ব্রিটিশ গুপ্তচরের স্বীকারোক্তি এবং ওহাবী মতবাদের নেপথ্যে ব্রিটিশ ভূমিকা-৩৯ ভাষান্তর: আল্লামা মুহম্মদ রুহুল হাসান

সংখ্যা: ১৬৬তম সংখ্যা | বিভাগ:

[শয়তান যে মানুষকে নেক ছূরতে ধোকা দেয়, এ বিষয়টি ভালভাবে অনুধাবন করেছিল শয়তানের অনুচর ইহুদী এবং খ্রিস্টানরা। মুসলমানদের সোনালী যুগ এসেছিল শুধু ইসলামের পরিপূর্ণ অনুসরণের ফলে। শয়তানের চর ইহুদী-খ্রিস্টানরা বুঝতে পেরেছিল মুসলমানদের মধ্যে বিভেদ, অনৈক্য, সংঘাত সৃষ্টি করতে পারলেই ইসলামের জাগরণ এবং বিশ্বশক্তি হিসেবে মুসলমানদের উত্থান ঠেকানো যাবে। আর তা করতে হবে ইসলামের মধ্যে ইসলামের নামে নতুন মতবাদ প্রবেশ করিয়ে। শুরু হয় দীর্ঘ মেয়াদী পরিকল্পনা; যার মূলে থাকে খ্রিস্টীয় ব্রিটিশ সাম্রাজ্যবাদ। জন্ম হয় ওহাবী মতবাদের। ওহাবী মতবাদ সৃষ্টির মূলে থাকে একজন ব্রিটিশ গুপ্তচর হেমপার। মিসর, ইরাক, ইরান, হেজাজ ও তুরস্কে তার গোয়েন্দা তৎপরতা চালায় মুসলমানদের বিভ্রান্ত করার জন্য। “ঈড়হভবংংরড়হ ড়ভ ধ ইৎরঃরংয ঝঢ়ু ধহফ ইৎরঃরংয বহসরঃু ধমধরহংঃ ওংষধস”  গ্রন্থ হচ্ছে হেমপারের স্বীকারোক্তি মূলক রচনা। মূল গ্রন্থ থেকে ধারাবাহিকভাবে তার অনুবাদ প্রকাশ করা হচ্ছে। (ইনশাআল্লাহ)]

(ধারাবাহিক)

১২। আলিমদের বিরুদ্ধে নৃশংসতার মিথ্য অভিযোগ এবং কলঙ্ক ছড়াবে। এভাবে মুসলানদের তাদের কাছ থেকে দুরে রাখবে। আমরাও কিছু গুপ্তচরকে তাদের মধ্যে ছদ্মবেশে রেখে দিবো।  তারাও কিছু জঘন্য কার্যকলাপ সম্পন্ন করবে। তখন আলিমদের সম্পর্কে লোকজন বিভ্রান্ত  হয়ে পড়বে ফলে প্রত্যেককে সন্দেহের চোখে দেখা হবে। আল আজহার, ইস্তাম্বুল, নজফ এবং কারবালায়  এসব গুপ্তচরের প্রবেশ ঘটাতে হবে। আলেম বিরোধী মনোভাব তৈরীর জন্য আমরা স্কুল, কলেজ, চালু করবো। এসব স্কুলগুলোতে আর্মেনিয়ান, গ্রীক এবং বাইজ্যান্টাইন শিশুদের শিক্ষা দেবো আমরা। মুসলমান শিশুদের মধ্যে আমরা এই মনোভাবে তৈরী করবো যে তাদের পূর্বপুরুষরা ছিল অজ্ঞ। খলীফা, বিদ্ধানব্যক্তি, প্রশাসনিক লোকদের বিরুদ্ধে শত্রু মনোভাব সৃষ্টির লক্ষ্যে তাদের দোষত্রুটিগুলো তুলে ধরবো এবং অভিযোগ তুলবো যে তারা শুধু ইন্দ্রীয় ভোগবিলাসে ব্যাস্ত থাকে। তারা রক্ষিতা নিয়ে সময় কাটায়, জনসম্পদের অপব্যবহার করে এবং কোন কাজেই হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর সুন্নতকে অনুসরণ করেনা।

