষক মো. আ. কুদ্দুছ মাস্টার অত্যন্ত সুকৌশলে ঘটনাটি মীমাংসা করতে সক্ষম হয়েছেন বলে জানা গেছে।” গত ৬ এপ্রিল ‘দৈনিক অর্থনীতি’ নামক একটি দৈনিকে এ খবর পত্রস্থ হয়েছে।
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, প্রবাদ রয়েছে, ‘যা কিছু রটে, কিছু হলেও তা ঘটে।’ বলার অপেক্ষা রাখেনা ইদানীংকালে অতি উৎসাহী কিছু শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এবং শিক্ষকের মাঝে বোরকা বিরোধী মনোভাব অবাঞ্ছিতভাবে বেশ পুষ্ট হয়েছে। বোরকার বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নিয়ে সমালোচিত হতে পেরে তারা তাদের কাঙ্খিত জাতে উঠতে পেরেছে বলে আত্মতৃপ্তির ঢেকুর তুলছে। ধিক তাদের এ হীন মনোবৃত্তির! লক্ষ-কোটি ধিক তাদের এ নীচ মানসিকতার!
তারা হারামখোর। তারা কাপুরুষ। তারা নির্লজ্জ। তারা বেহায়া। কারণ পবিত্র কুরআন শরীফ-এ মহান আল্লাহ পাক তিনি ইরশাদ করেন, æতোমরা যদি মহান আল্লাহ পাক উনার আদেশ-নিষেধ না মান তবে তোমরা মহান আল্লাহ পাক উনার এই পৃথিবী ছেড়ে অন্যত্র চলে যাও।” কিন্তু মহান আল্লাহ পাক উনার এ পৃথিবী ছেড়ে অন্য কোথাও তাদের যাওয়ার জায়গা নেই।
কাজেই যারা মহান আল্লাহ পাক উনার বিধান পর্দার বিরোধিতা করবে তাদের উচিত মহান আল্লাহ পাক উনার এ পৃথিবীতে না থাকা এবং মহান আল্লাহ পাক উনার রিযিক না খাওয়া।
মহান আল্লাহ পাক তিনি এতদ্বপ্রেক্ষিতে ইরশাদ করেন, æযদি তোমরা পার তাহলে একটি শস্যদানা তৈরি করে দেখাও। ……. কোন কিছুতে প্রাণ দাও। …… কুরআন শরীফ-এর অনুরূপ একটা আয়াত শরীফ আন।” সুবহানাল্লাহ!
বলাবাহুল্য কাফির-মুশরিকরা এযাবৎ বহু চেষ্টা করেও কিছু করতে পারে নাই এবং ভবিষ্যতেও তারা পারবেনা। তাদের জন্য পরকালে অপেক্ষা করছে ভয়ঙ্কর আযাব। প্রজ্বলিত অগ্নি। নিকৃষ্ট আবাসস্থল। যেখানে তাদের মেহমানদারী করানো হবে। নাঊযুবিল্লাহ!
বলাবাহুল্য, আজ মুসলমানদের ভেতরে পরকালের অনুভূতি বিশেষভাবে হ্রাস পেয়েছে। এটা মূলত ষড়যন্ত্রমূলকভাবে করানো হয়েছে। মুসলমানদেরকে তাদের অজান্তে, বিভিন্ন কৌশলে, বিভিন্ন নামে, ফাংশন, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ইত্যাদির দোহাই দিয়ে অবাধ বেপর্দা, বেহায়া, বেশরায় প্রবাহিত করা হয়েছে। এতে ধীরে ধীরে অবলুপ্ত হয়েছে তাদের ঈমানী অনুভূতি, পর্দার চেতনা ও মানসিকতা।
কিন্তু মুসলমানের ঈমান এখনও মরে নাই। মুসলমানের ঈমান এখনো পুরো নিঃশোষিত হয় নাই। এখনও কোন মুসলমান বিপদে পড়লে সর্বাগ্রে ‘মহান আল্লাহ পাক আপনি রক্ষা করুন’ বলে করুন আর্তনাদ জানায়। মুসলমান এখনও জানাযা আশা করে। তার শেষ পরিণতি হয় দাফন-কাফনে। পুরো শরীয়তী কায়দায়। জন্মটাও তাই। আযান-ইক্বামতে, মধু খাওয়ায়। কিন্তু মাঝখানের জীবনটাই মুসলমান কাফিরদের ষড়যন্ত্রে অবহেলায় অনিয়মে কাটায়।
এক্ষেত্রে সমঝদার মুসলমানদের এগিয়ে আসতে হবে। পর্দানশীন মহিলাদের আরো বেশি করে পর্দা পালন করতে হবে। পর্দার ফযীলত ও মাহাত্ম্য এবং পরকালের পুরস্কার আরো বেশি করে প্রচার করতে হবে। ইসলামী বিধিবিধান বেশি করে প্রচার করতে হবে।
অফিস-আদালত, স্কুল-কলেজে, মাঠে-ঘাটে সর্বত্র সব হারামকে হারাম বলে প্রচার করতে হবে। হারাম থেকে ফিরে আসার প্রচারণা চালাতে হবে। তাতে ঈমান যাদের নিভু নিভু তাদের মাঝে প্রাণ সঞ্চার হবে। তারা রূহানিয়ত ফিরে পাবেন। বেপর্দার বিরুদ্ধে কথা বলার কুওওয়াত পাবেন। এই কুওওয়াতে বলীয়ান হতে হবে দেশের ৯৭ ভাগ মুসলমানকে।
৯৭ ভাগ মুসলমান জনগোষ্ঠী অধ্যুষিত এদেশে ইসলামই থাকবে। রাষ্ট্রধর্ম ইসলামের এদেশে পর্দাই থাকবে। পর্দার বিরোধিতাকারীরা এখানে রাষ্ট্রদ্রোহী ও ইসলামদ্রোহী হিসেবে চিহ্নিত হবে এবং চরম-পরম শাস্তির সম্মুখীন হবে। এ আবহ; আহামরি বা অতিরিক্ত কিছু নয়। বরং ৯৭ ভাগ মুসলমান জনগোষ্ঠীর দেশের স্বাভাবিক পরিণতি। ইহার অমান্য যারা করবে তাদের পরিণতি ভাল হবার নয়। এটাই শেষ কথা এবং নিতান্ত হক্ব কথা।
মূলতঃ এসব অনুভূতি ও দায়িত্ববোধ আসে ইসলামী অনুভূতি ও প্রজ্ঞা থেকে। আর তার জন্য চাই নেক ছোহবত তথা ফয়েজ তাওয়াজ্জুহ। যামানার ইমাম ও মুজতাহিদ, যামানার মুজাদ্দিদ, মুজাদ্দিদে আ’যম আলাইহিস সালাম উনার নেক ছোহবতেই সে মহান ও অমূল্য নিয়ামত হাছিল সম্ভব। মহান আল্লাহ পাক তিনি আমাদের তা নছীব করুন। (আমীন)
-মুহম্মদ লিসানুল্লাহ
ব্রিটিশ গুপ্তচরের স্বীকারোক্তি ও ওহাবী মতবাদের নেপথ্যে ব্রিটিশ ভূমিকা-৫০