ভাষান্তরঃ আল্লামা মুহম্মদ রুহুল হাসান
[শয়তান যে মানুষকে নেক ছূরতে ধোকা দেয়, এ বিষয়টি ভালভাবে অনুধাবন করেছিল শয়তানের অনুচর ইহুদী এবং খ্রিস্টানরা। মুসলমানদের সোনালী যুগ এসেছিল শুধু ইসলামের পরিপূর্ণ অনুসরণের ফলে। শয়তানের চর ইহুদী-খ্রিস্টানরা বুঝতে পেরেছিল মুসলমানদের মধ্যে বিভেদ, অনৈক্য, সংঘাত সৃষ্টি করতে পারলেই ইসলামের জাগরণ এবং বিশ্বশক্তি হিসেবে মুসলমানদের উত্থান ঠেকানো যাবে। আর তা করতে হবে ইসলামের মধ্যে ইসলামের নামে নতুন মতবাদ প্রবেশ করিয়ে। শুরু হয় দীর্ঘ মেয়াদী পরিকল্পনা; যার মূলে থাকে খ্রিস্টীয় ব্রিটিশ সাম্রাজ্যবাদ। জন্ম হয় ওহাবী মতবাদের। ওহাবী মতবাদ সৃষ্টির মূলে থাকে একজন ব্রিটিশ গুপ্তচর হেমপার। মিসর, ইরাক, ইরান, হেজাজ ও তুরস্কে তার গোয়েন্দা তৎপরতা চালায় মুসলমানদের বিভ্রান্ত করার জন্য। *** গ্রন্থ হচ্ছে হেমপারের স্বীকারোক্তি মূলক রচনা। মূল গ্রন্থ থেকে ধারাবাহিকভাবে তার অনুবাদ প্রকাশ করা হচ্ছে। (ইনশাআল্লাহ)]
(ধারাবাহিক)
১২. নারী জাতিদের প্ররোচিত করতে হবে যাতে তারা তাদের পর্দা থেকে সরে আসে। মিথ্যা কথামালা তৈরী করে বলতে হবে নিজেকে আবৃত রাখা ইসলামের মূল নির্দেশ নয় বরং আব্বাসীয় খেলাফতের সময়কালীন এটি একটি প্রথামাত্র। পূর্বে অন্যান্য পুরুষরা উম্মুল মু’মিনীনদের দেখতে পেতেন এবং তাঁরা সকল সামাজিক কর্মকা-ে যোগ দিতেন। মহিলাদের তাদের ঐতিহ্যগত পোশাক থেকে সরিয়ে যুবকদের তাদের প্রতি আকৃষ্ট করার চেষ্টা করে একটা অশোভনীয় পরিবেশ তৈরী করতে হবে। ইসলামকে নষ্ট করার এটা একটা কার্যকর পদ্ধতি। প্রথমে অমুসলিম মহিলাদের একাজে ব্যবহার করতে হবে। সময়ের পরিক্রমায় মুসলমান মহিলারাও ধীরে ধীরে অবনতির দিকে যাবে এবং অমুসলিম মহিলাদের পথ অনুসরণ করবে।
(উপরের আলোচনাটি হেমপারকে দেয়া বইটিতে উদ্ধৃত ছিল। পর্দা সম্পর্কে সঠিক তথ্য জানতে হলে মাসিক আল বাইয়্যিনাত শরীফের ১১২-১৩১তম সংখ্যা পড়ুন। সেখানে হিজাব বা পর্দা ফরযে আইন হওয়ার প্রমাণ ও তার প্রাসঙ্গিক বিষয় সম্পর্কে ফতওয়া দেয়া হয়েছে।)
১৩। মসজিদের ইমামের বিরুদ্ধে অপবাদ রটিয়ে জামাতে নামাজ আদায় বন্ধ করতে হবে এবং এতে সর্বপ্রকার সুযোগ কাজে লাগাতে হবে। যে সকল মুছল্লী সেই ইমামের পিছনে নামাজ পড়বে তাদের প্রতি দেখাতে হবে অবজ্ঞা এবং বিরুপ মনোভাব।
১৪। সব সমাধি ধ্বংস করে মাটিতে মিশিয়ে দিতে হবে। কেননা হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর সময় এসব উপস্থিত ছিল না। শুধু তাই নয় মাযার শরীফ জিয়ারতের ব্যাপারে সন্দেহ প্রবেশ করিয়ে দিয়ে নবী আলাইহিস্ সালাম, খলীফা এবং নেককার মুসলমানগণ যেখানে শুয়ে আছেন সেসকল স্থান জিয়ারত করতে বাধা প্রদান করতে হবে।
উদাহরণ হিসেবে বলবে হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার মাতার পাশে শুয়ে আছেন।
হযরত আবূ বকর ছিদ্দীক্ব রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু এবং হযরত উমর ফারুক রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু শুয়ে আছেন বাকী নামক গোরস্থানে। হযরত উসমান রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুকে কোথায় রাখা হয়েছে তা জানা যায়নি। কাজিমিয়াতে অবস্থিত দুটো মাযার শরীফ দু’জন খলীফার। কিন্তু তারা হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর বংশধর কাজিম বা জাওয়াদ নয়। তুস শহরে যে মাযার শরীফ রয়েছে তা হারুন নামীয় কারো। তিনি আহলে বাইতের সদস্য রিদা নামীয় কারো নয়। সামেরাস্থ কবরগুলো আব্বাসীয়দের। সেগুলো আহলে বাইতের সদস্য হাদী, আসকারী এবং মাহদীর নয়। যেহেতু সব মুসলিম দেশের সমাধি ও গম্বুজ ধ্বংস করা ফরয, সেকারণে জান্নাতুল বাকীর সব কবরসমূহ নিশ্চিহ্ন করতে হবে।
(যদিও কিছু মানুষের ঈমান আক্বীদা বিনষ্ট করতে ওহাবীরা সক্ষম হয়েছে তার মানে এই নয় সব বিষয়েই তারা কামিয়াব। আল্লাহ পাক-এর অসীম রহমতের কারণে বংশানুক্রমে মানুষ ছাহাবা আজমাঈন রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুমগণ এবং আওলিয়ায়ে কিরাম রহমতুল্লাহি আলাইহিমগণের মাযার শরীফসমূহ সঠিকভাবেই চিহ্নিত করে আসছে।)
ব্রিটিশ গুপ্তচরের স্বীকারোক্তি এবং ওহাবী মতবাদের নেপথ্যে ব্রিটিশ ভূমিকা-৩২