১৩। ইসলামে নারী ঘৃণার পাত্র এই মিথ্যা অপবাদ ছড়ানোর লক্ষ্যে কুরআনের এই আয়াত উদ্ধৃত করবে। “মেয়েদের উপর রয়েছে পুরুষের প্রাধান্য।” (সূরা নিসা আয়াত ৩৪)

এভাবে হাদীছের কথা বলবে যে, মেয়ে জাতি পুরোপুরি শয়তানের আশ্রিত।”

(হাদীছ শরীফে বর্ণিত  আছে, যে মহিলা (স্ত্রী) শরীয়তের পরিপূর্ণ অনুসরণ করেন, তিনি বেহেশতের এক নিয়ামত। অপরদিকে যে মহিলা তার নফসের অনুগত এবং শরীয়তের খিলাপ চলে কুফরী, শেরেকী করে সে শয়তানের রজ্জু বা রশি অর্থাৎ তার মাধ্যম দিয়ে শয়তান কুফরী, শেরেকী ও গুমরাহী ওয়াছ ওয়াছা দেয়। মেয়ে জাতি শয়তানের আশ্রিতা এটা কাট্টা মিথ্যা কথা। এরকম কোন হাদীছ শরীফ নেই। গরীব অবিবাহিতা এবং বিধবা মহিলার ক্ষেত্রে তার পিতা তার ভরণ পোষণের দায়িত্ব নেবে। যদি তার পিতা না থাকে অথবা পিতা খুবই গরীব হয় তখন তার অন্য  মাহরাম আত্মীয়গণ দায়িত্ব পালন করবে। যদি মাহরাম আত্মীয় না থাকে তবে খলীফা বা সরকারের তরফ থেকে ভাতার ব্যবস্থা করতে হবে। একজন মুসলিম মহিলা কখনই জীবিকার জন্য বেপর্দা হয়ে কাজ করবে না। ইসলামী শরীয়াহ পুরুষের উপর মহিলার সকল দায়িত্ব ন্যাস্ত করেছে। সেদিক থেকে সম্পত্তির উত্তরাধিকার একমাত্র পুরুষদের জন্য নির্ধারিত হবার কথা ছিল কিন্তু আল্লাহ রব্বুল আলামীন এত মহান যে তিনি ভাইয়ের অর্ধেক সম্পত্তি বোনদের জন্য নির্ধারিত করেছেন।

স্বামী তার স্ত্রীকে ঘরে বা বাইরে কোথাও উপার্জন করার জন্য বাধ্য করতে পারবে না। কিন্তু কোন মহিলা যদি কাজ করতে চায়, তার স্বামীর অনুমতিতে করতে পারবে তবে সম্পূর্ণ পর্দার মধ্যে থেকে এবং সেখানে কোন পুরুষের উপস্থিতি থাকতে পারবে না এবং এই ক্ষেত্রে উপার্জিত অর্থ স্ত্রীরই থাকবে। কেও তার  অর্জিত আয় এবং উত্তরাধিকার সূত্রে প্রাপ্ত  সম্পত্তি  কিংবা মোহরানার অর্থ ছেড়ে দেবার জন্যে জোর খাটাতে পারবে না। এমনকি সে তার উপার্জনের টাকা ঘরের কিংবা ছেলেমেয়ের প্রয়োজনেও খরচ করতে বাধ্য নয়।  স্বামীর জন্য ফরজ সংসারের সকল প্রয়োজন মেটানোর। আজকের কমুনিষ্ট শাসনে, নারী-পুরুষ সকলকে শুধু খাদ্যের প্রয়োজনে খাটতে হয়। খ্রীস্টান জগতে, তথাকথিত মুক্ত বিশ্বে এবং এমনকি কিছু নাম মাত্র মুসলিম দেশেও মহিলারা পুরুষের পাশাপাশি খেতে, খামারে, শিল্পে, কারখানায় কাজ করছে এই নীতিতে যে, জীবন সকলের জন্য সমান। যা কাট্টা হারাম।  খবরের কাগজে প্রায়শই দেখা যায় বিবাহিত জীবনে তাদের অধিকাংশই সুখী নয় ফলে আদালতে বিবাহ বিচ্ছেদের মামলা স্তুপ হচ্ছে।

