ব্রিটিশ গুপ্তচরের স্বীকারোক্তি এবং ওহাবী মতবাদের নেপথ্যে ব্রিটিশ ভূমিকা-৩১

সংখ্যা: ১৫৪তম সংখ্যা | বিভাগ:

ভাষান্তরঃ মুহম্মদ রুহুল হাসান

[শয়তান যে মানুষকে নেক ছূরতে ধোকা দেয়, এ বিষয়টি ভালভাবে অনুধাবন করেছিল শয়তানের অনুচর ইহুদী এবং খ্রিস্টানরা। মুসলমানদের সোনালী যুগ এসেছিল শুধু ইসলামের পরিপূর্ণ অনুসরণের ফলে। শয়তানের চর ইহুদী-খ্রিস্টানরা বুঝতে পেরেছিল মুসলমানদের মধ্যে বিভেদ, অনৈক্য, সংঘাত সৃষ্টি করতে পারলেই ইসলামের জাগরণ এবং বিশ্বশক্তি হিসেবে মুসলমানদের উত্থান ঠেকানো যাবে। আর তা করতে হবে ইসলামের মধ্যে ইসলামের নামে নতুন মতবাদ প্রবেশ করিয়ে। শুরু হয় দীর্ঘ মেয়াদী পরিকল্পনা; যার মূলে থাকে খ্রিস্টীয় ব্রিটিশ সাম্রাজ্যবাদ। জন্ম হয় ওহাবী মতবাদের। ওহাবী মতবাদ সৃষ্টির মূলে থাকে একজন ব্রিটিশ গুপ্তচর হেমপার। মিসর, ইরাক, ইরান, হেজাজ ও তুরস্কে তার গোয়েন্দা তৎপরতা চালায় মুসলমানদের বিভ্রান্ত করার জন্য। “ঈড়হভবংংরড়হ ড়ভ ধ ইৎরঃরংয ঝঢ়ু ধহফ ইৎরঃরংয বহসরঃু ধমধরহংঃ ওংষধস” গ্রন্থ হচ্ছে হেমপারের স্বীকারোক্তি মূলক রচনা। মূল গ্রন্থ থেকে ধারাবাহিকভাবে তার অনুবাদ প্রকাশ করা হচ্ছে। (ইনশাআল্লাহ)]

(ধারাবাহিক)

আমার চলে আসার সময় সে (ওহাবী নজদী) ইস্তাম্বুলে যাওয়ার কথা ভাবছিল। আমি আমার সর্বোচ্চ চেষ্টা করলাম তার এই চিন্তা থেকে তাকে সরিয়ে আনতে। আমি বললাম “আমি অত্যন্ত উদ্বিগ্ন যে তুমি সেখানে গিয়ে এমন কোন উক্তি করবে যাতে প্রকাশ পাবে তুমি ভিন্নমতালম্বী এবং শেষে তোমাকে তারা হত্যা করবে।”

অবশ্য আমার মনে ধারণা ছিল ভিন্ন রকম। আমি ভীত ছিলাম এই ভেবে যে, সেখানে গেলে দেখা হবে অনেক ধর্মীয় আলিম ব্যক্তিদের সাথে যারা তার এই ভ্রান্ত মতগুলো খণ্ডিয়ে দেবেন এবং সুন্নী মত অনুযায়ী তাকে তৈরী করবেন, তাতে আমার সকল স্বপ্ন বন্ধ হয়ে যাবে। কেননা ইস্তাম্বুলে ছিল ইসলামের গভীর ইলম এবং আদর্শের উপস্থিতি।

যখন আমি দেখলাম নজদের মুহম্মদ বসরায় অবস্থান করতে চাচ্ছে না আমি তাকে সুপারিশ করলাম যাতে সে ইস্পাহান এবং সিরাজে যায়। এই দুটো শহর ছিল যথেষ্ট সুন্দর এবং শিয়া অধ্যূষিত। শিয়ারা জ্ঞানে এবং আদর্শে অপরিপূর্ণ সুতরাং তারা নজদের মুহম্মদের ওপর কোন প্রভাব ফেলতে পারবে না। এভাবে আমি নিশ্চিত হলাম যে, আমি তাকে যে পথ নির্দেশনা দিয়েছি সেখান থেকে সে সরে যাবে না। বিদায় নেবার সময় আমি তাকে বললাম “তুমি কি তাকিয়া বিশ্বাস কর”?

