[শয়তান যে মানুষকে নেক ছূরতে ধোকা দেয়, এ বিষয়টি ভালভাবে অনুধাবন করেছিল শয়তানের অনুচর ইহুদী এবং খ্রীষ্টানরা। মুসলমানদের সোনালী যুগ এসেছিল শুধু ইসলামের পরিপূর্ণ অনুসরণের ফলে। শয়তানের চর ইহুদী-খ্রীষ্টানরা বুঝতে পেরেছিল মুসলমানদের মধ্যে বিভেদ, অনৈক্য, সংঘাত সৃষ্টি করতে পারলেই ইসলামের জাগরণ এবং বিশ্বশক্তি হিসেবে মুসলমানদের উত্থান ঠেকানো যাবে। আর তা করতে হবে ইসলামের মধ্যে ইসলামের নামে নতুন মতবাদ প্রবেশ করিয়ে। শুরু হয় দীর্ঘ মেয়াদী পরিকল্পনা; যার মূলে থাকে খ্রীষ্টীয় ব্রিটিশ সাম্রাজ্যবাদ। জন্ম হয় ওহাবী মতবাদের। ওহাবী মতবাদ সৃষ্টির মূলে থাকে একজন ব্রিটিশ গুপ্তচর হেমপার। মিসর, ইরাক, ইরান, হেজাজ ও তুরস্কে তার গোয়েন্দা তৎপরতা চালায় মুসলমানদের বিভ্রান্ত করার জন্য। “Confession of a British Spy and British enmity against Islam” গ্রন্থ হচ্ছে হেমপারের স্বীকারোক্তি মূলক রচনা। মূল গ্রন্থ থেকে ধারাবাহিকভাবে তার অনুবাদ প্রকাশ করা হচ্ছে। (ইনশাআল্লাহ)]
(ধারাবাহিক)
হিজরী চতুর্থ শতাব্দীর পর এমন কোন জ্ঞানী ব্যক্তি জ্ঞানের এমন কোন উচ্চ আসনে পৌঁছেননি যে, স্বয়ং সম্পূর্ণ ইজতিহাদ করতে পারেন এবং প্রকারান্তরে মুতলাক ইজতিহাদের দ্বাররুদ্ধ হয়ে পড়েছে। দুনিয়ার শেষ সময়ে হযরত ঈসা আলাইহিস্ সালাম নেমে আসবেন এবং ইসলামের প্রত্যাশিত বীর হযরত ইমাম মাহদী আলাইহিস্ সালাম-এর আবির্ভাব ঘটবে এবং তাঁরাই মুতলাক ইজতিহাদ সম্পন্ন করবেন।
আখিরী রসূল, হাবীবুল্লাহ, হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, “আমার পর আমার উম্মতের মধ্যে ৭৩টি দলে বিভক্ত হয়ে পড়বে। তাদের মধ্যে একটি দল হবে জান্নাতী।” যখন হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে সুওয়াল করা হলো, “কোন সে দল?” জবাবে তিনি বললেন, যারা আমাকে এবং হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুমগণের অনুসরণ করবে তারা।”
অন্য হাদীছ শরীফে হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেন, “আমার ছাহাবায়ে কিরামগণ আকাশের তারকা সদৃশ্য। তোমরা যে কোন একজনের অনুসরণ করলে হিদায়েত পেয়ে যাবে।”
তিনি অন্যভাবেও বলেছেন, “তাতেই তোমরা বেহেশতে যাবার রাস্তা খুঁজে পাবে।
আব্দুল্লাহ বিন সাবা নামের এক ইয়েমিনী ইহুদী মুসলমানদের মধ্যে হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুমগণের সম্পর্কে বিদ্বেষ জাগিয়ে তোলে। যে সব অজ্ঞ লোক এই ইহুদীর কথায় আস্থা স্থাপন করে তাদেরকেই বলা হয় শিয়া। আর যে সব লোক হাদীছ শরীফ মেনে চলে এবং হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুমগণদের ভালবাসে ও তাঁদের অনুসরণ করে তাঁরাই সুন্নী বলে পরিচিত।
-এম. সিদ্দিক গূমুজ]
(হেম্পারের জবানবন্দির তুর্কী অনুবাদ এবং লেখক এম. সিদ্দিক গূমূজের ব্যাখ্যা মিলিয়ে একটি বই প্রকাশিত হয়। আমরা সেই বইয়ের ইংরেজী অনুবাদ থেকে বাংলায় অনুবাদ প্রকাশ করছি। গত সংখ্যার বন্ধনীর লেখা থেকে এ সংখ্যার বন্ধনীর মধ্যস্থিত লেখা হচ্ছে এম. সিদ্দিক গূমূজের ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতার কথা।)
আমি নজদের মুহম্মদ বিন আব্দুল ওহাবের সাথে খুব সখ্যতা গড়ে তুললাম এবং চুতর্দিকে তার প্রশংসা করতে লাগলাম।
একদিন তাকে বললাম, “তুমি ওমর (রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু) এবং আলী (রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহু)-এর চেয়ে শ্রেষ্ঠ। যদি এখন হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম পৃথিবীতে থাকতেন তবে তিনি তোমাকে খলীফা হিসেবে নিযুক্ত করতেন।
আমি আশা করি তোমার হাতে ইসলামের পুনঃসংস্কার এবং উন্নতি ঘটবে। তুমিই একমাত্র জ্ঞানী ব্যক্তি, যে সারাবিশ্বে ইসলামকে ছড়িয়ে দেবে।
কুরআন শরীফের একটা নতুন ব্যাখ্যা প্রদানের জন্য আব্দুল ওহাবের পুত্র মুহম্মদ এবং আমি পরিকল্পনা নিলাম। যে ব্যাখ্যাতে আমাদের দৃষ্টিভঙ্গির প্রতিফলন ঘটবে এবং যা হবে সম্পূর্ণভাবে হযরত ছাহাবায়ে কিরাম রদ্বিয়াল্লাহু তায়ালা আনহুম, মাযহাবের ইমাম এবং মুফাস্সিরগণের ব্যাখ্যার বিপরীত। আমরা তখন তাফসীর করতে লাগলাম এবং কিছু আয়াত শরীফের নতুন ব্যাখ্যা প্রদান করতে লাগলাম। (অসমাপ্ত)
বিৃটিশ গুপ্তচরের স্বীকারোক্তি এবং ওহাবী মতবাদের নেপথ্যে বিৃটিশ ভূমিকা-১৫