সাইয়্যিদুল  মুরসালিন, ইমামুল মুরসালীন, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যা বর্ণনা করে গেছেন তা প্রধানত তিনভাগে  বিভক্ত। (ক) প্রথমত ওহী। ওহী সরাসরি আল্লাহ পাক-এর তরফ থেকে নাযিলকৃত। ওহী সমূহ কুরআন মজিদে লিপিবদ্ধ হয়েছে।

যেমন সূরা নিসার ৭৮নং আয়াতে ইরশাদ  হয়েছে “যা কিছু ভাল এবং কল্যাণকর তা আসে আল্লাহ পাক-এর নিকট থেকে এবং যা কিছু মন্দ ও ক্ষতিকর তা তোমার নফসের কারণে হয়ে থাকে। (খ) হাদীছে কুদসী। হাদীছে কুদসী হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর জবান মুবারক থেকে নিঃসৃত তবে তা আল্লাহ পাক-এরই কালাম। অর্থাৎ যে হাদীছ শরীফে রয়েছে আল্লাহ পাক বলেন সেটাই হাদীছে কুদছী।

(গ)  হাদীছ শরীফ। শব্দ ও  অর্থ উভয় দিক থেকেই হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এর জবান মুবারক নিঃসৃত। যেমন যে রমণী শরীয়ত মেনে চলে সে বেহেশতের এক নিয়ামত আর যে  নফসের অনুগত সে শয়তানের রজ্জু বা রশি।

হযরত মুহিউদ্দীন ইবনুল আরাবী রহমতুল্লাহি আলাইহি তার মুসামারাত গ্রন্থের প্রথম খ-ে এই হাদীছ শরীফের বিশদ ব্যাখ্যা প্রদান করেছেন। বৃটিশ গুপ্তচর এই হাদীছ শরীফের প্রথম অংশ গোপনে রেখে কেবল দ্বিতীয় অংশ বর্ননা করেছে। ইসলামে মেয়েদের মর্যাদা, সুখ-শান্তি, স্বাধীনতা, সর্বোপরি বিবাহ বিচ্ছেদের যে অধিকার দিয়েছে তা যদি দুনিয়ার অন্য সকল মহিলারা উপলদ্ধি করতে পারতো তাহলে তারাও ইসলাম কবুল করতো এবং পৃথিবীতে ইসলাম প্রচারে সচেষ্ট হতো। এটা লজ্জার বিষয় যে, তারা এখনও সেটা উপলদ্ধি করতে পারেনি।

ইসলামকে সুন্দরভাবে জানা ও বোঝার জন্য আল্লাহ পাক যেন সবাইকে  তাওফিক দান করেন।)     চলবে।

ব্রিটিশ গুপ্তচরের স্বীকারোক্তি এবং ওহাবী মতবাদের নেপথ্যে ব্রিটিশ ভূমিকা-৩২

কোকাকোলা ও অন্যান্য কোমল পানীয় সম্পর্কে উন্মোচিত সত্য-১৮

‘ক্লোজআপ ওয়ান তোমাকেই খুঁজছে বাংলাদেশ’- একটি সূক্ষ্ম ও গভীর ষড়যন্ত্রের প্রক্রিয়া অথচ নিশ্চুপ তথাকথিত খতীব, মহিউদ্দীন, আমিনী ও শাইখুল হাদীছ গং তথা তাবত ধর্মব্যবসায়ীরা- (১)

মওদুদীর নীতি থেকেও যারা পথভ্রষ্ট সেই জামাত- জামাতীদের জন্যও ভয়ঙ্কর মুনাফিক॥ আর সাধারণের জন্য তো বলারই অপেক্ষা রাখেনা

প্রসঙ্গঃ আমেরিকায় ইহুদী প্রভাব ও নিয়ন্ত্রণ- ২