উত্তরে সে বললো হ্যাঁ করি। কাফেরগণ একজন সাহাবীকে বন্দী করে এবং তার পিতামাতাকে শহীদ করে। এতে তিনি তাকিয়া অবলম্বন করেন এবং প্রকাশ্যে ঘোষণা করেন যে তিনি মুশরেক হয়ে গেছেন। আল্লাহ পাক-এর হাবীব ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সেই ছাহাবীকে ভর্ৎসনা করেননি।

(উল্লেখ্য, উক্ত ছাহাবী রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম সম্পর্কে হেমপারের এ বক্তব্য মেটেই শুদ্ধ নয়। কেননা ছাহাবী হযরত আম্মার রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু কাফির, মুশরিক কর্তৃক পিতা-মাতার মর্মান্তিক শাহাদত বরণের দৃশ্য দেখে তাঁর যবান দিয়ে যা উচ্চারিত হয়েছিল তা ছিল সম্পূর্ণরূপে অনিচ্ছাকৃত। তা কখনই ইচ্ছাকৃত ছিলনা। কাজেই তাঁর সাথে তাকিয়ার কোন মিল বা সম্পর্ক নেই। মূলতঃ বাহ্যিক ও আন্তরিক সবদিক থেকেই উক্ত ছাহাবী রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু ঈমানে অটল ছিলেন। )

আমি তাকে উপদেশ দিলাম “যখন তুমি শিয়াদের মধ্যে থাকবে, তাকিয়া করবে। কিন্তু তাদের বলবে না যে তুমি একজন সুন্নী। পাছে তারা তোমার জন্য বিপদের কারণ হয়ে দাড়াবে। তাদের দেশ এবং পাণ্ডিত্যকে কাজে লাগাবে। তাদের ঐতিহ্য এবং সংষ্কৃতি শিখে নেবেন। কারণ তারা হচ্ছে মুর্খ এবং একগুয়ে প্রকৃতির লোক। আমি চলে আসার সময় তাকে কিছু যাকাতের পয়সা দিলাম। যাকাত হচ্ছে ইসলামের কর যা গরীবদের দেয়া হয়। অতিরিক্ত উপহার হিসেবে তাকে কিছু ভারবাহী পশু দিলাম।

আমার চলে আসার পর তার সঙ্গে যোগাযোগ হারিয়ে ফেলেছিলাম। ফলে আমি অস্বস্তি অনুভব করতে থাকি। অবশ্য বিদায়কালে আমরা ঠিক করেছিলাম, আমরা উভয়েই বসরায় ফিরে আসবো। যে প্রথমে ফিরবে, ফিরে অন্যকে না দেখলে দ্বিতীয় জনকে চিঠি লিখবে এবং চিঠি আব্দুর রিদার নিকট রেখে যাবে।

বাগদাদে কয়েকদিন কাটালাম। তারপর লন্ডনে ফিরে যাওয়ার নির্দেশ পেয়ে লন্ডন চলে গেলাম। লন্ডনে গিয়ে সচিব এবং উপনিবেশ মন্ত্রণালয়ের অন্যান্য কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথাবার্তা বললাম। আমার দীর্ঘদিনের কার্যকলাপ, অভিজ্ঞতা তাদের অবহিত করলাম। ইরাক সম্মন্ধে যে তথ্য পেলাম তাতে তারা বেশ আনন্দ পেয়েছিলো। বললো, তারা বেশ খুশী। ওদিকে নজদের মুহম্মদের মেয়ে বন্ধু সুফিয়া যে রিপোর্ট পাঠিয়েছিল তাতেও আমার কথার প্রতিফলন ছিল। আমার মিশন চলাকালীন সময়ে একজন লোক সবসময় আমাকে অনুস্মরণ করে গেছে। সেছিল মন্ত্রণালয়ের নিয়োজিত একজন গোয়েন্দা। সেও যেসব রিপোর্ট পাঠিয়েছিল দেখলাম আমার দেয়া রিপোর্টের সঙ্গে বেশ মিল রয়েছে। সচিব আমাকে মন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করার ব্যবস্থা করে দিয়েছিলেন। মন্ত্রীর সঙ্গে যখন দেখা হলো তিনি আমার প্রতি এমন ব্যবহার করলেন যে তিনি যেন আমার আসার অপেক্ষাতেই ছিলেন। বুঝলাম তার হৃদয়ের একটা স্থান করে নিয়েছিলাম।

 (চলবে)

যুগের আবূ জাহিল, মুনাফিক ও দাজ্জালে কায্যাবদের বিরোধিতাই প্রমাণ করে যে, রাজারবাগ শরীফের হযরত মুর্শিদ ক্বিবলা মুদ্দা জিল্লুহুল আলী হক্ব। খারিজীপন্থী ওহাবীদের মিথ্যা অপপ্রচারের  দাঁতভাঙ্গা জবাব- ১৫

 বিৃটিশ গুপ্তচরের স্বীকারোক্তি এবং ওহাবী মতবাদের নেপথ্যে বিৃটিশ ভূমিকা-১৫ 

কোকাকোলা ও অন্যান্য কোমল পানীয় সম্পর্কে উন্মোচিত সত্য-৩

চাঁদের তারিখ নিয়ে জাহিলী যুগের বদ প্রথার পুনঃপ্রচলন॥ নিশ্চুপ উলামায়ে ‘ছূ’ ঈদ, কুরবানীসহ জামিউল ইবাদত হজ্জও হচ্ছে বরবাদ

শুধু ছবি তোলা নিয়েই বড় ধোঁকা নয়, গণতান্ত্রিক শাসনতন্ত্র চর্চা করে “ইসলামী শাসনতন্ত্র আন্দোলনের” নামেও তিনি মহা ধোঁকা দিচ্ছেন