[শয়তান যে মানুষকে নেক ছূরতে ধোঁকা দেয়, এ বিষয়টি ভালভাবে অনুধাবন করেছিল শয়তানের অনুচর ইহুদী এবং খ্রিষ্টানরা। মুসলমানদের সোনালী যুগ এসেছিল শুধু ইসলামের পরিপূর্ণ অনুসরণের ফলে। শয়তানের চর ইহুদী-খ্রিষ্টানরা বুঝতে পেরেছিল মুসলমানদের মধ্যে বিভেদ, অনৈক্য, সংঘাত সৃষ্টি করতে পারলেই ইসলামের জাগরণ এবং বিশ্বশক্তি হিসেবে মুসলমানদের উত্থান ঠেকানো যাবে। আর তা করতে হবে ইসলামের মধ্যে ইসলামের নামে নতুন মতবাদ প্রবেশ করিয়ে। শুরু হয় দীর্ঘ মেয়াদী পরিকল্পনা; যার মূলে থাকে খ্রিষ্টীয় ব্রিটিশ সাম্রাজ্যবাদ। জন্ম হয় ওহাবী মতবাদের। ওহাবী মতবাদ সৃষ্টির মূলে থাকে একজন ব্রিটিশ গুপ্তচর হেমপার। মিসর, ইরাক, ইরান, হেজাজ ও তুরস্কে তার গোয়েন্দা তৎপরতা চালায় মুসলমানদের বিভ্রান্ত করার জন্য। ”উমভতণ্র্রধমভ মত ট ঈরর্ধধ্রদ ওযহ টভঢ ঈরর্ধধ্রদ ণভবর্ধহ টথটধর্ভ্র অ্রফটব” গ্রন্থ হচ্ছে হেমপারের স্বীকারোক্তি মূলক রচনা। মূল গ্রন্থ থেকে ধারাবাহিকভাবে তার অনুবাদ প্রকাশ করা হচ্ছে। (ইনশাআল্লাহ)]
(ধারাবাহিক)
নজদের মুহম্মদ বললো, হ্যাঁ আমি শুনেছি কিন্তু মানুষ নামাযের পরিবর্তে আল্লাহ পাক-এর যিকির করে। (হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, ‘নামায ইসলামের স্তম্ভ। যে নামায পড়লো সে ইসলামকে ক্বায়িম রাখলো। আর যে নামায পড়লোনা সে ইসলামকে ধ্বংস করলো।” অন্য হাদীছ শরীফে আছে, ‘আমি যেভাবে পড়ি সেভাবে নামায পড়ো। নামায না পড়া কবীরাহ গুনাহ। আর নামায সঠিকভাবে আদায় করলে হৃদয়ের পবিত্রতা থাকে।) নজদের মুহম্মদের কাধ থেকে আমি ধীরে ধীরে বিশ্বাসের চাদর সরিয়ে ফেলতে থাকি। এবং হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সম্পর্কেও নজদের মুহম্মদের সাথে বিতর্কে লিপ্ত হলাম। নজদের মুহম্মদ বললো, ‘এখন থেকে তুমি যদি এ বিষয়ে আমার সাথে আলাপ করো তাহলে আমাদের বন্ধুত্ব নষ্ট হয়ে যাবে।’
এরপর থেকে ভয়ে হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সম্পর্কে কোন আলাপ-আলাচেনা করা বাদ দিলাম যাতে আমার সব চেষ্টা বিফলে না যায়। আমি নজদের মুহম্মদকে সুন্নী ও শিয়া মতের বাইরে নতুন একটি মতে চলতে উপদেশ দেই। সে আমার এই নতুন ধারণাটাকে পছন্দ করলো, বস্তুত: সে ছিল একজন অহঙ্কারী ব্যক্তি। সাফিয়াকে ধন্যবাদ, তার সাহায্যেই আমি নজদের মুহম্মদের জীবনকে থামিয়ে দিতে পেরেছি। কোন এক উপলক্ষে আমি তাকে বললাম, ‘আমি শুনেছি যে, আমাদের নবী হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুমগণদের পরস্পর ভাই বলে তৈরী করেছিলেন। বিষয়টি কি সত্যি? সে সম্মতি প্রকাশ করলো। আমি জানতে চাইলাম, এই ইসলামিক নীতি কি স্থায়ী ছিলো, না অস্থায়ী। সে ব্যাখ্যা করে বললো, এটা ছিল একটা স্থায়ী ব্যবস্থা। কেননা, ক্বিয়ামত দিবস পর্যন্ত আমাদের নবী হযরত মুহম্মদ ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যা হালাল করেছেন তা হালাল থাকবে আর যা হারাম করেছেন তা হারাম থাকবে। তখন আমি তাকে আমার ভাই হবার আহ্বান করলাম এবং আমরা পরস্পর ভাই হয়ে রইলাম। সেদিন থেকে আমি তাকে কখনও ত্যাগ করিনি। আমরা একে অপরের সঙ্গী হয়ে রইলাম। এমনকি সফরেও। সে ছিলো আমার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আমার জীবনের অনেক মূল্যবান দিনগুলো ব্যয় করে যে চারা বপন করেছিলাম এখন সে ফল দিতে শুরু করেছে। নজদের মুহম্মদের সঙ্গে আমার (হেমপার) যখন খুব ঘনিষ্ঠতা ছিলো, সেই সময়ে একদিন লন্ডন থেকে একটি বার্তা পেলাম যে, আমাকে কারবালা এবং নাজফের উদ্দেশ্যে যাত্রা করতে হবে। কারবালা এবং নাজফ হচ্ছে শিয়াদের ধর্মীয় জ্ঞান এবং আধ্যাত্মিকতার জন্য দু’টি গুরুত্বপূর্ণ শহর। সুতরাং নজদের মুহম্মদের সাহচর্য ত্যাগ করে আমাকে বসরা ছাড়তে হলো। তথাপি আমি খুব খুশী এবং নিশ্চিত ছিলাম এই কারণে যে, নৈতিকভাবে অধঃপতিত এবং মূর্খ এই লোকটি (নজদের মুহম্মদ) একটা নতুন ফিরক্বা তৈরী করতে যাচ্ছে, যা ইসলামকে ভেতর থেকে ধ্বংস করে দেবে, এবং আমি হচ্ছি সেই নতুন ফিরক্বার উত্তরাধিকার সৃষ্টির রূপকার। (অসমাপ্ত)
বিৃটিশ গুপ্তচরের স্বীকারোক্তি এবং ওহাবী মতবাদের নেপথ্যে বিৃটিশ ভূমিকা-১৫